ভালোবাসার অন্যরুপ

ভালোবাসার অন্যরুপ ! Part- 10

আমি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে একবার চা আমাদের রুমের চারিদিকে চোখ বুলিয়ে নিলাম কিন্তু কোথাও আমানকে দেখতে পেলাম না একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলাম। ঘরে এসে চেঞ্জ করে নিলাম। কেন যেন মনটা ভালো লাগছে না, খুব অস্থির লাগছে, কোন কিছু কি খারাপ হতে চলেছে? আর কি বা খারাপ হবে? যা খারাপ হবার তা তো হয়েই গেছে আমার সাথে। আমাকে যে করেই হোক নি তার আসল রূপটা আমানের সামনে নিয়ে আসতে হবে। নীতা কে কি করে শায়েস্তা করা যায় কিভাবে ওর আসল রূপটা আমানের সামনে নিয়ে আসা যায় এসব ভাবতে ভাবতেই সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছিলাম ঠিক তখনই দেখলাম অর্নিল শিস বাজিয়ে হাতের আঙ্গুলে চাবির রিং ঘোরাতে ঘোরাতে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠবে আমি অর্নিল কে দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম কেমন যেন খটকা লাগল, ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছিলাম এত খুশির কারনটা কি ঠিক সেই সময় হঠাৎই আমার মুখের সামনে তুড়ি বাজালো আর বলল।
অর্নিল– এত কি ভাবছো ভাবি? তোমার মুখে এমন চিন্তার ছাঁপ কেন? আমিতো এখনও কিছু শুরুই করলাম না এখনই চিন্তা করছ? ( বাঁকা হেসে সিঁড়ি দিয়ে উপরে চলে গেল)
মীরা– কি বলে গেল অর্নিল? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা। ওর কি কোনো মতলব আছে? আমি খুব ভালোভাবেই জানি ও আমাকে এক মাস আগের ঘটনার জন্য এখনো ক্ষমা করতে পারেনি, তাই জন্য তো কোনদিন ভাবি বলতো না। আজ হঠাৎ ভাবি বলল যে? হায় আল্লাহ! কি যে হতে চলেছে কিছুই বুঝতে পারছিনা।
আম্মু– কি রে মীরা, কি এত বিড়বিড় করছিস আপন-মনে এখানে একা দাঁড়িয়ে, আমাকেও বল আমিও শুনি।
মীরা– না আম্মু কিছু না। তোমার শরীর কেমন আছে?
আম্মু– দেখ মীরা! একদম কথা ঘুরানোর চেষ্টা করবি না। কিছুতো একটা লুকোচ্ছিস তুই আমার থেকে আর এত ভয় পাচ্ছিস কেন তুই?
মীরা– ক..কো..কোথায় ভয় পাচ্ছি? উফ আম্মু তুমি না শুধু শুধু চিন্তা করছো আমার জন্য। আমার কিছু হয়নি, আমি কোন ভয় পাচ্ছি না।
আম্মু– সত্যি তো?
মীরা– হ্যাঁ হ্যাঁ সত্যি।
আমান– আম্মু আমি আসছি।
আম্ম– এই দুপুরবেলা তুই কোথায় যাচ্ছিস আমান?
আমান– ঘরে মন টিকছে না আম্মু। তাই একটু বাইরে যাচ্ছি। (আমার দিকে তাকিয়ে বললেন)
মীরা– (মনে মনে– হ্যাঁ তা কেন মন টিকবে ঘরে মন তো এখন টিকবেনা নীতা কে ঘরে ঢুকতে দিচ্ছি না না, তাই জন্য। দাঁড়াও ব্যাটা তোমার বাইরে যাওয়া আমি বার করছি, আজ সারাক্ষণ ঘরে থাকতে হবে। ধমক খেলেও আজকে আমি আপনার উপর জোর খাটাবোই খাটাবো। কিছুতেই বাইরে যেতে দেব না, কে জানে বাইরে গিয়ে ঐ নীতা শাকচুন্নির সাথে প্রেম আলাপ করতে বসে যাবেন। না না না!! আমি এটা কিছুতেই হতে দেবো না! আমার বর হয়ে ঐ নীতা শাকচুন্নির সাথে প্রেমালাপ বার করছি আমি।) আপনি কোথাও যাবেন না আমার সাথে ঘরে চলুন কথা আছে আমার।
কথাটা বলে উনাকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আমি ওনার হাত ধরে টানতে টানতে ঘরে নিয়ে চলে এলাম ঘরে নিয়ে এসে রুমের দরজা লক করে উনার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম, সেই দেখে উনি বললেন।
আমান– হোয়াট? এভাবে আমাকে ঘরে নিয়ে এলে কেন? কি বলবে তারাতাড়ি বলো, আমি বাইরে যাব।
মীরা– আজকে আপনার বাইরে যাওয়া হবে না।
আমান– হোয়াট? বাট হোয়াই? আমার যখন ইচ্ছে আমি তখন বাইরে যাব তুমি বলার কে?
মীরা– আমি বলার কে মানে? আমি আপনার বউ লিগাল ওয়াইফ আমি আপনার।
আমান– তুমি এটা মানো? আমিতো ভাবলাম তুমি মানো না তুমি আমার স্ত্রী। আই মিন আমার বিয়ে করা বউ।
মীরা– এই শুনুন আপনি একদম বাজে কথা বলবেন না। আমি সব জানি আপনি কেন বাইরে বের হতে চাইছেন।
আমান– (অবাক হয়ে) কেন বাইরে বেরোতে চাইছি আমি?
মীরা– কেন আবার? ওই যে নীতা কে আই মিন আপনার উড বি ওয়াইফকে আমি ঘরে ঢুকতে বারণ করে দিয়েছি তাই এখন পার্কে গিয়ে প্রেম আলাপ করতে বসবেন। শুনুন! সেটা হবে না (ধমক দিয়ে)
আমান– পার্কে বসে প্রেম আলাপ করার মত চিপ কাজ শুধুমাত্র তুমি আর তোমার তূর্য করতে পারো। আমি, মিস্টার আমান খান সেটা কোনদিন করবো না।
মীরা– আমি মোটেও পার্কে বসে প্রেম করিনি। আমি তো…(থেমে গেলাম)
আমান– তুমি তো কি? থেমে গেলে কেন বলো। প্রেম আলাপ করো না তো কি করো? (সন্দেহজনকভাবে)
মীরা– পার্কে বসে কি শুধু প্রেম আলাপ করা যায় নাকি? আমরা এমনি কথা বলি আর কিছুই না। (নিজেকে সামলে)
আমান– আমাকে যেতে দাও, আমি বেরোবো। (বিরক্ত হয়ে)
মীরা– আমি তো বললাম আপনি বাইরে যাবেন না। যাবেন না মানে যাবেন না ব্যাস।
আমান– হঠাৎ আজকে আমার উপর জোর খাটানো হচ্ছে কি ব্যাপার? তুমি যদি এসব করে ভাবো যে আমি তোমাকে ছয় মাস পর ডিভোর্স দেব না, তাহলে ভুল ভাবছো। অনেক দেরী করে ফেলেছো মীরা।
মীরা– (মনে মনে– সত্যি কি আমি অনেক দেরি করে ফেলেছি আমান? না আমি কোন দেরি করিনি। আসলে আমার ভাগ্যটাই আমার সাথে নেই। আমি যেদিন বুঝতে পেরেছি আমি আপনাকে ভালোবাসি, সেদিন থেকেই নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখছি, যাতে আপনার কোনো বিপদ না হয়, আপনি জানেন না নীলাদ্রি কতটা ভয়ানক! ও..ও আমার সামনে একটা ছেলেকে কি নির্মমভাবে মেরে ফেললো, ওই দৃশ্যের কথা মনে পড়লে এখনো আমার গায়ে আজ ও কাঁটা দেয়। আমি..আমি চাইনা আপনার কোন ক্ষতি হোক। ভীষণ ভালোবাসি আপনাকে। আব্বু আম্মুর পর ইসমি ছাড়া আমার কেউ ছিল না। হঠাৎই একদিন আপনি এলেন। আপনি জানেন আপনি যখন এক মাস আগে আমার সাথে ভালভাবে কথা বলতেন, আমার উপর মেকি রাগ দেখাতেন, সেগুলো আমার কত ভালো লাগতো কিন্তু আপনি যখন আমায় জোর করলেন, জোর করে বিয়ে করলেন সেটাই আমার আর আপনার কাল হয়ে দাঁড়ালো।) ঠিক আছে আপনি যান, আমি আটকাবো না। (চোখের পানি ফেলে)
আমান– (মনে মনে– কেন মীরা কেন? কেন তুমি সত্যিটা বলছো না আমাকে? কেন বারবার আমার মনে হচ্ছে যে তোমার আর তূর্যের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই, আর তুমি সেটা বলতে গিয়েও থেমে যাচ্ছো। কি এমন কারণ আছে? কি এমন বাধা আছে? যা তোমার আর আমার মধ্যে এসে দাঁড়াচ্ছে? প্লিজ মীরা সময় থাকতে থাকতে সব টা বল না হলে সারা জীবনের মতো হারাতে হবে তোমায় আমাকে।)
আমি পাশে আড় চোখ দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম, আমান বাইরে না গিয়ে নিজের ল্যাপটপটা নিয়ে সোফায় বসে পড়ল সেন্টার টেবিলের উপর পা তুলে, ল্যাপটপে কাজ করতে লাগলেন আর রাগী চোখে আমার দিকে তাকাতে লাগলেন। আমি চুপচাপ গিয়ে বেডে হাঁটু ভাজ করে বসে ওনার দিকে চেয়ে রইলাম। আর ভাবতে লাগলাম আমাদের বিয়ের ঘটনা।

#ফ্লাশব্যাক 🌸🌸
আমি আমার কেবিনে বসে ডিজাইন ড্র করছিলাম, ডিজাইন ড্র নামেই করছিলাম, হাতে পেন্সিল টা নিয়ে কাগজে ঘোরাচ্ছিলাম, আসলে মন টা ভালো নেই, কিছুদিন আগেই নীলাদ্রি ফোন করেছিল, আমান স্যারের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছিল। ও জেনে গেছে আমার স্যারের সাথে আমার একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, আমি বুঝতে পারছি না এখন আমি কি বলবো আমান স্যারের সাথে আমার পরিচয় আজ এক মাস মত হল, আর নীলাদ্রিও আমাকে সেটাই বললো ফোনে, যে আমি একমাস ধরে একটা ছেলের সাথে কেন ঘুরছি? যদি ভালো চাই তো সরে আসি। পার্কে বসে আগেরদিন তুর্যকে সেটাই বলছিলাম, তূর্য তো বলল জবটা যাতে ছেড়ে দিই কিন্তু কি করে ছাড়বো? এটা ছাড়লে যে আমি কোন ভার্সিটিতে চান্স পাবো না। আর কন্ট্রাক্ট তো হয়ে গেছে। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না কিন্তু একটা কথা আমার মাথায় আসে না, নীলাদ্রি কোন সময় তুর্যের কথা কেন বলে না? নীলাদ্রি যবে থেকে গেছে তবে থেকেই তূর্যর সাথে আমার বন্ধুত্ব! নীলাদ্রি তো একবারও তুর্যের কথা বলে না। এসব ভাবছিলাম আর তখনই হুড়মুড় করে আমান স্যার আমার কেবিনে ঢুকলো। আমি ভয় পেয়ে লাফিয়ে দাঁড়ালাম, আজ সকাল থেকে উনি কেবিনে আসেননি আমার আর ওনার নিজের কেবিনেও আমি ওনাকে দেখিনি। দেখে তো মনে হচ্ছে খুব রেগে আছেন! চোখগুলো কেমন লাল হয়ে রয়েছে! আমি কি কোন ভুল করলাম?
আমান– মীরা!!
মীরা– হ..হ্যাঁ স্যার বলুন? (ভয়ে ভয়ে)
আমান– ডু ইউ লাভ মি? (আমার কাছে এসে আমার দু বাহু ধরে)
স্যারের এমন প্রশ্ন শুনে আমার মাথায় যেন বাজ ভেঙে পড়ল! এসব কি বলছেন আমান স্যার? তার মানে আমি ঠিক ছিলাম? উনাকে সকলের সামনে অপমান করার পর, থাপ্পর মারার পরেও উনি আমাকে কোম্পানিতে জব করতে বাধ্য করলেন। নীতা আমার নামে এতো বাজে কথা বলার পরেও সেই কথা বিশ্বাস না করে আমাকে জব করার চান্স দিলেন। এর কারন উনি আমাকে ভালোবাসেন? না না না না না এটা কিছুতেই সম্ভব না!! আমি..আমি কাউকে ভালবাসতে পারিনা!! আমি জেনে বুঝে কি করে উনাকে বিপদের মুখে ঠেলে দেবো? আমাকে নীলাদ্রির কথা বলতে হবে, তাহলে হয়তো উনি বুঝবেন। নিজের বিপদের কথা শুনে কেউই আমাকে বিয়ে করতে চাইবে না।
মীরা– স..স্যার এসব আপ..
আমান– জাস্ট সে ইয়েস অর নো ডু ইউ লাভ মি অর নট?
মীরা– (মনে মনে– এক মাসে আপনার ব্যবহার, আমার প্রতি কেয়ার, ভালোবাসা সবকিছুই আমার মনে আপনার জন্য জায়গা তৈরি করে নিয়েছে। আপনি অনেক আগেই আমার মনে জায়গা করে নিয়েছেন স্যার! কিন্তু আমি যে বাধ্য আর তাছাড়া আপনি কত বড়লোক আর আমি তো… না না না আমাকে সত্যিটা এখনই বলতে হবে।) নো। আই..আই ডোন্ট লাভ ইউ।
আমান– তুর্যকে ভালোবাসা তাইতো?
ওনার কথা শুনে আমি কিছু বলতে গেলেই উনি আমাকে না বলতে দিয়ে বলে ওঠেন।
আমান– তাতে আমার কিছু যায় আসে না আমি শুধু জানি তুমি আমার আমি তোমাকে আর কারো হতে দেবো না। তোমাকে বিয়ে তো আমি অনেক আগেই করে নিয়েছি শুধু তোমাকে জানানো বাকি ছিল।
মীরা– স্যার এইসব কি বলছেন? আপনার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? বিয়ে..বিয়ে মানেটা কি? আমি কখন আপনাকে বিয়ে করলাম?
আমান– হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে!! তোমাকে ওই তুর্যের সাথে দেখে আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কোন স্বামী নিজের স্ত্রীকে অন্য কোন পর পুরুষের সাথে দেখতে পছন্দ করে? (আমার দুই বাহু ঝাঁকিয়ে আমাকে কাছে টেনে নিয়ে)
মীরা– স্যার কি করছেন টা কি? ছাড়ুন আমাকে। আমার লাগছে আর কিসের বিয়ের কথা বলছেন? আমি আপনাকে কবে বিয়ে করলাম? আমি আপনাকে ভালোবাসি না, আর না আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই। আমি আমি অন্য একজনকে ভা…
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না তার আগেই তুমি আমার ঠোঁট দুটো বন্ধ করে দিবেন নিজের ঠোঁট দ্বারা আমার চোখ দুটো যেন বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো এই প্রথম কোন পুরুষ আমার এতটা কাছে, সেই পুরুষ আর কেউ নয় আমান স্যার!! যাকে আমি এত ভয় পাই। আমি সমানে উনার বুকে কিল ঘুষি মেরে চলেছি যে তুমি আমাকে ছেড়ে দেন কিন্তু না আমি যত নিজেকে ছাড়াবার চেষ্টা করছি অন্তত আমাকে আঁকড়ে ধরতে এখন বুঝতে পারছি ওর দুটো হাত আমার কোমরে উনি আমার কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে নিলেন আমাকে। বেশ কিছুক্ষণ পর উনি আমাকে হালকা একটা ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলেন আমি নিজের ঠোঁট মুচ্ছি, ঠিক সেই সময় উনি আমার সামনে একটা পেপার ধরলেন আর বললেন।
আমান– এটা আমাদের রেজিস্ট্রি পেপার।
উনার কথা শুনে আমি অবাক এর সপ্তম পর্যায়ে রেজিস্ট্রি পেপার মানে সত্যিই তো রেজিস্ট্রি ব্যাপারটায় আমার সাইন স্পষ্ট কিন্তু আমি কখন রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করলাম এটাই তো বুঝতে পারছি না আমি আমার মনের কথা বুঝে উনি আমাকে হ্যাচকা টান মেরে নিজের সাথে মিশিয়ে আমার গালে আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে বললেন।
আমান– মীরু বেবি তুমি যখন আমাদের কন্ট্রাক্ট পেপারে সাইন করছিলে জবের জন্য ঠিক তারই একদম শেষের দিকে রেজিস্ট্রি পেপার রাখা ছিল যা তুমি নিজের ভুলে সাইন করে ফেলেছো, আর আজকে আমি রেজিস্ট্রি পেপারটা কোর্টে জমা দেবো সো আজ থেকে আমরা হাজবেন্ড ওয়াইফ। ভুলেও আমি বাদে অন্য কোন ছেলের সাথে যেন তোমাকে না দেখি কালকে তোমার সাথে তূর্যর লাস্ট মীট ছিলো। এটা যেন মনে থাকে।
মীরা– আমি আপনাকে ভালোবাসি না। কেন আপনি আমার সাথে এটা করলেন? কিসের বদলা নিচ্ছেন? ওই একটা থাপ্পড় মারার জন্য, অপমান করার জন্য আপনি আমার জীবনটা শেষ করে দিচ্ছেন? যাকে আমি ভালোবাসি না তার সাথে আমি কি করে সারাটা জীবন কাটাব? আর আপনিই বা কি যেই মেয়েটাকে একমাস ধরে চেনেন তাকে হুট করে বিয়ে করে ফেললেন?
আমান– কে বলল তোমাকে যে আমি তোমাকে এক মাস ধরে চিনি ও বেবি এইসব না ভেবে তুমি এখন থেকে শুধু আমার ব্যাপারে লাগবে ওকে?
মীরা– এই বিয়ে আমি মানি না আমি ডিভোর্স…
কথাটা শেষ করতে পারলাম না তার আগেই উনি হঠাৎই আমার ঠোঁটে গভীর ভাবে ঠোঁট ছোঁয়ালেন। ওনার স্পর্শে আমি কেঁপে উঠলাম আর উনি আমার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বললেন।

আমান– ফাইন এখন আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে এখন থেকে ৬ মাস পর যদি তুমি আমাকে মেনে নিতে না পারো তাহলে আমি কথা দিচ্ছি আমি তোমাকে ডিভোর্স দেব এর আগে তুমি ডিভোর্স ওয়ার্ডটা তোমার মুখে আনবে না। আই প্রমিস তুমি আমাকে মেনে নিতে বাধ্য হবে তুমি নিজে বলবে তুমি আমাকে ভালোবাসো। ৬ মাসের মধ্যেই আমি তোমার মন জয় করবো। আই লাভ ইউ বেবি। অ্যান্ড একটা কথা ভালোভাবে মনে রাখবে আমি যেন তূর্যর সাথে বা অন্য কোন ছেলের সাথে তোমাকে না দেখি আর আজকেই তুমি আমার সাথে কাজী অফিসে যাবে।
কথাগুলো বলেই উনি বেরিয়ে গেলেন আর আমি ধপ করে চেয়ারে বসে পড়লাম। এখন কি করবো? নীলাদ্রি যদি জেনে যায় তখন কি বলবো? হায় আল্লাহ! এ কোন বিপদে ফেললে তুমি আমায়?
#ফ্লাশব্যাক এন্ড 🌸🌸
আজ ওনার সেই প্রথম স্পর্শের কথা ভীষণ মনে পরছে, কীভাবে হুট করেই আমাকে কাছে টেনে নিয়ে ছিলেন। কথাগুলো ভেবেই ওনার দিকে তাকালাম দেখলাম এক মনে কাজ করছেন। আজ কেনো জানো ওনার কাছে যেতে ইচ্ছে করছে ভীষণ। আপনা আপনি আমি উঠে গেলাম আর ওনার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।
আমান– কিছু বলবে?
মীরা– (নিশ্চুপ)

আমান– কিছু না বলার থাকলে আস…
ওনার কথা শেষ হওয়ার আগেই আমি ওনার ল্যাপটপ টা বন্ধ করে পাশে রেখে দিলাম আর উনি বললেন।
আমান– হোয়াট? রাখলে কে..
আমি ওনার কথা শেষ করার আগেই কোলে বসে পড়লাম, উনি পুরো চুপ করে গেলেন, আমি বুঝলাম অবাক হয়েছেন। হবেন নাই বা কেন? আমি তো কোনদিন ওনার কাছে আসিনি নিজের থেকে। আজ মনে হচ্ছে উনি ঠিকই বলেছিলেন, ৬ মাসের মধ্যে উনি আমার মন জয় করে নেবেন। ওনার গলা জড়িয়ে বুকে মাথা রেখে এসব ভাবছিলাম তখনই পিঠে ওনার হাতের স্পর্শ পেলাম, হাল্কা কেঁপে উঠে ওনার দিকে মাথা তুলে তাকাতেই দেখলাম, উনি আমার দিকে নেশাতুর চোখে তাকিয়ে আছেন। আমি লজ্জায় চোখ নামিয়ে উঠে যেতে নিলেই উনি আমায় আটকে দিয়ে আমার মুখ টা কাছে টেনে নিলেন। ওনার নিশ্বাস আমার ঠোঁটে পরতেই আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম। ঠিক তখনই কেউ ডোর নক করলো, আমানের নাম ধরে ডাকতেই বুঝলাম নীতা, আমার মনটা নিমিশেই খারাপ হয়ে গেলো, আমি চোখ খুলতে নিলেই ঠোঁটে উষ্ণ ছোঁয়া অনুভব করলাম। যা গভীর থেকে গভীর হচ্ছে। আমান আমার কোমর শক্ত করে জড়িয়ে ধরাতেই বুঝলাম, ওনার হাত থেকে এখন রেহাই পাওয়া যাবে না, আর আমি পেতে চাইও না। আজ তো নিজে এসেছি আমি ওনার কাছে, এই সুখের মুহুর্তটাকে অনুভব করতে লাগলাম, কে বলতে পারে এই মুহুর্ত আমার জীবনে আর এলোই না। আমি এসব চিন্তা পাশে রেখে, আমানের সাথে সঙ্গ দিলাম, আমার সঙ্গ পেয়ে জানো উনি আরো মাতাল হয়ে উঠলেন।