সবসময় কি এমনই হয়

সবসময় কি এমনই হয় !! Part- 02

তারপর তীক্ষ্ণ নজরে গভীরভাবে ওকে দেখতে লাগলো।
চিকন, ঘন আর প্রশস্ত এক জোড়া ভ্রু নিচে বড় বড় পাপড়ি বেষ্টিত দুটি চোখ। সবাই বলে, গোলাপি ঠোঁটই নাকি সুন্দর। নাহহ!! ডার্ক রেড কালার ঠোঁট থেকে গোলাপি সুন্দর হতেই পারে না। ধবধবে সাদা চেহারায় এই রক্তিম বর্ণ ঠোঁট তাকে আকর্ষণ করে। প্রচুর আকর্ষণ!!

সাধারণভাবে ও সুন্দরী। অসম্ভব রকমের সুন্দরী। কিন্তু যখন বড় বড় চোখ গুলো আরো রসগোল্লা বানিয়ে ঠোঁট উল্টিয়ে তাকায়। তখন তো ইচ্ছে করে খেয়েই ফেলতে। প্রচণ্ড রকমের কিউট লাগে।আবার ওর চেহারায় অন্য রকম একটা মায়া খুঁজে পায় ফারহান। এই মায়াতেই তো সে আটকা পড়েছে এর ঘোর কাটানো কঠিন। খুউউব কঠিন…………।

আচ্ছা! ফারিয়াকে নির্দিষ্টভাবে কি বলা যায়? সুন্দরী! কিউট! না মায়াবতী!!
সব, সব এবং সব।

🖤

অ্যালার্মের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গে ফারিয়ার। পাশের ছোট টেবিল থেকে এলাম ঘড়িটা হাতে নেয় ও‌‌। 03:20 বাজে। তাহাজ্জুদের জন্য এলার্ম দিয়েছিল। মাথাটা কেমন ঝিম ধরে আছে। ধীরে ধীরে ওর মনে পড়ে রাতের ঘটনা গুলো।
ইওওও………. ফারহান ভাই শার্টবিহীন আমার সামনে!! আর আমি……………
আচ্ছা ওইটা ঠিক কি রকমের ফিলিংস ছিল!
ভয়…….নাহ! তাহলে বিরক্তি……….? তাও না!! তাহলে কি??
লজ্জা আর অসস্তির মিশ্রণে একটা ফিলিংস।

বারো রাকাত সালাত আদায় করে নেয় ফারিয়া।বারান্দার দরজাটা চাপানো। ভাইয়া কখন চলে গিয়েছিল! ও ধির পায়ে হেঁটে বারান্দায় আসে। সামান্য উঁচু স্টিলের গ্রিলে হাত রেখে উবু হয়ে তাকায় নিচের দিকে। কেন যেন মনে হচ্ছে ফারহান ভাইয়া এখন আসলে ভালো হতো। একটা বার দেখা যেত। জাস্ট একটা বার।
ওয়েট!! ভাইয়ের কথা কি তাহলে সত্যি হয়ে গেল? ও কি ভাইয়াকে ভালবেসে ফেলেছে! নাহলে মিস করছে কেন ভাইয়াকে!! কেন ভাইয়াকে একটা বার দেখার জন্য মনটা আকুপাকু করছে!! তাহলে কি আমি অন্য মেয়েদের মতো ভাইয়ার বডি দেখে তার জন্য পাগল হয়ে গেছি??
ছিঃ মনটা বিষিয়ে যায় ফারিয়ার।

🖤

ফারিয়া যখন ক্লাস নাইনে পড়ে তখন ওকে ফাস্ট দেখেছিল ফারহান। প্রচুর বৃষ্টি ছিল সেদিন। ভিজে জবজবে হয়ে রাস্তার পাশে গাছের নিচে আশ্রয় পাবার চেষ্টা করছিল। কার ড্রাইভ করে খালামণির বাড়িতে যাওয়ার পথে রাস্তায় বোরকা পড়া অসহায় মেয়েটিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কড়া ব্রেক কষেছিল ফারহান। গ্লাস নামিয়ে লিভ লাগবে কিনা জিজ্ঞাসা করেছিল। তখন ফারিয়া প্রচন্ডভাবে মাথা নেড়ে নিষেধ করে। আর সাথে সাথেই নাটকীয় ভাবে প্রচন্ডভাবে বিজলী চমকে ঠাডা পরে। ফারিয়া তখন তাড়াহুড়ো করে বলে উঠে, আমার বাড়ির সামনেই। একটু সাহায্য করবেন ভাই!
অন্যরকম মিষ্টি একটা কন্ঠ। তবুও ফারহান সশব্দে হেসে ওঠে। মুখে বলে, আসুন আসুন!!
ফারিয়া গাড়িতে উঠে বসার পরপরই গাড়ি স্টার্ট দেয় ফারহান। বাসার সামনে আসতেই পারে চেঁচিয়ে উঠে, এই যে ভাই থামুন! থামুন!!
গাড়ি থেকে নেমেই ফারিয়া ফারহানকে একটা থ্যাংকস জানায়। বাড়ির দিকে হাঁটা ধরলেই ফারহান বলে ওঠে, আপনার কন্ঠটা অত্যন্ত মিষ্টি। এই মিষ্টি কন্ঠের অধিকারীনির চেহারাটা কি একটু দেখতে পারি!?
ফারিয়া দৃঢ়ভাবে না বলে বাড়ির দিকে দ্রুত পা বাড়ায়। কিন্তু যাবে কোথায়! তার আগেই ফারহান থেকে ধরে, একটানে নিকাব খুলে ফেলে। থমকে যায় ফারহান। তারপর বলে, তুমি সুন্দর, অসম্ভব সুন্দর।
হাত একটু আলগা হতেই ফারিয়া দৌড় দেয়। ফারহান পেছন থেকে চিৎকার করে বলে, তোমাকে আমার অত্যন্ত পছন্দ হয়েছে। আর হুট করে আপনি থেকে তুমিতে আসার জন্য সরি।
……………………………

(চলবে)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *