আমার ক্রাশ বর !! Part- 23
এমন সময় কেউ একজন এসে অনুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
হঠাৎ এভাবে কেউ জড়িয়ে ধরাতে অনু একটু চমকে ওঠে,,তারপর নিজেকে শক্ত করে,,
কে এমন সাহসী তাকে দেখতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে,” একটা স্মার্ট সুর্দশন ছেলে হিরোদের স্টাইলে দাঁড়িয়ে অনুকে দেখে হাসছে”।
অনু কোনো কথা না বলে, “ছেলেটার ফর্শা গালে নিজের নাজুক হাতের পাঁচ আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে দেয় “মানে হচ্ছে কোনো কথা না বলে কষে এক থাপ্পড় দিয়ে দেয়।
তারপর অনু জোড়ে চিৎকার করে বলে,How dear you? আমাকে স্পর্শ করার সাহস কে দিয়েছে আপনাকে বলে,” ছেলেটার কে আবার থাপ্পড় দিতে যাবে তার আগে ছেলেটা অনুর হাত ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়”।
অনুর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,” l like your attitude. I love this baby!!
অনু বলে,,”আমাকে পছন্দ করার মতো কিছু নাই আমি কোনো খেলনা নই যে যার পছন্দ হবে সেই আমাকে পাবে “!!
ও দিকে আরিয়ান অনুর চিৎকার চেঁচামেচি শুনে তাড়াতাড়ি ছুটে রান্নাঘরে চলে আসে।
এসে দেখে রাজ অনুকে নিজের সাথে মিশিয়ে রাখছে।
অনু নিজের পা দিয়ে রাজের পায়ে জেড়ে একটা লাথি দিয়ে দেয়।
তার জন্য রাজ অনুকে ছেড়ে দেয়।
অনু সমানে আরিয়ান কে দেখে ছুটে গিয়ে
আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে।
আরিয়ান চিৎকার করে বলে,”তোর সাহস কি করে হয় অনুর সাথে খারাপ ব্যবহার করার “।
রাজ বলে,,”রাজের যা কিছু সব কিছু তো আমার তাই না!! আর তোর বউয়ের উপর তো আমারো অধিকার আছে”।
এমন সময় সবাই সেখানে চলে আসে।কি হয়েছে জানতে চায়।
আরিয়ান বলে,”রাজ আসতে না আসতে ওর খারাপ রুপ দেখাতে শুরু করেছে।
আর ও ভুলে গেছে আমার সব কিছুতে ওর।অধিকার থাকলেও অনুর উপর কোনো অধিকার নেই “?
অনুর শাশুড়ি বলে,,”রাজ এটা ভুলে যাবে না যে তোমরা আর ছোট নেই।বড় হয়েগেছো।
এখন আর তোমাদের ভুলের জন্য ছোট শাস্তি দেওয়া হবে না”।
আয়াত বলে,”আচ্ছা রাজ ভাই আসলো কখন আর অনু ভাবী কে বা চিনলো কি ভাবে “?
মৌ উঠে বলে,”আমি সেদিন ভাইয়া ভাবীর বিয়ের ছবি রাজ ভাইয়া কে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম “!!
আরিয়ান একটা রাগি লুক নিয়ে মৌ এর দিকে তাকিয়ে থাকে,,মনে হয় পারলে এখুনি মৌ কে ওর রাগী চোখ দুটা দিয়ে গিলে খাবে।
আরিয়ানের রাগি চোখ দুটা দেখে মৌ খুব ভয় পেয়ে যায়।
ফুপু এসে বলে,”আমার ছেলে ভোরে আসছে,,
আর রাজ দেবর হয় ভাবীর সাথে একটু ফাইজলামি করেছে তাতে কি এমন হয়েছে”?
অনু বলে,,”আপনার ছেলেকে বলে দিবেন আমার থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে না হলে একদম মাটির নিচে গুম করে দিবো তখন খুঁজেও পাবেন না “।
ফুপু বলে,”তোমার তো সাহস কম না আমার সামনে আমার ছেলেকে হুমকি দিচ্ছো”??
অনু বলে,”এই অনু কাউকে হুমকি দেয় না,,যা বলে তা করার ক্ষমতা রাখে,,,ভুলে যাবেন না আমি খান বাড়ির মেয়ে আর চৌধুরী বাড়ির বউ এখন “!
রাজ বলে,”উফফ মা একটা সাধারণ মেয়ের কথায় তুমি এইভাবে সিনক্রিয়েট করো না তো।চলো তো পড়ের কাহিনী পড়ে দেখা যাবে”।
আরিয়ান কে বলে,”আরি তোর বউটা কিন্তু আমার সেই পছন্দ হয়েছে।তাছাড়া রাজ রাজের সব কিছু পাবে এটাই নিয়ম
রাজের এই কথা গুলা মনে হয় আরিয়ানের গায়ে একদম কাঁটাদেওয়ার মতো লাগছিল।
আরিয়ান সেখানে থেকে সোজা অনুকে নিয়ে রুমে চলে আসে।
অনুকে জড়িয়ে ধরে বলে,”একদম ঐ রাজের থেকে দূরে থাকবে,,আমার সাথে সব সময় থাকবে।তোমার ছায়াটাকেও আমার থেকে দূরে করবা না।
অনু বলে,”আমাকে নিয়ে এতো ভয় করতে হবে না,,আর এতো কেয়ার কেনো গো বর সোনা “?
আরিয়ান আজ বলে,”কারণ আমি নিজের থেকে বেশী ভালোবাসি তোমাকে। জানিনা কখন কিভাবে তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি আমি”।
অনু তো মনে মনে সেই খুশি,”আল্লাহ গো আমার বর টা আমাকে ভালোবাসে।।
তাহলে আমিও বলে দিবো আমিও তাকে ভালোবাসি ”
অারিয়ান তারপর অনুর কপালে চুমা দিয়ে বলে,
“শোনো রাজ কিন্তু ভালো না,,খুব খারাপ ভুল করেও ওর কোনো কথায় বিশ্বাস করবা না “।
অনু বলে,”আচ্ছা সে এমন কি করেছে জানতে পারি “?
আরিয়ান বল,”তুমি আমার বউ তোমাকে না বললে কাকে বলবো!! পরে বলবো, এখন চলো অফিসের জন্য দেড়ি হয়ে যাচ্ছে”।
তারপর দুজন আজ এক সাথে অফিসে যায়।
অফিসে গিয়ে আরিয়ান চিন্তা মুক্ত হয়ে কাজে মন দেয় যে অনু অফিসে সেফটি থাকবে।
অনুও তার কাজ মন দিয়ে করতে থাকে।
দুপুরবেলা লাঞ্চের সময় অনু তাড়াতাড়ি আরিয়ানের কেবিনে গিয়ে দুজনের জন্য খাবার রেডি করে। আজ প্রথম এক সাথে খাবার খাবে দু জন ভাবা যায়।
এদিকে দিশা এসে বলে,”স্যারের কেবিনে তুমি কি করছো”?
অনু বল,”তোমার স্যারের সাথে প্রেম করবো Any problem সোনা “?
দিশা :কি ফালতু মেয়ে তুমি স্যার বিবাহিত জেনে শুনে তার সাথে পরোকিয়া করতে মুখ উঠায় চলে আসছো, লজ্জা করে না??
অনু বলে,,”উঁহু কিসের জন্য লজ্জা করবে,,আমার নাক আছে না কি যে লজ্জা থাকবে “।
এমন সময় আরিয়ান বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে হাত মুখ মুছতে এসে এসব কথা শুনে হাসতে শুরু করে,,
অনু আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দেয়।
আরিয়ান বল,”দিশা তুমি যাও অনুর সাথে কথা বলে পারবে না”?
দিশা :দেখেন স্যার, মেয়েটা কি সব উল্টা পাল্টা কথা বলে,আপনার সাথে না কি পরোকিয়া করবে।
আরিয়ান বল,”অনু তুমি প্রেম করতে পারবে কিন্তু পরোকিয়া করবা এটা কি ভাবে সম্ভব”?
অনু এবার আরিয়ানের কাছে গিয়ে দিশার সামনে জড়িয়ে ধরে বলে, “যারা জানে না আমি তোমার বউ তাদের জন্য তো আমাদের প্রেম টা পরোকিয়া এক চোখ টিপি দিয়ে বলে “!
দিশা বউ কথাটা শুনে অবাক হয়ে যায়।
আরিয়ান দিশার বেপার টা বুঝতে পেরে বলে,”অনু আমার বউ,তাই ওর যা ইচ্ছা আমার সাথে করতে পারে”।
দিশা :sorry sir,sorry mam আমি জানতাম না যে অনু ম্যাডাম আপনার বউ!!
অনু বলে,”It’s ok.তুমি এখন আসতে পারো।
দিশা চলে যায়।
অনু আজ নিজের হাতে আরিয়ান কে খাবার খাওয়াই দেয়।
আরিয়ান তো সেই মজা করে খাবার গুলা খেয়ে নেয়।
তারপর অফিস শেষে দুজন আজ বাড়িতে যায় না।বাহিরে একটু এক সাথে ঘুরাঘুরি করে।
আরিয়ান রাস্তাধারে গাড়ী পার্ক করে অনুকে ফুসকা খাওয়ায়,আইসক্রিম, ঝালমুড়ি সব কিছু দুজন এক সাথে খায়।
হঠাৎ একটা নির্জন রাস্তার পাশে এসে আরিয়ান গাড়ি থামিয়ে অনুকে গাড়ির বাহির দাড় করিয়ে চোখ বন্ধ করতে বলে,”অনু চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে থাকে “।
আরিয়ান একটু পর অনুকে চোখ খুলতে বলে।
অনু চোখ খুলে দেখে আরিয়ান হাটুগেড়ে বসে,ওর সামনে সাজানো একটা চকলেট ভর্তি ঝুড়ি ধরে আছে।
অনু তো এমন কিছু কল্পনাও করতে পারছিল না।
আরিয়ান বলে,,”আমি তোমাকে ভালবাসি, আজ থেকে কি আমরা আমাদের সম্পর্ক টা কে নতুন করে শুরু করতে পারি? যদি তুমি রাজী থাকো তাহলে সব চকলেট তোমার”।
অনু আরিয়ানের হাত থেকে চকলেট গুলা সব নিয়ে বলে,,yes, I accept your proposal!! & I love you to
আরিয়ান উঠে অনুকে জড়িয়ে ধরে বলে,” ধন্যবাদ তোমাকে সোনা বউ আমার”।
তারপর দুজন সেখানে থেকে গাড়িতে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
অনু মাঝ পথে জিজ্ঞাস করে,”আচ্ছা এভাবে চকলেট দিয়ে কেনো প্রপোজ করলে আমাকে “?
আরিয়ান বলে,”সবাই তো ফুল দিয়ে করে আমি না হয় একটু অালাদা ভাবে প্রপোজ করলাম তোমাকে।
অনু বলে,”হুম দেখতে হবে তো বরটা কার “।।
আরিয়ান বলে,,”আবার কার অবশ্যই আমার বউয়ের”।
তারপর দুজন বাড়িতে চলে আসে,,সবাই একসাথে খাবার খেয়ে যে যার রুমে চলে যায়।
আরিয়ান আগে রুমে যায় কিছু কাজ আছে তাই।
অনু নিচে শাশুড়ি কে সাহায্য করার পরে নিজের রুমে যাবার সময় রাজ ওর সামনে এসে বলে,”তা তোমাদের বিয়ের অনেকদিন মাস তো হয়ে গেছে “?
অনু বলে, “তো কি হয়েছে “?
রাজ :আরিয়ান যে টাইপের ছেলে তাতে তোমাকে যে স্বামীর সুখ দিয়েছে কি না তাতে আমার সন্দেহ আছে?
অনু :একটু হেসে বলে,,মিস্টার রাজ আপনাকে এতো চিন্তা করতে হবে না,,কয়েকদিন পর আপনি চাচা হবেন,,তখন জানতে পারবেন।
বলে সেখানে থেকে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দেয়।
তারপর আলমারি থেকে একটা সুন্দর লাল রঙ্গের শাড়ী নিয়ে বাথরুমে যায়।
তারপর মনের রং তুলি দিয়ে সাজুগুজু করে আরিয়ানের পাশে এসে বসে।
আরিয়ান লেপটপে মুখ ডুবিয়ে তখনো কাজ করছিল।
অনুর দিকে না তাকিয়ে না দেখেই বলে কিছু বলবে আমাকে ??
যদি কোনো কিছু না বলার থাকে তাহলে যাও অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো!!
অনু রেগে গিয়ে সোজা ….
(অনু কি আর করবে ঘুমিয়ে যাবে।সালা কেউ রোমান্টিক না।না লেখিকা না অনু আরিয়ান 😂😂)
‘
‘
‘
চলবে…..