মিঃ নিরামিষ !! Part- 18
তুলি-আজব লোক
নিবিড়ের ফোন আসলো,,তুলির কাছে ফোন রেখে নিবিড় চলে গেসে
তুলি ফোনটা নিয়ে দেখলো একটা ছেলের নাম,হয়ত ওর কোনো student হবে,
তুলি ফোনটা নিয়ে নিবিড়কে ডাকতে ডাকতে গেলো
নিবিড় মন খারাপ করে দূরে একটা গাছের পাশে দাঁড়িয়ে আছে
তুলি-এই যে শুনুন
নিবিড়-অনেক হয়সে তুলি,তোমাকে আর কত বলবো আমি তুমুর জায়গাটা অন্য কাউকে দিতে পারবো না,তাও তুমি আমাকে সন্দেহ করো,,আমি তুমুকে ভালোবাসি
ভালোবাসি কথাটা শুনে তুলির মনে হলো ওর ভেতরটা ভেঙে চুরমার হয়ে গেসে,এই কথায় তুলির এত কষ্ট কেন হচ্ছে,,
তুলি-আপনার ফোন
তুলি ফোনটা দিয়ে ওখান থেকে চলে আসলো রুমে,,
আয়না বরাবর বসে আছে তুলি,আজ কেন জানি জেলাস ফিল হচ্ছে তুলির,,হাত দিয়ে নিজের মুখ ছুঁয়ে দেখে তুলি,আমাকে কখনও তুমু আপুর জায়গা দিতে পারবেন না উনি,এটা তো ভালো কথা,তবে আমার আজকে এত খারাপ লাগতেছে কেন,,তুমু আপু না জানি কত সুন্দর ছিল,আমি তো এত সুন্দর না,তাহলে আমি এমনিতেই এত সন্দেহ করি কেন উনাকে,উনি তো নিজের মুখেই বলে দিসেন আমাকে জায়গাটা দিতে পারবেন না,
তুলি কিছুক্ষন জানালা দিয়ে নিবিড়ের দিকে চেয়ে রইলো,,কয়েকদিন থেকে লোকটার উপর আমার কিছু আবেগ জমে গেসে,আজকে উনার কথায় তাই খুবব লাগলো,
একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে তুলি উঠে নানুদের কাছে চলে গেলো
নিবিড় ফোনে কথা বলে রুমে আসলো,,বিছানায় তুলির হাতের কাঁচের চুড়ি,আর টিপ
নিবিড়-এগুলা খুলে রেখে দিসে কেন,কি হলো,আমি তো ওরে বেশি কিছু বলিনি
তুলি একবার ও নিবিড়ের চোখের সাথে চোখ মেলাচ্ছে না,নিচু হয়ে কাজ করতেছে আর সবার সাথে কথা বলতেছে
নিশান নিবিড়কে টেনে বাইরে নিয়ে গেলো
নিশান-ভাবীর মন খারাপ কেন,কি হইসে?
নিবিড়-কিছু না
নিশান-আমার থেকে লুকাস না,আমি দেখেছি তখন তুই ভাবীকে কি জানি বলছস তারপর ভাবী মন খারাপ করে চলে গেসে
নিবিড়-আমি শুধু ওরে বলেছি তুমুর জায়গাটা ওকে দিতে পারবো না,আর ও নিজেও সেটা চায় না,,রুমে গিয়ে দেখি চুড়ি, টিপ খুলে রেখে দিয়েছে
নিশান -চায়
নিবিড়-কে বললো?
নিশান -ভাবী তোর থেকে তুমু আপুর জায়গাটা চায়,,তা না হলে মন খারাপ হতো না তার,আর চুড়ি টিপ ও খুলে রেখে দিতো না
নিবিড়-এটার কারন কি হতে পারে
নিশান-আরে বোকা আগে এসব পড়ত সুন্দর লাগবে তাই,এখন যখন তুই বলে দিছস তুই ওরে তুমুর জায়গা দিতে পারবিনা তাই এসবের দরকার মনে করেনি তুলি ভাবী
নিবিড়-আমি কি করবো?ও নিজেই বলসে ও এসব চায় না,তাহলে এখন আবার কেমন মন খারাপ করে আছে,সেই তখন থেকে একটা কথাও আমার সাথে বলেনি
নিশান-আরে হয়ত ও চায় না তুমু আপুর জায়গা,কিন্তু একজন স্ত্রীর অধিকার তুই ওকে দিতে বাধ্য,,
রাতে তুলি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে,,
নিবিড় আস্তে করে রুমে ঢুকে গিয়ে খাটে বসলো,,
নিবিড়-আমি চাই না এসব করতে,তুমু আমাকে মাফ করে দিও,
নিবিড় চোখ বন্ধ করে উঠে দাঁড়ালো,,তুলির পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো,ওর ঘাড়ে হাত দিলো
তুলি চমকে উঠে আয়নায় তাকালো,নিবিড় তুলির ঘাড়ের দিকে তাকিয়ে আছে,মুখ এগিয়ে নিলো ঘাড়ের দিকে চুমু দেওয়ার জন্য
তুলি চোখ বড়বড় করে নিবিড়কে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলো
নিবিড়ের হুস আসলো,রোবটের মত তাকিয়ে আছে নিবিড় তুলির দিকে
তুলি-এসব কি??আপনি আমাকে টাচ করতে গেসেন,এত বড় সাহস আপনার!!!
নিবিড় অবাক হয়ে চেয়ে আছে
নিবিড়-তুমি তো চেয়েছিলে,,
তুলি-আমি চেয়েছিলাম মানে,আমি কি বলসি আসেন আমাকে টাচ করুন
নিবিড়-তোমাকে যখন আমি বলসি তুমুর জায়গা তোমাকে দিতে পারবো না তখন থেকে তোমার মন খারাপ কেন তাহলে??
তুলি-এমনি
তুলি চুলে খোঁপা করতে করতে বেরিয়ে যেতে নিলো নিবিড় গিয়ে পথ আটকালো
নিবিড়-দেখো তোমাকে তোমার অধিকার দিতে আমার সময় লাগবে,,একটু সময় তো দিবা
তুলি-আজব তো,আপনার থেকে অধিকার কে চাইছে??দরকার নেই আমার,,জোর করে মিথ্যে ভালোবাসা আমার দরকার নেই,আমি এমনই বেশ আছি,
তুলি বেরিয়ে গেলো
নিবিড় খাটে বসে আছে,১০:৩০বাজে,তুলি এখনও আসতেছে না
চশমা হাতে নিয়ে নিবিড় রুম থেকে বের হলো তুলিকে খোঁজার জন্য,সবাই যে যার রুমে চলে গেসে,মেইন দরজা খোলা,,
নিবিড় বাড়ি থেকে বের হলো,,
তুলি একা একা পুকুর ঘাটে বসে আছে,পানিতে পা ডুবিয়ে বসে আছে
পাশে ওর ফোনে গান বাজতেছে
Jab saanson me teri
Saansen ghuli toh phir sulagne lage
Ehsaas mere mujhse kehne lage
Aa baahon me teri aake
Jahaan do yun simatne lage
Sailaab jaise koi behne lage
Khoya hun main aagosh mein
Tu bhi kahaan ab hosh mein
Makhmali raat ki ho na subah
Be intehaan, be intehaan.
Yun pyar kar be intehaan.
নিবিড় কিছুটা কাছে এসে থেমে গেলো,ওর ও গানটা অনেক প্রিয়,যখন মন খারাপ থাকে গানটা সে শুনে,তুলির ও কি মন খারাপ?আমি কেন ওর মন বুঝি না,,
তুলি-কপালে এটা লিখা ছিল আমার,,😖
তুলি পানিতে কয়েকটা বাড়ি দিলো রাগ করে
নিবিড় এসে পাশে বসলো তুলির,সেও পানিতে পা ডুবালো
তুলি-কেন এসেছেন
নিবিড়-আমার ও ইচ্ছে করলো পানিতে পা চুবাতে
তুলি উঠতে গেলো
নিবিড়-থাকো একটু
তুলি মুখ বাকিয়ে বসলো,,
নিবিড়-কাল আমরা চলে যাব
তুলি-ওহ
নিবিড়-আমার ভার্সিটি থেকে আর বেশি ছুটি নেওয়া যাবে না,তোমার তো আর এক মাস পর রেসাল্ট দিবে
তুলি-হুম
নিবিড়-কি পরীক্ষা দিসো কে জানে
তুলি-😒😒😒
তুলি ফোন হাতে নিয়ে উঠে চলে গেলো,,ফোনের উপর কি যেন পেলো,রাগে সেটাও হাতে করে নিয়ে গেলো,,
রুমে এসে ফোন রাখতে গিয়ে দেখলো নিবিড়ের চশমা সাথে করে নিয়ে এসেছে
নিবিড়-একি আমার চশমা কই
নিবিড় উঠে দাঁড়িয়ে খুঁজতে থাকলো,,
তুলি চশমা নিয়ে দৌড়ে আসলো,কারন এত অন্ধকারে নিবিড় যদি পুকুরে পড়ে যায়
তুলি দৌড়ে আসতেছে এদিকে নিবিড় উঠে পিছন ঘুরতেই দুজনে দুজনের সাথে এক বাড়ি খেয়ে দুম করে পড়ে গেলো,,
নিবিড় তুলির মাথার চুল টান দিয়ে ধরলো
নিবিড়-কে?
তুলি-চশমা না থাকলে কি আন্ধা হয়ে যান নাকি,,
নিবিড়-ওতটা না তবে ঠিক বলসো,,নাহলে তোমাকে চিনতে পারিনি কেন,,
তুলি-তারপর আমার চুল টান দিসেন কেন??😡
নিবিড়-আমি কাজের বুয়া ভাবসি😂😁
তুলি-u stupid 😡😡
তুলি নিবিড়কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে চলে গেলো,,
নিবিড় চশমা নিয়ে পরে নিলো,,রুমে আসলো তারপর,
তুলি-পুরো জামায় মাটি লেগে গেসে,যান বাইরে যান,আমি change করবো
নিবিড় -ঠিক আছে
নিবিড় রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে দেখলো নানু পানি খেতে ডাইনিংয়ে আসছে
নিবিড় চোখ বড়বড় করে তাকালো
নানু-কিরে তুই এখানে কেন?এত রাতে
নিবিড়-না মানে ইয়ে মানে,,তোমাদের বউ ভিতরে,আসলে
নানু-তো ও যখন ভিতরে তাহলে তুই বাইরে কেন?যা ভেতরে যা
নিবিড়-নাহ নানু
নানু-যা বলতেসি,আমি দাঁড়িয়ে আছি,তুই ভিতরে যা
নিবিড়-না পারবো না
নানু চোখ রাঙালো
নিবিড় ঢোক গিলে ভিতরে ঢুকে গেলো,
জলে কুমির,,ডাঙায় বাঘ
চলবে ♥