হিংস্র ভালোবাসা !! Part- 13
মেঘের কথা শুনে ফারহা ভয় না পেয়ে জানালা খুলে বাইরে তাকিয়ে দেখে সূর্যের প্রথম কিরন ,,ওহ তার মানে এখন যাষ্ট ভোর হলো জানালা থেকে চোখ সরাতে টেবিলের উপর বাজ টা চোখে পড়লো ততোক্ষনে মেঘ পিছুন থেকে ফারহা কে জরিয়ে ধরে কাধে বাইট দিতে থাকে ফারহা হাত দিয়ে বাজ টা হাতে নিয়ে মেঘ কে ধাক্কা দিয়ে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিয়ে সজোড়ে কপালে আঘাত করে বাজ টা ফেলে দিয়ে দৌড়ে সেখান থেকে ফারহা বের হয়ে যায়……
আমাকে যে ভাবে হোক বাড়িতে ফিরতে হবে ফারিহা কে খুজে বের করতে হবে …(ফারহা)
ফারহা কোন গাড়ি না পাওয়ায় দৌড়াতে থাকে ফারহা চারিদিক তাকিয়ে দেখে সব টাই অচেনা মনে হচ্ছে কাউকে যে জ্বিগাসা করবে জায়গাটার নাম কিন্ত রাস্তা পুরো ফাকা থাকায় তা আর সম্ভব হয় না হঠাৎ করে ফারহা দেখতে পায় একটা কালো গাড়ি ওর দিকে এগিয়ে আসছে ফারহা রিতিমতো ভয় পেয়ে যায় এটা ভেবে মেঘ ওকে খুজতে বের হয়েছে কিনা ,,গাড়ি টা ফারহার সামনে থেমে যায় ফারহা কিছু না ভেবে দৌড় দিতে যাবে ঠিক সেই সময় অন্য কারোর গলার আওয়াজ পেয়ে থেমে যায় ফারহা পিছুনে ফিরে তাকিয়ে দেখে মেঘ নয় আগুন দারিয়ে আছে আগুন কে দেখে ফারহা হাফ ছেড়ে বাচে ফারহা হুট করেই গাড়িতে উঠে বসে আগুন কে গাড়ি চালাতে বলে আগুন ফারহার এমন বিহেবিয়ার দেখে রিতি মতো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে….
আগুন আমাকে পরে দেখো এখন যেটা জরুরী সেটা আগে করো তুমি গাড়ি স্ট্রাট দেও আমাকে বাড়ি ফিরতে হবে ফারিহা কে কাল সন্ধে থেকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না …(ফারহা)
ফারহার মুখে ফারিহার কথা শুনে চুপ হয়ে যায় আগুন,,, ফুল স্পিডে গাড়ি চালিয়ে এক ঘন্টা পর বাড়িতে পৌছে যায় ফারহা আগুন ,ফারহা গাড়ি থেকে নেমে স্তব্ধ হয়ে যায় বাড়ির সামনে প্রচুর লোক জন বলা বলি করছে একটু পর লাশ আসবে কথা হয়েছে পুলিশের সাথে ,,,,লাশের কথা শুনে ফারহা ভয় পেয়ে যায়…
কা,,কার লাশের কথা বলছে আগুন..??(কাপা কাপা গলায়)
ভিতরে চলো ফারহা আন্টি তোমার জন্য অপেক্ষা করছে…(আগুন)
ফারহা বাধ্য মেয়ের মতো বাড়িতে ঢুকে মিসেস মোহনার রুমের দিকে যায় সেখানে প্রতিবেশি আত্নিদের দেখে আরো অবাক হয় ফারহা কারন যারা আজ ওদের বাড়িতে এসেছে তাদের কখনোই ওদের এ বাড়িতে আসতে দেখেনি তবে আজ কেনো ..???
খালা মায়ের কি হয়েছে এভাবে শুয়ে আছে কেনো …??(ফারহা)
ফারহার গলা পেয়ে মিসেস মোহনা শোয়া থেকে উঠে বসে ফারহা কে দেখে কাদঁতে শুরু করে ফারহা মিসেস মোহনার কাছে গিয়ে জরিয়ে ধরে বলে…
মা কি হয়েছে কাদছো কেনো তুমি কেদো না দেখো ফারিহা কে আমরা ঠিক খুজে বের করবো …ফারহার কথা শোনা মাত্র পিছুন থেকে আগুন বলে উঠলো ,,,,ফারহা ফারিহা আর নেই ……
ফারহা মিসেস মোহনা কে ছেড়ে তেরে যায় আগুনের কাছে….
হাউ ডেয়ার ইউ অাগুন তোমার সাহস কি করে হয় আমার বোনে সম্পর্কে বাজে কথা বলার ….(রেগে বলতে থাকে ফারহা)
শান্ত হও ফারহা আমি যা বলছি ঠিক বলছি গতকাল রাতে আঙ্কেল আমাকে ফোন করে জানায় ফারিহা কে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না আমি পুলিশ কে জানাতে তারা ফারিহা কে খুজতে বের হয় কিন্তু দূর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে ফারিহা কে ঠিকি খুজে পাওয়া যায় তবে জীবিত না মৃত্য …..(আগুন)
আগুনের কথা শুনে ফারহা চোখ থেকে অনবরত পানি গড়িয়ে পরছে আজ যেনো চোখের পানি আর বাধ মানছে না ফারহা আগুন কে জ্বিগাসা করে,,,,,কে খুন করেছে আমার বোন কে ..???
পুলিশ তদন্ত করে জানিয়েছে ফারিহা কে গ্যাং রেপ করে খুন করা হয়েছে ওর লাশ লুকানোর সময় পুলিশ সেখানে উপস্তিত হয় আর ভাগ্য ক্রমে কয়েকজন আসামি ধরতে পারে তবে জানা গেছে ওদের মূল পান্ডা টাকে ধরতে পারেনি পুলিশ তবে তদন্ত চলছে…..
ফারহা আর নিজে কে ধরে রাখতে না পেরে আগুন কে জরিয়ে ধরে কাদতে থাকে ফারহা এদিকে মিসেস মোহনা আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে দুই জন মহিলা মিসেস মোহনার মাথায় পানি ঢালতে থাকে ফারহা আগুন কে ছেড়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে ততোক্ষনে ফারিহার ডেড বডি হসপিটাল থেকে পুলিশ নিয়ে আসে ফারহা দৌরে যায় ফারিহার মুখটা দেখার জন্য মুখ থেকে কাপড়টা সরাতে ফারহা আতকে ওঠে কারন ফারিহার পুরো মুখে নখের আচরের দাগ স্পষ্ট ঠোটের কোনা কেটে রক্ত শুকিয়ে আছে চোখের নিচ টা কালো হয়ে গেছে গলায় নখের আচরের সাথে হাতের পাচ আঙ্গুলের দাগ ফারহা ফারিহার কপালে চুমু দিয়ে বলে…
ফারিহা আমি তোর মৃত্যদেহ ছুয়ে কথা দিচ্ছি যারা তোর এই অবস্তা করেছে আমি তাদের কঠিন শাস্তি দিবো তোকে যেমন তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে মেরেছে ঠিক আমি ও ওদের তিলে তিলে মারবো ……(ফারহা)
!
!
!
!
ফারিহা কে গোসল দিয়ে জানাজা পরিয়ে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় আর এদিকে ফারহা থানায় গিয়ে অফিসারের কাছ থেকে পার্মিশন নিয়ে নেয় সেই চার জন অপরাধীর সাথে কথা বলার জন্য ….
কিছুক্ষন পর……………..
ফারহা লকাপে ঠুকতে চার জন অপরাধী ফারহা কে দেখে চমকে যায় সাথে ভয় পেতে থাকে ….
কে কে আপনি আপনাকে না আমরা কাল মেরে ফেলেছি …(১ম অপরাধী )
ভুত নাকি কে আপনি দোস্ত কালকের সেই মেয়েটা না (আরেক অপরাধী কে জ্বিগাসা করল)
হ্যা দোস্ত তার মানে মেয়ে টি মরে নি আমরা শেষ এবার বস মনে হয় না আমাদের বাচাতে আসবে..(৪থ অপরাধী )
বাহ খুব ভালো তো আমাকে ফারিহা ভেবে এরা ভয় পাচ্ছে ইন্টারেস্টিং …
ফারহা লোক গুলো কে ভালো করে পর্যবেক্ষন করে করে চেয়ার টেনে বসে শান্ত দৃষ্টিতে লোক গুলোর কাছে জানতে চায় ..
তোদের কে নির্দেশ দিয়েছিলো আমাকে মেরে ফেলতে বলে ফেল নয় তোদের এমন অবস্তা করবো তা তোরা কল্পনাও করতে পারবি না তোদের শরীল টাকে টুকরো টুকরো করে আমি কুকুর দের খাওয়াবো …(ফারহা)
ফারহার কথা শোনা মাত্র অপরাধী চারজন ফারহার পায়ের কাছে বসে পরে ,,,,ম্যাডাম আমাগো মাফ কইররা দেন আমরা নিজের ইচ্ছেতে আপনার সাথে এমন করি নাই আমাগো বস কইয়া দিছিলো আপনারে মাইররা ফেলতে কিন্তু আমাগো মাথা খারাপ হয়ে গেছিলো আপনারে দেখে তাই আমরা…..ফারহা সাথে সাথে লোকটা কে লাথি মারে লোক টা ছিটকে পরে বাকি লোক গুলো ফারহার চোখের দিকে তাকিয়ে ভয়ে কাপতে থাকে কারন ফারহার চোখ মুখ রক্তের মতো লাল হয়ে আছে যেনো আগুনের লাভা বের হচ্ছে …..
কুত্তার বা*** কে তোদের আদেশ দিয়েছিলো বল আগে নয় তো এই লকাপে তোদের পুতে রেখে দিবো তোদের বস ও তোদের বাচাতে পারবে না …(ফারহা)
ফারহার কথায় ভয় পেয়ে যায় লোক গুলো তারপর একে একে বলতে থাকে ,,,
আমাদের বস হলো আর,,,, আরহান চৌধুরী …ওনি আমাদের টাকা দিয়ে কাজ টা করতে বলে ……..
আরহান চৌধুরী কে চিনতে ফারহার কোন বেগ পেতে হয়নি কারন দ্য বিগ বিজনেস ম্যান মেঘ চৌধুরীর বাবা আরহান চৌধুরীকে কে না চিনে ,,ফারহা এখন দুয়ে দুয়ে চার করে ফেলে ফারহা বুজতে পারে আরহান চৌধুরী ফারিহা কে নয় ওকে মারতে চেয়েছিলো কিন্তু আনফরচুন্টেলি ফারহা ফারিহা জমজ হওয়ায় আরহান চৌধুরী বুজতে পারে নি কে ফারহা কিন্তু ফারহা নিজের উপর রাগ হচ্ছে কারন আজ ওর জন্য ওর ছোট বোন কে প্রান হারাতে হলো ফারহা হুট করে লকাব থেকে বের হয়ে অফিসারের কাছে যায় ফারহা …..
অফিসার আপনার সাথে আমার কিছু আলাদা কথা আছে …( ফারহা)
ওকে আপনি পাশের রুমে ওয়েট করুন দু মিনিট আমি হাতের কাজটা সেরে আসছি…(অফিসার)
ফারহা পাশের রুমে গিয়ে ওয়েট করতে থাকে পাচঁ মিনিট পর অফিসার ফারহার সামনের চেয়ারে বসে পরে….
সো মিস ফারহা রহমান বলুন কি বলবেন..??( অফিসার)
আমি আপনার সাথে একটা ডিল করতে চাই যদি আপনি চান তো ..?? আর না হলে আমাকে অন্য ব্যাবস্তা নিতে হবে..(ফারহা)
আহা আগে ডিল টা কি এটা তো আগে বলবেন তারপর ভেবে দেখবো..(অফিসার)
লকাপে থাকা চার অপরাধী কে আমার হাতে ছেড়ে দিবেন তার বিনিময়ে আপনার ব্রিফকেস আমি ভরিয়ে দিবো….(ফারহা)
কিন্ত এটা আমি এখন কি করে করবো মিস ফারহা কজ অলরেডি কেইস ফাইল করা হয়ে গেছে কাল কেস টা কোর্টে উঠবে ……( অফিসার)
নাহ অফিসার কাল কেস টা কোর্টে উঠবে না আপনি এদের জামিনের ব্যাবস্তা করুন আর আমি যতো তারাতারি সম্ভব কেস টা উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি….(ফারহা)
মিস ফারহা আপনি কি করতে চাইছেন আমি সত্যি বুজতে পারছি না …(অফিস্যার)
অফিস্যারের কথা শুনে ফারহা বাকা হেসে বলে ,,,,খুব তারাতারি জানতে পারবেন অফিস্যার আর এই নিন চেক আপনার পছন্দ মতো এমাউন্ট বসিয়ে নিবেন তবে কাজ টা আমার করা চাই এ্যাস সুন এ্যাস পসিবল….(ফারহা)
ওকে মিস কাজ টা হয়ে যাবে তবে এই অপরাধী গুলো কে একা ছাড়বো ..??
নো নো অফিস্যার আমি নিজে এসে এদের আপ্যায়ন করে নিয়ে যাবো আপনি যাষ্ট কাগজ পত্র গুলো রেডি রাখবেন…(ফারহা)
ডান হয়ে যাবে ,,,,,,, (অফিস্যার)
ফারহা থানা থেকে বের হয়ে সোজা বাসায় চলে আসে আগুনের সাথে সব টা শেয়ার করে পুরো প্লান টা বানিয়ে ফেলে ফারহা ,,,
!
!
!
!
!
তিন দিন পর ফারহার বাবা বড় করে মিলাদ পড়ায় ফারিহার আত্তার শান্তির জন্য এই তিন দিন ধরে ফারহা রাতে ঘুমাতে পারে না বার বার মেঘের কথা মনে আসতে থাকে ফারহার যতো বার মেঘের কথা মনে আসে ঠিক ততোবার প্রতিশোধের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে ফারহার বুকে ………
মেঘ চৌধুরি তোমার জন্য আজ আমার ছোট বোন টাকে শেষ হয়ে যেতে হলো ওই জানোয়ার দের হাতের থাবায় তৈরি থেকো তোমরা আমি আসছি খুব তারাতারি আমি আসছি আমার বোন কে হত্যার প্রতিশোধ নিতে………..
কথা গুলো ফারহা একান্তে নিজের সাথে বলছিলো কিন্তু আগুন ফারহার পিছুনে দারিয়ে সব টা শুনে নেয় ……
ফারহা ………
আগুনের গলা পেয়ে ফারহা পিছুনে ফিরে দেখে আগুন দারিয়ে অবাক দৃষ্টিতে ফারহার দিকে তাকিয়ে আছে ফারহার বুজতে আর বাকি নেই যে আগুন সব টা শুনে নিয়েছে তারপর ও ফারহা স্থির হয়ে জ্বিগাসা করে…..
কিছু বলবি…? (ফারহা)
আমাকে কি তোর সহযোদ্ধা হিসেবে নেওয়া যায় না …? (আগুন)
তুই তো আমার সহযোদ্ধাই আগুন….
নাহ ফারহা তুই যদি আমাকে তোর সহযোদ্ধা ভাবতি তাহলে এতো কিছু গোপন করতি না ….(অভিমানি কন্ঠে বললো আগুন)
ফারহা স্লান হেসে আগুন কে শুরু থেকে শেষ পযর্ন্ত সব টা বলে ফারহা ,,,,ফারহার কথা শুনে আগুনের চোয়াল শক্ত করে রাগে দেয়ালে ঘুশি মারে ফারহা আগুনের হাত আটকে ফেলে ….
আর ইউ ম্যাড আগুন হাতে কতোটা লেগেছে দেখেছিস ..??.এভাবে অন্য কারোর রাগ নিজের উপর দেখাবি রাগ টা পুষে রাখ সময় মতো তা উপরে দিবে যেমন টা আমি করছি……
হাত ছাড় আমার ,,লাগেনি হাতে এখন তুই বল তোর আর মেঘের বিয়ে তো হয়ে গেলো এখন কি করবি …????(আগুন)
বাকি প্লান টা তোকে পরে বলবো তার আগে মা বাবা কে এ শহর ছেড়ে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিতে হবে আগুন…
তাহলে বরং আঙ্কেল আন্টি কে ইউ কে পাঠিয়ে দি…??
তাহলে তো বেশ ভালোই হয় মা বাবার পাসপোর্ট ভিসা সব আছে কোন প্রব্লেম হবে না পাঠিয়ে দে তারপর শুরু করবো আসল খেলা………….
*
*
*
*
#চলবে…………… 💔🖤💔