ভালোবেসে মরেছি

ভালোবেসে মরেছি – Part- 19

বাসের এককোনে মনমরা হয়ে বসে আছে মিহু। আজ ওর কারনে সবার ফিরে যেতে হচ্ছে। অর্নব মিহুর সেফটির জন্য সবাইকে নিয়ে আবারও ফিরে যাচ্ছে।অর্নব খুব ভালো করে জানে আজ যে অ্যাক্সিডেন্ট টা ঘটেছে তা সম্পূর্নই অর্নিকে ঘিরে। তাই আর কোন রিস্ক না নিয়ে ফিরে যাওয়াটাই শ্রেয় বলে মনে হচ্ছে অর্নবের।
যাওয়ার পথে মিহুর পাশে চৈতি বসে। চৈতি মিহুকে দেখছে, মিহু জানালার বাইরে নিস্তব্ধ চোখে তাকিয়ে আছে।
বলা চলে আজ বেশ ভয় পেয়েছে সে।
এমন সিচুয়েশনে এর আগে কখনো পড়তে হয়নি তাকে।
তবে ভয়টা ততটাও ওর মনে বাসা বাধেনি। কারন অর্নব ওর পাশে ছিল।

মিহু একটা জিনিস মনে মনে কখন থেকে ভেবে চলেছে, কে এমন করলো?আজ তো এমন কিছুর প্লান মিহুও করেছিল। অন্যকাউকে মারার জন্য। তবে?সেই প্লানটাই কি করে কেউ ওর ওপর অ্যাপ্লাই করলো?
নাহ খুব তাড়াতাড়ি শাফিনের সাথে কথা বলতে হবে। কারন একমাত্র ওই জানে এ প্লানটার ব্যাপারে।
……
ফোনে কথা বলা শেষ করে নিজের সিট ছেড়ে মিহুর সিটের দিকে এগোতে লাগলো অর্নব। অর্নব অনেক ভয় পেয়ে গেছিল আজ। যদি মিহুকে ও সারাজীবনের মত হারিয়ে ফেলত?
ও ভেবে নিয়েছে যে এমন করেছে তাকে কোনমতেই ছারবে না।এ কাজ যে করেছে তাকে পারলে জানে মেরে ফেলবে। কারন অর্নবের জানকে আগাত করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে।

_________
রাত বারোটার দিকে গিয়ে ওদের বাস ভার্সিটির সামনে এসে থামলো। ঢাকা শহরটা এমনই যে সারারাতই ব্যস্ত। তাি রাতের গভীরতা এখানে টের পাওয়ার জো নেই। যে যার বাসার উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরলো। মিহুকে অর্নব জোর করলো বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য তবে মিহু না করে দিল।
কারন মিহুর গন্তব্য অন্য এক জায়গা।
ভার্সিটি থেকে কিছুদুর একলা পথে হেটে গিয়ে মোড়ের পাশে দাড়িয়ে থাকা কালো মার্সিডিজ কারে উঠে পড়লো মিহু। কারটি দুটো সেকশনে ভাগ করা। মিহু যে সেকশনে উঠলো সেখানে কিছু ব্লাক কালারের জিন্স শার্ট ও আরও কিছু অ্যাক্সেসরিজ রাখা ছিল। কারের মধ্যেই মিহু নিজের লুক অর্নি রুপে বদলে নেয়।
এরপর গাড়ি করে পৌঁছে যায় ওর সেই চেনা জায়গাটিতে।
একজন মোটাসোটা করে লোক চেয়ারে বাধা অবস্থায় রয়েছে। শাফিন ওর পাশেই হাতে একটা লাঠি নিয়ে দারিয়ে আছে।
লোকটিকে দেখে বেশ ভালোভাবেই বোঝা যাচ্ছে শাফিন ওকে প্রচুর মার মেরেছে।
অর্নি দৌড়ে এসে শাফিনের হাত থেকে লাঠিটা নিয়ে লোকটির হাতের ডানায় জোড়ে একটা বারি মেরে দিল।
ব্যাথায় লোকটি চেচিয়ে উঠলো।

অর্নি সমানে মেরেই চলেছে লোকটিকে। মনে হচ্ছে যত রাগ ক্ষোভ লোকটির ওপর।
হওয়াই উচিত,কারন এই সে, যে চট্টগ্রামে অর্নিকে মারার প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।
হাত থেকে লাঠিটা ফেলে দিয়ে লোকটির চোয়াল আেপে ধরে জিজ্ঞেস করে,
“হ্যা রে,মরার পাখনা গজিয়েছে তোর?আমায় মারতে এসেছিলি?আচ্ছা কি করে ভাবলি বল তো?যে তোকে আমি ছেড়ে দেব.।অবশ্য তোকে ছাড়ার তো প্রশ্নই আসে না।তুই মরবি, সাথে তোর মাস্টারমাইন্ড বসও”
দাঁতে দাঁত চেপে কথাগুলো বললো অর্নি।আজ শাফিন বেশ চমকে গেছে অর্নিকে এভাবে দেখে।এর আগে এতটা হিংস্র অর্নিকে দেখেনি সে।
শাফিনকে উদ্দেশ্য করে অর্নি বললো,
“ওর উপরে যে আছে তার নাম আমার চাই গট ইট?”
শাফিন মাথা নাড়িয়ে হ্যা সূচক জবাব দেয়। এটা দেখে রাগে ফুসতে ফুসতে চলে আসে বাইরে।
ড্রাইভারকে বিদায় দিয়ে নিজেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরে। একটুপর গাড়িটা নিজের আলীশান বাংলোর সামনে এনে দাড় করায়।
রাত হয়ে গেছে তাই বাড়ির কারও সাথে কথা না বলেই ঘরে ঢুকে পড়ে।
.
.
.
#চলবে___