ভালোবাসব যে তোকে

ভালোবাসব যে তোকে !! Part- 12

আয়ান তো এক মহা চিন্তায় পরে গেলো মৌ এর মুখে শব্দটা শুনে।
“এ কি বলে গেলো হঠাৎ করে??কিছুই তো বুঝলাম না।
জিজ্ঞাসা করলেও বললো না।
আচ্ছা সার্চ দিবো নাকি গুগোলে??
হুম তাই ই করি।”
ফোনের ডাটা অন করে যেই না সার্চ দিতে যাবে তখনই নিচের থেকে ডাক পরলো রাতের খাবারের জন্য।আয়ান এতে বেশ বিরক্ত হলো।
“আর কিছুক্ষণ পর ডাকলে কি হতো??আমি ওয়ার্ডটা জেনে নিতাম।উফ।”
এরপর আয়ান বিরক্তিমাখা মুখ নিয়ে নিচে গিয়ে খাবার খেতে বসলো। সে গিয়ে মৌ এর সামনের চেয়ারে বসলো।
সবাই খাবার খাচ্ছে। মৌ এর মনে হলো কে যেনো তার পা তে গুঁতা দিচ্ছে। সামনে তাকাতেই সে দেখলো আয়ান ভাত খাচ্ছে আর মুখ বাকিয়ে হাসি দিচ্ছে।
“ওও তার মানে এই কাজটা এনার। ”
মৌ তাড়াতাড়ি করে নিজের পা টা সরিয়ে নিলো।আয়ান এতে যে বেশ বিরক্ত হলো তা তার চেহারা দেখে বেশ বুঝতে পারলো মৌ।
খাবার খাওয়া শেষে আয়ান মৌ এর সাথে তখনকার বলা কথাটা নিয়ে জিজ্ঞাসা করবে কিন্তু মৌ রান্নাঘরে গিয়ে সব গুছাতে লাগলো। আয়ান মৌ এর আশেপাশে থেকে বারবার এ বিষয়টা নিয়ে জিজ্ঞাসা করছে।কিন্তু সে চুপ। কোনো কথাই বলছে না। অথচ মনে মনে সে বেশ মজা পাচ্ছে আয়ানকে এভাবে জ্বালাতে পেরে।
আয়ান আর উপায় না পেয়ে অহনার কাছে গেলো।
“অহনা শোন, তোকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো।”
“হুম বল কি কথা ভাইয়া।”
“আচ্ছা “সালাংঘে” মানে কি রে??”
আয়ান এর এ কথা শুনে মৌ মোবাইল থেকে চোখ তুলে তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালো।
অহনা ভ্রুজোড়া তুলে জিজ্ঞাসা করলো,
“কেনো রে ভাইয়া,হঠাৎ এই শব্দের মানে জিজ্ঞাসা করছিস যে??”
“এমনিই। তুই বলতো।”
অহনা সন্দেহের সুরে আয়ানকে জিজ্ঞাসা করলো,
“মৌ বলছে তাইনা??”
অহনার মুখে এ কথা শুনে আয়ান কিছুক্ষণ চুপ থাকলো।তারপর অসহায় ভাব নিয়ে বললো,
“হুম। ঠিক ধরেছিস।
গুগোলে সার্চ দিয়ে দেখতে যাবো তখনই খাওয়ার জন্য ডাক পরলো। এখানে এসে মৌ কে বারবার জিজ্ঞাসা করলাম কিন্তু ও কি ভালো মানুষ নাকি।।।বললো না সে।তাই ভাবলাম তোকেই জিজ্ঞাসা করি।”
আয়ানের এ কথা শুনে অহনা নিজের হাসি থামাতে পারছে না।
“এতো হাসির কি বললাম হুহ। বল কি বলেছে আসলে ও। না বললে চলে যাই। ”
“আরে ভাইয়া রাগিস কেনো এতো। বলছি বলছি।”
“হুম বল।”
“মৌ তোকে কোরিয়ান ভাষায় ‘ভালোবাসি’ বলেছে।কোরিয়ান ভাষায় ‘সালাংঘে’ মানে আই লাভ ইউ।”
এ কথা শুনে আয়ানের মাথায় হাত।
“মানতে হবে ভাইয়া, মৌ এর জবাব নেই। এতো সুন্দর করে সে তোর কাছে নিজের মনের কথাটা বললো।বাহ বাহ।।সি ইজ সো ক্লেভার। না??”
“ক্লেভার না ছাই। আস্ত একটা বেয়াদব মেয়ে।সোজা বাংলায় বললেই তো হয়।”
“নাহ। এভাবে বলেই বেশি ভালো হয়েছে।সোজা বাংলায় তো সবাই বলে।”
“আচ্ছা তোরা এটা জানিস কিভাবে??”
“না জানার কি হলো হুম??আমরা সুযোগ পেলেই কোরিয়ান সিরিয়াল দেখি।হিহিহি।”
“ওওও তাই। ভালো ভালো।বেশি বেশি করে দেখ। পড়ালেখা নাই কিছু নাই।সারাদিন এসবই দেখ।”
এ বলে আয়ান অহনার মাথায় হালকা থাপ্পড় দিয়ে রুমের উদ্দেশ্যে চলে গেলো।
“মিসেস মৌ,তুমি তো বড়ই দুষ্ট হয়ে যাচ্ছো দিন দিন।আজকে একটা ব্যবস্থা করতে হবে দেখছি।”
আয়ান সোফায় বসে ফোন টিপছে। এর মধ্য মৌ রুমে আসে। সে এসেই শোয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকে। তখনই আয়ান হুট করে এসে মৌ এর কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে একদম মিশিয়ে নেয়।
আয়ানের এভাবে হুট করে কাছে আসায় মৌ এর মনে হয় প্রাণপাখি উড়ে গেলো।তার বুক ভয়ে ধুকপুক করছে।
“আচ্ছা হঠাৎ করে এভাবে আসো কেনো হুম??আমি কি ভয় পাইনা নাকি??মনে হয় সবসময় ভয় দেখানোর ধান্দায় থাকো।”
“তুই কি কখনো ভালো হবি না??”
“কেনো আমি আবার কি করলাম??আর এভাবে ধরে রাখার মানে কি হুম??ছাড়ো প্লিজ। আমার কেমন যেনো লাগে।”
“আবার একই কথা!!আমি তোর স্বামী। সো যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ধরবো তোকে।আর আজকে তোর যেমনই লাগুক আমি ছাড়বো না তোকে। এখন থেকে এসবের অভ্যাস করে নে।যখন তখন তোকে কাছে টেনে নিবো আমি।”
এ বলে আয়ান চোখ টিপ দিলো।
আয়ানের এ কথা শুনে মৌ ভয়ে ঢোক গিললো।
সে মনে মনে বলছে,
“নাহ, এ ছেলে তো বড়সড় রকমের বজ্জাত দেখছি।”
“কি হলো চুপ করে আছিস কেনো??আমি যে একটা প্রশ্ন করেছিলাম তার জবাব কই??”
“আচ্ছা আমি করলাম টা কি??”
“আমাকে বোকা বানানোর জন্য তখন ঐ ওয়ার্ডটা বলে গেলি না??”
এবার মৌ ব্যাপারটা বুঝতে পারলো।সে মুখ টিপে হেসে যাচ্ছে। আর নিজেকে আয়ানের থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে।কিন্তু আয়ান এটা বুঝতে পেরে মৌ কে নিজের সাথে আরো শক্ত করে ধরলো। তারা দুজন এতো কাছাকাছি যে এক জনের নিঃশ্বাসের শব্দ আরেকজন শুনতে পারছে।মৌ এর এতে কেমন যেনো অস্বস্তি ফিল হচ্ছে।আয়ান এটা বুঝতে পারছে বেশ।কিন্তু এবার সে মৌ কে ছাড়লো না।
মৌ তো আয়ানের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারছে না। সে অন্যদিকে তাকিয়ে বললো,
“আআমি বোকা বানালাম কই?? যা বলার অন্য ভাষায় বলেছি। বুঝতে না পারাটা তোমার ব্যর্থতা। ”
আয়ান মৌ এর মুখটা এক হাত দিয়ে ধরে তার দিকে ফিরালো।
“ও তাইই আমার ব্যর্থতা!!! তুই যে হঠাৎ করে এমন বলে গেলি তো আমি কি করে বুঝতাম যে তুই তোর মনের কথা আমাকে বলেছিস। ”
মৌ কিছুই বললো না। সে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ করেই তার ইচ্ছা করছে আয়ানের দিকে তাকিয়ে থাকতে।আজকে এ মানুষটাকে হঠাৎ এমন ভালো লাগছে কেনো তার কাছে?
আয়ান বুঝতে পারলো মৌ তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে মুচকি হেসে মৌ এর গালে হালকা করে একটা চুমু দিলো।তার এমন কাজে মৌ হতভম্ব হয়ে গেলো।কিন্তু এমন কাজে মৌ এর আবার ভালোও লাগছে।কিছুই বুঝছে না সে।
“অবাক বিষয়।হচ্ছেটা কি এখন??পাগল হয়ে গেলাম নাকি আমি??একবার আয়ানের কাছে আসা খুব ভালো লাগে। মনে হয় যে এভাবেই অনেকটা সময় কেটে যাক।আবার একবার কাছে আসলে কেমন একটা লাগে। তখন মনে হয় যে তাড়াতাড়ি ওর থেকে পালাতে পারলে বাঁচি। আমি নিশ্চত পাগল হয়ে গিয়েছি।”
আয়ান মৌ এর দিকে তাকিয়ে বললো,
“কি হলো এভাবে আমার দিকে হঠাৎ করে চেয়ে আসিছ কেনো??কিছুক্ষণ আগেই না তুই আমার থেকে ছাড়া পেতে চাচ্ছিলি??এখন কি হলো আবার??”
“কিছুই না। এমনিই।”
“আচ্ছা, বলনা ভালোবাসি শব্দটা।খুব খুবই শুনতে ইচ্ছা করছে তোর মুখ থেকে ‘ভালোবাসি’ শব্দটা। ”
মৌ ভাবলো,
“আর কতো ঘুরাবো বেচারাটাকে। বলেই দিই যে আমি কতোটা ভালোবাসি তোমাকে।”
মৌ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
” ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি তোমাকে। অনেক বেশি ভালোবাসি।তোমার ভালোবাসার থেকেও বেশি ভালোবাসি।”
এ বলেই আয়ানের বুকে মুখ লুকালো মৌ।আর আয়ানের আজকে অনেক ভালো লাগছে মৌ এর মুখে “ভালোবাসি” কথাটা শুনে।সে নিজেই জানতো না যে সে মৌ কে এতোটা ভালোবেসে ফেলবে এই কয়দিনে। কারোর প্রতি কি এতো কম সময়ের মধ্যেই ভালোবাসা জন্মে??নাকি শুধুই ভালোলাগা এটা??
নাহ এটা শুধু ভালোলাগা না। ভালোবাসাও। কারন মৌ কে ছাড়া আয়ানের নিজেকে শূন্য শূন্য লাগে।নিজেকে অপূর্ণ লাগে। হয়তো মৌ কে ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব তার জন্য। তার প্রেয়সিকে ছাড়া একটা দিন ও কাটাতে পারবে নাকি সন্দেহ। মাঝে মাঝে মৌ কে হারানোর চিন্তা হুট করে মাথায় আসলে কেমন যেনো ভয়ে বুকটা কেঁপে উঠে তার। তখন জোর করে এসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সে।
অনেকক্ষন এভাবে থাকে দুজন।হঠাৎ মৌ মাথা তুলে বলে,
“আজকে সারারাত এভাবেই দাঁড়ীয়ে থাকবো নাকি??পা ব্যাথা হয়ে গেলো।।”
“ইচ্ছা তো করছে এভাবেই রাতটা পার দিই।কিন্তু তোর যেহুতু পা ব্যাথা করছে তাই আর হলো না।”বলেই আয়ান মৌ কে কোলে তুলে নেয়। এভাবে হুট করে না বলে কোলে নেওয়ায় মৌ অবাক হয়ে যায়।
আয়ান মৌ কে নিয়ে খাটে শুইয়ে দেয়। তারপর সে মৌ এর পায়ের কাছে বসে তার পা টিপে দেয়।মৌ তো আয়ানের এ কান্ডে কি বলবে বুঝতে পারছে না।
“এবার পা টিপে দিচ্ছি। ব্যাথা কমে যাবে।”
“আরে আমি তো এমনিই বললাম পায়ে ব্যাথার কথা।”
আয়ান ভ্রু কুঁচকিয়ে মৌ এর দিকে তাকালে।
“তো আগে বলবি না??”
“আমি কি জানতাম নাকি তুমি এভাবে আমার পা টিপে দিবে।”
আয়ান আর কিছু না বলে শুয়ে পরলো। শোয়ার সাথে সাথে সে মৌ কে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করছে। মৌ এর তো দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা।
“নড়বি না তো। প্রতিদিন এভাবে ঘুমানোর অভ্যাস কর।।।”
মৌ কিছু না বলে ওভাবেই ঘুমানোর চেষ্টা করলো।
সকালে,
মৌ এর ঘুম আজকে আগে ভেঙে যায়। সে উঠে দেখে আয়ান ঘুমাচ্ছে।
“কি নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। কি কিউট লাগছে আমার বরটাকে। মাশাল্লাহ। “এ বলে আয়ানের গালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে মৌ উঠে গেলো। সে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলো নাস্তা বানাতে সাহায্য করতে।
এদিকে আয়ান উঠে ফ্রেশ হয়ে অফিসের জন্য রেডি হতে লাগলো।শুধু শার্ট প্যান্ট পরে বসে আছে সে। মৌ এর জন্য ওয়েট করছে।
“উফ, এই মেয়েটা কি ভুলে গেলো নাকি ওর কাজ???ডাক দিই।”
আয়ান ডাক দিতে যাবে তার আগেই মৌ এসে হাজির হলো।সে আয়ানকে ঘড়ি,ওয়ালেট এগিয়ে দিলো।
আয়ান নাস্তা করে অফিসের জন্য বেড়িয়ে পরে।আর মৌ আর অহনা কলেজের জন্য বেড়িয়ে পরে। আগের চেয়ে অনেক বেশি কলেজ মিস দেয় তারা দুজন। অবশ্য বাসায় বসে সুযোগ পেলেই পড়তে বসে।
আয়ান আজকে সন্ধ্যার দিকেই বাসায় চলে আসে। সাথে বেশকিছু ফলমূল,বিস্কিট এবং প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস আনে।আয়ানের কাছে এসব দেখে মৌ, অহনা,দাদি আর আয়ানের আম্মু অবাক হয়ে যায়।
দাদিঃকি ব্যাপার রে আয়ান?? এতো কিছু কেনো হঠাৎ?? কেউ আসবে নাকি??
আয়ানঃ হুম। কালকে অহনাকে ছেলেপক্ষ দেখতে আসবে।
এটা শুনে অহনার মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পরলো। সে এটা শুনবে আশাই করেনি।
আম্মুঃ কি বলছিস!! হঠাৎ করে এসব কেনো??
আয়ানঃ হঠাৎ করে না। আমি অফিসে যাওয়ার পর আব্বু ফোন দিয়ে আমাকে ছেলেদের দেখতে আসার ব্যাপারে জানায়।তোমাদের সবাইকে সারপ্রাইজ দিবো বলে আমি আব্বুকে জানাতে মানা করেছি।
দাদিঃকিন্তু তাই বলে এমন হুটাহাট করে!!
আয়ানঃ এসব একটু হুটহাট করেই হয় দাদি।আর তোমরা টেনশন করো না। ছেলে অনেক ভালো। আরে এটা আব্বুর এক বন্ধুর ছেলে।ছেলেটা ডক্টর।নাম ফাহাদ।তারা মেয়ে খুঁজছিলো। তো ঐ আংকেলের হঠাৎ অহনার কথা মাথায় আসে। তাই তিনি আব্বুকে ফোন করে সব জানায়। আর আব্বুও রাজি হয়ে যায়।
আম্মুঃ আচ্ছা মানলাম সব ঠিক আছে। কিন্তু তোর আব্বুও তো বাসায় নেই।আর অহনা তো রাজি হবে না আমার মনে হয়।
বলে তিনি অহনার দিকে তাকায়। তাকে দেখে মনে হচ্ছে আরেকটু হলেই কেঁদে দিবে।
আয়ানঃ আরে কোনো সমস্যা হবে না। আমি আছি তো। ছেলেরা কালকে বিকালের দিকে আসবে। তাই সব রেডি করে রেখো।
আয়ানের এ কথা শুনে অহনা এবার কেঁদেই দিলো। একদম জোরে জোরে কান্না করছে সে।কান্নামিশ্রিত কন্ঠে সে বললো,
অহনাঃ আমি বিয়ে করবো না। এতো তাড়াতাড়ি আমাকে তোমরা পর করে দিবে??
মৌ ঃআরে পাগলি, তোর কি কালকেই বিয়ে নাকি??যাস্ট দেখতে আসবে। আর তোর যদি পছন্দ না হয় তাহলে তো আর বিয়ে হচ্ছে না।
দাদিঃ হুম,মৌ ঠিক বলেছে।তোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তো তোকে কেউ বিয়ে দিচ্ছে না।
অহনাঃনাহ আমি কোনো কথা শুনবো না। আমি এখন বিয়ে করবো না ব্যাস।
আয়ান মৌ কে চোখের ইশারায় বললো অহনাকে বুঝাতে এ ব্যাপারে।মৌ এটা বুঝতে পেরে অহনাকে রুমে নিয়ে গেলো।অনেক কথাবার্তা বলে শেষ পর্যন্ত অহনাকে রাজি করানো গেলো।
পরেরদিন বিকালে,
মৌ অহনাকে রেডি করাচ্ছে। অহনা বেশ ফর্সা।তাকে মোটামুটি সব কালারের শাড়ীতেই মানায়।আজকে একটা মেরুন কালারের শাড়ী পরে রেডি করালো মৌ।চোখে হালকা কাজল আর হালকা লিপস্টিক দিয়ে দিলো। এতোটুকুতেই অহনাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
“আরে আমার অহনা রে।তোকে এতো সুন্দর লাগছে। বলার বাইরে।ফাহাদ ভাইয়া দেখেই পাগল না হয়ে যায়।”
“তুই চুপ কর না রে বইন।আমাকে একটু সাহস দে। প্রচন্ড ভয় লাগছে।”
“আরে এতো ভয়ের কি আছে।বি কুল বেবি।”
“বি কুল। হাহ।তুই তে টমন সিচুয়েশনে পরিসনি তাই আমার অবস্থা বুঝতেও পারছিস না।”
“হ্যা তা অবশ্য ঠিক। কিন্তু দেখিস ফাহাদ ভাইয়াকে দেখে তুই একদম নরমাল হয়ে যাবি।”
“এমনভাবে বলছিস যেনো আমার চেনা পরিচিত।”
“নাহ। তা মিন করি নি। যাই হোক দোস্ত। তুই প্লিজ বিয়েতে রাজি হয়ে যাইস।কতোদিন বিয়ের অনুষ্টান এটেন্ড করি না।”
“রাখ তোর অনুষ্টান। আমি চিন্তা করছি নিচে গিয়ে উনাদের সামনে বসবো কিভাবে??আবার একবার মাথার মধ্য ঘুরছে এই ফাহাদ দেখতে কেমন হবে??”
“আমার মনে হচ্ছে অনেক হ্যান্ডসাম হবে।”
“কি জানি কি হবে।”
তাদের কথার মাঝে আয়ান রুমে ঢুকলো।অহনাকে দেখে সে তার কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
“আমার ছোট্ট বোনটা কতো বড় হয়ে গেলো!!আজ ছেলে দেখতে আসছে তাকে বিশ্বাসই হতে চাচ্ছে না।”
মৌ ভাবলো মূহুর্তটা খুব বেশি ইমোশনাল হওয়ার আগেই কিছু বলার দরকার।
“আচ্ছা ছেলেপক্ষ চলে আসছে??”
“হুম। এই জন্য ডাকতে আসছিলাম। অহনাকে দেখে বলার কথা ভুলে গিয়েছি।তুই ওকে নিয়ে তাড়াতাড়ি নিচে আয়।”
“হুম তুমি যাও। আমি ওকে নিয়ে আসছি।”
আয়ান যাওয়ার পর মৌ অহনার মাথা শাড়ীর আঁচল দিয়ে ঢেকে দিলো।
আর মৌ আগে থেকেই রেডি হয়ে ছিলো।সে শাড়ীর সাথে মাথায় হিজাব পরেছিলো।
অহনা রুম থেকে বের হওয়ার পর ভয় যেনে তাকে আরে জেকে বসে। এখন ভয়ে রীতিমত তার হাত ঘামছে।
মৌ অহনাকে নিয়ে গিয়ে ছেলেপক্ষের সামনে বসালো। অহনা মাথা নিচু করে আছে। আর মৌ গিয়ে আয়ানের পাশে দাঁড়ালো।
চলবে…..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *