মিশে আছো আমার অস্তিত্বে

মিশে আছো আমার অস্তিত্বে !! Part-14

তৃষা নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না রিনা যে এতটা নিচু মানসিকতার হবে তা তৃষার ধারনার‌ও বাইরে ছিল।রিনা একটা অচেনা ছেলের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে,,গায়ে তাদের এক বিন্দুও কাপড় নেই।ছেলেটি রিনার আঙুল গুলো পেঁচাতে পেঁচাতে বলছে-;
-:ডার্লিং আর কিছুদিন থাকো না আমার কাছে।
-:না তা হয় না বেবি,,আকাশের ঝামেলাটা আগে মিটুক তারপর তোমার কাছে আসবো বেবি।
-:আকাশ কে সামনে পেলে আমি খুন করবো।
-:করবা,,বারন করেছে কে,,হুম।
-:ঠিক আছে এখন আসো তো আমার কাছে,,তোমাকে আরও একটু আদর করি।
জানালাটা বেডের এক সাইডে হ‌ওয়ায় তৃষা রিনা এবং ছেলেটিকে খুব ভালোভাবেই দেখতে পারছে কিন্তু তারা তাদের পাপ কর্মে এতটাই বিভর যে আশেপাশে কি হচ্ছে তা দেখার হালেই নেই।তৃষা নিজের ফোনটা আস্তে করে বের করলো,,তারপর তাদের দুজনের কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও করতে লাগলো।ভিডিও করার সময় তার হাত একটু কেঁপে ছিল,,নিজের আপুর এমন মুহূর্ত ভিডিও করতে একটু খারাপ লাগলেও নিজেকে প্রমাণ করার জন্য এই ভিডিও করতে তার একটুও খারাপ লাগছে না।
ভিডিও টা প্রায় শেষ করে তৃষা সেখান থেকে চলে আসার জন্য পিছন ফিরবে ঠিক তখনই রিনার বলা কিছু কথা তৃষার কানে এল।
-:বেবি তুমি যে ছেলেটাকে ফিট করে ছিলে না তৃষার সাথে অসভ্যতামি করার জন্য তার সাথে আমাকে কাল একবার দেখা করতে যেতে হবে।
-:ওকে সে নয় যাবে?কিন্তু তুমি তো বললে আমার সাথে দু’দিন থাকবে?
-:আব্বু এক্ষুনি মেসেজ করেছে কাল বাসায় যেতে বলল,,কাজটা আগে শেষ করতে বলল।প্লিজ সোনা রাগ করো না।
-:ওকে।
-:আমি জানতাম তুমি আমাকে বুঝবে,,আই লাভ ইউ রাসেল।
-:আই লাভ ইউ টু রিনা।আচ্ছা ওই ছেলেটার সাথে কোথায় দেখা করতে যাবে?
-:আব্বু বলল আশেপাশে কোথাও গেলে রিস্ক হয়ে যাবে,,তৃষা কিংবা আকাশের চোখে পড়ে যেতে পারি তাই আমাকে শহরের বাইরে কোনো একটা প্লেসে মিট করতে বলেছে।
-:কোন প্লেসে?
-:রয়েল তাজ রেস্টুরেন্টে।
-:ওও আমিও যেতাম তোমার সাথে বাট আমার একটা দরকারি কাজ আছে তাই তোমার সাথে যেতে পারবো না জান।কাল কখন যাবে?
-: ইটস ওকে রাসেল আমি একা যেতে পারবো।সকাল দশটায় মিট করতে বলেছি।
-: তুমি আমার গাড়িটা নিয়ে যেও,,তোমারটা আসতে আসতে অনেক লেট হয়ে যাবে।
-: হুম।
তৃষা আর এক মুহূর্তও দাঁড়িয়ে করলো না সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে এলো সেখান থেকে।এমনিতেও এখান থেকে অনেক বেশি প্রমাণ জোগাড় করে ফেলেছে সে আর বাকি প্রমাণের খোঁজ ও রিনা নিজের অজান্তেই তাকে দিয়ে ফেলেছে।এখন তাকে বাসায় ফিরতে হবে তারপর কাল রয়েল তাজ রেস্টুরেন্টে যেতে হবে তাকে।
.
.
পরের দিন তৃষা রেডি হলো রয়েল তাজ রেস্টুরেন্টে যাওয়ার জন্য।বাট সে আজ নরমাল লুকে বের হয়নি,,একটা কালো কালারের বোরকা পরে বের হয়েছে।এতে রিনা তাকে চিনতে পারবেই না আর তার কাছে প্রমাণ কালেক্ট করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।তৃষা সকল আটটার মধ্যে বেড়িয়ে পড়লো নিজের বাসা থেকে।প্রায় একঘন্টা কুড়ি পর সে পৌঁছে গেল রয়েল তাজ রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্ট থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে সে অপেক্ষা করতে লাগলো রিনার জন্য।প্রায় পনেরো মিনিট পর একটা ছেলে রেস্টুরেন্টের সামনে এসে দাঁড়ালো,,তৃষা ছেলেটির দিকে বেশ ভালোভাবে তাকিয়ে দেখলো এটা সেই হোটেলের ছেলেটা।ছেলেটা আসেপাশে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ভিতরে ঢুকে গেল।
তৃষা ভাবলো রিনা হয়তো আগে থেকেই ভিতরে আছে,,তাই সে আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ভিতরে ঢুকে গেল।ভিতরে গিয়ে চারিদিকে তাকিয়ে দেখলো সামনের দিকে দুটো সিটের পরে একটা টু-টেবিল সিটে ছেলেটা বসে আছে,, কিন্তু রিনাকে সে কোথাও দেখতে পেল না।তৃষা ছেলেটার টেবিলের একদম পাশের একটা টেবিলে এসে বসলো,,এতক্ষন তৃষা যদি বোরকা ছাড়া অন্য কোনো পোশাকে আসতো তাহলে ছেলেটা তৃষাকে অনায়াসে চিনে ফেলতো।রিনা এখনো আসেনি তাই তৃষার একটু সুবিধা হলো,,তৃষা নিজের মোবাইলটা পার্সের সাথে হেলান লাগিয়ে এমনভাবে রাখলো যাতে পাশের টেবিলের সব কিছুই তার মোবাইলে রেকর্ড হবে কিন্তু কেউ সন্দেহ করবে না যে তৃষা কোনো কিছু ভিডিও করছে।
একটু পর রিনা এলো,,এসে সেই লোকটির পাশে বসেই বলে উঠলো-;
-:ফারুক তুমি এই শহর থেকে যত দ্রুত সম্ভব বেরিয়ে পড়ো।
-:কিন্তু কেনো ম্যাডাম?
-:কোনো প্রশ্ন নয়।আমি তোমাকে আশি লক্ষ টাকা দেবো,,শর্ত একটাই যত তাড়াতাড়ি পারো এই শহর থেকে তোমায় চলে যেতে হবে।রাজি
ফারুক কিছুক্ষণ ভেবে বলল-;
-:ওকে ম্যাম কিন্তু আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
-:কোন প্রশ্নের।
-:আপনি আমাকে হোটেলে আপনার নিজের বোনের সাথে বাজে ব্যবহার করার জন্য এতো গুলো টাকা‌ দিলেন কেন??এতে তো আপনার বোনের‌ই বদনাম হবে।
-:হোক সেটাই তো আমি চাই,,আর ও আমার সৎ বোন। তোমাকে এত প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে বাধ্য ন‌ই।এই নাও এখানে আশি লক্ষ টাকা আছে,,আর এখান থেকে চলে যাওয়ার পর আমার সাথে আর কোনোদিন যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করবে না,,মনে থাকবে।
-:জ্বি।
-:এখন আমি উঠি।
-:কিছু খাবেন না।
-:না।
এই বলে রিনা সেখান থেকে চলে গেল, কিছুক্ষণ পর তৃষাও বেরিয়ে এলো সেখান থেকে।
.
.
সন্ধ্যা সময় তৃষা বসে বসে সমস্ত প্রমান একসাথে জড়ো করলো। দুটো ভিডিও এবং কিছু ছবি একটা অরেঞ্জ কালারের এনভেলাপে ঢুকালো।ঠিক সেরকমই আরোও একটা কপি অন্য একটা এনভেলাপে ঢুকিয়ে আলমারিতে রেখে দিল।তারপর ফোন হাতে নিয়ে কাকে যেন ফোন করলো।
.
.
.
রিনা এবং নাঈম সাহেব সকাল বেলায় উঠে ব্রেকফাস্ট করছিল এমন সময় তাদের বাড়িতে পুলিশের লোক এলো,, এসে নাইম সাহেব কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল-;
-: স্যার আপনার আর আপনার মেয়ের নামে এরেস্ট ওয়ারেন্ট আছে আমাদের কাছে।
নাঈম সাহেব বেশ রেগে বলে উঠলেন-;
-:কার এত বড় সাহস আমার নামে এমন কেস করার।
হঠাৎ পুলিশের পিছন থেকে একজন বলে উঠলো-;
-:এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই চাচা আপনার পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়ে গিয়েছে এবার আপনার শাস্তি পাওয়ার পালা।
পুলিশের পিছন থেকে বেরিয়ে এলো তৃষা,,ওকে দেখে রিনা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে উঠলো-;
-:তোর সাহস কি করে হলো আমার আব্বুর বিরুদ্ধে মিথ্যা এলিগেশন আনার,,তুই জানিস আমার আব্বু তোর আর তোর বাবার কি হাল করতে পারে?
-:সাহসের এখনো কিছুই দেখাই নি আপু।আগে আগে দেখো কোথা হে কেয়া।😎😎
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]