ভালোবাসা এমনও হয়

ভালোবাসা এমনও হয় !! Part- 14

সকালে-
নেশার ঘুম খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে যায়।।তাই বাড়ির চারপাশে একটু হাটাহাটি করে।।তারপর ঘরে ফিরে আসে।।ইশানের রুম পাস করে যেতেই ইশানের দিকে খেয়াল করে।।দরজা টা খুলা ছিলো তাই।।
নেশা ভিতরে ঢুকে দেখে ইশান রকিং চেয়ারেই ঘুমিয়ে আছে।।হয়তো রাতে কখন ঘুমিয়ে পরেছে খবর পায়নি।।
নেশা গিয়ে ইশানের গায়ে একটা চাদর দিয়ে দেয়।

নেশাঃ আপনি আমায় ভালোবাসেন নাহ ইশান।।আপনার চোখে আমার জন্য ভালোবাসা নেই।।যদি সত্যি আপনি আমায় ভালোবাসতেন তাহলে একবার হলেও আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতেন।।হয়তো ভাবছেন যে আমি রাগ করবো তাই যোগাযোগ করেননি।।কিন্তু যদি আপনি সত্যি আমায় ভালোবাসতেন তাহলে আমার রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করতেন।।৬ বছর অনেক টা সময়।।যদি আপনি মন থেকে চাইতেন তাহলে আমার সাথে ঠিক যোগাযোগ করতে পারতেন।।আর কি বললেন আমাকে হারিয়ে আপনি আমার ভালোবাসা বুঝেছেন।।তাহলে আপনি এই বিয়েটা কিছুতেই করতেন নাহ।।আপনি নিহার সাথে আমার ভালোবাসার তুলনা করেছেন।।তাই আপনার মনে হয়েছে আমায় ভালোবাসেন।

।নিহা যে বিয়ের আগে থেকেই আরেকজনের বাচ্চার মা ছিল তা আমি জানতাম।।আমি আপনার সব কিছু জানি ইশান।।৬ বছরে আপনি আমার সম্পর্কে খোজ না চালালেও আমি সব জানি।।নিহা আপনাকে লুকিয়ে আরেকজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলো বলে আপনি তাকে ছেড়ে দিয়েছেন।। ওর থেকে আপনি ধোকা পেয়েছেন তাই আপনি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন যে যখন আমাকে ধোকা দিয়েছিলেন তখন আমার কতো টা কষ্ট হয়েছিল।।৬ বছর নিহার দেয়া কষ্ট গুলো আপনাকে এতোটাই একা করে দিয়েছে যে আপনি ভালোবাসা আর ভালোলাগার মধ্যে তফাৎ টাই ভুলে গেছেন।।আমি আপনার ভালোবাসা নাহ।।আমি আপনার ভালো লাগা।।কারন আমি নিহার মতো আপনাকে ধোকা দেই নি।।।আপনার চোখে নিহা খারাপ হয়ে গেছে।।তাই আমাকে এখন আপনার ভাল লাগছে।।বাট যদি নিহা আপনাকে নাহ ঠকাতো তাহলে আমি আপনার কাছে সেই বস্তির মেয়েই থেকে যেতাম ইশান।।আপনি আমাকে নিহার সাথে তুলনা করছেন।।তুলনা করে ভালোবাসা হয়নাহ ।।যদি আপনাকে কেউ আমার থেকে বেশি ভালোবাসে তাহলে হয়তো নিহার মতো আমাকেও ভুলে যাবেন।নাহ আমি আপনার ভাগ্যে আছি আর নাহ আপনি আমার ভাগ্যে।আমার লাইফে কি হবে তা আমি জানি নাহ। কিন্তু আমি প্রে করি খুব তাড়াতাড়ি আপনার লাইফে এমন কেউ আসুক যে আপনাকে নতুন করে ভালোবাসা শিখাবে।।আপনাকে সত্যিকারের ভালোবাসবে।।

নেশা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।।






আজ প্রথম নেশা অফিসে যাচ্ছে।।বাট নিজের গাড়ির সামনে এসেই নেশা শক।
কারন গাড়ির পিছনের দিকের অবস্থা খুব খারাপ।।কিন্তু গাড়িটা এই রকম কিভাবে হলো নেশার তো তা মনেই নেই।।রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলো তা মনে আছে বাট তারপর কি হয়েছিলো তা নেশা ভুলে গেছে।আসলে আমেরিকা থাকা কালীন নেশার অনেক ফ্রেন্ডরাই এইসব খেত কারন ওই দেশে এইসব নরমাল ছিলো।।বাট নেশা ওতোটা খেত নাহ।।যখন মুড খুব অফ থাকে তখন খায়।।বাট খাওয়ার পর টোটালি মাতাল হয়ে যায়।।( একজন পাঠক বলেছিলো বিয়ার খেলে মাতাল হয় নাকি।।তাকে বলছি দামী ব্রেন্ডের বিয়ার খেয়ে দেখবেন।।শুধু মাতাল নাহ মনে হবে আকাশে উড়ছেন😂।।আসলে আমার ফেমিলির অনেককে উড়তে দেখেছি এইসব খেয়ে।।কেউ আবার ভাববেন নাহ আমি এইসব খাই😒)

নেশাঃ উফফ কি হয়েছিলো কাল🤔🤔।।কিছুই তো মনে পরছে নাহ।। গাড়িটার এই অবস্থা কিভাবে হলো।।ধুর আর এই সব খাবোই নাহ।।এখন অফিসে যাই কিভাবে 🙄🙄।।ইয়েস আব্বুর গাড়ি নিয়ে চলে যাই।




এইদিকে
খান বাড়িতে –
নীড়ঃ বাবাই তোমায় কিছু কথা বলার ছিলো।

কবিরঃ কি কথা

নীড়ঃ আমাদের উত্তরাতে যে অফিসটা আছে আমি ওইখানে জয়েন করতে চাই

কবিরঃ হঠাৎ ওইখানে কেন।আর তুমি তো এইখানের অফিসে জয়েন করেছো।আজ তোমার তো একটা ডিল ও আছে চৌধুরী গ্রুপ এর সাথে।।তাহলে হঠাৎ উত্তরার অফিসে কেন?

নীড়ঃ বাবাই আমি চাই এই ডিলটা ইশা দেখুক।ওর তো এখন দায়িত্ব নেয়া উচিত

ইশাঃ কিন্তু আমি একা😳

নীড়ঃ এই শুন এখনো তোর সাথে আরেকজন থাকতে পারবো নাহ।।তুই এখন যথেষ্ট এডাল্ট।।আগামীকাল তোর ২২ বছর হবে তা আশা করি ভুলে যাসনি

ইশাঃ কিন্তু ভাইয়া আমি একা🤕কিভাবে এতো কিছু

নীড়ঃ তুই একা কেন হবি।ডিলটার সময় বাবাই তো থাকবেই তোর সাথে তাই নাহ।

ইশাঃ আচ্ছা তুই যা বলিস

কবিরঃ ওকে তাহলে নীড় তুমি কবে থেকে অফিসে জয়েন করতে চাইছো

নীড়ঃ কাল থেকেই

কবিরঃ ওকে আমি মেনেজার কে সব বলে রাখছি।।

নীড়ঃ বাবাই

কবিরঃ বলো

নীড়ঃ আসলে আমি অফিসের বস হয়ে যেতে চাই নাহ।একজন স্টাফ হয়ে যেতে চাই🙁

কবিরঃ মানে কি কিসব বলছো এইগুলা।।তুমি নিজের অফিসের স্টাফ হয়ে যাবে।।মাথা নষ্ট হয়ে গেছে তোমার

নীড়ঃ বাবাই প্লিজ।।এই রিকুয়েষ্ট টা রাখো আমার

কবিরঃ বাট কেন?

নীড়ঃ এখন এতো কিছু বলতে পারবো নাহ।।তুমি যাস্ট আমার এই ব্যাবস্থাটা করে দাও।আর তোমাকে আরো একটা কাহ করতে হবে

কবিরঃ কি

নীড়ঃ আমাকে একজনের আন্ডারে দিতে হবে😶

কবিরঃ কার 🤨🤔

নীড়ঃ নেশা চৌধুরী 😑😑🙈🙊

কবিরঃ নেশা চৌধুরী।। নামটা চিনা লাগছে।

নীড়ঃ হুম আজই আমাদের অফিসে জয়েন করেছে স্কলারশিপ নিয়ে।।

কবিরঃ ওহ হ্যা মনে পড়েছে।।মেয়েটার সাথে আমার কথা হয়েছে।।বাট তুমি ওর আন্ডারে কেন কাজ করতে চাইছো আর ও বয়সে তোমার থেকে অনেক ছোট।। তাহলে তোমার কি মনে হচ্ছে নাহ ওর ডাউট হবে

নীড়ঃ ওইটা আমি মেনেজ করে নিবো।।তুমি যাস্ট যেগুলো বললাম ওইগুলো করো

কবিরঃ তা না হয় করবো।।কিন্তু ব্যাপার টা কি বলতো।।হঠাৎ নেশা আন্ডারে৷ আর ওকে চিনলিই বা কিভাবে।।মতলব টা কি বলতো🤔🤔

নীড়ঃ সব পরে জানতে পারবে এখন যা বললাম তা করো।

কবিরঃ ওকে

নীড়ঃ আচ্ছা বাবাই একটা কথা।আজ আমাদের যেই কোম্পানির সাথে ডিল হতে যাচ্ছে ওটা তো ওই নেশা চৌধুরীদের পারিবারিক কোম্পানি তাই নাহ।তাহলে ওই মেয়ে আমাদের কোম্পানিতে কেন কাজ করছে?

কবিরঃকথাটা আমার মনে ও এসেছিলো।।আমি ওকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম।।ও বললো যে ও নিজের পরিচয় বানাতে চায়।।তাই নিজের কোম্পানি তে জয়েন করেনি।।আর তাছাড়াও মেয়েটা খুব টেলেন্টেড।।ওর ডিজাইন গুলো খুব ভালো।।আই থিক আমাদের অফিসের জন্য ভালোই হবে

চৌধুরী কোম্পানি তে

কবির খান আর ইশা এসেছে তাদের কোম্পানির হয়ে
।ইশান তাদের সাথে ডিলটা সাইন করলো।
এইদিকে ইশাকে দেখে ইশানের মনে ঘন্টা না বাজলেও ইশান কে দেখে ইশার মনে ঘন্টা ঠিকই বেজে গেছে।।বাট ইশানের কি সেদিকে খেয়াল আছে।।সে তো আটকে আছে আরেক জায়গায়।
দেখা যাক এখন নীড় নেশার আর ইশা ইশানের মন জয় করতে পারে কিনা।(সবাই লাস্টের কথা গুলো পড়বেন দয়া করে❤❤)

চলবে