ভালোবাসার প্রতারণা ! সিজন 2 ! Part- 08
প্রভাতকে দেখেই তারার বুক বুক করে উঠে। এমন কিছু যে হবে ও আশা করেনি ও ভেবেছিল হয়তো ওর বাবা লোক পাঠিয়েছে কিন্তু এইখানে তো কিছু অন্যরকম এ ঘটছে। প্রভাত একটা ডেভিল স্মাইল দিয়ে যারার সামনে এসে দাঁড়ালো। আর বলতে লাগলো
“জানতাম এমন কিছুই তুমি করবে।”
“যখন জানতেনই তাহলে কেন আমার পিছু নিচ্ছেন? আপনার তো এটা এতদিনে বুঝে যাওয়ার কথা যে আমি আপনাকে ঘৃণা করি।”
“ঘৃণা, রাগ, অভিমান—এই সব কিছু থেকেও কিন্তু ভালোবাসার জন্ম হয়।”
“হয়। তবে সেটা আপনার ক্ষেত্রে নয়। আমার পথ ছাড়ুন যেতে দিন আমাকে। আপনাকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না।”
“সম্ভব, সব কিছুই সম্ভব।”
“ভয় দেখাচ্ছেন?”
“কই?”
“শুনুন আপনি যা খুশি করেন ভিডিও ভাইরাল করার খুব শখ তাই না? করুন আমি মানা করবোনা আর এখন আমি এসব কিছুকেই ভয় পাই না। ভিডিওতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে আমার উপর জোর জবরদস্তি হচ্ছে সেটা যদি ভাইরাল হয় আপনার ক্যারিয়ারেই আঘাত হানবে আর আপনাকে শাস্তিও দেওয়া যাবে।”
“ব্রিলিয়েন্ট তারা (হাত তালি দিয়ে)। তবে তুমি কি এটা জানো যে তোমার এই চিন্তাটা আমার মাথায় আরো আগেই এসেছিল ইভেন ছিল বললেই চলে।”
“মানে!”
“আমি জানতাম ঐ ভিডিও দিয়ে তোমাকে দমাতে পারবো না। তাইতো আমার মাস্টার মাইন্ড প্ল্যানটা করতে হলো।”
“কি বলতে চাইছেন কি আপনি?”
“তোমার ভাই আমার হেফাজতে তারা।”
“রোশান! আপনি কি ভাবছেন আপনি মিথ্যে বললেই আমি আপনাকে বিশ্বাস করবো আর ভয় পেয়ে আমি আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাবো।”
“জানতাম তুমি প্রুভ ছাড়া বিশ্বাস করবেনা তাই একেবারে প্রুভ নিয়েই আসলাম।”
“কীসের প্রুভ?”
“গার্ডস!”
গার্ডস গুলো একটা গাড়ি থেকে চোখ বাধা অবস্থায় তারার ভাই রোশানকে নিয়ে এলো। নিজের ভাইকে এভাবে দেখে তারা কেঁদেই দিল। ভাইটা সবেমাত্র ইন্টারে পড়ছে এই ছোট ছেলেটাকেও প্রভাত নিজের হাতের মহরা বানিয়ে নিল। ভাবতেই তারার বুক ফেটে যাচ্ছে। দৌড়ে রোশানের কাছে যেতে চাইলো তখনিই প্রভাত তারার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো।
“আহ্ তারা এভাবে ছটফট করছো কেন? চিন্তা করোনা ছেড়ে দিব আমার শালাবাবুকে। তার জন্য তোমাকে যে আমায় বিয়ে করতে হবে। যদি আমার কথা মতো সব কিছু না হয় তাহলে তোমার ভাইকে আমি জানে মেরে ফেলবো।”
“ছি। আপনি এতটা নিচে নামবেন আমি ভাবতেও পারিনি আপনাকে আমি কেন কোনো মেয়েই বিয়ে করতে চাইবেনা।”
“তোমার ধারণা যে ভুল। এমন মেয়ে নেই যে প্রভাত চৌধূরীকে রিজেক্ট করবে। আছো তো শুধু তুমিই তাই তুমি আমার কাছে সবার থেকে আলাদা। আমার যে তোমাকেই চাই।”
“পাবনায় গিয়ে ভর্তি হন। আমি আপনাচে বিয়ে করছিনা কথাটা ভাথায় ঢুকিয়ে নিন।”
“নিজের ভাইকে একটুও ভালোবাসোনা তুমি।”
“আমার ভাইকে আমি কতোটা ভালোবাসি সেটা আপনার বলা দরকার নেই।”
“ঠিক আছে। তাহলে প্রমাণ কর যে রোশানের জন্য তুমি সব করতে পারো।”
“হুম সব পারবো।”
“তাহলে আর কি চলো বিয়েটা করে নেই নাহলে এক কাজ করো তুমি অপেক্ষা কর আমি কাজী সাহেবকে এখানে ডেকেই বিয়েটা করে ফেলি।”
“আমি করবো না বিয়ে আর কতবার বলবো?”
“গার্ডস (হাতের ইশারায় কিছু বলল)”
গার্ডস গুলো রিভোল্বার বের করে রোশানের মাথায় তাক করে রোশান বেচারা কেঁদেই দেয়। সে জানে না এসব কারা বা কে করছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে হঠাৎ করেই কেউ এসে তার মুখে একটা স্প্রে করে আর ও জ্ঞান হারায়। তারপর জ্ঞান ফেরার পর নিজের হাত চোখ বাধা অবস্থায় থাকে তা দেখে বেচারা বুঝেই যায় তার সাথে কোনো ভয়াবহ কিছু হতে চলেছে। সে এদের কাউকেই দেখেনি তবে এখন সে তার আপুর গলা শুনতে পাচ্ছে তারমানে সে এখন ওর ভরসা। তাই এখন ওর মাথায় রিভোল্বার তাক করাতেই আপু আপু করে কেদে উঠল। ভাইয়ের আর্তনাদে যে তারার বুক ফেটে যাচ্ছে তার জন্য আজ ভাইটার এই অবস্থা। প্রভাতকে তারা অনেক আকুতি মিনতি করছে কিন্তু ডেভিল প্রভাতটা তার কোনো কথায় শুনছেনা। গার্ড যেই ট্রিগারে চাপ দিবে তার আগেই তারা বলে উঠে
“করবো আপনাকে বিয়ে করবো আমি। দয়া করে আমার ভাইকে ছেড়ে দিন আমার জানের চেয়েও প্রিয় ভাইকে এভাবে আমার চোখের সামনে মারবেন না। আমি ওর জন্য আজ না হয় সবচেয়ে বড় ত্যাগটা করলাম।”
“দ্যাটস লাইক এ গুড গার্ল। গার্ডস লিভ হিম। রোশানকে নিয়ে যাও আর বাড়িতে পৌঁছে দাও। আর দেখ আমার শালার যেন কোনো ক্ষতি না হয়।”
তারা আর প্রভাতের বিয়েটা হয়ে গেল। জঙ্গলে নয় কমিউনিটি সেন্টারেই হয়েছে আর রোশানও উপস্থিত ছিল। সবাইকে সব কিছু খুলে বললে সবাই বলে বেশি ঘুমানোর কারণে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কারণ ওর মা যখন ওকে ডাকতে যায় তখন ওকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেয়েছে। রোশানের পুরোটা স্বপ্ন মনে হয়নি কোথাও একটা সমস্যা তো আছেই তার জন্য তারা আপুকেই জিজ্ঞেস করবে ভেবে বসে আছে রোশান।
তারা প্রভাতের সাথে গাড়িতে বসে আছে ওর প্রভাতের দিকে তাঁকাতেও ঘৃণা হচ্ছে। আজ যদি রোশান না থাকতো ঐখানে তাহলে তারা যে করেই হোক এই বিয়েটা আটকাতে পারতো। এখন কিছু করার নেই। সত্যিই কি কিছু করার নেই!
চলবে।