ভালোবাসার অন্যরুপ

ভালোবাসার অন্যরুপ ! Part- 21

অর্নিল– আপনি এখানে??
অর্নিলের মুখে ” আপনি ” শুনে ইসমি বেশ অবাক ও ক্ষুব্ধ হলো কিন্তু কিছু বললো না, তীক্ষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে অর্নিলের ডান হাত টা নিজের কোলে নিয়ে আসলো। ইসমি যেই ব্যান্ডেজ করতে যাবে তখনই অর্নিল হাত সরিয়ে নিলো। বসা থেকে উঠতে নিলেই জানো ইসমির মাথা টা গরম হয়ে গেলো। ইসমি অর্নিলের কলার ধরে টান মেরে বসিয়ে দিয়ে অর্নিলের কোলে বসে পরলো আর দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
ইসমি– একবার যদি ওঠার চেষ্টা করেছো তো এই ফার্স্ট এইড বক্সে থাকা কাঁচিটা দিয়ে তোমার চোখ দুটো একদম গেলে দেবো। আর এই কাঁটা হাতে (জায়গা টা জোরে চেপে ধরলো)
অর্নিল– আহ!!
ইসমি– মরিচ গুঁড়ো দিয়ে দেবো। জানে মেরে দেবো যদি আর একটা আওয়াজ বের হয় মুখ দিয়ে।
ইসমির এসব কথা শুনে অর্নিল বড়ো সরো একটা ঢোঁক গিললো। ইসমির সেটা দেখে হাসি পেলেও ইসমি হাসলো না, ফার্স্ট এইড বক্স টা নিতে গেলেই ইসমি পরে যেতে নেয় আর অর্নিল বাম হাত দিয়ে ইসমির কোমর জড়িয়ে ধরে। ইসমি হাল্কার উপর বসে ছিলো আর অর্নিল ওকে ধরে না রাখায় ব্যালেন্স হারিয়ে পরে যাচ্ছিল। অর্নিল ইসমির কোমর শক্ত করে জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নেয়। ইসমি সাপোর্ট পেয়ে কোলের উপর ফার্স্ট এইডস বক্স টা রেখে অর্নিলের হাত টা ব্যান্ডেজ করতে থাকে। ব্যাদেজ করতে গিয়ে দেখে, দুটো জায়গায় কাঁটা, একটা হাতের রেখা বরাবর লম্বা-লম্বি অর্থাৎ দরজার ধারালো অংশ জোরে চেপে ধরায় এমন টা হয়েছে, আরেকটা অর্নিলের আঙুলে যেটা দেখে মনে হচ্ছে ধারালো ছুরিতে কেটে গিয়েছে।
ইসমি– ছুরিতে হাত কাটলো কি করে??
অর্নিল– আব, আব, আব ঐ ফল কাটতে গিয়ে।
ইসমি– (হাতে ব্যান্ডেজ করে অর্নিলের মুখের দিকে এগিয়ে গিয়ে) কার মার্ডার করে এসেছো তুমি?? (সন্দেহজনক দৃষ্টিতে)
অর্নিল– ম..ম..মা..মার্ডার!! কি বলছো এসব?? (ভয়ার্ত কণ্ঠে)
ইসমি অর্নিলের এমন ভয়ার্ত কন্ঠ শুনে না হেসে পারলো না, খিলখিলিয়ে হাসতে শুরু করলো। ইসমির হাসি দেখে অর্নিল একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো তারপর ইসমির হাসির দিকে তাকিয়ে রইলো। ইসমি হাসতে হাসতে অর্নিলের দিকে তাকিয়ে বললো।
ইসমি– কি দেখছো??
অর্নিল– আমার কোলে বসে একটা গাব গাছের পেত্নির হাসি দেখছি এবং শুনছি। (হাসি চেপে রেখে)
ইসমি– কিইইইইইইইইইইইই!! (চিৎকার কিরে অর্নিলের গলা টিপে ধরলো)
অর্নিল– আরেহ বাবা কানের সাথে সাথে কি আমার জীবনটাও নেবে?? ছেড়ে দাও পেত্নি থুক্কু মা আমার।
ইসমি– হুহহহহ!! (ছেড়ে দিলো) ফইন্নী জানি কোনহানকার। তুমি, তুমি একটা টিকটিকির নাতি, কুমিরের চাচা, বিলাই, ভোদর, নাইজেরিয়ান এনাকোন্ডা, রাম ছাগল, বজ্জাত, বেয়াদোপ বেশরম লুচ…
ইসমির কথা শেষ হওয়ার আগেই অর্নিল ইসমির নীচের ঠোঁট টা কামড়ে ধরলো, কিছুক্ষণ শুষে নিয়ে আবার একটা কামড় দিয়ে ছেড়ে দিলো। ইসমি বেকুবের মতো চোখ বন্ধ করে বসে ভাবছে কি হলো ওর সাথে। আস্তে আস্তে চোখ খুলতেই অর্নিল ওকে একটা চোখ টিপ দিলো আর ও লাফ মেরে অর্নিলের কোল থেকে উঠে গেলো। ইসমি লজ্জায় লাল নীল হলুদ সবুজ বলতে গেলে রামধনু হয়ে যাচ্ছে। তাই তারাতাড়ি রুম থেকে বেরোতে নিলেই অর্নিল বলে ওঠে।
অর্নিল– আর কতো অবহেলা করবে ইসমি?? আর কতো এড়িয়ে যাবে আমাকে?? আমি জানি তুমি আমায় ভালোবাসো আর আমিও তোমাকে ভালোবাসি। সত্যি ভালোবাসি। ভুল হয়ে গেছিলো আমার, একটা বার সুযোগ দাও আমি সুধরে নিতে চাই। আমি আর পারছি না তোমার অবহেলা সহ্য করতে। হেরে যাচ্ছি নিজের কাছে। (ছলছল চোখে)
ইসমি– ভুল করলে সেটা শোধরানোর জন্য অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। যতক্ষণ না সেটা শোধরানো যাচ্ছে ততক্ষণ হার মানতে নেই। আর শোধরানোর সুযোগ যতক্ষণ পাওয়া যায় ততক্ষণ চেষ্টা করে যেতে হয়, সবুরের ফল মিঠা হয়।
ইসমি আর কিছু না বলে বেরিয়ে গেলো, এদিকে অর্নিলের মুখে প্রশান্তির হাসি। ইসমির মন গলছে একটু একটু করে, ব্যাস আর কি চাই।
আমি কফি নিয়ে যাচ্ছিলাম আমাদের রুমে, তখন অর্নিলের রূমের পাশ দিয়ে ক্রস করতেই অর্নিলের বলা কথাগুলো শুনতে পাই, এরপর সুমির কথাগুলো ও শুনতে পাই। সুমি যখন বেড়াবে তখন আমি সরে যাই, আর আমিও আমাদের রুমে চলে আসি। আমার মনে হয় সুমির মন গলছে, আর এই সময়েই অর্নিল কে আরো বেশি করে চেষ্টা করতে হবে। যাক আমান যেই সুযোগ টা করে দিয়েছে সেটাকে কাজে লাগাতে পারলে ভালোই হবে। ভাবছি আমিও আমান কে আজকে নীলাদ্রির ব্যাপার টা বলে দেবো। সেটাই ঠিক হবে। এসব ভাবতে ভাবতেই আমি রুমে এসে দরজা লক করে দিলাম। কিন্তু রুমে আমান কে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না, কোথায় গেলেন উনি??
ওনাকে খুঁজতে খুঁজতে ব্যালকনি তে চলে গেলাম, গিয়ে দেখলাম উনি একমনে কিছু একটা ভাবছে, ওনার কাঁধে হাত রাখতেই উনি এক হাতে আমার কোমর জড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলেন। আমরা দুজনেই কোনো কথা বলছি না, আমান কে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওনার মন ভালো নেই। তাই আমিই নীরবতা ভেঙে বললাম।
মীরা– কি হয়েছে আপনার??
আমান– কিছু না। মাঝে মধ্যে মনে হয় এই দুনিয়ায় আমার আপন কেউ নেই। সব মায়া ছেড়ে সারাজীবনের মতো চলে যাই এমন কোথাও যেখান থেকে ফিরে আসা যায় না। অন্ধকারে চিল্লিয়ে কাঁদতে মন চায়, নিজেকে একটা সময় শেষ করে দিতে ইচ্ছে করে। চেষ্টা করিনি এমনটা নয়, কিন্তু আম্মুর কথা মনে হতেই আবার সার্ভাইভ করেছি। তাই তো আম্মুর মুখ দেখে যত যাই হোক নিজেকে শেষ করার কথা মাথায় আসে না। জানো মীরা! জীবনে একটা জিনিসেই আমান খান অসফল হয়েছে। সেটা হলো “ভালোবাসা।” ভালোবাসা জিনিসটা মনে হয় আমার ভাগ্যে নেই। হাহ!(তাচ্ছিল্য হেসে)
উনি আকাশের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলে চলে গেলেন রুমে আর আমি মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে আছি। চোখ দিয়ে নিজের অজান্তেই পানি পরছে। আজ বুঝলাম মানুষটা বড্ড ভালোবাসার কাঙাল। জানি না কি করবো, কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। চোখের পানি মুছে নিলাম, রুমে যাবো ঠিক সে সময় উনি এসে আমায় কোলে তুলে নিলেন, ঠোঁটে বাঁকা হাসি। উফফ এই লোকটাকে কি আমি কখনো বুঝতে পারবো না??
.
.
.
.
আমান– অর্নিল! ইসমি! হোয়ার আর ইউ গাইস??
আমি আর আমান গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে সুমি আর অর্নিলের অপেক্ষা করছি।
মীরা– সুমি আসছে।
আমান– আর অর্নিল??
মীরা– আপনার ভাই আপনি জানেন, আমি কি করে জানবো?? (ঝাড়ি দিয়ে)
আমান– (মনে মনে– যাহ বাবা! হঠাৎ আমার ঠান্ডা কলিজা চটে গরম হয়ে গেলো কেনো?? আমি কি কিছু করেছি?? কিন্তু কি??)
মীরা– এই শুনুন! আপনাকে এতো সাজুগুঁজু করতে কে বলেছে হ্যাঁ?? আপনাকে কি পাত্রীপক্ষ দেখতে আসছে নাকি যে আপনি এমন মেক আপ ড্রেস আপ করেছেন?? শুনুন ভুলেও যদি কাজের ওখানে গিয়ে অন্য মেয়েদের দিকে কুনজর দিয়েছেন তো আমি আপনার (আমানের কলার ধরে) চোখ দুটো উপরে ফেলবো আর সেটা কুকুর কে খাইয়ে দেবো। (কলার ছেড়ে অন্য দিকে ফিরে ফোঁস ফোঁস করছি)
আমান– ম..মী..মীরু বেবস!
মীরা– কিইইইই!!
আমান– ম..মে..মেয়েদের দিকে আমি তাকাই না মেয়েরা আমাদের দিকে তাকায়।
মীরা– আপনি মেয়েদের দিকে না তাকালে জানলেন কি করে মেয়েরা আপনার দিকে তাকায়??
আমান– (থতমত খেয়ে) হ..হ্যাঁ মানে ন..না মানে….(আমতা আমতা করে)
মীরা– আমি যদি এমনটা দেখেছি তাহলে আপনি আর আপনাকে যেই মেয়ে দেখবে তাকে, দুজনকেই অন্ধ বানিয়ে দেবো। (জোরে একটা শ্বাস ছেড়ে অন্য দিকে ফিরে গেলাম)
আমান– (মনে মনে– এ দেখছি আমার থেকেও দশ কাঠি ওপরে যায়। চ..চো..চোখ তুলে ক..কু..কুকুর কে খাইয়ে দেবে। ঈঈঈঈঈ বাপ রে কি ডেঞ্জারাস!! আরেহ আমান! তুই তোর বউ কে ভয় পাচ্ছিস?? ভুলে যাস না ইউ আর দ্য গ্রেট আমান খান, দ্য ওয়ান অ্যান্ড অনলি।) (ভাব নিয়ে)
মীরা– আর আমি আপনারই ওয়ান অ্যান্ড অনলি ওয়াইফ মিসেস মীরা খান। আপনার থেকে দশ কাঠি ওপরেই যাবো। বুঝলেন?? (দাঁতে দাঁত চেপে)
আমান– ত..তুমি কি ক..করে বুঝলে??
মীরা– আপনার শুধু শুধু ভাব নেওয়া দেখে।
আমান একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। আজকে সত্যি আমান কে খুব সুন্দর লাগছে, সব সময়কার মতো ব্ল্যাক জিন্স, ওয়াইট টি শার্ট তার উপর ব্ল্যাক লেদারের জ্যাকেট যদিও জ্যাকেট খুলে হাতে নিয়ে রেখেছে, চুল গুলো কপালে পরে আছে সব সময়ের মতো। পায়ে ওয়াইট স্নিকার্স। আর যাই হোক ওনার পাশে আমাকে মানায় না। আমান হুট করে আমাকে গাড়ির সাথে চেপে ধরলো, আমি তো অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি, এই তো বেশ ঠিক ছিলেন হঠাৎ এতো রেগে গেলেন কেনো??
আমান– কে এতো সাজতে বলেছে তোমাকে?? আমি বলেছিলাম?? অ্যান্সার মি ড্যাম ইট?? কাকে দেখানোর জন্য এতো সেজেছো হ্যাঁ??
মীরা– আ..আমি তো..
আমান– শাট আপ!! গাড়িতে বসো।
মীরা– ওরা তো আসেনি।
আমান– আই সেইড গাড়িতে বসো। (ধমকে)
আমি আর কিছু না বলে বসে পরলাম, গাড়িতে বসতেই দেখলাম কয়েকজন ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমান সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে বসে গাড়ির কাঁচ তুলে দিলো। ব্ল্যাক গ্লাস হওয়ায় বাইরে থেকে কিছু দেখা যাবে না। আমি মনে মনে সামান্য হাসলাম। আজকে আমি ওনার সাথে ম্যাচিং করে ব্ল্যাক শাড়ি পরেছি। উনিই বললো পরতে এরপর সামান্য একটু মেক আপ করেছি তাতেই ঝাড়ি আর ধমক খেলাম ধুর ভালো লাগে না।
বেশ অনেক্ষন পর আমরা বাগানবাড়ি তে পৌঁছালাম। গাড়ি থেকে নামতেই দেখলাম খুব সুন্দর একটা জায়গা। বাড়িটা বেশ পুরানো, অনেক বছর আগের মনে হচ্ছে, বিকেল হয়ে যাওয়ায় একটু গা ছম ছম ভাব। তার মধ্যে আবার আকাশ মেঘলা করেছে। আমাদের গাড়ি আসার পাঁচ মিনিট পরেই অর্নিলের গাড়ি এসে থামলো, সুমি অর্নিলের সাথেই এসেছে।
আমান– চলো সবাই।
আমানের বলতেই আমরা সবাই বাড়িটার ভিতরে গেলাম, বাড়িটা ঘুরে দেখতে দেখতেই সন্ধ্যে হয়ে গেলো, আমান খুব সাবধানে আমায় বাড়িটা ঘুরে দেখাচ্ছে কারণ একটাই সেটা হলো বাড়িটা ভীষণ পুরানো। ওদিকে সুমি ও অর্নিলের সাথে আছে, আমানই অবশ্য ইচ্ছে করে ওদেরকে একসাথে রাখার জন্য এমন টা করেছে। হঠাৎ করেই ভয়ংকর শব্দ করে একটা বাজ পরলো আর আমি চিৎকার দিয়ে আমান কে জড়িয়ে ধরলাম।
আমান– মীরু কাম ডাউন! আমি আছি তো? চলো রুমে চলো।
আমি কিছু না বলে আমান কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। আমান আর কিছু না বলে আমায় কলে তুলে নিলো বরাবর আমি বাজ পরাটা ভীষণ ভয় পাই। সুমি ভয় পায় না তাই ওর সাথেই থাকি সেই সময় টা। রুমে আসতেই দেখলাম বেশ বড়ো একটা রুম। আমরা আসার কিছুক্ষণ পরেই অর্নিল আর সুমি এলো, সুমি এসেই জানলার সামনে থাকা বসার জায়গাটায় বসে পরলো। এদিকে অর্নিল ও সোফায় বসে পরলো আর আমান বেডে হেলান দিয়ে বসলো, আমিও একটা সোফায় বসে পরলাম। বাজ পরা বন্ধ হয়ে ঝড়ো হাওয়া বইছে তাই ভয়টাও লাগছে না।হঠাৎ করেই অর্নিল বললো।
অর্নিল– ভাই! একটা গান গাও না প্লিজ! অনেকদিন শুনিনি তোমার গান।
আমান– নো ওয়ে নীল। আমি পারবো না, অনেকদিন প্রাক্টিস করা হয় না।
অর্নিল– ভাই প্লিজ! আই নৌ ইউ আর আ গুড সিঙ্গার। তুমি পারবে। প্লিজ গাও।
মীরা– এতো করে যখন বলছে তখন গাও না।
ইসমি– ইয়াহ জিজু তুমি গাও দেন মীরা ও গাইবে।

মীরা– আমিইইইই!!
আমান– ওয়েট ওয়েট ওয়েট। আমরা সবাই এক এক করে গাইব। (ইসমি কিছু বলতে গেলে বাঁধা দিয়ে) ইটস মাই কন্ডিশন। রাজি থাকলে গাইতে পারি।
আমরা সবাই সম্মতি দিলাম আর অর্নিল গিটার বাজাতে শুরু করলো যেটা ও নিয়ে এসেছে সঙ্গে করে।
আমান– 🎶🎶🎶🎶🎶🎶
🎶ইতনি মোহাব্বত কারোনা🎶
🎶মেয়ন্ ডুব না যাও কাহি🎶
🎶ওয়াপাস কিনারে পে আনা🎶
🎶মেয়ন্ ভুলে না যাও কাহি🎶
🎶দেখা জাব সে চেহরা তেরা🎶
🎶মেতো হাপ্তো সে শোয়া নাহি🎶
🎶বোল দো না যারা🎶
🎶দিল মে হে যো ছিপা🎶
🎶মেয়ন্ কিসি সে কাহুঙ্গা নেহি🎶
🎶মুঝে নিন্দ আতি নেহি হে আকেলে🎶
🎶খাবো মে আয়া কারো🎶
🎶নেহি চল সাকুঙ্গা তোমারে বিনা মে🎶
🎶মেরা তুম সাহারা বানো🎶
🎶ইক তুমহে চাহনে কে আলাভা🎶
🎶অর কুছ হামসে হোগা নেহি🎶
🎶বোল দো না যারা🎶
🎶দিল মে হে যো ছিপা🎶
🎶মেয়ন্ কিসি সে কাহুঙ্গা নাহি🎶
🎶হামারি কামি তুমকো মেহসুস হোগি🎶
🎶ভিগা দেংগি জাব বারিসে🎶
🎶মেয়ন্ ভার করকে লায়া হু🎶
🎶ভাহান আঁখন মেইন আপনি🎶
🎶আধুরি সি কুছ খাইয়েসন🎶
🎶#রূহ_সে_চাহনে_ওয়ালে_আশিক🎶
🎶#বাতেন_জিস্মো_কে_করতে_নেহি🎶
🎶বোল দো না যারা🎶
🎶দিল মে হে যো ছিপা🎶
🎶মেয়ন্ কিসি সে কাহুঙ্গা নেহি🎶 ×২
মীরা– (মনে মনে– আমানের গানে ওনার মনের কথা প্রকাশ পাচ্ছে। তার মানে উনি বুঝতে পেরেছেন আমি ওনার থেকে কিছু লুকাচ্ছি??)
আমানের গান শেষ হওয়ার পরেই সুমি গান ধরলো বাইরের দিকে তাকিয়ে।
ইসমি– 🎶🎶🎶🎶🎶🎶
🎶লো মান লিয়া হামনে🎶
🎶হ্যা প্যায়ার নাহি তুমকো🎶
🎶তুম ইয়াদ নাহি হামকো🎶
🎶হাম ইয়াদ নাহি তুমকো🎶
🎶বাস এক দাফা মুরকে দেখো🎶
🎶অ্যা ইয়ার জারা হামকো🎶
🎶লো মান লিয়া হামনে🎶
🎶হ্যা প্যায়ার নাহি তুমকো🎶
🎶তুম ইয়াদ নাহি হামকো🎶
🎶হাম ইয়াদ নাহি তুমকো🎶
ইসমির গান শেষ হতেই সবাই কিছুক্ষণ নীরব রইলাম, আমি আমান আর অর্নিল তিনজনেই ইসমির গানের মর্ম টা বুঝতে পেরেছি। নীরবতা ভাঙলো গিটারের সুরে, দেখলাম অর্নিল সুর তুলেছে।
অর্নিল– 🎶🎶🎶🎶🎶🎶
🎶পালপাল মেরা তেরে হি সাঙ্গ বিতানা হেইন🎶 🎶আপনি ওয়াফাওন সে তুঝে সাজানা হে🎶
🎶দিল চাহতা হ্যায় তুঝে কিতনা বাতানা হে🎶
🎶হা তেরে সাথ হি মেরা ঠিকানা হ্যাঁ🎶
🎶আব থাক চুকে হ্যাঁ ইয়ে কদম🎶
🎶চাল ঘার চালেন মেরে হামদাম🎶
🎶হোঙ্গে জুদা না জাব তাক হে দাম🎶
🎶চাল ঘাড় চালেন মেরে হামদাম🎶
🎶তান উমার প্যায়ার আ হোগা কাম🎶
🎶চাল ঘাড় চালে মেরে হামদাম🎶
🎶মেরে রাহোন তুম ঔর তেরে হাম🎶
🎶চাল ঘাড় চালেন মেরে হামদাম🎶

সবাই আজ গানের মাধম্যে নিজের মনের কথা প্রকাশ করছে, এখন শুধু আমি বাকি রইছি, আমি কি পারবো নিজের মনের কথা গানের মাধম্যে আমান কে বোঝাতে?? চেষ্টা করেই দেখি।
মীরা– 🎶🎶🎶🎶🎶🎶
🎶হয়তো কোনদিন ভুলে যাবে তুমি🎶
🎶ভুলতে কি পারবো তোমায়🎶
🎶তাই তো এসেছি আজকে তোমাকে🎶
🎶নীরবে জানাতে বিদায়🎶
🎶এমনি করে চলে জীবনে মরনে🎶
🎶যাওয়া আসা🎶
🎶ও.. তোমারই চলার পথে🎶
🎶দিয়ে যেতে চাই আমি🎶
🎶একটু আমার ভালোবাসা🎶
🎶তাই নিয়ে তুমি আমায় করো ঋণী🎶
🎶এটুকু আশা 🎶
🎶ও.. তোমারি চলার পথে🎶
🎶দিয়ে যেতে চাই আমি🎶
🎶একটু আমার ভালোবাসা🎶
গান গাইতে গাইতে কখন জানলার কাছে চলে এসেছি খেয়াল নেই। পিছনে ঘুরতে যাবো সে সময়ই পিছন থেকে আমায় আমান শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আমি কি পেরেছি আমার মনের কথা বোঝাতে আমান কে??
আমান– আমি জানতাম মীরু তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমার সাথেই থাকতে চাও। আমার কাছে এটাই অনেক। আমি নিজের প্রাণ দিয়ে হলেও তোমাকে আগলে রাখবো, যেতে দেবো না কোথাও, কোথাও না। তুমি শুধু আমার।
মীরা– আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই আমান (ওনার দিকে ফিরে)
আমান– আজ আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না শুধু তোমার সাথে এই মুহুর্ত টা উপভোগ করতে চাই। আই লাভ ইউ মাই লাভ।
আমি আর কিছু বলতে যাবো তার আগেই উনি আমার ঠোঁট নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলেন। ওনাকে সরিয়ে দেওয়ার মতো ক্ষমতা আমার নেই তাই আমিও এই মুহূর্তটা উপভোগ করতে লাগলাম ওনার সাথে তালে তাল মিলিয়ে।

ইসমি মীরার গান শেষ হতে না হতেই রুম থেকে চলে আসে, আর ইসমি কে বের হতে দেখে অর্নিল ও বেরিয়ে গেলো। ইসমি নিজের মনে লবি দিয়ে হেঁটে চলেছে কোনো খেয়াল নেই ওর। এদিকে অর্নিল ইসমি কে দেখতেই দেখলো ইসমি আনমনে হেঁটে যাচ্ছে আর ওর সামনে খাঁড়া সিঁড়ি। পা হরকালেই নীচে পরে যাবে আর শেষ।
ইসমি– (মনে মনে– মীরা কি পারে না সবটা বলে দিতে জিজু কে?? এখন তো নীতাও নেই, ফুপি জানতে পারবে না। আর জানলেও বা কি?? বলুক না ও ঐ নীলাদ্রি কে। কিচ্ছু করতে পারবে না জিজুর নীলাদ্রি আমি জানি। কিন্তু মীরা তো টেনশন করে জিজু কে নিয়ে, সত্যি তো জিজুর যদি কিছু হয়ে যায়?? নাহ! মীরা কে একটা রিস্ক নিতেই হবে, আমি বোঝাবো ওকে।)
ইসমি এসব ভাবতে ভাবতেই এগাচ্ছিল তখন কেউ একজন ঝড়ের বেগে ইসমি কে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। ইসমি তার বুকের সাথে মিশে রয়েছে। মানুষটার হৃদ-স্পন্দন জানো ঘোড়ার ন্যায় ছুটছে। ইসমি মাথাটা হাল্কা ওঠাতেই দেখলো।
ইসমি– অর্নিল!