1. নতুন গল্পঃ4. রোমান্টিক উপন্যাস গুলোঃলেখাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসস্যার যখন স্বামী

স্যার যখন স্বামী !! লেখাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস

আজ আমার বিয়ে। খুব খুশি লাগছে।এই
দিনটার জন্য আমি কতকাল প্রতীক্ষায়
ছিলাম। কারণ আমার দীর্ঘ ৩ বছরের
প্রেমের পূর্ণতা পাবে এই বিয়ের
মাধ্যমে।আমার আর সাগরের দীর্ঘ ৩ বছর
ধরে প্রেম। আমি যখন অনার্স ২য় বর্ষে
উঠি তখন থেকেই আমার মা বাবা আমার
বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।
মা বাবা জিজ্ঞেস করেছিল আমি
কাউকে পছন্দ করি কিনা?যদি করে থাকি
তাহলে তা যেন আমি তাদের নির্ভয়ে
বলি।আমার পছন্দের কোন ছেলে থাকলে
তারা আমাকে তার সাথে বিয়ে দিতে
রাজি আছে।আমি সেদিন মা বাবাকে
আমার আর সাগরের রিলেশনের কথা বলে
দিলাম।তারা ও আমাদের প্রেম মেনে
নিল।আমি খুব সৌভাগ্যবতী এমন মা বাবা
পেয়ে যারা আমার উপর তাদের পছন্দের
ছেলেকে বিয়ে দেওয়ার জন্য
কোনপ্রকার চাপ না দিয়ে আমার
পছন্দকে গুরুত্ব দিয়েছে। অন্য ছেলের
সাথে কেন রিলেশন করছি,রিলেশন কত
বছর ধরে চলছে সেসব জিজ্ঞাসা না করে
তারা শুধু এতটুকুই জানতে চাইল ছেলের
নাম কি? ভাবাও যায় এমন মা বাবা আজও
আছে।

ইচ্ছে করলেই তারা আমাকে অনেক
বকাঝকা দিতে পারত,কথা শুনাতে পারত
কিন্তু না তারা সেটা করে নি। আমি
জানি তারা কেন সেটা করে নি কারণ
তারা আমাকে অনেক বিশ্বাস করত আর
যাই হোক তাদের মেয়ে তাদের বিশ্বাস
নিয়ে খেলবে না আর ভুল পথে পা
বাড়াবে না। আমার সুখেই তাদের সুখ।
তাই তারা আমার সুখের জন্য সাগরকে
মেনে নিয়েছে।আমিও আজীবন সেই
চেষ্টা করে গেছি যাতে আমার জন্য
তাদের সম্মানহানি না হয়। সেজন্য আমি
আমার রিলেশনে সবসময় সতর্কতা অবলম্বন
করেছি। আমার আর সাগরের পরিবারের
সম্মতিতে আমাদের বিয়ের তারিখ ঠিক
করা হল। আমার আর সাগরের স্বপ্ন পূরণ
হতে যাচ্ছে । ওর আর আমার টুনাটুনির
সংসার হবে।ভাবতেই খুব ভাল লাগছে।
আমার বিয়েটা গ্রামের বাড়িতে হবে।মা
বাবার খুব ইচ্ছা বিয়েটা যাতে আমাদের
নিজের গ্রামের বাড়িতে হয়।আমার ইচ্ছা
তারা কোন প্রশ্ন ছাড়াই পূরণ করতে
যাচ্ছে আমি তাদের এই সামান্য আবদার
রাখতে পারব না তা কেমন করে হয়।
তাদের ইচ্ছায় বিয়েটা গ্রামে অনুষ্ঠিত
হবে।ভার্সিটিতে আমার সবচেয়ে বেস্ট
ফ্রেন্ড তাসপিয়াকে বিয়ের দাওয়াত
দিলাম।বাকি আর কাউকে এই খবর বলে
নি। বান্ধবীকে বিয়ের দাওয়াত দেওয়ার
পর ক্লাস থেকে যখন বের হতে যাব তখনি
আমাদের ভার্সিটির সবচেয়ে হ্যান্ডসাম,
গুড লুকিং তন্ময় স্যারের সামনে পড়লাম।
উনি হচ্ছেন আমাদের ভার্সিটির সব
মেয়েদের ক্রাশ। পড়ালেখায় খুব ভালো
হওয়ায় আর তাড়াতাড়ি গ্রেজুয়েশন
কমপ্লিট করায় অল্প বয়সেই ভার্সিটিতে
শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়ে যান। উনি
আমার কাছে এসে আমাকে দাঁড়াতে
বললেন। মেঘ দাঁড়াও।
জ্বী স্যার।

শুনলাম তোমার নাকি ৩ দিন পরে বিয়ে।
কথাটা কি সত্যি?
জ্বী স্যার।
আমার মুখ থেকে হ্যা শব্দ শুনায় মনে হল
উনার চিন্তাগ্রস্ত মুখে মেঘের ছায়া
নেমেছে। প্রতিদিন যাকে
হাস্যউজ্জ্বলভাবে থাকতে দেখি আজ
তার মুখটা কেমন যেন বিষাদে ছেয়ে
গেছে।মুখটা শুকিয়ে কেমন ফ্যাকাশে
হয়ে গেছে।উনি গম্ভীর মুখে বললেন
তোমার বান্ধবীকে বিয়ের দাওয়াত
দিলে অথচ আমাকে দাওয়াত দিলে না?
আমাকে কি তোমার বিয়ের দাওয়াত
দেওয়া যেত না!!
স্যারের কথায় কিছুটা অবাক হলাম।স্যার
আমার বিয়ের কথা কেমন করে জানল?
আমিতো শুধু তাসপিয়াকে আমার বিয়ের
দাওয়াত দিছি।আমার বিয়ের কথাতো
একমাত্র ওই জানে।বুঝছি শয়তানীরটা
পেটে কিচ্ছু থাকেনা।স্যারের সাথে ওর
বন্ধুসুলভ সম্পর্ক তাই হয়ত স্যারকে গড়গড়
করে সব বলে দিছে।
মেঘ কি ভাবছ?আমার প্রশ্নের উত্তর
দিলে না যে?
না স্যার… আসলে আমার বিয়েটা
আমাদের গ্রামের বাড়িতে হচ্ছে।
আপনাকে দাওয়াত দিতাম কিন্তু আবার
ভাবলাম আপনি ওতদূরে যাবেন না তাই
আর কি?
তোমার গ্রামের বাড়িতে বিয়ে হোক বা
যেখানে বিয়ে হোক অন্তত দাওয়াততো
দিতে পারতে?সম্ভব হলে যেতেও পারি।
বিয়েতো আর বাংলাদেশের বাইরে হচ্ছে
না।এইখানেই হচ্ছে। তোমার বিয়েতে
আমি যেতে চাই। আমাকে আমন্ত্রণ করা
যাবে?

খুব লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলাম সেদিন।
আসলেই তো দাওয়াত দিলে বা কি এমন
হত?কমপক্ষে এরকম লজ্জায় তো আর
পড়তাম না।খুব ভুল করে ফেলেছি।
মেঘ কোথায় হারিয়ে যাও একটু পর পর।
দেখ তুমি দাওয়াত না দিলেও কিন্তু আমি
তোমার বিয়েতে আসছি। মেঘ তোমার
বিবাহিত জীবন সুন্দর আর সুখের হোক এই
দুয়া করি কথাটা বলতে গিয়ে উনার
গলাটা কেঁপে উঠল।
জ্বী স্যার আপনি আমার বিয়েতে আসলে
আমিও খুব খুশি হব। এই কথাটা বলতে
গিয়ে স্যারের চোখে তাকালাম।অসম্ভব
লাল হয়ে গেছে ইতিমধ্যে উনার চোখ।
চোখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।
আমি আবার চোখ সরিয়ে নিলাম।আজকে
স্যারের ব্যবহার খুব আজব ছিল। যাইহোক
এইসব ভেবে কাজ নেই।আজকে বাড়িতে
যাব। বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান করা হচ্ছে।
সবাই খুব হাসিখুশি।আত্মীয়স্বজন ও চলে
এসেছে।পুরো বাড়িতে হৈ-হুল্লড় অবস্থা।
সবার সাথে হাসিখুশিতে কেমন করে যে
দিনগুলো পাড় হয়ে গেল টের পেলাম না।
অবশেষে সে প্রতীক্ষিত দিন হাজির হল।
তাসপিয়া বিয়েতে আসতে পারেনি। ওর
মা নাকি খুব অসুস্থ তাই আর ওর আসা হল
না।মনটাই খারাপ হয়ে গেল।কিন্তু
বিয়েতে স্যার এসেছে।মা বাবা খুব খুশি
হয়েছে আমার বিয়েতে স্যার আসায়।
স্যার আমার বিয়েতে আসবে সেটা আমার
ভাবনার বাইরে ছিল।বিয়েতে আসতে না
আসতে আমার মা বাবার সাথে উনি গল্প
জুড়িয়ে দিয়েছেন।আর আমার মা বাবাও
স্যারের সাথে অনেক ফ্রী হয়ে গেছে।
কিন্তু আমার জানি কেমন লাগছে।
ক্লাসেও স্যারের সামনে থাকতে
আনইজি লাগে।আর স্যার এখন আমার
বিয়েতে উপস্থিত এখন আরও বেশি
অস্বস্তিকর লাগছে।
পার্লার থেকে লোক আনা হয়েছে
আমাকে সাজানোর জন্য। সবাই এখন
আমাকে সাজাতে ব্যস্ত। এত্ত বিরক্তিকর
লাগছে।সাজগোছ জিনিসটা আমার
বরাবরই অপছন্দের।পুরো ২ ঘন্টা
পার্লারের লোকেরা আমাকে তাদের
মনমতন সার্কাসের জোকারের মতন
সাজিয়ে দেওয়ার পর ক্ষান্ত হল।আর
আমিও এদের অত্যাচার থেকে মুক্তি
পেলাম।বিয়ে বাড়িতে সবাই এখন ব্যস্ত।
আমি রুমে একা বসে আছি। হঠাৎ আমার
মোবাইলে একটা মেসেজ আসল।সাগরের
পাঠানো মেসেজ।এই মেসেজ দেখে
আমার পুরো দুনিয়া উল্টিয়ে গেল।আমার
সাগর আমার সাথে এমন করবে আমি
স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।এ কিছুতেই
আমার সাগর হতে পারে না।
ওর এই মেসেজ পড়ে আমার মাথা ব্যথা শুরু
হয়ে গেছে। মেসেজে এই লিখা ছিল।
আজকে তো অনেক সুন্দর করে
সেজেছ।
আমাকে বিয়ে করবে বলে তোমার এই
সাজ।যে দিনটার প্রতীক্ষায় এতদিন তুমি
ছিলে আজকে সে দিনের অবসান ঘটিয়ে
তোমার সে স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।
জানোতো মেঘ ছোটবেলা থেকে
আমার
একটা বদঅভ্যাস ছিল কারও চোখেমুখে
হাসির ঝলক ফুটে উঠলে যতক্ষণ পর্যন্ত
আমি তার এই হাসিখুশি মুখে মেঘের
শ্রাবণ নামাতে না পারি ততক্ষণ পর্যন্ত
আমার হাত পা নিষপিষ করে।তাকে
কাঁদানোর আগ পর্যন্ত আমি শান্তি পায়
না। তাকে আমি আগে হোক বা পিছে
হোক কাঁদিয়েই ছাড়ি। আচ্ছা ভাবো তো
মেঘ বরপক্ষ আজকে বিয়েতে আসল
না,তোমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে
গেছে,তোমার মা বাবা সমাজে মুখ
দেখাতে পারবে না, সবার চোখে মুখে
কান্নার অশ্রু। পরিস্থিতিটা কেমন হবে
বলতো?দারুণ হবে তাই না? এতক্ষণে হয়ত
তোমার ব্রিলিয়ান্ট মাথায় এটা ঢুকে
গেছে আমি কি বলতে চাচ্ছি। হ্যা তুমি
ঠিকই ভাবছো তোমার ভালবাসার সাগর,
যাকে তুমি অনেক ভালবাসো সে আজকে
তোমাকে বিয়ে করতে আসছে না।আজকে
খুব খুশি লাগছে আমার। এতদিন ধরে আমি
যে প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছিলাম
আজকে তোমাকে কাঁদিয়ে,পুরো সমাজের
সামনে তোমার মুখে চুনকালি মাখিয়ে
আজকে আমার এই প্রতিশোধের সমাপ্তি
করাবো। আজকে তোমাকে কাঁদিয়ে আমি
শান্তির নিদ্রাতে ডুব দিব। ভালো থেক
মেঘ, পরবর্তী সীন দেখার জন্য
নিজেকে
প্রস্তুত করিও হাহাহা।
সাগর কেন এইসব করছে?কিসের
প্রতিশোধের কথা বলছে। বুঝতে পারছি
না।ও হয়ত আমার সাথে ফাজলামি করছে।
প্রথমদিকে ওর এই ধরণের মেসেজ
দেখে
খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম,ভেবেছি সত্যি
সত্যি ও বিয়েতে আসবে না। কিন্তু
পরক্ষণেই আমার মনে হল,ও তো সবসময়
যে
কোন মূহুর্তে আমার সাথে ফাজলামি
করে বসে। আমাদের রিলেশন চলাকালীন
ও এরকমভাবে আমাকে ভয় দেখিয়ে
প্রথমে আমাকে কাঁদাত, তারপর আমার
কান্না দেখে ও অট্টহাসিতে ফেটে পড়ত।
বলত আরে বোকা মেয়ে ফাজলামি
করেছিলাম এতক্ষণ ধরে। আসলে দেখতে
চাচ্ছিলাম কাঁদলে তোমাকে কেমন
লাগে?
কিন্তু সেদিনের সে কথাগুলো মেনে
নিলেও আজকে মেনে নিতে পারছি না।
সেসময়ের পরিস্থিতি একরকম ছিল আর
আজকের পরিস্থিতি আরেকরকম। এমন
দিনেও কেউ এভাবে ভয় দেখিয়ে
ফাজলামি করে। এরকম ফাজলামির মানে
কি?এখন কল দিয়ে ওকে ইচ্ছামত বকা দিব,
আজকে ও আমাকে যতই কাঁদাতে চাক না
কেন আমি কিছুতেই কাঁদবো না,ওর এই
ফাজলামি আমি এখনি বের করছি।
ওকে কল দিলাম,সাথেসাথে কল রিসিভ
করল।সাগর এইরকম ফাজলামির মানে কি?
প্লিজ আজকের দিনেতো এইসব বাদ দাও।
আমাদের বিয়ের পর আমার সাথে যতখুশি
ফাজলামি করো কিন্তু এখন এইসব
ফাজলামি বন্ধ কর।তুমি জান প্রথমে
তোমার এই মেসেজ পেয়ে আমি কত ভয়
পেয়ে গেছি।ভেবেছি তুমি সত্যি সত্যি
আমার সাথে এরকম করবে। কিন্তু পরে
মনে হল তুমি আমার সাথে ফাজলামি
করছ। আমি তো জানি তুমি আমার সাথে
কখনো এরকম করবেনা।আমি আমার
সাগরকে চিনি।সাগর তোমার মুখ দিয়ে
একটাবার শুধু একটাবার বল তুমি আমার
সাথে এতক্ষণ ধরে ফাজলামি করছিলে,
আমাকে মেসেজে তুমি যা জানিয়েছ সব
মিথ্যা।শুধু একটাবার আমি তোমার মুখ
থেকে এই কথা শুনতে চাই,প্লিজ… তাহলে
আমি মনে খুব শান্তি পাব।আমার এখনো
মনের ভয় কাটেনি।সাগর…. কিছু বলছ না
কেন?কিছু বল?
এই মেয়ে তুমি কি এক কথায় বুঝ না।
মেসেজে তোমাকে যা বলেছি সব সত্যি।
আমি মিথ্যা কিছু বলি নি।তোমাকে
আমি বিয়ে করতে আসছি না।
সাগর এইসবের মানে কি?এই মূহুর্তে তুমি
এইসব কি বলছ?তুমি বুঝতে পারছ তুমি কি
বলছ?দেখ আমার উপর যদি তোমার কোন
রাগ থাকে বিয়ের পর আমরা দুইজন এই
বিষয় নিয়ে কথা বলে সমস্যার সমাধান
করতে পারি।কিন্তু প্লিজ এইসব
ফাজলামি এখন বাদ দাও। বিয়েতে
তাড়াতাড়ি চলে আস।আমি তোমার জন্য
অপেক্ষা করছি।
এই তোর সমস্যা কি?তোর কোন কারণে
মনে হচ্ছে আমি তোর সাথে ফাজলামি
করছে।আমাকে কি তোর জোকার মনে হয়
যে আমি তোর সাথে ফাজলামি করব।
সাগর তুমি আমার সাথে এইরকম ব্যবহার
কেন করছ?তোমার এই ধরণের কথায় আমার
খুব কষ্ট হচ্ছে।প্লিজ সাগর তোমার এইসব
কথা আমার ভালো লাগছে না।তুমি চলে
আস বিয়েতে সবাই তোমার জন্য বসে
আছে।

তুই সহ তোর মা বাবা বসে থাক আমার
তাতে কিছু যায় আসে না।আমি আসছি
না। তোর সাথে আমি এতদিন ভালবাসার
নাটক করেছি,আর তুই কি বোকা মেয়ে
আমার এই ভালবাসাকে সত্যি ভেবে
বসেছিস। আবার আমাকে বিয়ে করার
জন্য পাগল হয়ে গেছিস।আসলেই তুই একটা
বোকা।
ভালবাসার নাটক!!সাগর এইসব তুমি কি
বলছ?আমি তোমার কি এমন ক্ষতি করেছি
যার জন্য তুমি আমার সাথে এই জঘণ্য
খেলা খেলছ।আমার অপরাধটা কি?
অপরাধ হাহাহা….তোর মেমোরী এমন
কেন বলতো?আগের সব কথা ভুলে গেছিস।
দাঁড়া আমি তোকে মনে করিয়ে দিচ্ছি…
মনে আছে ৪ বছর আগে তুই আমাকে
পাব্লিক প্লেসে আমার বন্ধুদের সামনে
আমাকে থাপ্পড় মেরেছিলি। তুই এই কথা
এত তাড়াতাড়ি কেমন করে ভুলে গেলি?
আমি তো এইসবের কিছুই ভুলে নি।বারবার
আমার কানে সেই থাপ্পড়ের আওয়াজ
বাজে।ওইদিন থেকে মনে মনে প্রতিজ্ঞা
করেছি তোর উপর আমি প্রতিশোধ নিব।
প্রথমে তো ভেবেছিলাম তোর সর্বনাশ
করব।কিন্তু তোর সর্বনাশ করলে তুই হয়ত
নিজের জীবন শেষ করে দিতি,নাহলে
ঘটনাটা ধামাচাপা দিয়ে রাখতি।তাহলে
আমার প্রতিশোধটা ও পূরণ হত না।আমাকে
যেমন করে পাব্লিক প্লেসে,আমার
বন্ধুদের সামনে অপমানিত
করেছিস,আমিও তোকে ঠিক একিভাবে
অপমান করতে চেয়েছি।তাইতো তোর
সাথে ভালবাসার মিথ্যা অভিনয় করে
গেছি এতদিন।আমি এতদিন এই দিনটার
আশায় ছিলাম।আজকে তোর মতন আমার ও
সেই স্বপ্নের দিন হাজির হয়েছে। আজকে
বিয়েতে আমি যখন আসবো না তখন সবার
সামনে তুই, তোর মা বাবা অপমানিত হবি।
তোর সে থাপ্পড়ের অপমান আমার
ইগোকে হার্ট করেছিল সেদিন। আজকে
তুইসহ তোর ফ্যামিলি অপমানিত হলে
আমার কলিজা ঠাণ্ডা হবে।তোর সেই
ভুলের শাস্তি আজকে তুইসহ তোর
ফ্যামিলি ভোগ করবে।

সাগর আমি সেইদিনের সে ঘটনার জন্য
তোমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।আর
তুমি!!এত্ত ইগো তোমার!! তোমার মনে এই
ছিল এতদিন?তোমার মতন একটা
অমানুষকে আমি ভালবেসেছি….আজ
তোমার এই ইগোর জন্য আমাকে অপমানিত
হতে হবে….অপমানিত হতে হবে আমার মা
বাবাকে। যে দোষ আমার মা বাবা
করেনি সে দোষের শাস্তি তাদের পেতে
হবে। সাগর তুমি এতদিন আমার সাথে
ভালবাসার মিথ্যা অভিনয় করে আমাকে
ঠকিয়েছ….. আমাকে আজকে যে পরিমাণ
কষ্ট দিয়েছ আল্লাহ যদি এইসব দেখে
থাকে তাহলে আমি বলছি আমার সাথে
যেমন তুমি ভালবাসার মিথ্যা অভিনয়
করেছ তোমার সাথে ও এরকমভাবে কেউ
ভালবাসার মিথ্যা অভিনয়
করবে….একটুকরো ভালবাসার পরশ
পাওয়ার জন্য তুমি কেঁদে কেঁদে বেড়াবে
কিন্তু তোমার কপালে কখনো কারও
ভালবাসা জুটবে না।আই হেইট ইউ সাগর।
আরে…যা যা… এই সাগর ভালবাসার জন্য
কারো পিছনে দৌঁড়ায় না,সাগরের
পিছনে মেয়েদের ভালবাসা দৌঁড়ায়।
তোর এইসব ফালতু কথার ঝুড়ি তোর কাছে
রাখ।আর কয়েক মিনিট পর তামাশার
খেলা দেখতে নিজেকে তৈরী কর। Best of
luck. এই বলে কল কেটে দিল।
সাগর আমার সাথে এইরকম করতে পারল?
আমি এখন এই মুখ কেমন করে দেখাবো…
আমার মা বাবা ওদের কি হবে?যে
বিশ্বাস আমার উপর তারা করেছিল সে
বিশ্বাসের কি হবে?এর থেকে যদি ওরা
আমাকে ওদের পছন্দের ছেলের সাথে
বিয়ে দিত তাহলে হয়ত আজকে এইদিন
দেখতে হত না।আমার মা বাবাকে
অপমানিত হত না। বাইরে থেকে
চিল্লাচিল্লি কান্নাকাটির আওয়াজ
শুনলাম। জানালা দিয়ে দেখছি সাগরের
মা বাবা আসছে কিন্তু সাগর আসে নি।
সাগর নাকি পালিয়ে গেছে।সাগরের মা
বাবার কথাবার্তা শুনে আমার মা বাবা
পাগলের মতন কান্নাকাটি শুরু করে
দিয়েছে। বিয়ের বাড়িতে আমন্ত্রিত
মেহমানরা নিজেদের মধ্যে কানাঘুষা
লাগিয়ে দিয়েছে।মা বাবাকে সান্তনা
দেওয়ার জন্য তন্ময় স্যার আপ্রাণ চেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের
কান্নাকাটি কিছুতেই থামছে না। তারা
তো জোরে জোরে কান্নাকাটি করতে
পারছে কিন্ত আমি… আমিতো সেটাই
পারছি না।খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। মা
বাবার মতন কেঁদে এই কষ্টের ব্যথা
কমাতে চাচ্ছি। কিন্তু আমার হাত পা
বাঁধা। মেয়েদের এত জোরে কাঁদার কোন
অধিকার নেই।আমার জন্য শুধু আমার জন্য
তাদের আজকে এই অবস্থা।আমার পছন্দের
উপর অগাধ বিশ্বাস ছিল তাদের, তাই
আমার পছন্দ অনুযায়ী তারা আমার বিয়ে
দিতে রাজি হয়েছে সাগরের সাথে।
কিন্তু সাগর….ও কি করল? ও আমার
বিশ্বাস ভেঙ্গে দিয়েছে। আমার জন্য
আজকে আমার মা বাবাকে লোকের কথা
শুনতে হচ্ছে। আমি কাঁদছি,মা বাবা
কাঁদছে।এটাই তো তুমি চেয়েছিলে!! তুমি
না আসাতে হাসি খুশিতে ভরা বিয়ে ঘরে
আজ শশ্মানঘাটের মরা কান্নাতে পরিণত
হয়েছে।এটাই তো তুমি দেখতে
চেয়েছিলে। কোথায় তুমি?তোমার
প্রতিশোধ নেওয়া সফল হয়েছে। কাপুরুষের
মতন কেন পালিয়ে গেলে? সাহস করে
একটাবার এসে দেখে যেতে কি অবস্থা
করে গিয়েছ তুমি? (কেঁদেকেঁদে) আজ শুধু
আমি ঠকি না আমার সাথে আমার মা
বাবাও ঠকেছে। ওদের সামনে আমি এই মুখ
কি করে দেখাবো। আমি পারবো না এই
মুখ নিয়ে তাদের সামনে যেতে। তাই এই
জীবন শেষ করে দিব।আমি জানি
আত্মহত্যা করা মহাপাপ।কিন্তু আমার
কিছু করার নেই। আমি ওদের এই কষ্ট এই
কান্না আর দেখতে পারছি না।আমাকে
মাফ করে দিও মা বাবা।তোমাদের
মেয়ের জন্য আজকে তোমাদের এই
অবস্থা,আমার উপর তোমাদের যে বিশ্বাস
ছিল সে বিশ্বাসের মর্যাদা আমি রাখতে
পারি নি। আলমারি থেকে বিষের বোতলটা নিলাম।
বিয়ের কয়েকদিন আগে সাগরের সাথে
দেখা করেছিলাম। সেদিন কথা বলের
ছলে ও আমাকে ১টা বিষের বোতল
দিয়েছিলো।
আমাকে এই বিষের বোতল দিচ্ছ কেন?
মেঘ তোমাকে আমি এখন যে বিষের
বোতল দিলাম সেটা মাঝেমাঝে খুব
কাজে লাগে।

মানে?এই জিনিস আবার কাজে লাগে?
কেমন করে?(অবাক হয়ে)
সবাই ভাবে এই বিষ শুধু মানুষের জীবন
কেড়ে নিতে জানে,কিন্তু একটু ভাল করে
ভিতর থেকে ভাবলেই দেখবে এটা শুধু
জীবন কেড়ে নেয় না,বিষাদ কষ্ট থেকে
মুক্তি ও দেয়।
তাই নাকি?তা আমাকে এইটা দেওয়ার
মানেটা কি?আমার মনেতো কোন কষ্ট
নেই।কয়েকদিন পর তোমাকে আপন করে
পাব,আমার সব স্বপ্ন পূরণ হবে,,আমার মনে
কোন কষ্ট নেই।
মানুষের ভাগ্য মূহুর্তের মধ্যে পরিবর্তন
হয়ে যেতে পারে।কখন কি ঘটে তা তো
আর বলা যায় না।রেখে দাও এটা।
প্রয়োজনে কাজে লাগবে।
মাঝেমাঝে তুমি কি যে বল না,, কিছুই
বুঝতে পারি না আমি।আমার এইসবের
প্রয়োজন পড়বে না।
আররে…তারপরও রেখে দাও,,, দেখবে
দেখবে এখন না লাগলেও সঠিক সময়ে এটা
কাজ দিবে,,,রেখে দাও নিজের কাছে।
তখন সাগরের এই কথার মানেটা বুঝি নিই।
কিন্তু আজকে বুঝতে পারছি ও সেদিন কি
বুঝাতে চেয়েছিলো।এরকম পরিস্থিতিতে
সাগরের দেওয়া এই জিনিসটা আমার
কাজে লাগবে সেটা আমার কল্পনার
বাইরে ছিল।আজকে সত্যিই এই জিনিসটা
আমার কাজে লাগবে।
_________******_________
দেখুন,, আপনারা যদি এরকমভাবে ভেঙ্গে
পড়েন তাহলে মেঘের কি হবে? এই
পরিস্থিতিতে ওকে সামাল দেওয়ার জন্য
আগে আপনাদের শক্ত হতে হবে।প্লিজ
আপনারা এরকমভাবে কাঁদবেন না।
বাবা কি করব তাহলে,,ওই ছেলেটাকে
আমার মেয়েটা এত্ত ভালবাসলো আর সে
ওর বিনিময়ে কি দিল ধোকা!! এত্তবড়
প্রতারণা!! এরকম করার আগে একটাবার
আমার মেয়েটার কথা ভাবলো না,,,ওই
ছেলের কারণে লোকসমাজে আমাদের
মাথা কাটা গেল।কি করে আমার
মেয়েটাকে সান্তনা দিব। আমার মেয়েটা
এইসব শুনলেই মারা যাবে।
প্লিজ এরকম করে বলবেন না আপনারা,,
মেঘের কিছু হবে না,,আমার বিশ্বাস
আপনারা ওকে সব বুঝিয়ে বললে ও ঠিকইই
বুঝবে।একজনের পাপের শাস্তি আরেকজন
পাবে সেটা আমি কিছুতেই হতে দিব না।
(হঠাৎ মনে হল বাইরে লোকজনের এত
সরগোল ভিতর পর্যন্ত যাওয়ার কথা।এত
কান্নাকাটি চিল্লানির আওয়াজ মেঘ
শুনে নি তা কেমন করে হয়?ওকে তো
কোথাও দেখতে পাচ্ছি না। এতক্ষণ ধরে
এই পরিস্থিতিতে ও ঘরে বসে আছে!!
ব্যাপারটা সুবিধার মনে হচ্ছে না।এবার
বুকের মধ্যে কুহু ডাকা শুরু হয়ে গেছে ,,ও
ঘরে থেকে নিজের কোন ক্ষতি করে
বসে
নিতো!!??)
মেঘের কয়েকজন আত্মীয় -স্বজনকে
ডেকে বললাম ওর মা বাবাকে সান্তনা
দেওয়ার জন্য,আমার একটু কাজ আছে। এই
কথা বলে,,,আমি মেঘের ঘরের দিকে দৌড়
দিলাম।
মেঘ,,মেঘ,,,ঘরে একা একা কি করছ?দরজা
খুল,, মেঘ,,শুনতে পাচ্ছ আমার কথা,,, দরজা
খুল বলছি,,,দেখ এখন যদি তুমি দরজা না খুল
তাহলে কিন্তু আমি দরজা ভাঙ্গতে বাধ্য
হবে।এতকিছু বললাম,,জোরে জোরে
চিল্লিয়ে ওকে ডাকছি কিন্তু ওর কোন
সাড়াশব্দ নেই।তার মানে ও…. আর কিছুই
ভাবতে পারছি না,,আমি ওকে কিছু হতে
দিবো না,,জানালাটা খুলা ছিল সেখানে
উকি দিয়ে দেখি ওর হাতে বিষের
বোতল। একদৃষ্টিতে সেখানে তাকিয়ে
আছে।এই দৃশ্য দেখে ভয়ে আমার শরীর
কেঁপে উঠল। তাড়াতাড়ি করে
কয়েকজনকে ডেকে এনে দরজা ভাঙ্গতে
শুরু করলাম।দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে
তাড়াতাড়ি করে ওর হাত থেকে বিষের
বোতলটা কেড়ে নিলাম।
পাগল হয়ে গেছ কি করতে যাচ্ছিলে তুমি
মেঘ??
বিষের বোতল দিয়ে কি করে মানুষ? আমি
মরতে চাচ্ছি,, বেঁচে থাকার কোন
অধিকার আমার নেই।
কে বলেছে তোমাকে এইসব? পাগলের
মতন
আবোলতাবোল কি বলে যাচ্ছ কতক্ষণ
ধরে?
হ্যা আমি পাগল,,পাগলের মতন একজনকে
ভালবেসেছি যার মূল্য আমিসহ আমার
গোটা ফ্যামিলি পাচ্ছ।ওদের সামনে কি
করে এইমুখ দেখাবো। দেন আমাকে
বিষের
বোতলটা দেন।এটা খেলে সব ঠিক হয়ে
যাবে।
কি ঠিক হবে শুনি,,কি ঠিক হবে?কিচ্ছু
ঠিক হবে না।তুমি যে কাজ করতে যাচ্ছ
তুমি জানো তোমার ফ্যামিলি যদি
জানতে পারে তাদের মেয়ে এমন একটা
কাজ করতে যাচ্ছে তাহলে তারা কি
পরিমাণ কষ্ট পাবে।বুঝতে পারছ আমার
কথা (মেঘের কাধ ঝাঁকিয়ে)।কোন মা
বাবা চায় না তাদের সন্তান কোন ভুল
পদক্ষেপ নিয়ে নিজেকে কষ্ট দেক।
সন্তানের কষ্ট মা বাবার কলিজায় গিয়ে
লাগে। তোমার এই ভুলের মাশুল তোমার
মা বাবাকে দিতে হবে। তুমি তো এটা
খেয়ে মুক্তি পেয়ে যাবে কিন্তু তুমি
ওদের কথা কি একবারও ভেবে দেখেছ
যারা তোমাকে অনেক ভালবাসে,, তুমি
ছাড়া ওদের কি হবে?তুমি ছাড়া ওদের
আছেই বা কে।আর আমাকে বলতো এই বিষ
খেলে কি ঠিক হবে,বল(ধমক দিয়ে),,
_____
কথা বলছ না কেন? মান সম্মান বেঁচে
যাবে,তোমার মা বাবার সামনে মুখ
দেখাতে হবে না,, এই জন্য না? তাহলে
তুমি এটা একা বসে খাচ্ছ কেন?একটা
কাজ করি,, এই বিষের বোতল তোমার মা
বাবাকেও দিয়ে আসি আমি।কি বল?
তুমিসহ তোমার ফ্যামিলি এই কষ্ট অপমান
থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে।
আপনি পাগল হয়ে গেছেন কি বলছেন
এইসব? আমারা মা বাবাকে আপনি এই
মৃত্যুর জিনিস দিবেন!!আপনি মানুষ!!
ও নিজের বেলায় তো ভালো বুঝ।
সেল্ফিস মেয়ে একটা।নিজেকে মুক্তি
দিবে, মা বাবাকে দিবে না।এই মেয়ে
তোমার সাথে সাথে তারাও অনেক কষ্ট
পেয়েছে কয় তারাতো ভুলেও এই কাজ
করে নি।তুমি এই কাজ করে নিজেকে
মুক্তি দিচ্ছ না,একসাথে দুইটা ভুল কাজ
করছ। নিজেকে নিজে শেষ করে পাপ করছ
যার ক্ষমা আল্লাহর দরবারে নেই আর
নিজের মা বাবার কলিজায় আঘাত দিতে
যাচ্ছ ।তুমি এই যুগের শিক্ষিত মেয়ে,,
কোথায় এইসময়ে নিজের মা বাবাকে
গিয়ে সান্তনা দিবে,মা বাবাকে বুঝাবে
কিচ্ছু হয় নি,তোমরা শান্ত হও,, তা না
ওনি ঘরে বসে নিজের মুক্তির পথ বেছে
নিয়েছেন। সেল্ফিস কোথাকার।
আপনি আমাকে সেল্ফিস বললেন!!
(কেঁদেকেঁদে)
হ্যা বলেছি।তুমি একটা সেল্ফিস মেয়ে।
আমি সেল্ফিস না।আমি ভেবেছিলাম এই
পদ বেছে নিলে সবঠিক হয়ে যাবে।আসলে
মাথা ঠিক ছিল না।কি করব না করব
মাথায় কাজ করছিল না।ওদের সামনে
কেমন করে দাঁড়াবো বলতে পারেন?
কেন দাঁড়াতে পারবে না? কি করছ তুমি।
কিচ্ছু করনি। তুমি একজন ভুল মানুষকে
ভালবেসেছ যে তোমাকে ধোকা দিয়ে
চলে গেছে।ওর পাপের শাস্তি ও পাবে।
তুৃমি এইকাজ করলে ওই শয়তানটা জিতে
যেত আর তুমি কোন পাপ না করেই হেরে
যেতে। দেখ যা হবার তা হয়ে গেছে এইসব
ভেবে নিজেকে আর কষ্ট দিয়ো না।
(মেঘকে আরও নিজের কাছে টেনে)
মেঘ
নিজেকে সামলাও। আমি আছি কি
করতে? আমি সবকিছু ঠিক করে দিব।
প্লিজ এইসব ভেবে নিজেকে আর কষ্ট
দিয়ো না,,মেঘের চোখের পানি হাত
দিয়ে মুছে দিয়ে। মেঘ,,চল নিচে
চল,,তোমার মা বাবার এখন তোমাকে
সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প “স্যার যখন স্বামী” পার্ট—২