তোমার জন্য ফিরে আসা !! Part- 03
ছিঃ কি বিশ্রী খেতে, এসব কেউ খায়। আমাকে মেরে ফেলতে চাইছেন? ”
“আরে না না কিছু ক্ষন মুখে রাখো স্বাদ চলে আসবে ”
“নাহ্ আমি খাবো না, আপনি মিথ্যে বলে খাওয়াবেন আর আমার ক্ষতি হবে ”
“সত্যি বলছি তোমার কোনো ক্ষতি যাতে না হয় তাই খেতে বলছি দয়া করে মুখের মধ্যে মিষ্টিটা রাখো ”
“আচ্ছা বেশ রাখলাম ”
ইভা মুখের মধ্যে মিষ্টিটা পাঁচ মিনিটের মতো রেখে দিলো তারপর মিষ্টির স্বাদ খুব সুস্বাদু হলো। এরকম মিষ্টির স্বাদ বোধহয় পৃথিবীতে আর নেই ।মিষ্টিটা খুব ছোট আকারে দেখতে কিন্তু শক্ত এবং রং লাল – নীল। মিষ্টি খাওয়া শেষে ইভা বললো,
“মিষ্টিটা অন্য রকম স্বাদ কেনো? আগে কখনো এরকম মিষ্টি খাই নি ”
“এই মিষ্টি আমাদের রাজ্যের বিশেষ এক গাছের ফল থেকে তৈরি হয়। সবাই খেতে পারে না সবার সহ্য করার ক্ষমতা নেই এমন বিশ্রী মিষ্টি খাওয়ার ”
“তাহলে আমি খেলাম কি ভাবে? ”
“আমি তোমাকে অন্য কৌশলে মিষ্টি স্বাদ দিয়েছি। কেউ মিষ্টির স্বাদ পরিবর্তন করতে পারে না, শুধু একজন আছে সে পারে আর আমি পারি ”
“আপনি নিজে না খেয়ে আমাকে কেনো খাইয়েছেন? ”
“তুমি আমার সব তাই ”
“উফফফ্ আপনার এসব কথাই সহ্য হয় না যত্তসব হেয়ালি কথাবার্তা ”
“মহারানী রাগ করো না, তোমাকে সব সত্যি জানাবো তবে একটু সময় লাগবে ”
“আচ্ছা ঠিক আছে আপনি এখন যান ”
আলিব চলে গেলো। ইভা মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে আলিবের কাছ থেকে কিছু জানতে না পেরে। ইভা গোসল করে খেয়ে ঘুম দিলো। বিকেলে ঘুম থেকে উঠে এক মগ কোল্ড কফি নিয়ে ছাঁদে গেলো। ছাঁদে ওর মা আর দাদি বসে আসে। তারাদের সাথে গল্পে যোগ দিলো।
ইভা কফি মগে চুমুক দিলো এবং সাহস করে বলে ফেললো,
-দাদি তুমি কি কোনো জ্বীন-ভূতের কাহিনী জানো?
-শুনেছিলাম আমার দাদি শ্বাশুড়ির কাছে যে এক ভয়ংকরী জাদুকরী ছিলো সে নিজের স্বার্থের জন্য মানুষকে জ্বীন-ভূত বানিয়ে দিতো। তারা কোনো কৌশলের মাধ্যমে পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারবে তবে অদৃশ্য হয়ে।
-এসব সত্যি কাহিনী? আর ওই জাদুকরী কোথায় থাকতো?
-আমাদের বাড়ির পিছনে যে বাগান বাড়ির মতো আছে ওখানে তাদেরর পূর্বপুরুষের বাড়ি ছিলো।
-আজ পর্যন্ত বাগান বাড়িতে যাই নি, তোমার কথা শুনে যেতে ইচ্ছে করছে।
ইভার মা চেচিয়ে বললো,
-খবরদার না, ওখানে যেনো কোনোদিন যেতে না দেখি।
-আহ্ বউমা ও এতো কিছু বুঝে নাকি? ওকে বকো না (দাদি)
-সবার আদর পেয়ে ও দিন দিন বাঁদরের মতো গাছে চড়ে বসে আছে। গাছ থেকে টেনে নিচে নামিয়ে আনতে হবে (মা)।
-মা তুমি বেশি কথা বলো না তো, দাদির সাথে ভূতের গল্প করতে দেও (ইভা)
-হঠাৎ তোর এতো ভূত পেত নিয়ে কৌতুহল হলো কেনো? আবার রাতে বেলা বললি কাউকে দেখতে পাচ্ছো নাকি? তোর কি হয়েছে বল তো? (মা)
-ভূতের গল্প পড়েছি তাই সত্যি ভূত বলতে কিছু আছে কি না জানতে চাই। প্লিজ দাদু তুমি আরো কিছু জানলে বলো? (ইভা)
-লোকে বলাবলি করে আমাবস্যা রাতে ওই বাড়িতে কালো ধোঁয়ার মতো দেখা যায়, আমি এসব শুনে কোনোদিন আমাবস্যা রাতে জানালা খুলে ঘুমায় নি (দাদি)
-ওহ্ আচ্ছা, চলো নিচে যাই টিপ টিপ বৃষ্টি পড়া শুরু হলো (ইভা)
ইভা নিজের রুমে এসে ভাবতে লাগলো দাদির কথা গুলোর সাথে আলিবের মিল আছে, তাহলে কি জাদুকরী আলিবের ক্ষতি করেছে? আর যদি ক্ষতি হবেই আমার সাথে ওর সম্পর্ক কি? আমার জন্য ওর ফিরে আসা কেনো? রাতে তো আমি ওকে ডাকি নি এমনি এমনি চলে এলো কেনো ? সব প্রশ্মের উওর আলিবের দিতে হবে, এখনই আলিবকে ডাকবো।
ইভা আলিবকে ডাকবে ঠিক সেই সময় প্রচুর বৃষ্টি শুরু হলো সাথে কারেন্টও চলে গেলো। ফোনের ফ্লাশলাইট অন করে আলিবকে ডাকলো। আলিব রুম জুড়ে নানান রঙের মোমবাতি জ্বালিয়ে দিলো। ইভা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আলিবের দিকে। মোমবাতির আলোয় আলিবকে অনেক বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে। আলিব ওর বাস্তবের নায়ক হলে কতো ভালো হতো কিন্তু না আলিব তো সাধারণ মানুষ না।
“কি গো মহারানী আমার প্রেমে পড়লে নাকি? ”
ইভার ধ্যান ভাঙ্গে আলিবে কথায়।
“জ্বি না আমাকে প্রেমের জালে ফাঁসানো ওতো সহজ না ”
“তাও বটে তুমি আমার প্রেমে কেনো পড়বে, আমি তো সাধারণ মানুষ না ”
“আপনি সাধারণ মানুষ হয়ে যান, আপনি দেখতে এতো সুন্দর যে কোনো মেয়ে দেখলে আপনার প্রেমে পড়বে ”
“সে ক্ষমতা আমার নেই। যাই হোক তুমি বলো তো সায়ন্ত বলে ছেলেটাকে কি তোমার ভালো লাগে? ”
“ছেলে আমার জন্য অনেক করে তবুও কেমন জানি লাগে ”
“ও কিন্তু বেশি ভালো না এটা জেনে রাখো। আমি এখন আসি, আমাকে চলে যেতে বলো আবার রাত বারোটায় আসবো ”
আলিব চলে গেলো। ইভা যে কথাগুলো ভেবেছিলো আলিবকে বলবে তা তো বলাই হলো না। ইভা ওর সাথে কথা বলতে গেলে কেমন জানো ওর মাঝে হারিয়ে যায়। ইভা একা রুমে যতো থাকবে ততো আলিবের চিন্তায় মগ্ন থাকবে তাই বাসার সবার সাথে গল্প করতে গেলো। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে শুয়ে অপেক্ষায় আছে কখন বারোটা বাজবে। দেখতে দেখতে বারোটা বেজে গেলো আলিব আসলো তবে বড় একটা আয়না নিয়ে এসেছে।
আয়ানয় কি আছে????????
চলবে,,,,,,