ভালোবাসা এমনও হয়

ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! Part- 21

পরেরদিন তারা দেশে ফিরে এলো।।তরীকে দেখে অনেক মেলোড্রামা ট্রামা হলো।।তারপর তরী রুমে চলে এলো।

সবার সাথে নরমাল থাকতে চাইলেও তরী নরমাল হতে পারছে নাহ।।কারন দুইদিন ধরে সে কোন ড্রাগস নেয়নি।।যারফলে তার মধ্যে এক অস্বস্তি কাজ করছে।।না চাইতেও সবার সাথে রুড বিহেভ করে ফেলছে।

রাতে-

মেঘরা সবাই তরীদের বাড়িতেই থাকবে আজ রাতে।।আর মেঘ তরীকে বিয়ে করার ব্যাপার নিয়ে সবাই কে বলছে ড্রয়িং রুমে বসে।

মেঘঃ আমি চাই নাহ এইবার কোন বড় করে অনুষ্ঠান হোক।।আর হলেও পরে।।বাট আমি আগে তরীকে বিয়ে করতে চাই।।আর সেটা কালই করতে চাই।।আমি….

হঠাৎ কিছু ভাঙার আওয়াজ পেয়ে সবাই সেদিকে তাকালো।।তরী ফ্লাওয়ার ভাসটা ভেঙেছে আর তার চোখগুলো মারাত্মক পরিমাণে লাল হয়ে আছে।

নেশাঃ কি হলো তরী এটা ভাঙলে কেন!!

তরীঃ আমার বিয়ে ঠিক করা হচ্ছে আর আমাকেই জানানো হলো নাহ?হোয়াই😤

নেশাঃ বাট 🙄তুমি আর মেঘ তো আগে থেকেই রাজি ছিলে।।আর আদ্র এই কাজগুলো নাহ করলে তো তোমাদের বিয়েটা ও হয়ে যেত এতোদিনে

তরীঃ সেটা চার বছর আগের কথা ছিলো।।এখন অনেক কিছুই পাল্টে গেছে।।আগে বিয়ে করতে চেয়েছি বলে যে এখন চাইবো সেটা কিভাবে ভাবলে তোমরা

মেঘঃ কি বলছিস তুই এগুলো।।তুই কি আমাকে বিয়ে করতে চাস নাহ??!!!!!

তরীঃ আমার এই দেশের ফিরে আসা টাই ভুল হয়েছে।।ধুর

তরী রেগে নিজের রুমে চলে গেল।।

তরীঃ আমি আমার জীবনে তোমাকে জড়াতে পারি নাহ মেঘ।। একজন ড্রাগস এডিক্টেড কে কিভাবে লাইফ পার্টনার বানাবে তুমি মেঘ।।নাহ এই বিয়ে আমি কিছুতেই করবো নাহ।।(কিছুক্ষণ থেমে)উফফ মাথাটা এতো ব্যাথা কেন করছে।।ধুর ভালো লাগে নাহ।।বিদেশ থাকলে এট লাস্ট আদ্র ড্রাগস তো দিয়ে যেত প্রতিদিন।। এখানে তো তাও পাচ্ছি নাহ।।উফগ আমার এতো রাগ লাগছে কেন।।সব কিছু ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করছে।।(কিছুক্ষণ থেমে খাটে বসে পড়লো।।।বালিশে মুখ গুজে নিজের রাগ আর অস্বস্তি টা কমানোর চেষ্টা করছে বাট পারছে নাহ)
নাহ পেরে জোরে জোরে পা ঝাকাতে লাগলো।
কিছুক্ষণ পর

তরীঃ ধুর ব**।।পারবো নাহ থাকতে।।কি করি এখন।।উফফ বিরক্তিকর (নিজের চুল গুলো মুঠো বেঁধে।)
হঠাৎ দাড়িয়ে খাটের পাশের ড্রয়ারের উপর রাখা জগ টা মাটিতে ফেলে দিলো জোরে

তরীঃ কোথায় যাই এখন কোথায় পাবো ড্রাগস।।আদ্রকে ও তো পাবো নাহ।।কে দিবে আমায় ড্রাগস।।উফফ ভাবতে পারছি নাহ।।বাট আমার তো এটা লাগবেই না জলে মরে যাবো।।(এসি অন করা তবুও মারাত্মক পরিমাণে ঘামতে লাগলো তরী।।প্রচন্ড পরিমাণে অস্বস্তি আর রাগ লাগছে।।ইচ্ছে করছে সব কিছু ভেঙে ফেলতে।।আদ্রর ওইখানে থাকলেও এমনই করতো।।ড্রাগস শেষ হলেই রেগে সব কিছু ভেঙে ফেলতো।।আর তখন আদ্র ড্রাগস এনে দিতো।।বাট এখানে তার কিছুই হচ্ছে নাহ।।খাটের থেকে বালিশ নিয়ে ফেলতে যাবে খেয়াল করলো দরজার সামনে মেঘ দাড়িয়ে আছে।।বাট তরী থামলো নাহ।।খাট থেকে সব কিছু ছুড়ে নিচে ফেলে দিলো।।মেঘ এসে তরীকে আটকালো)

মেঘঃ কি করছিস তুই এমন কেন করছিস

তরীঃ কিচ্ছু জানি নাহ।। সব ভেঙে ফেলবো।।আমার কিচ্ছু সহ্য হচ্ছে নাহ।।আর আপনি আমাকে টাচ করেছেন কেন হাও ডেয়ার ইউ(বলেই মেঘের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো)

মেঘ শকের উপর শক খাচ্ছে।।

এইদিকে তরীর ভিতরটাও দুমরে মুচড়ে যাচ্ছে।।নাহ চাইতেও বার বার মেঘের সাথে খারাপ ব্যাবহার করে ফেলছে।।বাট ওই বা কি করবে।।ড্রাগস ছাড়া মনে হচ্ছে তার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।।

পুরো রুমটাকে তছনছ করে ফেললো তরী।।তারপর চুপ করে ফ্লোরে বসে পরলো।মেঘ এখনো দাড়িয়ে আছে।।দাড়িয়ে তরীর কার্যকর দেখছে।।কারন মেঘ তো আর জানে নাহ তরী কেন এমন করছে।
সব কিছুকে বাদ দিয়ে মেঘ গিয়ে তরীর পাশে ফ্লোরে বসলো।তরীর হাত ধরে

মেঘঃ কেন এমন করছো তুমি বৃষ্টি।।আমি কি কোন ভুল করেছি।।প্লিজ তাহলে আমাকে বলো।।কিন্তু এইভাবে থেকো নাহ।।তোমার এই বিহেভ আমাকে….

তরীঃ যাস্ট লিভ মি(হাত আবার সরিয়ে দিলো)কেন বার বার আমাকে টাচ করার চেষ্টা করছেন।।মেয়ে দেখলেই খালি গায়ে পরতে ইচ্ছা করে।বাংলা কথা বুঝেন নাহ আপনি।।আমার আপনাকে যাস্ট সহ্য হচ্ছে নাহ।।যাস্ট বিরক্ত লাগছে।।আমাকে আমার মতো কেন ছাড়ছেন নাহ।।কি সমস্যা আপনার।।আমাকে কি মেরে ফেলতে চাইছেন আপনি।।তাহলে বরং মেরেই ফেলুন।।তবু ও আমাকে মুক্তি দিন।।আপনাকে আমার একদম সহ্য হচ্ছে নাহ।।প্লিজ চলে যান।।প্লিজ(চেচিয়ে কথা গুলো বললো তরী।।তরীর চিৎকার শুনে সবাই তরীর রুমে ছুটে আসলো।।আর দেখলো সারা রুম তছনছ হয়ে আছে।।আর একপাশে নিচে মেঘ আর তরী বসে আছে।

মেঘ তরীর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।।কারন তরীর কথাগুলোতে মেঘ খুব বেশি কষ্ট পেয়ে।।চোখগুলোও জলছে তার। আরেকটু হলেই পানি পড়বে।আর তরীর সামনে কাঁদতে চাইছে নাহ।।তাই মেঘ বেরিয়ে পরলো।

এইদিকে

তরীঃ এখন তোমরা কেন ঘুরে ঘুরে দেখছো আমাকে।।সার্কাসের জোকার নাকি আমি।।যাস্ট লিভ মি(বলেই খাটে জোরে একটা লাথি দিলো)

নীড় কিছু বলতে যেতে গেলে নেশা আটকালো।।

নেশাঃ আই থিংক ওকে একটু টাইম দেয়া দরকার।হয়তো কোন ব্যাপার নিয়ে ডিস্টার্ব হয়ে আছে

সবাই ভাবলো তাই হয়তো হবে তাই একে একে বেরিয়ে গেল।

সবাই বেরিয়ে যেতেই মুখে দুইহাত দিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো তরী।।

তরীঃ আমার সাথেই কেন হচ্ছে এইসব আল্লাহ।।আর কতো কিছু সহ্য করবো আমি।।আমি যে এইভাবে পাগল হয়ে যাবো।। নিশ্চয়ই মেঘ আমার কথায় খুব কষ্ট পেয়েছে আজ।।বাট আমি তো পারছি নাহ।।😭

(হঠাৎ তরীর নজর পরলো জগের ভাঙা কাচ গুলোর দিকে)

এইদিকে

মেঘঃ কিভাবে পারলে তুমি এতো বড় কথা বলতে তরী।।এই কয়েকটা বছরে তোমার এতোটা পর হয়ে গেলাম আমি😥

হঠাৎ মেঘের মোবাইলে কল আসলো।

মেঘঃ হ্যালো হিয়া হ্যাঁ বল

হিয়াঃ ভাইয়া তাড়াতাড়ি হসপিটালে আয়।।তরী আপু সুইসাইড করেছে

মেঘঃ হোয়াট।।কি বলছিস তুই।।ওকে ওকে আমি আসছি।।।

মেঘ ফোন রেখে তাড়াতাড়ি হসপিটালে পৌছাল।

দেখলো নেশা বসে কাঁদছে আর ঈশা তাকে সামলাচ্ছে।

মেঘঃ ডেড এইসব কিভাবে হলো??

ইশানঃ ডোন্ট নো।।নেশা তরীকে ডিনার করার জন্য ডাকতে গেছিলো।।আর তখন গিয়ে দেখে এই অবস্থা

মেঘ আর কিছু বললো নাহ।।চুপচাপ ওটির সামনে গয়ে দাড়ালো।

কিছুক্ষণ পর ডাক্তার বেরিয়ে এলো।।তা দেখে সবাই ডাক্তারের কাছে গেল

নীড়ঃ ডাক্তার তরী??

ডাক্তারঃ সি ইজ নাও আউট অফ ডেঞ্জার।।বাট আপনাদের একটা কথা বলার ছিলো।।ও এর আগেও অনেকবার সুইসাইড করার ট্রাই করেছিলো মে বি?

সবাই তো অবাক।।কারন কেউই এই সম্পর্কে কিছুই জানে নাহ।

(আসলে আদ্রর ওইখানে থাকার সময় তরী অনেকবারই সুইসাইড করার ট্রাই করেছিলো।।আর তাই আদ্র বাড়িতে অনেক গুলো লোকরেখেছিলো অলটাইম তরীকে চোখে চোখে রাখার জন্য)

ডাক্তারঃ আর আরেকটা কথা?

মেঘঃ কি কথা ডক্টর

ডাক্তারঃ আসলে ও কি ড্রাগস নেয়?

সবাইঃ হোয়াট???????

ডাক্তারঃ হ্যা ওর হাতে অনেক গুলো সুই এর দাগ দেখলাম আর অনেক টা কালচে ও হয়ে গেছে দাগ গুলো হয়তো বা অনেকদিন ধরেই উনি ড্রাগস নিচ্ছে।।আপনারা কি এইসবের কিছুই জানেন নাহ??আপনারা তো ওর পরিবারের লোক তাই নাহ??

ঈশাঃ আসলে ও এতোদিন আমাদের সাথে ছিলো নাহ।

ডাক্তারঃ ওহ আই সি।বাট পরেরবার থেকে ওর খেয়াল রাখবেন

চলবে