রোমান্টিক উপন্যাস- রাত
লেখকঃ নিলান্তিকা নারাতদিয়া
ছেলেটি আমার পিছনে দাড়িয়ে ঘাড় থেকে
আমার চুল গুলা সরিয়ে এক পাশে আনল।
এক হাত আমার কোমড়ে আর এক হাত আমার
মুখে রেখে আমাকে চেপে ধরে আছে।
আমি নড়তে পারছিনা।
ভয়ে কাপছি কিন্ত কিছু বলতে পারছিনা।
ছেলেটার নি:শ্বাস আমার ঘাড়ে পরছে।
হঠাত ই ঘাড়ে দাতের স্পর্শ পেলাম।
হঠাত ই মনে হল কেউ আমার ঘাড়ে দাত
বসিয়ে দিল।রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
আমি তাকে ছাড়াতে চেস্টা করছি। কিন্তু
পারছি না।
আমি চিতকার দিয়ে উঠলাম।
সাথে সাথে আমি ঘুম থেকে জেগে গেলাম।
উঠে দেখি আমি পুরা ঘেমে গিয়েছি।
এক ঢোকে পানি খেয়ে নিলাম।
ঘড়ি তে রাত ৩ টা বাজে।
বিছানা থেকে নেমে জানালার কাছে
গেলাম।
এখন আর ঘুম আসবেনা।
আমি জানি
কারন এর আগেও এমন হয়েছে
প্রতিদিন রাতে এই একি স্বপ্ন দেখি আর
রাতে ঘুম ভেংগে যায়।
আর রাতে ঘুম আসে না।
জানিনা এই একি স্বপ্ন কেনো দেখি।
জানালার সামনে দাঁড়ালাম।
বাইরে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে।
আমি দেখছি।
খুব বাজ পরছে আর বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।
আমি রাস্তার দিকে তাকালাম।
হঠাত বিদ্যুৎ চমকে উঠল।
আর আমার মনে হল আমি কাউকে দেখলাম।
কিন্তু এখন কাওকে দেখতে পাচ্ছিনা।
মনে হয় আমার মনের ভুল।
আর ঘুম আসার সম্ভাবনা নেই।
তাই কফি বানিয়ে নিয়ে আসলাম।
বারান্দা তে গেলাম।
রকিং চেয়ারে বসে বৃষ্টি আর কফির মজা
নিতে থাকলাম।
ও আমার পরিচয় টা দেওয়া হয়নি।
আমি রাত্রি।
মা বাবা আমি ছোট থাকতেই মারা গেছে
নানুর কাছে শুনেছি।
নানুর কাছেই আমি মানুষ হয়েছি।
কিন্তুনানু ও ১ বছর হল আমাকে ছেড়ে চলে
গেছে।
হঠাত ই একদিন নানু কোথায় যেনো উধাও
হয়ে গেলো।
আর খুজে পাইনি।
পুলিশ ও অনেক খুঁজেছে কিন্তু ……..
আমার বাসায় আমি আর একটা কাজের লোক
নিশি আপু থাকে।কিন্তু কাজ শেষ এ সে
বাসায় চলে যায়।
এত বড় বাড়িতে একা থাকতে ভয় লাগে কিন্তু
কিছুই করার নেই।
নিশি আপুর বাচ্চা আছে তাই তাকে চলে
যেতে হয়
।
ঘড়ি তে ৪ টা বাজে।
কিন্তু ঘুম এর নাম গন্ধ নেই।
কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে চোখ
বুঝলাম।
হালকা ঘুমের ভাব এল।
হঠাত করেই হাত থেকে কাপ টা পরে গেল।
আমার ঘুম ভেংগে গেল।
উঠে দেখি ৮ টা বাজে।
আমি কখন ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম জানিনা।
হঠাত ফোন বেজে উঠল।
রাত্রি- (ফোনে) হ্যা বল নিমি।
।
নিমি- কিরে কখন থেকে ফোন দিচ্ছি।
আজ যে পরিক্ষা আছে ভুলে গিয়েছিস
নাকি?
।
রাত্রি – আরে না।
আমি রেডি হয়ে আসছি।
।
জলদি করে রেডি হয়ে নিলাম।
আজ শেষ পরিক্ষা।
এর পর আর কোনো টেনশন নেই।
।
নাস্তা করেই বের হয়ে গেলাম কলেজের
উদ্দেশ্যে।
নিমি- উফফ এত দেরি হল কেন? ?
রাত্রি- চুপ করে পরিক্ষা দে।
পরিক্ষা শেষ করে করে বের হলাম।
।
নিমি- পরিক্ষা শেষ আজ কিন্তু আমরা
জমিয়ে আড্ডা দিব।
বুঝলি।
।
রাত্রি- ওকে ওকে।
।
নিমি- হঠাত পিছে তাকালি কেন? ??
।
রাত্রি- আমার কেনো যেনো মনে হল কেউ
আমাকে দেখছে
।
নিমি- কে দেখবে?
।
রাত্রি- জানিনা।
আমার মাঝে মাঝেই মনে হয় কেউ আমাকে
ফোলো করছে।
।
নিমি- হুম লাভ সাভ এর ব্যপার নাকি? ??
।
রাত্রি- উফফ চুপ করবি? ? এমন কিছুই না।
( হঠাত করেই কেনো যেনো ভয় লাগছে।
রাতের অন্ধকারে আমার ভয় যেনো আর ও
বেড়ে যায়।
সারাদিন ভাল থাকলেও রাত কেনো যেনো
আমার ভাল লাগেনা।
রাতের নিরবতা মাঝে মাঝে ভাল লাগলেও
সব সময় ভাল লাগেনা।
কিন্তু দিন শেষ এ রাত আসেই।
আর সাথে আসে রাতের নিরবতা।
আর এই নিরবতা সাথে করে নিয়ে আসে ভয়।
)
।
নিমি- কিছু ভাবছিস?
।
রাত্রি- নাহ কিছুনা চল।
সারাদিন আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরতে যেয়ে
দেখি অনেক রাত হয়ে গেছে।
।
গাড়ি নিয়ে বাসার দিকে রৌনা দিলাম।
একা একা ভয় ও লাগছে।
শুধু দোয়া করছি যাতে তাড়াতাড়ি বাসায়
যেতে পারি।
কিন্তু কথায় ই ত আছে, যেখানে বাঘের ভয়
সেখানেই সন্ধ্যা হয়।
তাই ই হল।
মাঝ রাস্তায় গাড়ি থেমে গেল।
গাড়ি হয়ে গেল নস্ট।
এই রাস্তায় তেমন কোনো গাড়ি চলে না।
আর এই সময় ত কিছুই পাওয়া যায়না
।
গাড়ি লক করে হাটা শুরু করলাম।
আল্লাহ আল্লাহ করছি যাতে কিছু একটা
পেয়ে যাই।
অন্তত একটা লোকের ত দেখা পাই।
কিন্তু কিছুর ই দেখা পেলাম।
হাটতে থাকলাম।
হঠাত সামনে এক জন কে দেখতে পেলাম।
excuse me! !! excuse me! !
.
অজানা- জি।
।
রাত্রি- আপনি কি সামনে যাচ্ছেন।
।
অজানা- হুম।
।
রাত্রি- আসলে আমিও এই রাস্তা দিয়েই
যাব।
আসলে আমি একা তাই ভয় লাগছে।
আপনার সাথে যেতে পারি।
।
অজানা- ওকে।
।
রাত্রি- আমি লোকটার সাথে হাটতে
লাগলাম।
একটা অজানা লোকের সাথে হেটে যাচ্ছি।
যাতে ভয় না লাগে।
চারিদিকে শীতল বাতাস।
এই গরমেও যেনো শীত লেগে যাচ্ছে আমার।
আমি লোকটার সাথে কথা বলার চেস্টা
করলাম।
কিন্তু কি অদ্ভুত এ আমার সাথে তেমন
কোনো কথাই বলল না।
সামনের দিকে হেটেই চলেছে।
পিছনেও ফিরে একবার দেখল না।
হাটতে হাটতে আমার পা ধরে যাচ্ছে।
হাপিয়ে গিয়েছি।
গলা শুকিয়ে আসছে।
ব্যাগ থেকে পানি বের করে এক ঢোক খেয়ে
নিলাম।
মুখ মুছে সামনে তাকিয়ে দেখি লোকটা নেই।
১ সেকেন্ড এ লোকটা কিভাবে উধাও হয়ে
যেতে পারে।
??
আমি আশে পাশে ভাল মত তাকালাম।
কিন্তু আজব ব্যপার লোকটা নেই ত নেই ই।
আমি তাকে ডাকলাম হ্যালো! “”” হ্যালো! !!!
।
আজব ব্যপার কোনো সাড়া শব্দ নেই।
আমি পিছে ফিরেও তাকে খুঁজলাম।
পরে সামনে তাকালাম
আর তাকাতেই আমি যা দেখলাম তাতে
আমার অবস্থা খারাপ।
আমি এক চিতকার দিয়ে ২-৩ হাত সরে
গেলাম।
এটা কি সেই লোক টাই নাকি ??আমি কি
চোখে ঠিক দেখছি? ? এটা কি বাস্তব? ??
লোকটা আমার দিয়ে এগিয়ে আসছে তার
ভয়ংকর চেহারা নিয়ে।
লোকটার চোখ গুলা লাল হয়ে আছে।
চোয়ালের দাত গুলা বড় বড় হয়ে গেছে।
লোকটা আরও এগিয়ে আসবে।
হঠাত করেই বাতাসের বেগে লোকটা আমার
সামনে এসে বসে আমার গলা চেপে ধরল।
তার মুখ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আমার গলার
দিকে।
আমি চিতকার করতে চাচ্ছি পারছিনা।
তারপর আর কিছু মনে নেই।
।
সকালে-
।
নিমি- কিরে ঘুম ভাংল।
।
রাত্রি- আহ!!! মাথা টা কেমন যেনো করছে।।।
চোখ ঝাপ্সা হয়ে আছে।
।
নিমি- নে আগে কফি টা খেয়ে নে।
।
রাত্রি – আমি এইখানে? ??
।
নিমি- সব বলছি।
তার আগে বল রাতে কি হয়েছিল? ??
।
রাত্রি – আমার কিছু মনে পরছেনা।
।
নিমি- আচ্ছা এখনি মনে করতে হবেনা।
ফ্রেশ হয়ে আয়।
নাস্তা কর।
।
রাত্রি- কিন্তু আমি এইখানে কেন? ??
কিভাবে? ? কখন এলাম।
।
নিমি- ফ্রেশ হয়ে আউ বলছি।
।
রাত্রি- ফ্রেশ হয়ে এলাম।
নাস্তা করে নিমিকে নিয়ে ছাদে গেলাম।
।
নিমি- কাল কে রাতে তোর ফোন থেকে কে
যেনো ফোন করে বলল তুই রাস্তায় পরে
আছিস।
পরে আমি আব্বু কে নিয়ে গেলাম সেই
জায়গা।
তারপর নিয়ে আসলাম।
।
রাত্রি- ও ও এখন সব মনে পরেছে।
আচ্ছা তোরা কি দেখেছিস ওই লোকটা
কে? ?
।
নিমি- কোন লোক? ?
।
রাত্রি- যে তোকে ফোন দিয়েছিল? ?
।
নিমি- না আমরা যেয়ে কাওকে দেখিনি।
এখন বল কি হয়েছিল।
।
রাত্রি – যা বলব তোরা হয় ত বিশ্বাস
করবিনা।
হয়ত তোদের জায়গায় থাকলে আমিও করতাম
না।
কিন্তু আমি কাল কে রাতে যা দেখেছি তা
কোনো দিন ও ভুলার মত না।
।
নিমি- কি দেখেছিস? ?
।
রাত্রি – ভ্যাম্পায়ার।
বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!