আমার ক্রাশ বর !! Part- 24
অনু রেগে গিয়ে আরিয়ানের লেপটপ টা টান দিয়ে নিয়ে ছুরে ফেলে দেয়।
আরিয়ান লেপটপের দিকে তাকিয়ে বলে, “আহারে আমার কতো সাধের লেপটপ ছিলো,আর কতো ডকুমেন্ট ছিলো ওর মাঝে এভাবে ফেলে দেওয়ার কোনো মানে হয় না “।
অনু বলে,”শুধু লেপটপ ফেলে দেওয়া টা ভুল হয়েছে লেপটপের মালিক কে ছুড়ে ফেলে দেওয়া উচিৎ ছিলো “।
আরিয়ান বুঝতে পারে না অনু এতো রেগে আছে কেনো,
কারণ বোঝার জন্য অনুর দিকে তাকিয়ে তো আরিয়ান অবাক। আল্লাহ গো আমার বউ এতো সাজুগুজু করছে কেনো?
অনু বল,”ভাবছিলাম অনেক কিছু এখন কি আর করার বর যখন নিরামিষ তখন তো অন্যদিকে চান্স নিতে হবে “!
আরিয়ান বলে,”তা এতো সেজেগুজে কাকে খুন করার ইচ্ছা আছে আমার গুণ্ডি বউ “?
অনু বলে,”ছিলো তো বরের সাথে রোমান্স করার শখ। সে সাধ আমার মিটে গেছে।
অারিয়ান বলে,”হায় আল্লাহ কিছু করলাম না তার আগেই সাধ মিটে গেছে “?
অনু : জ্বি হ্যা মিটে গেছে।কষ্ট করে যখন সাজুগুজু করেছি তা তো আর নষ্ট করতে পারি না।
তাই বলে অনু আরিয়ানের পাশ থেকে উঠে বাহিরে যাচ্ছে আর বলে,”যাই দেখি রাজের সাথে রোমান্স করে আসি “।
আরিয়ান ওমনি অনুর হাত ধরে এক টান দিয়ে নিজের কোলের উপর অনুকে এনে বসিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,,”আমি থাকতে আমার বউ শয়তানের কাছে যাবে তা কি হতে পারে “?
অনু বলে,”তা এভাবে ধরার কি দরকার আমার মুড পুরা খারাপ করে দিছেন আপনি”।
শয়তান রাজ কে কতো গর্বের সাথে বলে,” আসছি খুব তাড়াতাড়ি চাচা হবে,
আমার সে গুড়ে বর বালি দিয়ে দিছে”।
আরিয়ান :আল্লাহ গো আমি তো জানিনা আমার বউটার বেবি লাগবে।
যে এখনো ভালবাসি বলে নাই তার মনে এতো কিছু ভাবা যায়।
অনু নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে আর বলে,”লাগবে না আমার কোনো কিছু,,
না আপনার ভালো বাসা, না আপনার বেবি “!!
আরিয়ান :Sorry my dear wife. এখন আর তা সম্ভব না।আমি তো বাবা হবো এটা ১০০% শিউর।তাই তোমার কোনো কথা এখন আর কাজে লাগবে না।
অনু বলে,”থাক রোমান্স অাপনাকে দিয়ে হবে না,
ঐ রাজ লুচ্চা ভালো রোমান্স করতে পারবে”।
আরিয়ান আর অনুকে কোনো কথা বলতে না দিয়ে অনুর ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নেয় তারপর অনেক সময় পর ছেড়ে দেয়।
অনু দিকে নেশাময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আরিয়ান আস্তে আস্তে অনুর গলায় ঠোঁট দিয়ে স্পর্শ করতে থাকে।
অনুকে এমন করে অারিয়ান যতো বার গলায় কিস করে ততো বার সে কেঁপে কেঁপে উঠতে থাকে।
তারপর আর কিছুই বলতে পারলো অনু আর কিছু বলে ওঠার আগে আরিয়ান নিজের ঠোঁট দিয়ে অনুর গোলাপি ঠোঁট জোড়া আবারো
আবদ্ধ করে নেয়। অনেক সময় পরে আরিয়ান অনুর ঠোঁট জোড়া ছেড়ে দেয়।
আরিয়ান অনু দুজনেই বেশ জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকে।
আর দুজনে কি মনে করে যেনো হাসতে থাকে,,
অনু তো লজ্জায় মাথা নিচু করে রাখে আর উঁচু করে তাকাতেই পারছেন না।
তারপর আবার আরিয়ান অনুকে কোলে করে বিছানায় নিয়ে যায়।।।
অনুকে আরিয়ান আজ আদরে আদরে ভরিয়ে দিতে থাকে।
অনু নিজের ভালবাসার মানুষের কাছে নিজেকে সিক্ত করার জন্য পুরোপুরিভাবে বিলিন করে দেয়।
আজ ওদের ভালবাসার পূর্ণতা পাচ্ছে,,
রাতের যতো গভীরতা বাড়ছে তার সাথে ওদের ভালবাসার গভীরতা বাড়তে থাকে।।
(এতো জানতে নাই)
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অনু আরিয়ানের বুকের মাঝে নিজেকে দেখে লজ্জায় লাল হয়ে যায়।
কিন্তু রাতের কথা ভাবতেই ঠোঁটের কোণায় হাসি চলে আসে।দু হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রাখে।
তারপর অনু মাথা নিচু করে ঘুমন্ত আরিয়ান কে চুপচাপ দেখতে থাকে,,
আর ভাবে কে বলবে এ খুব রাগী, বজ্জাত, ফাজিল, নিরামিষ টা আমার পুরা পৃথিবী ।।
অনুর সব ভাবনার মাঝে জল ঢেলে দিয়ে আরিয়ান চোখ বন্ধ রেখে বলে,”ওঠে ওগো আমার ডেঞ্জারাস সুন্দরি বউ এভাবে তাকিয়ে দেখো না গো খুব লজ্জা করে।
তারপর আরিয়ান চোখ খুঁলে অনুর হাত ধরে এক টান দিয়ে নিজের বুকের মাঝে নিয়ে আসে।
আরিয়ান বলে,”কি সারারাত দেখে মন ভরে নাই,,এতো আদর সোহাগ করার পর ও মনে মনে গালি দিচ্ছিলে”?
অনু বলে,”থাক এতো দেখাদেখির দরকার নাই আমার,আর গালি কেনো দিবো মনে মনে ভালোবাসার প্রকাশ করছিলাম তো “!!
অারিয়ান বলে,”বাহ এতো ভালবাসা আগে দেখি নাই সব মনে মনে বুঝি? দেখাও দেখি একটু নমুনা”।
অনু বলে,”হয়েছে ছাড়ুন আমি ফ্রেশ হতে যাবো”।
আরিয়ান বলে,”চলো একসাথে যাবো”।
অনু বলে,”আপনাকে তো আমি খুব ভালো ভাবছিলাম এখন তো দেখি পুরা ফাজিলের হাড্ডি”।
তারপর অনু আরিয়ান কে ধাক্কা দিয়ে উঠে সোজা বাথরুমে চলে যায়।
আরিয়ান অনুর জন্য ড্রেস নিয়ে বাথরুমের দরজায় নক করে বলে,”আমার ডেঞ্জারাস সুন্দরি বউ ফ্রেশ হয়ে কি ঐ ভাবে বাহিরে আসার ইচ্ছা আছে না কি “?
অনু বাথরুম থেকে বলে,”একদম না,আমার বর বাহিরে আছে। আর সে যদি লুচ্চামি করতে চায় তাহলে আমি রাজের কাছে চলে যাবো”।
অারিয়ান বলে,” আল্লাহ গো আল্লাহ,বউয়ের সাথে রোমান্স যদি লুচ্চামি হয় তাহলে প্রেম করাকে কি বলে”? আর কথায় কথায় রাজ নাম টা নিবা না just mind it ok.
অনু দরজা খুলে আরিয়ানের হাত থেকে ড্রেস নিয়ে নেয়।তারপর দরজা বন্ধ করে বলে,” নিলাম না শয়তান রাজের নাম।হুহ”
এইভাবে ভালোবাসা আর ভালো লাগার মাঝে ওদের জীবনের সুখেরদিন কাটতে থাকে।
আর অনু এসবের মাঝে অনেক রাজের খচ্চর গিরি সহ্য করতে থাকে।
‘
‘
‘
কিছুদিন পর একদিন সকালে,,,
অনু নিচে এসে রান্নাঘরে সবার জন্য নাস্তা বানাতে থাকে।
তারপর টেবিলের উপর সব কিছু রেডি করতে থাকে।
তখন সেখানে রাজ চলে আসে।
সে এসে অনুর হাত ধরে।
অনু এক ঝটকানি দিয়ে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়।
তারপর রাজ বলে,”হাই অনু, বেপার কি অাজ অনেক খুশী মনে হচ্ছে “?
অনু বলে,” জ্বি, কি করবো বলেন,আসে পাশে আপনার মতো শয়তান থাকলে কি নিজের খুশী ও প্রকাশ করা যাবে না”।
রাজ বলে,,”আমাকে ডাইরেক্ট শয়তান বলছো,আমার শয়তানি সম্পর্কে তোমার কোনো ধারণা নেই বুঝেছো জানেমন “।
অনু বলে,”আপনার ও আমার সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই আমি কি জিনিশ বুঝেছেন, অনেক করছেন খচ্চরগিড়ি এবার আপনার দিন শেষ”।
রাজ :এই জন্য তো তোমাকে আমার ভালো লাগে,কতো Attitude তোমার মাঝে উফফ।
I like you.
অনু : I just hate you, mister Raj.
রাজ বলে,”তা তুমি আমাকে ঘৃণা করো না কি এই নামটা কে ঘৃণা করো “?
অনু বলে,”অবশ্যই আপনাকে ঘৃণা করি”।
রাজ :উফ নামটাকে ঘৃণা করলে খুব বেশি খুশী আমি হবো।
অনু :আমি আপনাকে খুশী করার জন্য এখানে বসে নাই। এ বাড়িতে মেহমান হয়ে আসছেন মেহমান হয়ে থাকবেন তাহলে খুশি হবো।
ফুপু এসে চিৎকার শুরু করে,” এই মেয়ে তোমার এতো সাহস তুমি আমার ছেলেকে মেহমান বলে খোঁটা দিচ্ছো”?
তখন বাড়ির সবাই সেখানে চলে আসে।
আরিয়ান এসে অনুর পাশে দাঁড়িয়ে অনুর হাত ধরে রাখে।
অনু বলে,”আপনি মৌ রাজ সবাই এবাড়ির মেহমান, কথাটা ভুলে যাবেননা। আর এটা আমার বাড়ি তাই এই মেয়ে সেই মেয়ে বলবেন না,আমি এই বাড়ির বউ। কথাটা মাথায় ভালো করে ঢুকিয়ে রাখবেন।
রাজ বলে,”তোমার সাহস হয় কি করে আমার মা কে এভাবে অপমান করার “?
অনু বলে,”আমি অপমান করি নাই,যা সত্যি শুধু তাই বলেছি, এসেছেন বেড়াতে ভালো মতো থাকবেন খাবেন সময় হলে চলে যাবেন। আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে অপমান করবেন অসম্মান করবেন তা কখনো মেনে নিবো না।just mind it.
রাজ :আমার মাকে অপমান করার ফল কিন্তু ভালো হবে না,এটা মনে রাখবে।
আরিয়ান রাজের শার্টে কলার ধরে বলে,”আমার সামনে আমার বউ কে হুমকি দেওয়ার এতো সাহস তোকে কে দিয়েছে “?
রাজ বলে,”তোর জীবন টা নষ্ট করতে আমার সাহসের দরকার হয় না,তা করতে তুই সাহায্য করবি “।
আরিয়ান রাজ কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
ফুপু তার ছেলের কাছে গিয়ে রাজ কে উঠিয়ে বলে, “আমাদের এভাবে অপমান করে তুই ঠিক করছিস না আরিয়ান, আমরা থাকবো না তোদের বাড়িতে চলে যাবো।এখুনি এ বাড়ি থেকে।
ফুপু তাদের সব কিছু নিয়ে বাহিরে চলে আসে,মৌ কে আসতে বললে,
মৌ বলে, “আমি যাবো না তোমাদের সাথে,যে নিজের ছেলের অন্যায় দেখেও কিছু বলে না,তাদের সাথে থাকতে আমার রুচিতে বাধে “।
ফুপু বলে,”তাহলে থাক তুই আমি থাকবো না বাড়িতে যেখানে আমার ছেলের সম্মান নেই”।
রাজ যাবার সময় অনুকে বলে,”অনু তুমি কি একটা কথা জানো আমিও রাজ তোমার বর ও রাজ।কেনো রাজ নামকে ঘৃণা করে,,
আর ওর দশ বছর বিদেশ কেনো থাকতে হয়েছে সে ইতিহাস টা শুনে নিও একবার,,
যদি ওর বলার মুখ থাকে তাহলে বলবে,,
ওর জীবনের কালো অতীত শুনে নিও”।
তারপর আরিয়ান অনুকে কিছু না বলে সোজা বাহিরে চলে যায়।
রাজ তো চলে যায়,,কিন্তু অনুর মনের মাঝে তো হাজার প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
দুই ভাইয়ের নাম রাজ কিভাবে।
আর দশ বছর আগে বা কি হয়েছে তা জানতে হবে।
কিন্তু কি ভাবে জানবো কে বলবে।
(আজ আমার কিছু বলার নাই😷😷😷)
‘
‘
‘
চলবে….