1. নতুন গল্পঃ3. রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প গুলোঃলেখাঃ সানজিদা ইসলামহারিয়ে খুজবে আমায়

হারিয়ে খুজবে আমায় !! লেখাঃ সানজিদা ইসলাম

হারিয়ে খুজবে আমায়

স্বামীকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে যায় অনু। তার স্বামী একটি মেয়ের সাথে বিবস্ত্র অবস্থায় শুয়ে আছে। হঠাৎ দরজায় খোলার আওয়াজে দুজনেই ফিরে তাকায় ও চমকে যায়। তাড়াতাড়ি করে এলোমেলো ভাবে কাপড় নিয়ে মেয়েটি ওয়াশ রুমে চলে যায় অনুর স্বামী শাফিন কোন রকম কাপড় পরে অনুকে প্রশ্ন করে

(বিঃ দ্রঃ “( রহারিয়ে খুজবে আমায় !! লেখাঃ সানজিদা ইসলাম )” গল্পের সবগুলো পর্ব একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন)

শাফিন:অ…অন..অনু তু..তুমি আজকে? তোমা.. তোমার তো পরশু আসার কথা ছিল।

অনুর বুক ফেটে কান্না আসছে তারপরেও নিজে কান্না কে সংযত রেখে সে বলল,

অনু: কেন আজকে এসে তোমাদের এই অবস্থায় দেখে কি খুব বেশি সমস্যা করে দিলাম?

শাফিন: দেখো অনু আই ক্যান এক্সপ্লাইন..
এরই মাঝে ওয়াশরুম থেকে মেয়ে টি বেরিয়ে এল অনু আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারল না অঝোরে কান্না করতে লাগল আর আচমকা গিয়ে মেয়েটির গালে চর দিতে লাগলো আর চিল্লিয়ে বলতে লাগলো

অনু: এই মেয়ে তুমি কে?এখানে এভাবে কি করছিলে? আর কতদিন ধরে চলছে এইসব? তোমাদের লজ্জা করে না এসব করতে?

এইবার শাফিনের দিকে ফিরে, আপনার শরীরে এতই তেজ যে তিন দিন বাপের বাড়ি যাওয়াতে আর থাকতে পারছিলেন না,যে শরীরের তেজ মিটাতে পতিতা ঘরে তুললেন?
এইবার মেয়ে টি ফুসে উঠে বেশ ঝাঁঝালো কন্ঠে বলল,
মেয়ে: শাফিন তুমি চুপ করে বসে আছ কেন? তোমার স্ত্রী সেই কখন থেকে আমাকে যা তা বলে যাচ্ছে তুমি কি তাকে কিছু বলনি আমাদের সম্পর্কের কথা আর তোমাদের ডিভোর্স ব্যাপারে?
কথাটি শুনে অনুর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরল,

শাফিন:ইরা সোনা আসলে আমি সময় পাইনি ওকে বলার। আমি ঠিক করেছিলাম ও বাবা বাড়ি থেকে ফিরলেই ওর সাথে ডিভোর্সের ব্যপারে কথা বলবো।
এর আগেই..

অনু: ডিভোর্স কিসের ডিভোর্স শাফিন কি বলছে এই রাস্তার মেয়েটা, একটা রক্ষিতার কথায় তুমি আমা..ঠাসসসস
আর কিছু বলতে পারল না অনু তার আগেই শাফিন এলোপাথাড়ি মারতে লাগল,

শাফিন: তোর সাহস তো কম না তুই আমার সামনে আমার ইরাকে বাইরের মেয়ে বলছিস রক্ষিত বলছিস। আজকের পর আমি আর তোর মুখ দেখতে চাই না আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাবি সারা জীবনের জন্য আর কিছুদিনের মধ্যেই ডিভোর্স লেটার পেয়ে যাবি, বলে আর শাফিন ঘরে থাকলো না বাইরে বের হয়ে গেল।

এবার ইরা অনুর সামনে গেল
ইরা: দেখলে তো কার স্থান কোথায়, হুহ
তারপর ইরাও বের হয়ে গেল ঘর থেকে।

দরজার পাশে বসে কান্না করছে অনু ওঠার শক্তি টুকু নেই শরীরে এর আগে কখনো গায়ে হাত তোলে নি শাফিন। কখনো জোর গলায় কথা পর্যন্ত বলনি। আর আজ সব শেষ হয়ে গেল কি কমতি ছিল তার মধ্যে?

কিছুদিন ধরেই অনু শাফিনের ব্যবহার লক্ষ করছিল আগে অনু দুষ্টুমি করলে শাফিন খুশি হতো আর এখন বিরক্ত হয় । প্রত্যেকটা কাজে নানান ধরনের কথা সোনায় যার তার সাথে তুলনা করে আর খারাপ ব্যবহার করে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার মাফ চেয়ে নিত বলতো কাজের চাপে মাথা গরম থাকায় এরকম ব্যবহার করে। তাই অনু শাফিনের ব্যবহারগুলো মেনে নিয়েছিল।

শাফিন আর অনু বিয়ে ছিল প্রেমের বিয়ে। দুই বছর সম্পর্কের পর শাফিন আর অনু পালিয়ে বিয়ে করে। শাফিন বেকার থাকায় অনুর পরিবারের লোক তাকে মেনে নেয়নি। তাইতো 22 বছরের ভালোবাসাকে পায় ঠেলে শাফিনের হাত ধরে পালিয়ে গিয়েছিল ভেবেছে কিছুদিন পর সবাই মেনে নেবে আর মেনে নিয়েছিল তাদের বিয়ের এক বছর পর।

শাফিনের পরিবার বলতে ওর মা বড় ভাই ভাবি ছিল কিন্তু চাকরি হবার পর শাফিন আলাদা হয়ে যায়। অনুর শাশুড়ি অনুকে পছন্দ করতেন না। উঠতে-বসতে নানা ধরনের কথা শোনা তো।ভালো ব্যবহার করতেন না কিন্তু তবুও কখনোই তার মুখের উপরে কোন কথা বলেনি ,তার সব কথা মানতে চেষ্টা করতো অনু। যথেষ্ট সম্মান করতো অনু তার শাশুড়িকে।

শাফিনের ভাবির সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল অনুর।সম্পর্কে জা হলেও অনু আর রিধির সম্পর্ক ছিল দুই বোনের মত। অনু ভাবীর নাম রিধি।অনু বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান আর রিধি অনুকে নিজের ছোট বোনের মত স্নেহ করতো। আর শাফিনের বড় ভাই শাওন তাকে ছোট বোনের মত আদর করত।

বিয়ের এক বছর পর অনুর পরিবার মেয়েকে মেনে নেয় অনুকে তাই প্রায়ই যাওয়া-আসা করত কিন্তু থাকতে পারত না শাফিনের কারণে। তাঁর কথামতো অনুর বুকে মাথা রেখে না ঘুমালে তার ঘুম হয় না। তাই অনু সারাদিন তার বাবার বাসায় থাকলেও রাতে শাফিন তাকে নিয়ে যেত।

কিন্তু অনুর মায়ের শরীর খারাপ থাকার কারণে কিছু দিনের জন্য থাকতে গিয়েছিল।আর দুদিন পর আসার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যায় তারপর ডাক্তার দেখানো হলে ডাক্তার কিছু টেস্ট দেয়। রিপোর্ট পাওয়ার পর জানতে পারে অনু প্রেগন্যান্ট। তার জন্যই অনু শাফিনকে সারপ্রাইজ দিতে দুদিন আগেই বাসায় এসেছিল কিন্তু তারপর যা হল তার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা।

অনুর শরীরের আঘাতের থেকে মনের আঘাত টা বেশি ছিল সে শাফিনের এমন পরিবর্তন মেনে নিতে পারছে না।

বহুকষ্টে উঠে দাঁড়ালো অনু।তারপর বারান্দায় দোলনায় বসে পরলো।তার প্রেগনেন্সির খবর আর দেওয়া হলোনা শাফিনকে। শাফিনের সাথে কথা বলতেই হবে তার পর সে যাবে শাফিনের জীবন থেকে সারা জীবনের জন্য কিন্তু তার কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে শাফিনকে। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল অনু জানেনা।

অন্যদিকে শাফিন ভাবছে…..

One thought on “হারিয়ে খুজবে আমায় !! লেখাঃ সানজিদা ইসলাম

  • হারিয়ে খুজবে আমায়

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *