তোমার জন্য ফিরে আসা !! Part- 06
“এই মহারানী, আমার বুকের মাথা রেখে আর কতো ঘুমাবে? এবার তো উঠো ”
“উমম একটু ঘুমাই তুমি থাকো আমার কাছে ”
“না গো তোমার এখন উঠতে হবে সকাল দশটা বাজে ”
ইভা আলিবকে জড়িয়ে ধরে আছে। আলিব ইভাকে উঠিয়ে বসায়। ইভা ভালো করে চোখ মেলে দেখে আলিব। সকাল বেলা আলিব আসলো কিভাবে? ইভা তো ডাকে নি তাহলে কেনো এসেছে এটা ভেবে আলিবকে জিজ্ঞাসা করলো,
“আপনি কেনো এসেছেন?আমি তো আপনাকে ডাকি নি”
“মেয়ে কি বলে, এতোক্ষণ আমার বুকে মাথা রেখে আমাকে কোলবালিশ বানিয়ে ঘুমালো আবার বলে ডাকি নি তাহলে কি আমি ইচ্ছে করে এসেছি ”
“কিহ্ আমি আপনার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়েছি ”
“হ্যাঁ, তুমি ঘুমের মধ্যে বলেছো আমাকে আসতে তাই এসেছি ”
“আমি স্বপ্ন দেখছিলাম আপনার সাথে ঘুরতে আছি আর আমাদের বাসর,,,,,,,,,, ”
“আর কি বলো? ”
“কিছু না এবার যান, কেউ আমাকে একা একা বকবক করতে দেখলে পাগলাগারদে দিয়ে আসবে ”
“হুম আমি তো চলে যাবো তবে আমার মহারানী যে একটু হলেও আমার প্রেমে পড়েছে তা বেশ বুঝতে পারছি ”
“এতো বেশি বুঝতে আপনাকে কেউ বলে নি ”
“আচ্ছা বেশি বুজলাম না যেদিন মহারানী বুঝাবে সেটা বুঝবো ”
“হুম এবার চলে যান ”
আলিব চলে গেলো। ইভা খুব লজ্জা পেলো আলিবের সাথে এমন ঘটনা হওয়ায়। ফ্রেস হয়ে লিমার কাছে গেলো। লিমা ইভাকে হেসে হেসে বললো,
-তোর রাজামশাই কে রে?
-আমার কোনো রাজামশাই নেই।
-ইসসস্ বললেই হলো নাকি ঘুমের মধ্যে বলছিলো তো তুই তোর রাজামশাইয়ের সাথে ঘুরতে ভালো লাগছে আবার বললি তুমি আসো এসব কাকে বলছিলি?
ইভা মনে মনে বললো তাহলে আলিব ঠিকই বলছিলো আমি তাকে ডেকেছি। এ মা কি লজ্জা, ঘুমের মধ্যে কি না কি বলেছি আল্লাহ জানে।
-কিরে তার ধ্যানে হারিয়ে গেলি?
-ধুর তুই যে কিসব বলিস, চল তো তোকে ঘুরতে নিয়ে যাই।
-কোথায় যাবি?
-দু বোনে মিলে হাওয়া খেয়ে আসি
-হাহাহাহ্
ইভা বাসা থেকে বের হওয়ার আগে সুযোগ বুঝে আলিবকে ডাকে। ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনে আলিব ওদের সাথে থাকবে বলে দাবি করে। ইভা মেনে নেয়। লিমা আর ইভা দুজনে টুকিটাকি শপিং করলো। রেস্টুরেন্টে বার্গার, ফালুদা খেলো। দুপুরে দিকে বাসায় এসে। ওদের বাসায় আসতে দেখে ওর মা হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলে,
-তোদের আসতে এতো দেরি হলো কেনো?
-ঠিক সময়ে এসেছি আর তুমি হাঁপাচ্ছ কেনো?
-পাশের বাসায় ফয়সাল খুন হয়েছে কারা যেনো ওকে মেরে নদীর পাড়ে ফেলে গেছে।
– আল্লাহ কি বলো উনাকে তো কালকেও দেখেছি তাহলে খুন হলো কখন?
-কেউ বলছে তাকে সকালেও দেখেছে আর এখন খুন। তোরা কেউ বাসা থেকে একা একা বের হবি না
-আচ্ছা
এমন একটা খবর শুনে ইভার খুব খারাপ লাগছে। রুমের দরজা বন্ধ করে আলিবকে ডেকে ফয়সালের মৃত্যুর ঘটনা বলে তা শুনে আলিব বলে,
“যে খুন করেছে বা যার হাত আছে এই খুনের পিছনে তাকে শাস্তি পেতে হবে”
“আপনি শাস্তি পাইয়ে দেন প্লিজ ”
“তুমি খুনের সব তথ্য যোগাড় করববে ”
“আমি কি করে করবো? ”
“আমি তোমাকে সাহায্য করবো তারপর ওরা শাস্তি পাবে ”
“আচ্ছা তবে কখন কি করতে হবে “?
” রাতে আসবো ”
আলিব চলে গেলো, ইভা ভাবছে কি করে খুনের তথ্য পাবে আর তথ্য পেলেও সবার কাছে আসল দোষীকে কি করে শাস্তি পাইয়ে দিবে? এমন ঘটনা এলাকায় প্রথম হলো। মাথা ঝিমঝিম করছে তাই বিছানায় শুয়ে পড়লো। সন্ধ্যার দিকে এ্যাম্বুলেন্সের শব্দ শুনে জানালার কাছে গিয়ে দেখলো যে খুন হয়েছে তার লাশ নিয়ে আনা হয়েছে।ইভা জানালা বন্ধ করে দিয়ে নামাজ পড়লো। আশে পাশে খুব কান্নাকাটি শব্দ। ইভার খুব লাগছে আজকে একা থাকতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু আলিবের সাথে কথা বলতে হলে একা থাকতে হবে তার থেকে রাতে একবারে কথা হবে তাই আলিবকে ডাকে নি ।
লিমা ঘুমিয়েছে রাত বারোটাও বাজে। আলিব এসে বললে,
” তোমার বাগান বাড়ি যেতে হবে সেখান থেকে কালো গোলাপ আনতে হবে তারপর ফয়সালের খুনির কাছে যেতে হবে ”
“না না আমি এসব পাড়বো না আমার ভয় করে, এসব আপনি করুন ”
“আরে তোমাকে করতে হবে নয়তো আমার উদ্দেশ্য সফল হবে না ”
“কি উদ্দেশ্য আগে বলুন? ”
“আমার মহারানীকে আমার করে পাবে না যদি আমার মহারানী আমার কথা না শুনে ”
“আপনি তো জ্বীন-ভূত আপনার সাথে মানুষ থাকবে কি করে”
“এতো কথা বলো না তো এবার চলো আমার সাথে ”
আলিব ইভাকে বাগান বাড়ি গেলো। সেখান থেকে চারটা কালো গোলাপ নিয়ে ফয়সালদের বাড়ির চারকোনে চারটা গোলাপ পুতে রাখলো। আলিব বললো,
“এখন জানতে পারতে ফয়সালের খুনি কে? ”
“আপনি তো জানেন কে খুনি তাহলে বলুন ”
“খুনি এই বাড়ির মধ্যে আছে, তুমি আমার সাথে আসো। একটুও ভয় পাবে না বুঝছো ”
“হুম ”
আলিব আর ইভা ধীরে ধীরে ফয়সালদের বাড়িতে ঢুকছে, ওরা ঢোকার সময় কারেন্ট চলে গেলো। পুরো বাড়ি অন্ধকার। একটা রুমের দরজা খুলে কাকে জেনো আলিব শূন্যে তুলে দিলো।
চলবে,,,,,,,,,,