স্যার যখন স্বামী

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প “স্যার যখন স্বামী” পার্ট—৫

জান্নাতুল ফেরদৌস

“কিরে মা এখনো পড়ছিস”
“জ্বী আম্মু আপনার ছেলে কতগুলো ম্যাথ
দিয়ে গেল সেগুলো দেখছি”
“আচ্ছা সেগুলো পড়ে দেখিস।চল দুইজনে
মিলে টিভি দেখি গিয়ে,”
“আচ্ছা,”
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প “স্যার যখন স্বামী” পার্ট—৪
“মেঘ তোর জন্য পপকর্ণ বানিয়ে আনি।
পপকর্ণ খেতে খেতে দুইজন টিভি দেখব
আর জমিয়ে গল্প করব, ”
“আম্মু আপনার করার দরকার নেই।আমি
করে আনছি,”
“ওই চুপ করে বস।তোর কিচ্ছু করা লাগবে
না।আমি আছি কি করতে। চুপ করে বসে
টিভি দেখ।”
কিছুক্ষণ পর উনি পপকর্ণ বানিয়ে আনলেন।
পপকর্ণ নিয়ে যেই খাওয়া শুরু করলাম হঠাৎ
করে আমার শাশুড়িমা আমার বাম হাতের
ব্যান্ডেজটা দেখে অস্থির হয়ে গেলেন।
“মেঘ তোর হাতে কি হয়েছে মা?”
“আম্মু কিছুনা কালকে হঠাৎ করে পড়ে
যেতে গিয়ে আমার হাতের সাথে কাচের
জগটা লেগে ভেঙ্গে পড়ে যায় আর আমি
ফ্লোরে পড়ে যাওয়ায় কাচের টুকরা
আমার হাতে লেগে আমার হাত…”
“মেঘ,একটু খেয়াল করে হাটাচলা করতে
পারিসনা।দেখতো কি কান্ডটা না
বাঁধালি।ব্যথা করছে খুব।”
“আরে,ব্যথা টেথা কিছু করছে না।এই ক্ষত
তাড়াতাড়ি সেরে যাবে। টেনশেন নিওনা
তো।চল পপকর্ণ খেতে খেতে টিভি
দেখি।”
আমার শাশুড়িমা আর আমি পপকর্ণ খেতে
খেতে টিভি দেখছি আর তারসাথে
আমাদের বান্ধবীসুলভ গল্পতো লেগেই
আছে।
২ ঘন্টা পর….
“আচ্ছা তুই বস আমি রান্নাঘরে গিয়ে
রান্নার কাজটা শেষ করে গিয়ে।”
“আম্মু আমিও আসি।”
“না তোর লাগবে না তুই টিভি দেখনা।”
“আম্মু,আপনার ছেলে বলে গেছে
আপনাকে রান্নার কাজে সাহায্য করতে।”
“তন্ময় এ কথা বলে গেছে।কিন্তু তোর
তো
হাতে ব্যান্ডেজ বাধা। দেখলি আমার
ছেলের আক্কেলজ্ঞান কেমন।শুধু
ভার্সিটির টিচার হলেই হয় না কিছুটা
বুদ্ধিশুদ্ধিও থাকা লাগে।”
“আম্মু আমার বাম হাতে ব্যান্ডেজ ডান
হাতে তো না।তাছাড়া আমি ঠিক করে
নিতে পারব।”
“আচ্ছা তাহলে আয়।তুই এই সবজিটা কাট
আমি এইদিকটা দেখছি।”
“আচ্ছা।”
সবজি কাটতে গিয়ে শয়তানটার কথা আর
বকাগুলোর কথা মনে পড়ল।সেগুলো ভাবতে
গিয়ে এবার আমার ডান হাতের তালুতে
ছুড়ি লেগে হাত কেটে ফেললাম।
.
.
“কি ব্যাপার ডিনার করতে যাবে না।”
“আমি আজকে খাবো না, আপনি খেয়ে
নিন।”
“কেন?খাবে না কেন?শরীর খারাপ
নাকি?”
“না এমনিতেই,খেতে ভালো লাগছে না,”
“আজব,খেতে ভালো লাগবে না কেন?
শরীর
খারাপ না,খেতে ভালো লাগছে না এটা
কেমন ধরণের কথা।চল খেতে চল। ”
একেবারে হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন।
“আহ,হাতে ব্যাথা লাগছে।”
“কি ব্যাপার মেঘ তোমার ডান হাতে কি
হয়েছে।তোমার ডান হাতের তালুতে
ব্যান্ডেজ কেন?বলো তোমার হাতে কি
হয়েছে।”
….
“জবাব দিচ্ছো না কেন?এবার কি সত্যি
সত্যি গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিব।”
“সবজি কাটতে গিয়ে হা..তত..কে..টে.
.গেছে”
(কেঁদে)
“তো এখানে কান্না করার কি হল।”
“আপ..নি বকা দিলেন কেন?”
“তো করবটা কি শুনি ?প্রশ্ন করলে জবাব
দাও না।বাসায় হাত কেটে বসে থাক।
আমার সংসারে ২দিন হল না এসেছ এতেই
হাত পা কেটে বসে আছো। এগুলো সহ্য
করার মতন।কালকে এত্তগুলো বকা দিলাম
কিন্তু কি লাভ হল।এককান দিয়ে কথা
ঢুকাও আরেক কান দিয়ে আমার কথা বের
করে দাও।এবার বল এখন আমি কি করব।
রাগে আমি তোমাকে এত্তগুলো বকা দেই।
বুঝতে পারছ।”
.
.
নিজের হাতে রাতেও খাইয়ে দিলেন।
সাথে ফ্রি বকাতো আছে।রাতে ঘুমানোর
সময় উনার বুকে জোর করে শুইয়ে দিলেন।
ঘুমাতে গিয়েও তিনি শুয়ে শুয়ে লেকচার
দিতে থাকলেন।মেঘ এটা করবা, ওইটা
করবা না।সাবধানে চলবা,কোন কাজ
করার সময় তাড়াহুড়ো করবা না।দেখ
আমার কথা না শুনলে দেখা যাবে
কালকে আবার পা কেটে বসে আছো।
এইসব লেকচার তিনি এক এক করে আমাকে
শুনিয়ে যাচ্ছেন। কান পুরো ব্যথা হয়ে
যাচ্ছে কিন্তু ওনার কথা বলায় কোন ব্যথা
বা কষ্টের লক্ষণ দেখছি না।ঘুমাতে
আসছি নাকি উনার ক্লাস করতে আসছি
আমি নিজেই কনফিউজডে পড়ে গেলাম।
এদিকে ঘুমে আমার চোখ নেমে আসছে।
কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম তা আর বলতে
পারবো না।
.
.
সকালে উনি উঠে আমাকে কয়েকবার
ডাকলেন।কিন্তু আমি চোখ মেলতে
পারছি না।জানিনা কেন শরীররটা খুব
খারাপ লাগছে।
“মেঘ কি হয়েছে তোমার। কতক্ষণ ধরে
ডাকছি উঠছ না যে।শরীর খারাপ নাকি?”
এই বলে আমার কপালে হাত দিয়ে
দেখলেন জ্বরে আমার গা পুড়ে যাচ্ছে।
তাড়াতাড়ি করে উনি আমার কপালে
ভেজা কাপড়ের পট্টি দিয়ে অনেক্ষণ ধরে
আমার সেবা করলেন।
তারপর আমার শাশুড়িমা কে ডেকে
আনলেন।
“মা মেঘের জ্বর হয়েছে। তুমি তাড়াতাড়ি
ওকে কিছু খাইয়ে দাও।আমি এখুনি
ভার্সিটিতে কল করে আজকে ছুটি নিয়ে
নিচ্ছি।আজকে আর ভার্সিটি যাব না।”
শাশুড়ি মা অনেক্ষণ ধরে আমাকে
খাওয়ানোর চেষ্টা করলেন।কিন্তু জ্বরের
কারণে কিছু মুখে নিতে পারছি না।
.
.
“মা তোমার বৌমা খেয়েছে?”
“নারে কিছুই মুখে নিচ্ছে না মেয়েটা।”
“আচ্ছা তুমি যাও আমি দেখছি।”
“হ্যারে আমিও থাকি।”
“না তোমার থাকা লাগবে না।আমি ওকে
দেখে নিতে পারবো। তুমি বরং রুমে
গিয়ে রেস্ট নাও।”
“তন্ময় ওকে খাইয়ে আর মেডিসিন দিয়ে
আমার রুমে একটু আয়।কিছু কথা ছিল।”
“আচ্ছা। ”
“মেঘ কিছু খেয়ে নাও।নাহলে মেডিসিন
খাবে কেমন করে?”
“খেতে পারছি না। খেতে খারাপ
লাগছে।”
“খারাপ লাগলেও খেতে হবে।প্লিজ একটু
খেয়ে নাও।”
অনেকক্ষণ লাগিয়ে আমাকে খাওয়ালেন।
এরপর মেডিসিন দিয়ে আমাকে বললেন
তুমি এখন রেস্ট নাও।আমি একটুপরে
আসছি।
“মা কিছু বলবে।”
“হ্যা তন্ময়, তোকে কিছু বলতে চায়।”
“হ্যা বল।”
“দেখ, মেঘ এখন তোর বউ। স্বামী
হিসেবে ওকে শাসন করবি ভালো কথা।তাই
বলে কথায় কথায় ওকে ধমক দিয়ে কথা বলা এটা
ঠিক নয়।তুই কি মনে করিস আমি কিছু বুঝি না।
তোর রাগের কারণে সেদিন মেঘের হাত
কেটেছে। আজকে রান্না করতে গিয়ে কি
ভাবতে গিয়ে ওর ডান হাত কাটল। হাত কেটেছে
তাই বলে ওর উপর রাগ দেখিয়ে ওকে কালকে
অনেক কথা শুনালি।জানি তোর মাথাটা তখন ঠিক ছিল
না।কিন্তু সেটা একটু ভালোভাবে বুঝালে হত ।
মেঘের সাথে ওর মা বাবাও এত জোরে ধমক
দিয়ে কথা বলে না।তোর বউ বলে ওকে
কথায় কথায় ধমকের ওপর রাখবি সেটা মানার মতন
নয়।আর তোর কারণেই মেয়েটার গায়ে
আজকে জ্বর উঠল। ”
….
“দেখ আমি তোকে যতটুকু জানি তুই কারো
উপর এত রেগে কথা বলিস না।মেঘ তোর বউ
বলে ওকে তোর নিয়ন্রণের মধ্যে রাখার
জন্য এইসব করিস তা আমি জানি।কিন্তু বউকে তুই
তোর নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যে
পদ্ধতি ব্যবহার করছিস তা আদৌ কি সঠিক? দেখ
যখন ও ভুল করবে ওকে বুঝাবি যে এই কাজটা
ভুল কিন্তু গুরুত্বতর অপরাধ করলে ওকে বকা
দেওয়া ওর উপর রাগ দেখানোর অধিকার তোর
আছে। কিন্তু তাই বলে সবসময় এই ধারা চলবে
তা ঠিক নয়।এতে হিতের থেকে বিপরীত
হবে।পরে দিয়ে দেখা যাবে ওকে তুই
তোর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছিস না,ওকে
হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনাটাই বেশি থাকবে। এত
ধমক আর বকাঝকা না করে ওর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ
আচরণ করলে দেখবি তোদের স্বামী-
স্ত্রীর সম্পর্কটাও ভালো থাকবে।আর
মেঘও তোর কথা শুনবে। কাউকে নিজের
বশে আনতে হলে প্রথমে তার সাথে
বন্ধুত্বকরতে হয়।এটাই সবচেয়ে শ্রেয়
পদ্ধতি।বন্ধুত্ব করে শত্রুকেও বশে আনা যায়
আর তুই মেঘকে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে
নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবি না তা কেমন
করে হয়। বন্ধুত্বপূর্ণ আর ভালো সম্পর্ক
থাকলে তা মনের মধ্যে একধরণের অনুভূতি,
ভালো লাগা আর মায়া জিনিসটা কাজ করে।আর তা
থেকেই মানুষের ওকে অপরের প্রতি
ভালবাসাটা জন্মে।তুই যদি মেঘের মধ্যে সে
বন্ধুত্বপূর্ণ আর মায়ার বাঁধন তৈরী করতে পারিস
দেখবি ও কোনদিনও তোর কথার অবাধ্য হবে
না আর ওকে হারানোর ভয়টাও তোর থাকবে
না।”
“জ্বী মা। আমি বুঝতে পেরেছি।”
“হুম আমার যা বলার আমি বলে দিয়েছি।এখন
মেঘের কাছে যা।”
“হুম,”
“শুন তন্ময়,”
“হ্যা মা বল,”
“তুই কি মেঘকে আরও আগে থেকে চিনতি।”
“না…না,আমাদের ভার্সিটিতে যেদিন থেকে ওর
ডিপার্টমেন্টে ক্লাস নিচ্ছি সেদিন থেকেই
চিনি।হঠাৎ এই প্রশ্ন,”
“না, আমি ভাবলাম আরও অনেক আগে থেকে
ওকে চিনিস তুই।তাই এই প্রশ্ন করলাম।”
“আরে না মা, কি যে বলনা আরও আগে
থেকে কেমন করে…”
“ও, আচ্ছা”
.
.
জ্বর কমানোর জন্য আমার কপালে কাপড়ের
পট্টি দিয়ে আমার সেবা করতে লাগলেন।
আস্তে আস্তে জ্বর কমতে লাগল।কিন্তু
শেষ রাত্রে খুব খারাপ লাগছিলো। কেমন
যেন ছটফট করছিলাম।তারপর আর কিছু মনে
নেই।
সকালে ঘুম ভাঙ্গল আমার। এখন মোটামুটি
ভালো লাগছে।কিন্তু শরীরটা খুব দুর্বল
লাগছে।চোখ খুলে দেখি উনি একটা চেয়ারে
ঘুমাচ্ছেন।পানির তৃষ্ণা পেয়েছে খুব। আমার
পাশের টেবিলে রাখা পানির গ্লাসটা হাত দিয়ে
ধরতে গিয়ে গ্লাসটা শব্দ করে ফ্লোরে
পড়ে গেল। আর তখনি স্যার জেগে
উঠলেন।
“মেঘ আমাকে ডাক দিতে?”
“না,আপনি ঘুমাচ্ছিলেন তাই ভাবলাম আপনাকে
ডেকে কষ্ট দেওয়ার দরকার নেই।”এই কথা
বলে উনার চোখের দিকে তাকালাম।চোখ দুটি
লাল হয়ে ফুলে আছে।তারমানে উনি সারারাত
ঘুমান নি?
“নাও পানি নাও।”
“জ্বী।”
এই ২দিন উনি আমার খুব সেবাযত্ন করলেন।এই
রাগী লোকটা আমার এত যত্ন নিবে আমি তা
ভাবতে পারিনি।এখন জানি না কেন উনার প্রতি একটু
মায়া জন্মাচ্ছে।
.
.
মেঘ তোমার আম্মু কল দিয়েছে।নাও কথা
বল।
“হ্যালো আম্মু,”
“হ্যারে মা ভালো আছিস।”
“হ্যা আম্মু ভালো তুমি?বাবা কেমন আছে?”
“আমি তোর বাবা দুইজনেই ভালো আছি।আচ্ছা
শুন জামাইকে নিয়ে বাড়িতে আয়।”
“না মা এখন পসিবল না।স্যারের কোন ছুটি নেই।”
“কি তুই জামাইকে এখনো স্যার বলে ডাকস?”
“হেহেহে,কই নাতো আমি স্যার বলিনি বলছি
জামাই।না মানে তোমাদের জামাইয়ের ছুটি নাই।”
এরপর আরও কথা বলে জানতে পারলাম স্যার
সবসময় উনাদের খোঁজখবর নেন। বিয়ের পর
আমার মোবাইলটা সাথে করে আনি নি তাই এতদিন
নিজ থেকে ওদের খোঁজখবর নিতে
পারেনি।স্যারের মোবাইল থেকে
মাঝেমাঝে আমি খোঁজ খবর নেই।
মোবাইলে অনেক্ষণ ধরে মা স্যারের প্রশংসা
করলেন। এইরকম ভালো ছেলে আজকালকার
যুগে পাওয়া নাকি খুব কষ্ট।আরও কত কি।
.
.
কথা বলা শেষ করে দেখি স্যার আমার পাশে
বসে আছে।রাগী মুখে আমার দিকে তাকিয়ে
আছে।
ওমা এটা কি?একটু আগেতো দেখলাম হেসে
হেসে আম্মুর সাথে কথা বলছে হঠাৎ কি এমন
হল যে এত রাগীভাবে আমার দিকে তাকিয়ে
আছে।
“আপনি ঠিক আছেন তো?”(ভয়ে)
“না ঠিক নেই।তোমার কারণে কোনদিনও ঠিক
থাকতে পারবো না।”
“মানে।আমার কারণে। আমি আবার কি
করলাম।”এরপরে মনে পড়ল ইশ এটা কি করলাম।
আমি মা এর সাথে কথা বলার সময় স্যার শব্দটি
বলেছিলাম।আর সেটা তিনি শুনে ফেলছেন।
সেজন্য এত রাগ।রাগে চোখ দুটি লাল হয়ে
গেছে।উনার এই লাল চোখ দেখে মনে
হচ্ছে এই লাল চোখের আগুন দিয়ে আমাকে
ভস্ম করে দিবে।এবার আমি জানি কতগুলো বকা
খাব।তাই চোখ বন্ধ করে বকা খাওয়ার জন্য
নিজেকে প্রস্তুত করলাম।কিন্তু কয় এখনো
তিনি বকা দিচ্ছেন না।উনারতো এরকম ঠাণ্ডা থাকার
কথা না। চোখ খুলে দেখি উনি আমার মুখের
দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।তারপর কিছু না
বলে চলে গেল।কি ব্যাপার এটা কি করে
সম্ভব। উনি আমাকে বকা না দিয়ে চলে
গেলেন!কি করে সম্ভব এটা।
.
.
আজকে বিকালে ছাদে আসলাম।এর আগে
কখনো ছাদে উঠিনি।অনেক বড় ছাদ।একা একা
বসে বসে গান গাচ্ছি।হঠাৎ আমার কাঁধে কারো
স্পর্শ পেলাম।দেখি একটা ছোট্ট মেয়ে।
“এল যে টুমি কে?”
“আমি?”
“হুম,”
“আমি মেঘ, তুমি?”
“আমি সানজা মণি।”
“ও…তাই, তুমিতো খুব মিষ্টি মেয়ে।”এই বলে
ওকে আমার কোলে তুলে নিলাম।অনেক কথা
বললাম ওর সাথে।কি সুন্দর করে মেয়েটা কথা
বলে।শুনতে খুব ভালো লাগে।কথায় কথায় ও
বলল, “টুমি কোল টলায় টাক?”
“৩ তলায়। তুমি?”
“টিল টলায়।ওলখানে এক আক্কেল টাকে।টুমি
জানো ওনি আমাকে কট্ট আডর কলে।
আম্মাকে প্লতি…প্লতি…ডিন চক্কেট দেয়।”
“ও মা তাই নাকি?(সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলে
পিচ্চিদের চকলেট কিনে দেয়। কিন্তু আমার
বেলায় শুধু বকা আর চকলেটতো কোনদিনও
কিনে দেয় না।)আচ্ছা তাহলে আমিও
তোমাকে প্রতিদিন চকলেট কিনে দিবো।”
“ছত্তি।”
“হুম,সত্যি,এই বলে ওর গুলোমুলো গাল দুইটা
টিপে দিলাম।”
“টুমি খুব ভালো।”
“তুমিও খুব ভালো সানজা মণি, ”
.
.
“মেঘ,”
“জ্বী,”
“তোমাকে কিছু কথা বলতে চাই।”
“হ্যা বলেন,”
“আচ্ছা আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি?”
“(ও মা শয়তানের মুখ থেকে এত ভালো কথা।
নিশ্চয় কোন গণ্ডগোল আছে।দেখতে
হচ্ছে ব্যাপারটা।)হঠাৎ এই কথা।”
“না, মানে আমি চাইছি আমাদের সম্পর্কটা
বন্ধুত্বপূর্ণ হোক।”
আমি হা করে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি।এত্ত
ভালো কেমন করে!!
“এরকম হা করে তাকিয়ে আছো কেন?দেখ
আমি এত ভনিতা করতে পারিনা।তোমাকে স্পষ্ট
করে এটাই বলতে চাই যে,আমার মনে হয়
এইভাবে আমাদের সম্পর্কটা বেশিদূর আগানো
সম্ভব নয়।যদি আমরা একে অপরের বন্ধু হয়ে
যায় তাহলে দেখবে আমার সাথে মিশতে
তোমার সহজ হবে,আমাকে আরও ভালো
করে জানবে বুঝবে তাহলে আমাদের মধ্যে
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা আরও ভালো আর
মজবুত হবে।হবে আমার ফ্রেন্ড?”
(হুম এর মধ্যে এত কিছু ভেবে ফেলছে।
ভালো)”আচ্ছা হতে পারি একশর্তে,”
“শর্ত!!”
“হুম শর্ত,”
“কি শর্ত, ”
“আমার জন্য কালকে অনেকগুলো চকলেট
আনতে হবে।আর শুধু কালকের জন্য নয়।
প্রতিদিন আমাকে চকলেট এনে দিতে হবে।”
“ও মা তুমি পিচ্চি বাচ্চা নাকি?৪ তলার পিচ্চি মেয়ে
সানজা মণি চকলেটের কথা বললে মানা যায়।”
“দেখুন এতকিছু বুঝি না।চকলেটের বেলায় no
বড় no ছোট।এর বেলায় সবাই সমান।আমার
ফ্রেন্ড হতে চাইলে এই শর্ত মানতে হবে।
আর নাহলে নাই।”
“ও বুঝছি চকলেটের বিনিময়ে
ফ্রেন্ডশিপ,”
“হুম।”(মাথায় আক্কেল আছে)
“আচ্ছা ঠিকাছে।”
“সত্যি কালকে আর প্রতিদিন আমার জন্য
চকলেট আনবেন।’
“হুম,”
“খুশিতে উনাকে জড়িয়ে ধরলাম।”
“এমা এতো দেখি পুরা পিচ্চি।এই বলে
আমার দুইগাল টিপে দিলেন।”
মেঘ এটা তুই কি করলি?খুশিতে পাগল হয়ে
শেষ পর্যন্ত তুই উনাকে জড়িয়ে ধরলি।হায়
আল্লাহ এটা আমি কি করলাম।
উনিও দেখি আজকে মুচকি মুচকি হাসছেন।
এদিকে আমি লজ্জাই শেষ।আমি যে এরকম
কান্ড করে ফেলব ভাবতে পারিনি।
আজকের পর থেকে নিজের খুশিকে
কন্ট্রোল করতে হবে।নাহলে….
.
.
সকালে উনি ভার্সিটি চলে গেলেন। ঘর
গুছাতে গিয়ে টেবিলে রাখা একটি
বক্সের উপর চোখ পড়ল।।বক্সের পেকেট
খুলতে গিয়ে দেখি অনেকগুলো চকলেট।
বুঝেছি উনি চকলেট এনে রাখছেন।খুব খুশি
লাগছে।তারমানে উনি সিরিয়াসলি
আমার সাথে ফ্রেন্ডশীপ করতে চাচ্ছেন।
হিহিহি,,,স্যার হয়ে ছাত্রীর সাথে
ফ্রেন্ডশিপ করতে চাচ্ছেন।Not bad.
আমার শাশুড়িমা রান্নাঘরে কাজ করছে।
আর আমি বসে বসে টিভি দেখছি আর
চকলেট খাচ্ছি ।কলিং বেলের আওয়াজ
পেলাম হঠাৎ।দরজা খুলে দেখি পিচ্চি
সানজা মণি।
“ওমা সানজা মণি তুমি “(খুশি হয়ে)
“টুমার বাষায়… এছ..ছি”
“খুব ভালো করেছো। এই বলে ওকে কোলে
তুলে নিলাম।”
“বল কি খাবে সানজা মণি,”
“মেঘ আমি..আমি..ক্ষীল খাব।”
“ওমা তাই! ক্ষীর খুব পছন্দ কর তুমি।”
“হুম অনেক পছন্ড কলি।”
“আচ্ছা আমি তোমার জন্য আজকে নিজের
হাতে ক্ষীর রেঁধে খাওয়াবো কেমন।
রাতে তোমাকে আমি ডেকে নিয়ে
আসবো।”
“টুমি খুব ভাল্লো। ”
“তুমিও খুব ভালো সানজা মণি।”
.
.
“মেঘ কে এসেছে রে মা।”
“আম্মু আমাদের ঘরে ছোট্ট মেহমান
সানজা মণি এসেছে।”
“ও আচ্ছা। সানজা মণি। তাহলে ওকে
নিয়ে খেল, কথা বল।এদিকে আমি রান্নার
কাজটা শেষ করে নেই।”
“আচ্ছা আম্মু।এই যে, সানজা মণি তুমি
একটু বস আমি এখনি আসছি ।”
“এই নাও কিটকাট চকলেট।”
“আম্মার জনন্য,”
“হুম,”
খুশি হয়ে চকলেট নিয়ে খাওয়া শুরু করল।
“আলছা মেঘ টুমি লান্না কল না।”
“না সানজা মণি আমার রান্না করতে
ভালো লাগে না।”
“কেন্ন?”
“দেখ আমার আম্মু আর তোমার আংকেল
খুব ভালো রান্না করে।এখন আমি যদি
রান্না করি তাহলে ওদের হাতের রান্না
করা মজার মজার খাবার মিস করব। আমি
ওদের হাতের রান্না প্রতিদিন খেতে
চাই।আর ওদের হাতের রান্না করা খাবার
খেতে ভালবাসি তাই ইচ্ছে করে রান্না
করি না।”
“ও… টাই।”
“হুম,তাই।”
.
.
আজকে নিজের হাতে ক্ষীর রান্না
করেছি।পাশে শাশুড়িমা ছিলেন।উনার
সাহায্যে আমি ক্ষীর বানালাম।শাশুড়িম
ার কাছ থেকে শুনলাম স্যারও নাকি
ক্ষীর অনেক পছন্দ করে।রাতে
সানজামণিকে আমাদের বাসায় নিয়ে
আসলাম।ওকে আমি খাইয়ে দিচ্ছি।এর
কিছুক্ষণ পর স্যার টেবিলে আসলেন।ক্ষীর
দেখে অনেক খুশি হলেন।ক্ষীর খাচ্ছেন
আর প্রশংসা করছেন।
“মা খুব ভালো হয়েছে ক্ষীরটা।”
“আমি আজকে রাধিনি।বউমা রেঁধেছে।”
এরপর আর কিছু বললেন না।চুপচাপ খাচ্ছেন
আর মা আর সানজামণির সাথে কথা
বলছেন।বড় আজব লোকটা। আমি রান্না
করেছি শুনে আর প্রশংসা করলেন না।
একটুখানি প্রশংসা করলে কি এমন হত।
থাক ওনার প্রশংসা লাগবে না যার জন্য
রেঁধেছি সে অনেক প্রশংসা করেছে
সেটাই অনেক।
.
.
“মেঘ,”
“জ্বী,”
“আমার বউটা আমার পছন্দের খাবার
রান্না করেছে তাতে আমি অনেক খুশি
হয়েছি।ভালো হয়েছে ক্ষীরটা।মাঝেমাঝ
ে এরকমভাবে আমার পছন্দের কিছু খাবার
নিজ হাতে রান্না করলে আরও বেশি খুশি
হব।”
“আচ্ছা। (যাক সবার সামনে প্রশংসা না
করলে কি হয়েছে গোপনে আমার সামনে
তো আমার রান্নার প্রশংসা করলেন।)”
এরপর আমাকে নিয়ে ম্যাথ করতে বসলেন।
ম্যাথ করানোর সময় হঠাৎ একটা আজব
প্রশ্ন করে ফেললেন।
“আচ্ছা মেঘ আমাকে তোমার কেমন
লাগে?”
আমি হা হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।
কালকে ফ্রেন্ডশিপের কথা আর আজকে
উনাকে আমার কেমন লাগে!
“কি ব্যাপার বললে না যে,”
(উনাকে আমার শয়তান আর রাক্ষসের মতন
লাগে।সত্য বলা যাবে না পরে দিয়ে
ক্ষেপে যাবে তাই মিথ্যা বললাম)”…
ভালোই।”
“শুধু ভালোই।”
(এমা উনার আজকে কি হল!ছাত্রী হয়ে যা
বলার দরকার তাইতো বললাম।আচ্ছা
ব্যাটা মনে হয় চাচ্ছে আমি উনার আরও
প্রশংসা করি। তাহলে আর কি আরও একটু
বেশি করে মিথ্যা প্রশংসা করি।) কিছু
বলতে গেলে উনি আবার বলা শুরু করলেন,
“তোমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রিয়া
ম্যাডাম কেতো চিনো।”
“হ্যা,চিনি।”
“আজকে তোমাদের প্রিয়া ম্যাডাম
আমার খুব প্রশংসা করল।তাই আর কি
তোমাকে জিজ্ঞাস করলাম আমাকে
তোমার কেমন লাগে?’
“কিহ!আজকে এত প্রশংসার করার
মানেটা কি?”
“না,মানে তেমন কিছু না।আজকে না
সবসময়ই আমার প্রশংসা করে।তবে
আজকের প্রশংসাটা আমার মন কাড়ার মন
ছিল।”
“আচ্ছা তো কি কি প্রশংসা করল?”
“এই যে আমি নাকি হ্যান্ডসাম ছেলে।
আজকে যে নীল শার্টটা পড়ে গেলাম সে
শার্টটা নাকি প্রিয়ার অনেক পছন্দের।
সেটাতে নাকি আজকে আমাকে অনেক
ভালো লাগছিল।আমার মতন ছেলেকে ও
বিয়ে করতে এক পায়ে রাজি।আমাকে
নাকি তোমার ম্যাডামের অনেক অনেক
ভালো লাগে। এতই ভালো লাগে যে….
থাক বাকিটা তোমার না জানলেও
চলবে।”
(কিহ!এত্ত বড় সাহস ম্যাডামের!আমার
স্বামীকে এইসব কথা বলে।আমার স্বামীর
দিকে উনার খারাপ নজর।আর আমার
স্বামীও তো কম না। ম্যাডাম একটু
প্রশংসা করল আর ওমনিতেই উনাকে
নিয়ে ভাবা শুরু করল আর এখন বাসায় এসে
আমাকে এই প্রশ্ন করে আমাকে উনার
কেমন লাগে।আমার স্বামীর মুখ দেখে
বুঝতে পারছি উনি এখন প্রিয়া
ম্যাডামের সেই কথাতেই বিভোর হয়ে
আছে।ছিঃ ছিঃ ছিঃ পাশে নিজের
স্ত্রীকে রেখে আমার স্বামী অন্য
আরেকটা মেয়েকে নিয়ে ভাবছে।) “এই
যে,এই যে, ভালোই তো এত ডাকছি উনার
কোন খেয়াল নেই।হাতে জোরে চিমটি
দিয়ে,”
“আরে,মেঘ(চিৎকার দিয়ে)এত জোরে
কেউ চিমটি মারে।দেখছোনা আমি একটা
গুরুত্বপূর্ণ জিনিস নিয়ে ভাবছি।”
“হ্যা কি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ভাবছেন তাতো
আমি নিজ চোখে দেখতে পারছি।”
“এইতো গুড গার্ল বুঝতে পেরেছ এই বলে
আমার দুই হাত ধরে বললেন যতটা বোকা
তোমাকে ভাবি ততটা বোকা তুমি নও।
অনেক কিছুই বুঝে দেখি আমার বউটা।
একটা কথা মনে রাখবে নিজের প্রিয়
জিনিসের দিকে সবসময় কড়া নজর রাখবে
যাতে অন্য কেউ তোমার প্রিয় জিনিস
কেড়ে নিতে না পারে।আর আরেকটা
কথা প্রিয় জিনিসের উপর অধিকার
খাটানোটা শিখ। যদি সঠিক সময়ে সঠিক
কাজটা করতে না পারো তাহলে
সারাজীবন পস্তাতে হবে।বুঝতে পারছ
আমি তোমাকে কি বলতে চাচ্ছি।আমার
কথাটা ভালোভাবে বুঝার চেষ্টা করবে
দেখিও এই কথা বুঝতে আবার বেশি দেরি
করিও না নাহলে সত্যিই অনেক দেরি হয়ে
যাবে।আর হ্যা ঘুমাতে যাও এখন আমার
আবার একজনকে কল দিতে হবে।”
.
.
অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি উনার
জন্য।এতক্ষণ ধরে কার সাথে মোবাইলে
কথা বলছেন উনি।প্রায় ৩০ মিনিট হয়ে
যাচ্ছে। তারপরও কথা শেষ হচ্ছে না।
আজব।
“হ্যালো প্রিয়া আজকে রাখি। কালকে
ভার্সিটিতে আসছি।সেখানে নাহয় কথা
হবে।বায়।
আরে মেঘ এখনো ঘুমাওনি তুমি।”
“না ঘুম আসছিলো না।”
“বুঝছি আমার বউয়ের তো আবার আমাকে
ছাড়া ঘুম আসবে না।সরি বউ আসলে কি
হয়ছে প্রিয়ার সাথে কথা বলছিলাম তাই
একটু দেরি হয়ে গেছে।বেশিক্ষণ তো আর
কথা বলেনি।”
“আচ্ছা ৩০মিনিট ধরে কথা বললেন
তারপরও বলছেন বেশি কথা বলেননি।”
“ও দেখছ তুমি, ওর সাথে কথা বললে আমার
কোনদিকে আর খেয়াল থাকেনা।
৩০মিনিট হয়ে গেছে আর আমার কাছে
মনে হল মাত্র ৫মিনিট কথা বলছি।”
(এতদূর….)
“থাক তুমি ছোট মানুষ তোমার এত কথা না
জানলেও চলবে।এত রাত জেগে লাভ নেই
বাবা, কালকে আবার ভার্সিটিতে যেতে
হবে।দেরি হয়ে গেলে আবার প্রিয়া রাগ
করবে।”
“প্রিয়া রাগ করবে।আপনি কি প্রিয়া
ম্যাডামের কথা বলছেন।”
“হ্যা, ”
(ওমা উনি দেখি আবার লজ্জাও পাচ্ছেন।
শয়তান, বান্দর একটা।আবার ম্যাডামের
নাম ধরে ডাকে।)”হ্যা হ্যা তাড়াতাড়ি
ঘুমিয়ে যান। দেরি হয়ে গেলে আপনার
প্রিয়া আবার রাগ করবে।”
“হ্যা ঠিক বলছ।”
.
.
জানিনা কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছে।উনার
প্রিয়া…বাব্বাহ ভালোই তো।ঘরে বউ আর
বাইরে প্রিয়া।রাগ করে উল্টোদিকে
ফিরে শুয়ে রইলাম।
আর বান্দর শয়তানটা পিছন থেকে
আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
“কি ব্যাপার… আপনার না কালকে
ভার্সিটি আছে।ঘুমান না। আর আমাকে
ছাড়েন।”
“কোলবালিশ ছাড়া ঘুম আসে না।”
“আমাকে আপনার কোলবালিশ মনে হয়।”
“তো কি,এখন থেকেই তো তুমি আমার
কোলবালিশ,”
এত কিছুর পরও এইসব বলেন।আর রাগ
কন্ট্রোল হচ্ছে না।ইচ্ছামতন কয়েকটা
কিল,ঘুষি দিয়ে দিলাম।
“আরে আরে,তোমার জামাইকে মেরে
ফেলবা নাকি এই বলে আমাকে তার বুকে
টেনে নিলেন।”
“হ্যা মেরেই ফেলব একেবারে।আমার
কাছে কেন আসছেন কেন যান না আপনার
প্রিয়ার কাছে যান না।”
“যাব তো প্রিয়ার কাছে কালকে যাব। ”
“আবারও প্রিয়া।আরো কয়েকটা কিল,ঘুষি
লাগিয়ে দিলাম ।”
“এই মেয়েতো দেখি আজকে আমাকে
সত্যিই মেরে ফেলবে। মেঘ তুমি না আমার
লক্ষ্মী বউ। জামাইকে কেউ এইভাবে
মারে।আচ্ছা আচ্ছা আর প্রিয়া প্রিয়া
করব না।এবার তো থাম বউ।”
“হুম আর যেন আপনার মুখে প্রিয়ার নাম না
শুনি।”
“কেন, গায়ে লাগছে।তাহলে আমি কি
ভাবব, তুমি আমাকে………….,”
“কি ভাববেন হ্যা,কোন কিছু ভাবাভাবি
নাই।ঘুমাবো এখন।”
“আচ্ছা আচ্ছা আর ভাববো না। আরও শক্ত
করে উনার বুকে আমাকে জড়িয়ে
রাখলেন।মেঘ বলছিলাম যে, তুমিতো
সারাদিন বাসায় থাক।পরশুতো শুক্রবার।
চল পরশুদিন বাইরে থেকে ঘুরে আসি।
তাহলে তোমার ভালো লাগবে।”
“আচ্ছা।(আমার ভালো লাগা নিয়েও
দেখি ভাবছে। কবে থেকে আমার ভালো
লাগা নিয়ে ভাবতে শুরু করল। যাই হোক
আমার ভালো লাগা নিয়ে উনি ভাবছেন।
তাই এখন খুব খুশি লাগছে।)আচ্ছা, আপনি
আমার ভালো লাগার জন্য আমাকে নিয়ে
ঘুরতে যাবেন।”
“হুম।আসলে আজকাল মুডটা খুব ভালো
যাচ্ছে তাই।তাহলে এই কথা ফাইনাল রইল
তোমাকে নিয়ে পরশু ঘুরতে যাচ্ছি।”
“আচ্ছা।”
“আচ্ছা বললে হবে না প্রমিস করো আমার
সাথে কালকে ঘুরতে যাবে।”
“এতে প্রমিসের কি হল।আচ্ছা প্রমিস।”
“প্রমিস করছ আমাকে।দেখিও পরে দিয়ে
আবার বলিও না যে আমি যাব না।”
“এই মেঘ প্রমিস করলে সে প্রমিসের
মর্যাদা রাখে।”
“ওকে দেখা যাবে কালকে।”

ক্লাস শেষ করে একমুহূর্তও এদিক ওদিক
না তাকিয়ে হাঁটা দিলাম।
“মেঘ গাড়িতে উঠ”
….
“কথা কানে যাচ্ছে না”
….
“মেঘ শেষবারের মতন বলছি গাড়িতে উঠ।
নাহলে কিন্তু এই পাব্লিক প্লেসে
তোমাকে কোলে করে গাড়িতে উঠাবো”
বাধ্য হয়ে গাড়িতে উঠলাম।নাহলে
আজকে ক্লাসে যে অপমান করল তাতে
গাড়িতে উঠার কোন ইচ্ছায় নেই।একটাও
কথা বলেনি উনার সাথে।রাগ কি উনার
একার আছে আমার নেই।
বাসায় এসে অনেক্ষণ কাঁদলাম।কেঁদে
মনটা হালকা করলাম।আজকে সামান্য
একটা সংজ্ঞা পারেনি বলে এত অপমান।
আজকে থেকে ভালো করে ম্যাথ করবো।
আগেও উনি এমন করত কিন্তু আমার গায়ে
উনার এই কড়া কথাগুলো ততটা লাগতোনা।
কিন্তু এখনতো আমি উনার স্ত্রী হই।আপন
মানুষকে ক্লাসের সবার সামনে এত
অপমান।এইবার ম্যাথে ভালো রেজাল্ট
করে উনাকে দেখিয়ে দিবো। কারোর
সাহায্য আমার দরকার নেই হুম।আমি একাই
একশ।
.
.
রাতে রাগ করে খায়নি।আর উনিও
খাবারের প্লেট নিয়ে ঘুরাঘুরি করছেন
অনেক্ষণ ধরে।আগে না খেলে জোর করে
খাইয়ে দিতেন কিন্তু আজকে তেমন কিছু
করছেন না।হয়ত বুঝেছেন উনারও কোথাও
না কোথাও ভুল ছিল।
অনেক্ষণ খাবারের প্লেট নিয়ে ঘুরাঘুরির
পর আমার সামনে আসলেন।
“মেঘ খেয়ে নাও”
“আমি খাবো না”
“আমার কথায় রাগ করেছ”
“না,আমি কারোর কথায় রাগ করিনা।আমি
একমাত্র আমার আপন মানুষগুলোর উপর
রাগ করি”
“তার মানে আমি তোমার আপন কেউ না?”
“হ্যা”
“বললেই হলো,তুমি আমার কেউ না হুম।এত
টাকা দেনমোহর দিয়ে তোমাকে বিয়ে
করছি এই ফালতু কথা শুনার জন্য।আচ্ছা
আর রাগ করে থাকা লাগবেনা।আমি
খাইয়ে দিচ্ছি”
“না”
“খাবারের উপর রাগ করে লাভ নেই।উল্টো
নিজেরেই ক্ষতি হয়।আর তোমাকে কি
আমি ইচ্ছা করে বকা দিয়েছি।ক্লাসে
আমাকে স্যার বলছ কেন?আর বললাম না
ক্লাস থেকে পড়া নিয়ে নিতে। পড়া নাও
নি কেন?”
“আপনাকে ক্লাসে স্যার বলে ডাকবো
নাতো কি বলে ডাকব।আর ওইদিন আমি ১ম
ক্লাস ভালোভাবে না করে চলে আসছি।
আপনাকে ওইদিন এই কথা বলে চলে
আসতে চেয়েছিলাম।কিন্তু আপনাকে
ব্যস্ত দেখলাম(হুহ প্রিয়া ম্যাডামের
সাথে কথা বলছিলো তাই রাগে কিছু না
বলে চলে আসছি এই কথাটা আর বলিনি)।
আমার কাছে কোন মোবাইলও নেই যে এই
কথাটা আপনাকে জানাবো।কিন্তু আপনি
আমার কোন কথা না শুনে ওইদিন কত কথা
শুনালেন আর আজকে কত্তগুলো বকা
দিলেন”
.
.
“ও এই ব্যাপার।ওই সময় অনেক রাগ উঠে
গিয়েছিল তাই এত বকা দিয়েছি।কিন্তু
তোমারও দোষ আছে”
“আবারও আমার দোষ ধরে”
“আমার রাগ ঠাণ্ডা হওয়ার পর আমাকে এই
কথাগুলো কেন বলোনি।ওইদিন যদি
আমাকে এই কথাগুলো বলে ফেলতে
তাহলে আজকে এতকিছু হত না।নাও এখন
খেয়ে নাও।এখন খেলে তোমাকে একটা
সারপ্রাইজ দিবো”
“সত্যি”
“হুম”
“খেলাম এবার আমার সারপ্রাইজটা দেন”
“চোখ অফ করো।এই নাও তোমার
সারপ্রাইজ”
“লাভ লকেট”
“হুম অনেক আগে এনেছিলাম কিন্তু
তোমাকে দিতে পারেনি।আজকে দিলাম।
এখানে তোমার আর আমার ছবি আছে।
যখনি মন খারাপ থাকবে এই লকেট খুলে
আমাদের ছবি দেখে নিতে পারবে।
তোমার পছন্দ হয়েছে”
“হুম খুব খুব পছন্দ হয়েছে”
.
.
বউ দেখি তোমার গালটা,খুব লেগেছে না!
এই বলে আমার ডান গালটা ছুঁয়ে দিলেন।
আসলে ওইদিন উনার রাগ এতই ছিল যে
রাগের বশে খুব জোরে ডানগালে
থাপ্পড়টা মেরেছিলেন।আয়নাতে গিয়ে
দেখি পুরো পাঁচ আঙ্গুলের ছাপ বসে
গেছে।হ্যা ব্যথাতো গালে বেশি
পেয়েছিলাম কিন্তু তার চেয়ে বেশি
ব্যথা পেয়েছিলাম উনার সেদিনের কড়া
কথায়।উনার বকাতে আমি অভ্যস্ত কিন্তু
এইরকম কড়া বকা আর রাগ সেদিন প্রথম
দেখলাম।খুব কষ্টও পেয়েছিলাম উনার
কথায়।সকালে থাপ্পড় মারা গালটা চুল
দিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম যাতে
আঙ্গুলের ছাপগুলো উনার নজরে না পড়ে।
উনি আমার আরও কাছে এসে আমার সে
গালে অজস্র চুমো দিলেন।জানি না এটা
কি এমন মলম ছিল মূহুর্তের মধ্যে আমার সব
কষ্ট,ব্যথা দূর হয়ে গেল।তারপর ড্রয়ার
থেকে একটা মলম এনে আমার গালে
লাগিয়ে দিলেন।
.
.
সকালে উনার সাথে ভার্সিটিতে
গেলাম।ক্লাসে গিয়ে শুনি তন্ময় স্যার
আমাদের ক্লাস আর নিচ্ছেন না।আমাদের
ডিপার্টমেন্টে অন্য ক্লাসে ক্লাস
করাবেন কিন্তু আমাদের ক্লাস নিবেন
না।উনার বদলে আরেকজন টিচার
আমাদের ম্যাথ ক্লাস নিবেন।মেয়েরাতো
সবাই হতাশ,আর আমাদের ক্লাসে
আরেকটা ঢঙী আছে এতো না পারে পুরা
কেঁদে দিতে।মেয়েরা সবাই বলাবলি
করছে স্যার এমনটা কেন করলেন।আমারও
একি প্রশ্ন উনি এই কাজটা কেন করলেন?
আমার জন্য কি উনি এই ব্যবস্থা
নিয়েছেন।যদি এরকম হয় তাহলে তা
নিজের থেকেও খারাপ লাগবে।
.
.
“কিরে তাসপিয়া তোর মন কোনদিকে?এত
উদাসীন লাগছে কেন?”
“আমি মনে হয় পড়ে গেছি”
“কি?মানে”(অবাক হয়ে)
“আমি মনে হয় প্রেমে পড়ে গেছি”
“কি তুই!তা সে ভাগ্যবান ছেলেটা কে?”
“(লজ্জিত হয়ে)আমাদের ক্লাসের ছেলে”
“নাম কি?”
“সাব্বির”
“কি তুই সাব্বিরের প্রেমে?কখন,কেমন
করে হল?”
“তোর বিয়ের জন্য যখন থেকে তুই ক্লাসে
আসা অফ করে দিয়েছিস এর কয়েকদিন
পর ও নিজেই আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ
করতে আসে।ও তোর সম্পর্কে আমাকে
অনেককিছু জিজ্ঞাস করত।তুই আসিস না
কেন,কোন সমস্যা হয়েছে কিনা।আমাকে
তুই তোর বিয়ে হওয়ার কথাটা ক্লাসের
কাউকে জানাতে নিষেধ করেছিলি তাই
ওকে সত্যি কথাটা বলেনি।বলেছি
কয়েকদিনের মধ্যে তুই চলে আসবি।ওর
সাথে আস্তে আস্তে মিশতে মিশতে ওকে
আমার ভালো লেগে যায়।আর এরপর মায়া।
আর এই মায়া থেকেই ধীরে ধীরে ওর জন্য
আমার ভালবাসা সৃষ্টি হয়েছে”
“কি বললি?মায়া!মায়া থেকে ভালবাসা
জন্মায়”
“হুম গাধী।কেন তুই সাগর ভাইয়াকে যখন
ভালবাসতি তখন তোর উনার সবকিছুর
প্রতি মায়া জন্মায়নি”
“না ওর প্রতিতো আমার কখনো মায়া
জন্মায়নি।শুধু ক্ষণিকের মায়া কাজ
করেছিলো ওর প্রতি।ওকে ভালবাসি এই
কথাটা শুধু আমার মুখের কথায় সীমাবদ্ধ
ছিলো।”ভালবাসি”শুধু মুখের এই কথাটা
একে অপরকে বলতাম।স্যারের জন্য আমার
যে মায়া জন্মেছে তার থেকে সাগরের
প্রতি আমার এই মায়া অনেক দুর্বল।
তাইতো সাগরকে এত সহজে ভুলতে
পেরেছি।সাগরকে ভালবাসি এই কথাটা
মুখ দিয়ে বলতে বলতে তাতে অভ্যস্ত হয়ে
গেছি।কিন্তু ওকে যে ভালবাসতাম সেই
ভালবাসার অনুভূতিটা ততটা অনুভব করতাম
না।ক্ষণিকের যে মায়া ছিল সেটাও
আস্তে আস্তে লোপ পেয়েছে।এখন সাগর
নামটা আমার কাছে অপরিচিত লাগে।এই
নামের মানুষকে কোন একসময় মুখে বলা
“ভালবাসি”কথাটা বলে ভালবেসেছিলাম
তা এখন আর মনে পড়ে না।ওর জন্য এখন
আমার মনে কোন অনুভূতিই কাজ করে না।
কিন্তু উনার জন্য,উনার জন্য খুব প্রখাঢ় এক
অনুভূতি আমার মনে কাজ করে।উনার
কথা,উনার স্পর্শ,উনার সবকিছুতে মায়া
কাজ করে।তারমানে আমি উনাকে…।
না চাইতেও ওনাকে আমি ভালবেসে
ফেলেছি।মনকে কত বুঝালাম আর কাউকে
ভালবাসবো না কিন্তু এই মন কোন কথা
শুনলোনা।না না করা সত্ত্বেও এই মন
ঠিকই আমার অজান্তে একজনকে
ভালবেসে ফেলেছে।শেষ পর্যন্ত উনার
প্রেমে পড়ে গেলাম।
.
.
ক্লাস শেষে,ভার্সিটি গেইটে,
“কি ব্যাপার অনেক্ষণ ধরে তোমার জন্য
অপেক্ষা করছি।কোথায় ছিলে এতক্ষণ
ধরে?”
“তাসপিয়ার সাথে ছিলাম”
“ও, আচ্ছা,কি ব্যাপার মেঘ আমার দিকে
ওমন করে কি দেখছ!”
“কিছু না”
উনার মুখ দেখে বুঝার চেষ্টা করছি আমি
উনার প্রতি যা অনুভব করি উনিও কি
আমাকে ঠিক একিভাবে অনুভব করেন।
“আচ্ছা আপনি নাকি আমাদের ক্লাস আর
নিচ্ছেন না?”
“হ্যা”
“কারণটা কি জানতে পারি?”
“সত্য বলবো নাকি মিথ্যা”
“অবশ্যই সত্যিটাই বলবেন”
সাথে সাথে উনি জোরে গাড়ির ব্রেক
কষলেন
“মেঘ তুমি কি আসলেই বুঝনা নাকি বুঝতে
চাওনা”
“মা মা..মানে”
অনেকক্ষণ ধরে আমার চোখের দিকে
তাকিয়ে আছেন।কি মায়া এই চোখে।
বেশিক্ষণ উনার চোখে তাকিয়ে থাকলে
উনি আবার খারাপ মনে করবেন তাই
তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিলাম।
মেঘ তোমার জন্য এই সিদ্ধান্তটা
নিয়েছি।আর তোমাদের ক্লাস নিবো না।
কারণ তোমাকে কোন কিছু জিজ্ঞাস
করার জন্য দাঁড় করালে তুমি স্যার নামে
আমাকে সম্বোধন কর।আর এই জিনিসটা
আমার খুব খারাপ লাগে।আগে বাসায়
ডাকতে। তোমাকে অনেক বুঝানোর পর
তুমি আর আমাকে স্যার বলো না।বাসায়
আপনি করে ডাক।কিন্তু ভার্সিটিতে এসে
যদি তোমাদের ক্লাস নিতে গিয়ে
আমাকে তোমার কাছ থেকে আবার স্যার
ডাক শুনতে হয় সেটা আমার নিজের
থেকেই খারাপ লাগবে।তোমার থেকে
যখন স্যার ডাকটা শুনি তখন মনে হয় আমি
তোমার আপন কেউ না।
.
.
দেখো ইচ্ছে করলে আমি বিয়ের পর
তোমার উপর আমার অধিকারটা দেখাতে
পারতাম।পারতাম নয় কি?ইচ্ছা করলে
নিজের অধিকারটা আদায় করে নিতে
পারতাম।কিন্তু আমি তা করেনি।কেন
করনি জানো?কারণ আমি সবসময়ই চাইতাম
আমার স্ত্রী আমাকে আগে মন থেকে
ভালবাসোক।আমার কাছে তোমার মনটাই
সবচেয়ে মূল্যবান।জোর করে একটা নারীর
শরীর পাওয়া গেলেও মনটা পাওয়া যায়
না।শরীরের চাহিদা,সুখতো স্বল্পকালীন।
সময়ের সাথে সাথে তা নিস্তেজ হয়ে
যায়।কিন্তু মনের সম্পর্ক এর সুখের চাহিদা
দিনকি দিন বাড়তে থাকে।যদি মনের
কোন টান না থাকে,আত্মার কোন সম্পর্ক
আমার জীবনসঙ্গীর সাথে তৈরী করতে
না পারলাম তাহলে সত্যিই আমার
পুরোজীবনটাই বৃথা।এখনকার জন্য,বুড়ো
বয়সের জন্য সবসময়ের জন্য আমি একটা
নির্ভরশীল হাত চাই যে হাতকে কেন্দ্র
করে আমরা একে অপরের জন্য স্বপ্ন
দেখব,একজন আরেকজনের স্বপ্ন পূরণে
এগিয়ে আসব।সোনালী দিনগুলো একসাথে
দেখার জন্য একে অপরের সাথে থাকব।
বিপদের দিনে একে অপরের ছাউনি
হিসেবে পাশে দাঁড়িয়ে থাকবো।একে
অপরকে সাহস যুগাবো।একাকীত্ব
দিনগুলো দূর করার জন্য,মনের কথাগুলো
কাউকে বলার জন্য,আমার
প্রিয়জন,ভালবাসার মানুষের সঙ্গ
প্রয়োজন।আর এইসবের জন্য মনের
সম্পর্কটা অনেক জোরালো হওয়া লাগে।
সুন্দরভাবে সারাটাজীবন যদি এইভাবে
কাটাতে চাই এক্ষেত্রে যদি আত্মার আর
মনের সম্পর্কটা মূলকেন্দ্র হয়ে
দাঁড়ায়,একে অবলম্বন করে আমাদের
বাকিটা পথ বাঁচতে হয় তাহলে শুধু
শরীরের চাহিদাটা কি করে বড় হয়?আমি
চাইবো তুমি আমাকে মন থেকে মেনে
নিয়ে আমাকে ভালবাসো।শুধু এই দিনটার
জন্য আমি এতটা বছর অপেক্ষা করে আছি।
আমাকে মন থেকে মানতে হলে আমার
নাম ধরে না ডাক অন্তত আমাকে তুমি
বলে ডাক।দেখবে আস্তে আস্তে আমাকে
তোমার নিজের একটাই অংশই মনে হবে।
এই কাজটা করতে পারলে ভাববো তুমি
আমাকে পুরোপুরি মেনে নিতে না
পারলেও কিছুটা হলেও মেনে নিয়েছ।(চলবে)
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প “স্যার যখন স্বামী” পার্ট—৬