রাগী বস

রাগী বস – পর্ব- ০৯

সিনহা:ক্যান্টিনের টেবিলে বসে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছিলাম।বাবা খুব জোড় বাঁচা বেঁচে গেছি।ভাগ্যিস চিল্লানি দিছিলাম তা না হলে আজ উনি আমায় ছিঃ ছিঃ। আচ্ছা উনার কি চরিত্রে ভেজাল আছে নাকি, উহু মনে তো হয় না।কিন্তু উনি আমার সাথে এমন কেন করেন,আর উনি আমার কাছে আসলে এমন হয় কেন আমার।ধুকপুকানি বেড়ে যায়।মনে হয় আমার জান টা বের হয়ে আসবে।উনার কাছাকাছি থাকতে আমার বেশ ভালো লাগে ভরসা পাই।আপনজন কাছের কেউ মনে হয়।সেদিনের মায়ের কাছে ওনার দেওয়া প্রতিশ্রুতি শুনে ওনার প্রতি আলাদা একটা টান হয়ে গেছে,আমার মনের কোনায় একটু একটু করে উনি জায়গা করে নিয়েছে,ভালবাসি আমি উনাকে।কিন্তু এটা কখনোই আমি প্রকাশ করতে পারবো না।কোথায় সে আর কোথায় আমি, তাছাড়া উনি আমায় নিয়ে আমার মতো করে ভাবে না।উনি আমার স্যার আর আমি উনার পি.এ আমাদের এটাই সম্পর্ক আর বেশি কিছু না।মানবতার খাতিরে উনি আমার জন্য অনেক কিছু করেছেন,যার জন্য সমাজ উনাকে কথা শোনায়,যদিও তিনি এসবের কিছুই জানে না,তারপরো আমার থেকে উনাকে দুরে সড়াতে হবে তা না হলে আমার জন্য সমাজে উনার মাথা হেট হয়ে যাবে।বসে বসে এইসব ভাবছি আর সিঙ্গারা খাচ্ছি।সিঙ্গারা আমার অনেক পছন্দের খাবার।একের পর এক সিঙ্গারা খাচ্ছি আর ভাবছি আসে পাশে কোথায় কি হচ্ছে সেদিকে খেয়ালই নাই।গপা গপ মুখে পুরছি,পানি খাওয়ার কথা ভুলে গেছি খেতে খেতে উঠলো হিচকি।পানি খেতে হবে।পানির গ্লাসের দিকে হাত দিতেই কে যেনো গ্লাস টা হাতে নিলো।
.
সিফাত:এই নাও খাও,পানি খাওয়ার কথা খেয়াল থাকে না গরুর মতো গিলছো শুধু বলে গ্লাস টা ওর মুখের দিকে বাড়িয়ে দিলাম।
.
সিনহা:উনি আমার মুখের সামনে গ্লাস ধরে আছে খাওয়ার জন্য,কিন্তু আমি উনার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছি।
.
সিফাত:কি হলো খাও।(একটু ধমকিয়ে)
.
সিনহা:হ্যা হ্যা স্যার খাচ্ছি বলে উনার হাত থেকে গ্লাস টা নিয়ে ঢক ঢক করে এক নিঃশ্বাসে পানি খেয়ে নিলাম,পানি না খেলেও হতো অবশ্য উনাকে দেখেই আমার হিচকি থেমে গিয়েছিলো।
আমি এখনো উনার দিকে তাকিয়ে আছি চোখ বড় বড় করে।
.
সিফাত:খাওয়া শেষ নাকি আরো কয়েকটা সিঙ্গারা দিতে বলবো?
.
সিনহা:কেনো স্যার আপনি খাবেন,সিঙ্গারা মনে হয় আপনারো অনেক পছন্দের তাই না স্যার উম্মাহ, স্যারে হাতে একটা পাপ্পি দিয়ে বসলাম অন্যমনস্ক হয়ে।দেখি স্যার আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,আমি স্যারে হাত দুহাতে ধরে আছি আমার হুশ ফিরলো কি করলাম মনে করতেই চোখ বন্ধ করে সরি স্যার বলেই দিলাম দৌড়।
.
সিফাত:এটা কি হলো,পাগলি হলো নাকি,কি করলো ও এটা আমি হাসবো নাকি রাগবো বুঝতে পারছি না তবে ভালোই লাগলো,ওর পাপ্পি দেওয়া জায়গা টায় ভালোভাবে দেখছি,পাগলি একটা তোকে খুব ভালবেসে ফেলেছি রে তুই হবি আমার পি.এ থেকে পাটরানী।
.
সিনহা:এক দৌড়ে নিজের ডেস্কে এসে বসলাম।হায় আল্লাহ এটা আমি কি করলাম,কোন বুদ্ধি নাই কেন আমার সব লোপ পেয়েছে নাকি।
.
আবিদ :এই যে সিনহা তুমি বসে বসে কি বিড় বিড় করছো একা একা,আর লজ্জাতে লাল,নীল হয়ে যাচ্ছো যে ব্যাপার কি?
.
সিনহা:আরে কই কিছু না,একটু হেসে।
.
আবিদ:দিনকাল কেমন যাচ্ছে,বিয়ে টিয়ে করবে না নাকি,সেদিককার কি খবর,ভাবলে কিছু?
.
সিনহা:না ভাবি নি কিছু,ঐসব চিন্তা মাথায় নাই এখন।
.
আবিদ:মাথায় আসলে বলো,আমিও একটা চান্স নিতে পারি কি বলো হেহেহে।
.
সিনহা:হিহিহি,ভদ্রতার হাসি দিয়ে।
.
সিফাত:নিজের কেবিনে যাচ্ছিলাম ওদের বলা কথা গুলো শুনে খুব রাগ হচ্ছিলো,এতো হাসাহাসি করার কি আছে,আর আবিদের সাথে এইসব বিষয়ে কথা বলতে হবে কেন,সিনহা কে কেবিনে আসতে বললাম।
.
সিনহা:হায় আল্লাহ স্যার ডাকছে কেন,আল্লাহ জানে কি বলে তখনকার পাপ্পির বিষয় নিয়ে কিছু বলবে নাকি তাহলে তো আমি শেষ,কি বলবো উনাকে এগুলো ভাবছি আর নখ কামড়াচ্ছি স্যারের সামনে দাড়িয়ে।
.
সিফাত:সিনহার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি ও কে কিছু না বলে।
.
সিনহা:ও মাগো স্যার এমন রাগী লুক নিয়ে এগিয়ে আসছে কেন,আমি পিছাচ্ছি আর স্যার এগোচ্ছে।পিছুতে পিছুতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলো আমার।
.
সিফাত:আমি এগোচ্ছি আর ও পিছুচ্ছে,দেয়ালে ওর পিঠ ঠেকে গেছে, আমি ওর একপাশ দিয়ে একহাত দেয়ালে রাখলাম আর আরেক হাত দিয়ে দরজা লক করে দিলাম।
.
সিনহা:একি দরজা লক করলো কেন,স্যার কি বলবেন বলেন, আপনি দরজা লক কেন করলেন,দরজা খুলুন স্যার আমি বাহিরে যাবো বলেই দরজা খুলতে যাচ্ছিলাম তখনি হাত ধরে দিলো টান।খুব ব্যাথা লাগছিলো মনে হয় হাত টা ছিড়ে ফেলবে।
.
সিফাত:দরজা খুলতে যাচ্ছিলো তখনি ওর হাতটা ধরে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলাম,খুব শক্ত করে ও নড়াচড়া করতেও পারছে না।
.
সিনহা:এতো শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে যে আমার জান ডা মনে হয় বের হয়ে যাবে এবার।
স্যার ছারুন আমায়, প্রানপণ চেষ্টা করছি ছাড়ানোর জন্য কিন্তু কাজ হলো না উনি আরো শক্ত করে আমায় জড়িয়ে ধরলো।
.
সিফাত:বৃথা চেষ্টা করো না লাভ হবে না,ছাড়াতে পারবে না তুমি তাই আর চেষ্টা না করে চুপচাপ থাকো।
.
সিনহা:ছারুন আমাকে তাহলে?
.
সিফাত:উহু ছাড়বো না,তোমায় শাস্তি দিবো আমি এবার।
.
সিনহা:কিসের শাস্তি আর এভাবে কেমন শাস্তি?
.
সিফাত:সিনহার কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে আবিদের সাথে কথা বলার শাস্তি,বলে ওর কানের লতি হালকা কামড় দিয়ে ধরলাম। তারপর গলাতে এলোপাথাড়ি চুমু দিতে লাগলাম,ওর নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসছে।
.
সিনহা:স্যার আমায় এলোপাথাড়ি চুমু দিচ্ছে গলায় আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করছি বাট পারছি না আমার নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসছে,আমার খুব কান্না পাচ্ছে চোখ দিয়ে পানি আসছে কি করতে চাইছে উনি আমায়।
.
সিনহা:স্যার ছারুন আমায় প্লিজ।
.
সিফাত:তুমি অন্য ছেলেদের সাথে কেন কথা বলো,তোমার সব দায়িত্ব আমায় দিয়ে গেছে তোমার মা,তোমার ভালো খারাপ সব কিছু এখন আমার হাতে,আমি যা বলবো তুমি তাই করবে,করতে বাধ্য।ওর গলায় নাক ডুবিয়ে কথা গুলো বললাম।
.
to be continue…
বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *