ভালোবাসা এমনও হয়

ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! Part- 15

৪ বছর পর

রিদঃ ফর গড সেক লিভ মি মেঘ।।প্লিজ মাফ করে দাও।।আমি এই ভুল আর কখনো করবো নাহ(চিৎকার করে)

মেঘঃ ভুল!! এটা ভুল ছিলো নাহ..।তুই ইচ্ছে করে আমার জীবন আমার থেকে কেড়ে নিয়েছিস।তোদের সবাই কে মরতে হবে।।আর সেটা ও আমার হাতে।।আর কি বললি আর কখনো করবি নাহ।।তার জন্য আগে তোকে বাঁচতে হবে।।(বলেই গলায় দুই হাত দিয়ে ধরে মাটির সাথে চেপে ধরলো)

রিদ পা দুটি মাটিতে নাড়তে নাড়তে দম বন্ধ হয়ে মরে গেল।
মেঘ ছেড়ে দিলো।রিদের লাশ টা কে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে চৌধুরী বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।

চৌধুরী বাড়িতে

ইশানঃ ঈশা মেঘ কোথায়?

ঈশাঃ ও তো বললো একটু কাজ আছে তাই বেড়িয়েছে

ইশানঃ তাই বলে আজকের দিনেও।।আজ এট লাস্ট থাকতে পারতো।।নিজের বার্থডের দিন এইভাবে যাওটা কি ঠিক হয়েছে।।নিজের পরিবারকে আজকের দিনটাও কি দেয়া যেত নাহ।২৫ বছর হতে চলছে।।এখনো এতোটা কেয়ারলেস হলে কিভাবে হবে।।।আচ্ছা বাদ দাও নীড় আর নেশা ওদের ফোন দিয়েছো

ঈশাঃ ওরা আসবে নাহ

ইশানঃ বাট কেন

ঈশাঃ তুমি তো জানোই ইশান৷ তবুও কেন জানতে চাইছো।।এইদিনে তো তরীর ও বার্থডে ছিলো।।আর ও যদি থাকতো তাহলে ওর বার্থডে টা ও আজ😥

ইশানঃ হেই প্লিজ কেঁদে নাহ।।যা হয়ে গেছে তা তো ফিরাতে পারবো নাহ আমরা কেউই।। সো প্লিজ এটা আমাদের মেনে নিতে হবে।।(ঈশার চোখের পানি মুছে দিয়ে)

ঈশাঃ বাট ইশান আজ তো…..🥺🤕

ইশানঃ জানি আমি সব।।প্লিজ বাদ দাও।।আজকের দিনে এট লাস্ট মন খারাপ করে থেকো নাহ

ঈশাঃ হুম😞



একটুপর মেঘ বাড়িতে ঢুকলো।

ইশানঃ কোথায় গিয়েছিলে তুমি

মেঘঃ কেন🤨

ইশানঃ আমি কি জানতে পারি নাহ কোথায় গিয়েছিলে

মেঘঃ যদি বলি নাহ

ইশানঃ মেঘ😠

মেঘঃ চেচাবে নাহ ডেড।।আমি আগেই বলেছি আমাকে আমার মতো থাকতে দাও।।আমার লাইফে কেউ ইন্টারফেয়ার করবা নাহ।।যাস্ট লিভ মি এলোং
(বলেই রেগেমেগে রুমে চলে গেল)

ইশানঃ ঈশা এইসব????

ঈশাঃ বাদ দাও জানোই তো ও এখন এমন হয়ে গেছে।

ইশানঃ বাট আজ……

ঈশাঃ আমি বরং নেশা আর নীড়কে বলছি।।ওরা মেঘকে বুঝিয়ে দিবে।

ইশানঃ বাট ওদের অবস্থা ও তো

হিয়াঃ হোয়াট হেপেন্ড মম??ভাইয়া এতো রেগেমেগে রুমে গেল কেন??

ইশানঃ ও তো সারাক্ষণ রেগেই থাকে।।বিরক্তিকর কর।।(ইশান ও রুমে চলে গেল)

হিয়াঃ কি হয়েছে মম।।ডেড এই ভাইয়ার মধ্যে কি ফাইট হয়েছে

ঈশাঃ হুম একটু।।জানিসই তো তোর ভাইয়াকে।।খালি রাগ আর রাগ৷ দিন দিন যেন রাগটা আরো বেড়ে যাচ্ছে ছেলেটার।

হিয়াঃ বাট আজ তো ভাইয়ার বার্থডে।। আজও কি রাগ করেই থাকবে।

ঈশাঃ এই জন্যই আমি খান বাড়িতে যাচ্ছি। সবাইকে একসাথে দেখলে মেঘ আর রাগ করবে নাহ।

হিয়াঃ আমি ও সাথে আসি?

ইশাঃ ওকে আয়


দুইজন মিলে খান বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা হলো।

দুইজন কে দেখে নেশা খুব অবাক হলো।

নেশাঃ তোমরা এখানে

হিয়াঃ কেমন আছো ফুপি(নেশাকে জড়িয়ে ধরে)

নেশাঃভালো সোনা।।তুমি কেমন আছো (আলতো করে ধরে)

হিয়াঃ একদম ভালো নাহ।।(মন খারাপ করে)

নেশাঃ কেন মামনি কি হয়েছে??

হিয়াঃ ভাইয়ার আজ বার্থডে অথচ ভাইয়া আজ রেগে বসে আছে।।কেক কাটবে বলে তো আর মনে হয় নাহ আজ🙁

নেশাঃ কাটবে নাহ কেন।।তোমরা বললেই কাটবে

হিয়াঃ বাট ও যা রাগি।।আমরা বললেও শুনবে নাহ

নেশাঃ ওহহ

ঈশাঃ আমি তোমাদের নিতে এসেছি।।প্লিজ চলো

নেশাঃ বাট ঈশা তোমার ভাইয়া।।জানোই তো আজ তরীর বার্থডে ছিলো।।আর আজ তো ও নেই

ঈশাঃ হুম বাট এটা তো আমাদের মেনে নিতে হবে তাই নাহ।।এইভাবে একা কয়দিন কাটাবে ভাইয়া।।আমাদের ওখানে গেলে সবার মাঝে থাকলে ভাইয়ার মনটা ও ভালো হয়ে যাবে.প্লিজ চলো নাহ।।

নেশাঃ বাট তোমার ভাইয়া কে

ঈশাঃ তুমি যেইভাবেই হোক মেনেজ করো।। প্লিজজজজ।ভাইয়া কি অফিসে

নেশাঃ না বাড়িতেই নিজের রুমে তরীর ছবি নিয়ে বসে আছে।।আচ্ছা তোমরা বসো।।আমি দেখি নীড়কে বলে

রুমে

নেশাঃ নীড় বলছিলাম কি

নীড়ঃ বলো

নেশাঃ আসলে আজ তো মেঘের বার্থডে।। তো চলো ওইবাড়িতে যাই

নীড়ঃ আর ইউ ক্রেজি নেশা।।ওই বাড়িতে যাওয়া মানেই আগের সব বার্থডে মোমেন্ট এর কথা মনে করে।।আমার তরী মা যদি আজ থাকতো তাহলে আজ ওর বার্থডে টা ও একসাথে 🥺😥

নেশাঃ বাট নীড়।।চারবছর হয়ে গেছে।।এখন তো এটলাস্ট মেনে নাও সব কিছু।

নীড়ঃ কি ভাবে পারবো নেশা।। তুমি পেরেছো মেনে নিতে??

নেশা নীড়ের সামনে বসে ওর দুই হাত ধরলো।

নেশাঃ বাট আমাদের পারতে হবে নীড়।।আকাশ আর শ্রাবণের কথাও তো ভাবতে হবে তাই নাহ।।ওদের ও দেখতে হবে

নীড়ঃ বাট আমি পারছি নাহ নেশা।।আজ তো একেবারেই পারছি নাহ।।তুমি বলো আমার কি করা উচিত।।আচ্ছা কেন আমার প্রিন্সেসের সাথেই এমনটা হলো।।ওর কি দোষ ছিলো বলো নাহ।।যতো দোষ তাতো আমি করেছিলাম।।তাহলে আমার শাস্তি কেন ও পেল।।কেন পেলো বলো নাহ।।এই নেশা প্লিজ বলো🥺😭

নেশাঃ নীড় আপনি যদি এমন দুর্বল হয়ে যান তাহলে আমি কিভাবে থাকবো।। আমি যে মরে…..

নীড়ঃ প্লিজ এসব বলো নাহ নেশা(নেশাকে থামিয়ে)

নীড়ঃ আর কারো মৃত্যু দেখার শক্তি আমার কাছে নেই নেশা।।এইবার যেন কারো কিছু হওয়ার আগে আমি মরে যাই🥺🤕

নেশাঃ প্লিজ বন্ধ করুন নাহ এইসব বলা নীড়।।আজ তো তো তরীর বার্থডে তাই নাহ।।ও না থাকলে কি হয়েছে।। ওর বার্থডে টা তো পালন করতে হবে তাই নাহ।।ও যেখানেই থাকুক যদি দেখে আমরা ওর বার্থডে পালন করছি নাহ ও কিন্তু তাহলে খুব রাগ করবে

নীড়ঃ 🥺🥺

নেশাঃ প্লিজ কান্না অফ করো।।আগে তো তুমি আমায় বলতে আমার চোখে পানির টাংকি লাগানো।।এখন তো দেখছি তোমার চোখে টাংকি লাগানো।।
(আসলে নেশা নীড় কে থামাতে চাইছে।বাট😞)

নীড়ঃ যাই বলো নাহ নেশা এই কান্না জীবনে থামবে নাহ

নেশাঃ থামবে নাহ জানি।।বাট আমরা চেষ্টা করতে পারি তাই না

নীড়ঃ মানে?

নেশাঃ চলো আমাদের বাড়িতে যাই।।ওইখানে সবাই আছে।।গেলে দেখবে মনটা ও একটু হাল্কা লাগবে।।

নেশার জোড়াজুড়িতে নীড় রাজি হলো।
সবাই মিলে চৌধুরী বাড়ি গেল।।কবির আর কথা ওই বাড়িতেই ছিলো ওরা সকালেই চলে গিয়েছিলো।।নীড় আর নেশাকে দেখে সবাই খুশি হলো।

নেশাঃ তা আমাদের বার্থডে বয় কোথায় হুম?

নীড় আর নেশা সবার সাথে খুশি খুশি ভাব নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলেও সবাই তাদের মনের অবস্থা টা ঠিকই বুঝতে পারছে।

হিয়াঃ দাড়াও আমি গিয়ে ডেকে আনছি।

ঈশাঃ বার্থডের কথা বলিস নাহ।।তা হলে রেগে যাবে।।বলিস ফুপি আর মামা এসেছে।

হিয়াঃ ওকে।।

হিয়া গিয়ে মেঘকে ডেকে আনলো।

মেঘ আসতে না চাইলেও নেশা আর নীড় এসেছে শুনে ওদের সাথে একটু কথা বলতে এসেছিলো।
বাট টেবিলে কেক দেখে মেঘ ভ্রু কুচকালো

মেঘঃ এইসব কি🤨(গম্ভীর গলায়)

হিয়াঃ আসলে আজ তো তোমার বার্থডে তাই…

মেঘঃ তাই😠

সবাই চুপ হয়ে গেল।।কারন মেঘের রাগ সম্পর্কে সবাই খুব ভালো করে জানে।
নেশা সাহস করে বললো-

নেশাঃ তাই আসলে কেকটা এনেছি। বেশি আয়োজন তো করিনি আমরা।। শুধু কে……

মেঘঃ হোয়াট(চিৎকার করে)।।আর ইউ মেড ফুপি।।তোমার থেকে এট লাস্ট এটা এক্সপেক্ট করিনি।।

নেশাঃ দেখ মেঘ যা হয়ে……

মেঘঃ আমি কিছু শুনতে চাই নাহ ফুপি।।কিছু নাহ।।তোমরা যাস্ট পাগল হয়ে গেছো আমার মনে হচ্ছে।।তোমরা এসেছো শুনে ভাবলাম তোমাদের সাথে কথা বললে হয়তো একটু ভালো লাগবে।।বাট আই ওয়াস রং।। হোয়াট এভার এখানে থাকা আমার পক্ষে আর সম্ভব নাহ।।আমি যাচ্ছি

নীড়ঃ বাট মেঘ

মেঘঃ প্লিজ মামা।।আমি চাই নাহ তোমাদের কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করতে।।প্লিজ(মেঘ হনহন করে বেরিয়ে গেলো)

ইশানঃ দেখলে দিন দিন কতোটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।।এই এখন বেরিয়ে গেল।।যখন ইচ্ছা আসছে যখন ইচ্ছা যাচ্ছে।।এর যে কি হবে

সবাই দীর্ঘশ্বাস নিলো।।।

এইদিকে
মেঘ নদীর পাড়ে বসে আছে চুপচাপ।

মেঘঃ দেখো বৃষ্টি সবাই কতোটা সেল্ফিস হয়ে গেছে।।সবাই কিভাবে ভাবলো আমি তোমাকে ছাড়া কেক কাটবো।।কখনো তোমাকে ছাড়া আমি বার্থডে পালন করেছি নাকি তোমার জন্মের পর থেকে।যখন তুমি ইন্ডিয়া তে ছিলে তখনই আমি কোন নাহ কোন বাহানায় কেক কাটিনি।।আর আজ ।।তাহলে ওরা এইসব কিভাবে ভাবে বলতো।।সবাই দিন দিন সেল্ফিস হয়ে যাচ্ছে খুব বেশি।। আমি ও সেল্ফিস হয়ে যাবো দেখো।।যাস্ট ওই লোকদের শাস্তি গুলা দিয়ে নেই তারপর আমিও আমার ভালোটা বুঝে নেব।।শুধু আমার ভালোটা।।তোমার কাছে চলে যাবো আমি।।এই সেল্ফিস দুনিয়ায় থাকবো নাহ।। ঠিকাছে।

মেঘের মনে পড়তে লাগলো চার বছর আগের পুরোনো সৃতি গুলো।।যেদিন তরী মেঘকে ভালোবাসি বলেছিলো তারপর তো সবই পাল্টে গেছিলো তাদের মাঝে।



চলবে