ভালোবেসে তারে

ভালোবেসে তারে !! Part- 02

“চুপ একদম চুপ।আর একটা কথাও না।এখনও তোকে অনেক শাস্তি দেওয়া বাকি আছে।তাই কথা যতো কম বলবি তোর জন্য ততোই ভালো হবে।বোঝতে পেরেছিস।”

আমি এদিকে তার কাছে আকুতি মিনতি করেই যাচ্ছি।সে তার এক হাত দিয়ে আমার শাড়ির আচলটা এক টানে আমার কাধ থেকে ফেলে দিলো।তারপর তার দুই হাত আমার উন্মুক্ত কোমরে রেখে খুব জোরে চেপে ধরলো।এতোটা জোড়েই যে তার নখগুলো মনে হচ্ছে আমার শরীরের ভিতরে ঢুকে যাবে।আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি সে বাকা হেসে এক ভ্রু উচিয়ে আমার দিকে তকিয়ে আছে।আমি তার মতিগতি বোঝতে পেরে আবারও অশ্রুঝরা চোখে তাকে বলতে লাগলাম,

“প্লিজ রাফিত না প্লিজ না না রাফিত না……..আহহহহ মাগোওওও”

সে এবার তার দুই হাত দিয়েই আমার কোমর থেকে পেট অবধি আচর কাটলো।তারপর দুই হাত আলতো করে আমার গালে রেখে বললো,

“ওহহ খুব কষ্ট হচ্ছে সোনা?ব্যাস আর একটু সহ্য করো।তারপর দেখো আর কষ্ট হবেনা তোমার।”

রাফিতকে আমার পুরো পাগল মনে হচ্ছে।নিজেই কষ্ট দিচ্ছে আবার নিজেই এসব বলছে।কেনো করছে সে এমন।আমি অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছি।এরই মধ্যে পেটের আচর কাটা অংশে কারও গরম নিশ্বাসের সাথে ঠোঁটের স্পর্শ অনুভব করলাম।হ্যা সে একটার পর একটা কিস করে যাচ্ছে আমার পেটে।এক পর্যায়ে সে আবার আগেরবারের মতো আমার কাটা জায়গায় তিন চারটা কামড় বসিয়ে দিলো।আমার যেনো মনে হচ্ছে কেউ আমার কলিজাটা টেনে বের করে ফেলছে।হ্যা এতোটাই কষ্ট হচ্ছে আমার।কাদতে কাদতে গলাটাও ভীষন ব্যাথা করছে আমার তাই আর শব্দ করে কাদতেও পারছিনা আমি।মুহূর্তের মধ্যেই আমার চোখের চারপাশটা যেনো অন্ধকার হয়ে আসছে।আস্তে আস্তে চোখদুটো বন্ধ হয়ে যেতে লাগলো আমার।আর সহ্য করতে পারছিলামনা আমি এই অত্যাচার।তবে ফ্লোরে পরে থাকা অবস্থায়ই বোঝতে পারছিলাম রাফিত আমার গাল চাপরাতে চাপরাতে আমাকে ডেকে চলেছে। কিন্তুু সেই ডাক শোনার ভাগ্য বোধহয় আমার আর হয়নি।
,
,
,
,
,
,
চোখ মেলে নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করলাম।আশেপাশে তাকিয়ে আর রাফিতকে দেখতে পেলামনা।আমি আস্তে আস্তে উঠে খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসলাম।দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখি ১০.০০ টা বেজে গেছে। অনুষ্টান থেকে রাফিত যখন আমাকে এখানে নিয়ে আসে প্রায় ৪.০০ টার দিকে।পেটের ও পিঠের সাইটটা এখনও অনেক ব্যাথা করছে আর ভীষণ ঝালাও করছে।তবে কেনো জানি মনে হলো ব্যাথাটা আর আগের মতো নেই।খেয়াল করে দেখলাম আমার পেটের কাটা অংশে সাদা ক্রীম জাতীয় কিছু একটা লাগানো।বোঝতে পারলাম ওটা মলম।কিন্তুু প্রশ্ন হচ্ছে মলমটা লাগালো কে?বাড়িতে আমি আর রাফিত ছাড়া আর কেউ নেই এই মুহূর্তে।তাহলে কি রাফিত?বোধহয় ওই লাগিয়েছে।নিজেই ব্যাথা দিয়ে ঔষধ লাগানোর মানেটা কি?

আমার শ্বশুর নেই।উনি নাকি অনেক আগেই মারা গেছেন।রাফিতের আপন বলতে শুধু ওর মা আর ছোট একটা বোনই আছে।মনে আমার শ্বাশুড়ি ও আমার ননদ।কিন্তুু তারা আমাদের সাথে এখানে থাকেনা।কেনো থাকেনা তাও জানিনা।তবে কেনো জানি মনে হচ্ছে আমি এ বাড়িতে আসার পরই তাদেরকে অন্য জায়গায় শিফট করা হয়েছে।কিন্তুু কেনো?আমার ননদকে আমি আজ অবধি দেখিনি।শ্বাশুড়ি মাঝে মাঝে এসে দেখা করে যায় ও খোজখবর নিয়ে যায়।আমি বোঝতে পারছিনা এসবের পিছনের রহস্য কি?এইরকম হাজারো প্রশ্ন আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

আমার এসব চিন্তাভাবনার মাঝখানেই কেউ একজন বলে উঠল,

“যাও ফ্রেশ হয়ে এসো”

পাশে তাকিয়ে দেখি রাফিত দরজার সাথে হেলান দিয়ে দুই পকেটে হাত দিয়ে বাকা হেসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমিতো অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে গেছি।কিছুক্ষণ আগে আমার সাথে এতো কিছু করার পরও তার চোখে মুখে আফসোসের কোনো ছাপ নেই।বরং,তার ভাব দেখে মনে হচ্ছে যে সে কিছুই করেনি।একবারে ইনোসেন্ট একটা বেবি।এরমধ্যে সে আবারও বলল,

“কি হলো কি বললাম মন হয় শুনতে পাওনি।তা ডোজ দিবো নাকি আবার।(চোখ টিপে)”

আমি এবার বড় বড় চোখ করে ওর দিকে তাকালাম।কতোটা খারাপ এই লোকটা ভাবা যায়।এভাবে টরচার করার পর কোনো সহানুভূতি তো দেখাচ্ছেইনা উল্টো আরও হুমকি দিচ্ছে।নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি আমি এখনও শাড়ি পড়া অবস্থাতেই রয়েছি।ওর মার খাওয়ার আর কোনো ইচ্ছা আমার নেই।এমনিতেই অনেক দুর্বল লাগছে।তার উপর সেই সকালে যে খেয়েছি এখন পর্যন্ত আর কিছুই খাওয়া হয়নি আমার।

কোনো রকমে বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালাম।কিন্তুু ওয়াশরুম অবধি আর পৌঁছাতে পারলামনা।শরীর অতিরিক্ত দুর্বল থাকার কারণে ওয়াশরুমে ঢুকার আগেই কার্পেটের সাথে পা আটকে নিচে পরে গেলাম।কিছুটা ব্যাথাও পাই।পাশে তাকিয়ে দেখি আমি পরে যাওয়ায়ও রাফিতের মধ্যে কোনো হেলদোল নেই।সে আগের মতোই দরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।মানুষ এতোটা পাষান হয় কি করে?রাস্তার কুকুরের প্রতিও তো মানুষ একটু দয়া দেখায়।সেই জায়গায়তো আমি ওর সহধর্মীনী।তবুও সে আমাকে একটু হেল্প করতেও এগিয়ে আসলোনা।নিজে নিজেই কষ্ট কর ওঠে কাপর নিয়ে ওয়াশরুম চলে গেলাম।
,
,
,
,
ওয়াশরুম থেক বের হয়ে দেখি রাফিত সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।আমি বের হতেই সে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই বলল,

“খাবার রাখা আছে খেয়ে নেও।”

আমি তার কথার কোনো জবাব না দিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরলাম।সে আবারও বলল,

“আমি এক কথা বারবার বলতে পছন্দ করিনা তা তুমি খুব ভালো করেই জানো।তাই চুপচাপ খেয়ে নাও।”

এবার আমি বললাম,

“খাবোনা আমি।ক্ষুধা নেই আমার(অভিমানি সুরে)”

সে এবার সোফা ছেড়ে ওঠে টি-টেবিল থেকে প্লেটটা নিয়ে আমার হাত ধরে খাটের উপর বসিয়ে দাতে দাত চেপে বলল,

“নিজের ভালো চাওতো চুপচাপ খেয়ে নাও।আফটার অল তুমি না খেয়ে অসুস্থ হলে আমি টরচার করবো কার উপর”

আমি যেই কিছু বলতে যাবো ওমনি সে তার এক হাতটা উচিয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আবারও বলল,

“জাস্ট থারটি সেকেন্ড। এর মধ্যে খাওয়া স্টার্ট করবে।নাহলে কি করবো তা খুব ভালো করেই জানো তুমি।”

আমিও আর কথা বাড়ালামনা।কারন জানি এখন কথা বললে আমার কপালেই দুঃখ আছে।আর এমনিতেও আমার খুব ক্ষিদেও পেয়েছে।তাই চুপচাপ খেতে লাগলাম।
,
,
,
,
সকালে,,,,,,

কিচেনে চা করছি।রাফিত জগিং করতে গেছে।প্রতিদিন চা নিয়ে একটা না একটা কান্ডতো আমার সাথে করেই সে।হয়তো গরম চা হাতে ঢেলে দিবে নয়তো লেট করে দিয়েছি বলে শাস্তি দিবে।শাস্তিরও তো কি ছিড়ি ঘরের একটা কাপড়ও তো মনে হয় বাদ রাখেনা।সবগুলো আমাকে দিয়ে ধোয়াবে।এমনকি বিছানার চাদর,মেঝের কার্পেট,দরজা-জানালার পর্দাগুলোও বাদ রাখেনা।আগের জন্মে মনে হয় আমি ওর প্লেটের ভাত চুরি করে খেতাম।ওটার জন্যই এখন আমার সাথে ও এমন করছে।এই নরক থেকে বের হওয়ারও কোনো উপায় নেই।কোথায় যাবো এখান থেকে চলে গিয়ে।যাওয়ার তো কোনো জায়গাও নেই আমার।আজ কি করবে কে জানে।এরই মধ্যে কলিংবেলটা বেজে ওঠলো।আমি তারাতারি করে কিচেন থেকা বের হয়ে দিলাম দরজার দিকে এক দৌড়।নইলে এর জন্যও একটা কান্ড বাধাবে।……………………..
to be continued…………………..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *