Love Right ! Part- 06
নিশু ওকে ছেড়ে দিতেই আবার বাজ পড়লো।নিশু ওকে আবার ঝাপটে ধরলো।নিশু নীলকে ঝাপটে ধরতেই নীলের মনে হলো ওর হাতুড়ে পেটাচ্ছে।এভাবে জড়িয়ে ধরলে তো নিজেকে কন্ট্রোল করা মুশকিল হয়ে যাবে।নীল ওর পিঠে হাত রেখে আস্তে করে ডাক দিলো…নিশুউউ??
নিশু:হুঁ!
নীল:দেখি ছাড়ো!
নিশু:উহুঁ!
নীল:দেখো বাজ পড়া বন্ধ হয়ে গেছে!
নিশু:অন্ধকারে কিছু দেখতে পাচ্ছি না তো!
নীল:😐দেখতে বলছি না শুনতে বলছি।বাজের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছো??
নিশু ওকে আরো বেশি করে ঝাপটে ধরলো।নীল আর পারলো না।ঠেলে ওকে সরিয়ে দিলো।
নীল:এই মেয়ে পাগল হয়ে গেছো নাকি?…এভাবে জড়িয়ে ধরে কি আমাকে পাগল করবে নাকি?(ধমক দিতে)
নিশু রাগ হওয়ার বদলে মুগ্ধ হয়ে ওর কথা শুনছে।দুজনেই ভিজে যাচ্ছে সেদিকে কারোরই খেয়াল নেই।একজন রাগে বকছে আরেকজন মুগ্ধ হয়ে তা শুনছে।একটুপর নীলের হুশঁ হলো।ও আবার নিশুকে আড়াল করে দাঁড়ালো।নিশু হাসছে ওর কান্ড দেখে!
নীল:হাসছো কেন??(ভ্রু কুঁচকে)
নিশু:এমনি!
নীল:না বললে কিন্তু….
নিশু:কিন্তু কি??
নীল:প্র্যাক্টিকালি দেখাবো!
নিশু আবার হাসছে ওর কথা শুনে।
নীল:ভয় করছে না আমার সাথে একা এতরাতে??
নিশু ওর শার্টের কলার ধরে টেনে ওর বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে বললো…এখন মোটেও ভয় করছে না!
নীল কি করবে বুঝতে পারছে না।ও পুরো শরীর শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে।এই মেয়ে আজকে ওকে পাগল করেই ছাড়বে!
নিশু ওকে ছেড়ে দিয়ে ওর গাল দুটো টেনে দিয়ে বললো…তুমি জানো তোমাকে দেখতে কত আদর আদর লাগছে??ইচ্ছে করছে একেবারে খেয়ে ফেলি!
নীল হাঁ হয়ে আছে বলছে কি এই মেয়ে!
নীল:😐তুমি না অন্ধকারে কিছু দেখতে পাচ্ছো না?
নিশু এবার ওর গলা জড়িয়ে ধরে বললো..পাচ্ছি না তো শুধু তোমাকে ছাড়া!
নীল:এই তোমাদের বংশে রাতপাগল কেউ আছে?
নিশু হাসছে।
নীল ওর হাতদুটো ছাড়িয়ে নিয়ে বললো…বৃষ্টি কমছে মনে হচ্ছে!
এরমধ্যেই নীলের ফোন বেজে উঠলো।আয়াত ফোন দিয়েছে!
নীল:হ্যাঁ বল?
আয়াত:কোথায় তোরা?
নীল:আর বলিস না বাসের চাকা পাংচার হয়ে গেছে তাই আমি আর ঝালমরিচ হাঁটতে হাঁটতে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি বলতেই পারবো না।বাস মনে হয় আমাদের রেখেই ছেড়ে গেছে!
আয়াত:বলিস কি?…নিশু কি বলছে?
নীল:ও আর কি বলবে?….আমার মাথা খারাপ করে দিচ্ছে।
আয়াত:ফিরবি কি করে?
নীল:আজকে রাতে ফিরতে পারবো বলে মনে হয় না কালকে সকালেই ব্যাক করতে হবে!
আয়াত:এদিকে রুশা তো আমার মাথা খেয়ে নিচ্ছে তোরা কখন আসবি,কখন আসবি করে!
নীল:দেখি ওকে ফোনটা দে তো!
রুশা:হ্যাঁ নীল।কোথায় তুমি?
নীল:আমরা মনে হয় আজকে রাতে ফিরতে পারবো না!তোমরা কোন চিন্তা করো না!
রুশা:(মানে কি নীল ঐ মেয়েটার সাথে একা রাতে থাকবে নাকি?…যদিও ছেলেটা নীল তবুও পুরুষ মানুষ তো!)
ও কিছু বলার আগেই নীল ফোন রেখে দিলো।
নীল ফোন রেখে দিতেই নিশু ওর দিকে ভ্রু কুচঁকে তাকিয়ে আছে।
নীল:কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
নিশু:(নীলের সাথে যে রুশার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে আমি তো ভুলেই গেছিলাম)না কিছু না!(গম্ভীর গলায়)
নীল:সামনে এগোবে নাকি বসবে!
নিশু:সামনে এগোবো!(ঠান্ডা গলায়)
নীল:(হঠাৎ করে কি হলো?)তুমি কি ভয় পাচ্ছো?
নিশু:ভয় পাবো কেন?…তুমি কি বাঘ নাকি ভাল্লুক?
নীল:না মানে…
নিশু:কোন মানে না চলো আমরা এগোই?
নীল হতাশ হয়ে বললো…চলো!
দুজনেই হাটছে।,তবে আলাদা আলাদা।কিছুদূর যেতেই নিশু কিছু একটার সাথে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলো।
নিশু:আউচ!
নীল এগিয়ে গিয়ে ওর পাশে হাটুমুড়ে বসে জিজ্ঞেস করলো…কি হলো?
নিশু:পা টা মনে হচ্ছে মচকে গেছে একেবারে!(ব্যথায় ও কুঁকড়ে যাচ্ছে)
নীল:হাটতে পারবে!
নিশুর গেলো মেজাজ খারাপ হয়ে।দেখছে ও পায়ের ব্যথায় কুঁকড়ে যাচ্ছে তাও জিজ্ঞেস করছে হাটঁতে পারবে কি না?) ও রাগ করে বললো…পারবো!
নীল ওকে কোলে তুলে নিয়ে বললো..তেজ তো ভালোই!সোজাসুজি বললেই তো হয় কোলে নিতে হবে হাটঁতে পারবে না!এত তেজ দেখানোর কি আছে?
নিশু:আমি বলবো কেন?…তুমি বুঝতে পারছো না আমি ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছি!
নীল :আমার কেন বুঝতে হবে??…তুমি আমার কে হও যে তোমাকে আমার বুঝতে হবে?(মুচকি হেসে)
নিশু থমকে গেলো ওর কথা শুনে।আসলেই তো!…ও নীলের ওপর এত রাগ দেখাচ্ছে কিসের অধিকারে?
নিশু:না মানে আমি যেহেতু তোমার সাথে এসেছি সেহেতু আমার রেস্পন্সিবিলিটি তোমার!
নীল এবার ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসিফিসিয়ে বললো….রেস্পন্সিবিলিটি তো মানুষ বউয়ের নেয়!আমি কেন তোমার রেস্পন্সিবিলিটি নিবো?
নিশু:আমি এত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবো না!তোমার ইচ্ছে হলে চলো না হলে যা মন চায় তাই করো!
নীল:যা ইচ্ছে তাই করবো?…পরে আবার কিছু বলবে না তো!
নিশু:এই নামাও আমাকে নামাও?(ধমক দিয়ে)
নীল:আচ্ছা ঠিক আছে যাও আর কিছু বলবো না!(হাসতে হাসতে)
নীল ওকে কোলে নিয়ে অন্ধকারে হাটঁছে।দুজনেই চুপচাপ।
নিশু:তুমি রাগ করেছো?
নীল হাঁটা থামিয়ে দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
নিশু:না মানে তখন আমি তোমার সাথে তখন…
নীল আবার হাঁটা শুরু করতে করতে বললো…যদি বলি রাগ করেছি কি করবে?(মুচকি হেসে)
নিশু:সরি!
নীল:নট এক্সসেপ্টেড।
নিশু:তো কি করতে হবে?
নীল:সুন্দর একটা হাসি দাও তাতেই হবে!
নিশু লজ্জা পেয়ে গেলো ওর কথা শুনে।একা এতরাতে একটা ছেলে ওকে কোলে নিয়ে হাটঁছে অথচ ওর কোন ভয় লাগছে না।মনে হচ্ছে রাতটা শেষ না হলেই ভালো হবে!
নিশু:নীল??
নীল:বলেন??
নিশু:আর কতক্ষণ এভাবে কোলে নিয়ে হাঁটবে?
নীল:যতক্ষণ না শ্রীমতীর পায়ের ব্যথা না কমছে!
নিশু:পটানোর চেষ্টা করছো নাকি??
নীল:তোমাকে পটানোর কি আছে।নিজেকে এত ইম্পর্টেন্স দাও কেন😁?
নিশু:😐খবিশ একটা!
নীল:রাগ করে না হিসুবেবি!
নিশু:আরেকবার হিসুবেবি হিসুবেবি করলে তোমার মাথা ফাটিয়ে দিবো বলে দিলাম!
নীল:নিজে পা ভেঙে বসে আছে উনি নাকি আমার মাথা ফাটাবে!(হাসতে হাসতে)
রুশা এদিকে টেনশনে সারারাত ঘুমাতে পারে নি।সকালবেলা নীল আর নিশু ফিরেছে কিন্তু নীলের কোলে নিশুকে দেখেই ওর টেনশন আরো বেড়ে গেলো।নীল সবে নিশুকে কোল থেকে নামিয়ে একটা চেয়ারে বসিয়েছে রুশা গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো।
রুশা:সারারাত কোথায় ছিলে বলতো??…টেনশনে আমার মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো।
নিশু ওর দিকে চেয়ে আছে।রুশা নীলকে জড়িয়ে ধরাতে ওর যে কষ্ট হচ্ছে ওর বুঝতে পারছে।কিন্তু প্রকাশ করলো না।আয়াত আর ইশুও দাঁড়িয়ে আছে।
নীল রুশা ছাড়িয়ে বললো…সব বলবো আগে ফ্রেশ হয়ে নিই।এই মেডাম পা মচকে ফেলেছে সারারাত ইনাকে কোলে নিয়ে হেঁটেছি তারপর সকালে বাস ধরে এসেছি।এখন আমার হাতে ব্যথা করছে!(নিশুর দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে)
রুশা:মানে??(নিশুর ব্যবস্থা আমিই করবো?নীলের সাথে একে বেশি মেলামেশা করতে দেওয়া যাবে না)