The villain lover ।। পার্ট : ২৫ Last-part)
রুদ্র আবার বলতে শুরু করলো,
মামা ভয় পেয়ে গিয়েছিলো, এসব শোনার পর আমি মামাকে একদিন সরাসরি কথা বলে এসব জানতে চাই আর মামা ভয়ে সব বলে দেয় আর কেঁদে, কেঁদে আমার কাছে অনুরোধ করে যেন আমি এসব বিষয়ে কোনো বাড়াবাড়ি না করি।
আমি মামার কথা রাখি আর গোপন ভাবে নিজের কাজ করতে থাকি। আর তোমার যে বোন মানে শোভা, পালিয়ে গিয়েছিলো সে তোমার আপন বোন ছিলোনা, তাকে তোমার বাবা এতিমখানা থেকে এনেছিলো কিন্তু তার বিয়ের দিন এই মহিলা তোমার সেই বোনকে একটা অন্য একটা ছেলের হাতে তুলে দেয়, কারন মেয়েটাকে তোমার বাবা নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসতো আর তার বিয়ের পর তোমাদের সম্পত্তির হাফ শোভার নামে করে দিতে চেয়েছিলো।
তাই এই মহিলা এই কাজ করেছে,
কিন্তু যার হাতে তুলে দিয়েছিলো সে ছেলেটা ভালো ছিলো, কথা ছিলো শোভাকে কিছুদিন রেখে ছেড়ে দিবে কিন্তু তার আগেই সে ছেলে শোভার প্রেমে পরে যায়, আর শোভাকে বিয়ে করে নেয়।
শোভা তোমাদের সাথে দেখা করতে আসতে চেয়েছিলো কিন্তু মামা ওকে তোমার বাবার মাড়া যাবার কথা জানায়,আর সব ঘটনা জানায়। তাই শোভা আর আসেনি কিন্তু তোমাদের খবরাখবর রাখে একজন বড় বোনের মতোই। আর তোমার মামা মাঝে, মাঝেই ওর সাথে দেখা করতে যায়।
এই মহিলা সম্পত্তির জন্য সব করেছে আমি যখন পুরোটা ক্লিয়ার হয়ে যাই, তখন আমার কাছে কোনো প্রমান ছিলোনা যার ভিত্তিতে আমি তার খেলাপ কোনো তদন্ত করতে পারি।
তাই আমিও একটা প্লেন করি, আমার অফিসের এ লোকের সাহায্য নিয়ে সে ভিডিও বানাই, যা শত্রু সেজে তোমাকে পাঠাই। কারন আমি তোমাকে সরাসরি সব বলতে চাইলে তুমি আগেই ভেঙে পরতে আর তার জন্য বড় কোনো ক্ষতিও হতে পারতো, তাই আমি ইচ্ছা করে তোমাকে আমার বিরুদ্ধ করি, ভুল বুঝাই। আর আমার প্লেন মাফিক তুমি ভুল ও বোঝো। তারপর তোমাকে তোমার বাড়ি দিয়ে আসা, আমার তোমাকে ডিভোর্স দেয়ার কথা সবই ছিলো একটা প্লেন। আর সেদিন শপিং মলে আমার আর রোজার যাওয়ার কারন ও তুমি ছিলে সকালে আমি মামাকে বলি তোমাকে নিয়ে আসতে কারন আমি এই মহিলাকে বিশ্বাস করাতে চেয়েছি যে তোমার সাথে আমার দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে।আর তোমার শপিং মলে করা সেই সিনক্রিয়েট করাও চেয়েছিলাম আমি কারন আমি দেখছিলাম দূর থেকে এই মহিলা আমাদের দেখছে।
কিন্তু তুমি কান্নাকাটি করে নিজের আর আমার সন্তানের ক্ষতি করছিলে যা আমি মেনে নিতে পারছিলাম না, তাই এই খেলাটা আজই শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলাম আর আমি জানি যে সম্পত্তির জন্য এতোকিছু করেছে সে যখন জানবে সেই সম্পত্তি এখন এতিমখানায় ডোনেট হয়ে গিয়েছে তখন তার মাথা ঠিক থাকবেনা, আর দেখো আজ তাই হলো,
এই মহিলা সবার সামনে নিজের দোষ স্বীকার করলো।
– তার মানে এসব প্লেন ছিলো??? আমি তোদের কাওকে ছাড়বো না( চিৎকার করে বললো সেই মহিলা)
– আপনার আর কাওকে ছাড়া লাগবেনা, এখন পুলিশ আপনাকে ছাড়বে না,,
এতো পুলিশ ঘিরে ধরেছে মহিলাকে,আর কারাগারে বন্দি করার জন্য নিয়ে গিয়েছে তাকে।
ছোয়া বসে,বসে কাঁদছে। তাদের সাথে বড় ধোকা হবে কখনো ভাবতে পারেনি সে,
– ছোয়া যা হয়েছে তা হয়েছে, এতে তোমার কোনো দোষ নেই। এখন তোমাকে দোহার খেয়াল রাখতে হবে।
ছোয়া রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো,
– আমাকে মাফ করে দিন আমি আপনাকে অনেক ভুল বুঝেছি অনেক কষ্ট দিয়েছি।
রুদ্র ছোয়াকে শক্ত করে ধরে রাখলো,
– আরে তোমরা তাড়াতাড়ি ওঠো,( রোজা) ওদিকে সব রেডি। এখনি তোমাদের বিয়ে হবে।
– ছোয়া মাথা উঠিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
মানে?? (আমাদের বিয়ে)
– হুম কাল তোমাকে বললাম না আজ আমার বিয়ে, হ্যা আজই তো তাড়াতাড়ি ওঠো।
– মানে আপনি এসব কি বলছেন আমিতো কিছুই বুঝতে পারছিনা,
– আরে বোকা মেয়ে, আমাদের বিয়ে তো ধর্মীয়ভাবে অনেক আগেই হয়ে গিয়েছিলো কিন্তু রেজেস্টি করে তো হয়নি। তাই আজ সেটাও হয়ে যাবে,
– (ছোয়ার মুখে এক চিলতে হাসি) আপনিও না!
– হ্যা কি আমি? তোমার বর তাইতো, বলেই রুদ্র ছোয়াকে কোলে তুলে নিলো, আর ছোয়া লজ্জা।
তাদের রেজেস্ট্রি হয়ে গেলো, রুদ্রের বাবাকে ছোয়ার মামা আগেই সব জানিয়েলো তাই তারাও চলে এলো,,
রোজার সাথে ছোয়া খারাপ ব্যাবহার করেছে তার জন্য ও মাফ চেয়ে নিলো,,
৫ মাস, পর!!
রুদ্র বাহিরে বসে আছে আজ ছোয়ার ডেলিভারি পেইন উঠেছিলো সাথে সাথেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে রুদ্র বাহিরে বসে আছে চিন্তায় যেন হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে, এক দিকে নতুন কারো আসার আনুন্দ আরেকদিকে কাওকে হারানোর ভয়। কারন এ কটা মাস ছোয়া বেশ অসুস্থ ছিলো আর লাস্ট কোটা দিন কিছুই মুখেই দিতে পারতো না, তাই রুদ্রের চিন্তা যেন হাজারগুন বেড়ে গিয়েছিলো।
আজ যেন ছোয়া নিজেই ব্যাথায় কাতরিত হচ্ছেনা সাথে, সাথে রুদ্রের বুকের ভেতরেও ব্যাথা অনুভব হচ্ছে,,
ওটি থেকে নার্স বেড়িয়ে আসলো,,
– স্যার আপনার ফুটফুটে একটা মেয়ে হয়েছে,,
– (রুদ্র দাঁড়িয়ে পরলো) আর আমার ওয়াইফ??
– সে ও ভালো আছে কিছুক্ষন পর তাকে বেডে শিফট করা হবে,
সবাই যেন সস্থির নিশ্বাস ফেললো,,,
কেবিনে চুপ করে শুয়ে আছে ছোয়া, রুদ্র আস্তে আস্তে তার পাশে যেয়ে বসলো, ছোয়ার মুখটা আজ বড় নিষ্পাপ লাগছে ছোয়ার দিকে রাকিয়ে রুদ্র একটা কথাই ভাবছে আজ যদি ছোয়ার কিছু হয়ে যেতো তবে সে কিভাবে থাকতো, ভেবেই রুদ্রের চোখ থেকে দু- ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো, ছোয়ার হাতের ওপরে,
ছোয়া চোখ মেলেই দেখলো, রুদ্র পাশে বসে আছে, আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে,
– এই কাঁদছেন কেনো?
– রুদ্র এবার জোরে জোরেই কেঁদে দিলো,
– এই দেখো বোকার মতো কাঁদছে,
আচ্ছা আমাদের বাবুটা কই একটু নিয়ে আসেন।
– তোমার কিছু হলে,,,,
– চুপ আমি ঠিক আছি, এই শুনুন না? আমাকে আপনার বুকে নিন প্লিজ।
রুদ্র উঠে ছোয়াকে শক্ত করে বুকে চেপে ধরলো,
– villain টা আজ কাঁদছে কেনো?
– যার জন্য ভিলেন হয়েছি তাকে হারানোর ভয়ে,
– হ্যা তাই তো আমি মরে গেলে অত্যাচার কার ওপরে করতেন তাইনা?
– রুদ্র ছোয়ার মাথাটা উঠিয়ে,
আমি অত্যাচার করি?
– হুম করে তো রোমান্টিক অত্যাচার!!
বলেই ছোয়া রুদ্রের ঠোট নিজের ঠোট দিয়ে দখল করে নিলো,,,
এর মাঝেই ওদের বেবিকে নিয়ে সবাই আসলো,
– ছোয়া আর রুদ্র বেশ লজ্জা পেলো কারন ওরা একে অপরকে জড়িয়ে ছিলো,
রোদেলা বাবুকে ছোয়ার কোলে দিলো, আর ছোয়া বাবুর ছোট, ছোট হাত, পা গুলো দেখতে লাগলো আর বাবুর কপালে একটা চুমু দিলো,
– ভাইয়া আমার নতুন পুতুল।
– হুম লাল গোলাপ আমাদের সবার নতুন পুতুল,
রুদ্র আর দোহার কথা শুনে সবাই হেসে দিলো,,
(পূর্নতা পেলো ভালোবাসা, রাগ অভিমান ভুলে অবশেষ এক হলো রুদ্র আর ছোয়া, সবার জীবনে যেন এমনি ভালোবাসাময় সমাপ্তি হয়)
( ভালো থাকবেন আপনারা গল্পটা কেমন লাগলো জানাবেন, রুদ্রকে কেমন লাগলো জানাবেন আর ছোয়ার কথায়, কথায় চিল্লানোটা কেমন লাগলো জানাবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি আপনারা পাশে ছিলেন তাই হয়তো ভালো লিখতে পেরেছি। পাশে থাকার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। অনেক ভালোবাসা।💜 আর লেখিকাকে আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু।💜
WoW!!!Extremly its a heart touching story.I love this.Thanks to writter.
আসলে অনেক সুন্দর হয়েছে গল্পটা।
অনেক ধন্যবাদ এমন গল্পের জন্য।