ভালোবাসার অন্যরুপ

ভালোবাসার অন্যরুপ ! Part- 04

মীরা– স..স্যার ক..কি করছেন ছাড়ুন আ..আমায় আমার ল..লাগছে। আপ..
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না তার আগেই উনি আমার অনেক টা কাছে চলে এলেন, ওনার নিশ্বাস আমার মুখের উপর পরছে, আমি ওনার থেকে অনেকটা বেঁটে, ওনার বুকের কাছে আমার মাথা। কিন্তু উনি আমার হাত টা কেনো এভাবে ধরে আছেন? আর এই রূমেই বা আমাকে কেনো লক করেছেন? ওনাকে থাপ্পড় মারার শাস্তি কি এভাবে দেবেন? আমি কিছু বলতে গেলাম।
মীরা– আপনি প্লি..
আমান– ছেড়ে দেওয়ার জন্য তো তোমাকে আনিনি।
মীরা– ম..মা..মানে? দেখুন আমি আপনাকে আগেই স্যরি বলেছি, তারপরও কেনো এমন করছেন? আপনি যদি চান তো আমি আপনার চোখের সামনে কো…
আমান– শাট আপপপপপপ!! (ধমকে)
ওনার ধমক শুনে আমি কেঁপে উঠলাম, উনি আমার থেকে অনেকটা দুরে সরে দাঁড়ালেন হাত দু-ভাঁজ করে। তারপর বললেন।
আমান– আমি এতো কথা শুনতে পছন্দ করিনা। তুমি কি ভেবেছো তুমি আমাকে থাপ্পড় মারবে, মিস্টার আমান খান কে থাপ্পড় মারবে আর আমি ছেড়ে দেবো তোমায়? এতো ইসিলী? লাইক সিরিয়াসলি?
মীরা– স্যার প্লিজ আমার ক্ষতি করবেন না, আমাকে ভার্সিটি থেকে বের করবেন না, আমার একটা জব ভীষণ দরকার, জব না পেলে আমার এতো কষ্ট করে পড়াশোনা করাটা বেকার হয়ে যাবে, স্যার প্লিজ (কান্না করতে করতে)
উনি কোনো কথা না বলে হুট করে আমার কাছে চলে এলেন আর আমার চোখের পানি মুছিয়ে দিলেন আর বললেন।
আমান– আমার কোম্পানি তে জব করবে অ্যাস আ ডিজাইনার?
মীরা– (এসব কি বলছেন উনি আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার তো পড়াশোনা এখন ও শেষ হয়নি তাহলে জব কি করে পাবো? তাও আবার #AK_Group_Of_Company তে?) মনে মনে।
আমান– এতো ভেবে লাভ নেই মীরা। তুমি যদি আমার কোম্পানি তে জব না করো দেন এই ভার্সিটি তেও পরতে পারবে না, তোমার সামনেই আমি প্রিন্সিপ্যাল কে বলেছি তুমি আর ভার্সিটি তে পরবে না। এখন তুমি ভেবে দেখো জব করবে নাকি অন্য কোনো ভার্সিটি তে ট্রাই করবে? এরম মাঝ পথে অন্য কোনো ভার্সিটি তে তোমায় ভর্তি নেবে তো?
মীরা– কিন্তু আপনি কেনো আমায় চান্স দিচ্ছেন? আপনার অতো বড়ো নাম করা কোম্পানি তে আমার মতো একটা সামান্য মেয়েকে অ্যাস আ ডিজাইনার হিসেবে কে…
আমান– বড্ড বেশি কথা বলো তুমি ইডিয়ট!! কে বলেছে তুমি সামান্য মেয়েএএএএ?? (শেষের কথাটা চিৎকার করে) আমি বলেছিইই!!
মীরা– ন..না ম..মা..মানে সবাই বলে আমার যা রুপ তাতে আমি ফ্যাশনের মতো জায়গায় কোনো কাজ পাবো না তাই আর কি ব..বলছিলাম।
আমান– আরেকটা কথা বললে তোমাকে আমি কি করবো আমি নিজেও জানি না। আমার মাথাটা একদম গরম করাবে না।
মীরা– (বাপ রে বাপ কি জোরে জোরে ধমক দিচ্ছে, আমাকে কিছুই বলতে দিচ্ছে না যা বলছি তাতেই ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিচ্ছে, এখন আমি কি করবো? ওনার ওখানে কাজ করলে তো সারাদিন ধমক খেতে হবে, আবার কাজ না করেও তো উপায় নেই।) মনে মনে
আমান– সাইন করো! (জোরে আমার সামনে একটা ফাইল দিয়ে)
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে ওড়না পেঁচাচ্ছি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। তখনই উনি আবারও বললেন।
আমান– আমি সাইন করতে বলেছি ড্যাম ইট!! কথা কানে যাচ্ছে না??
আমি আর কিছু না ভেবে ফাইল টাতে সাইন করে দিলাম, ভার্সিটি তে যদি আর না পরতে পারি তাহলে আমার একটা বছর নষ্ট হয়ে যাবে যার জন্য বাসায় ফুপির কাছে অনেক কথা শুনতে হবে, এর থেকে এই ধমকবাজের কাছে চুপচাপ কাজ করা ভালো, স্যালারি ও পাবো ইসমির পড়া টাও হবে।
আমান– গুড গার্ল! নাও লিসেন কেয়ারফুলি। আমি কাজের জায়গায় খুব স্ট্রিক্ট আর পাংচুয়াল। ঠিক টাইম মতো অফিস জয়েন করবে। আমি আগামিকাল সকাল ১০ টায় ৫ টা নতুন ডিজাইন সহ তোমাকে আমার কেবিনে দেখতে চাই। অফিসে আসলে সবাই তোমাকে হেল্প করবে তোমার কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আর আমার কেবিন চিনিয়ে দেওয়ার জন্য। গেট দেট?
আমি হ্যাবলার মতো শুধু মাথা উপর নীচ করে হ্যাঁ বোঝালাম আর উনি আমার হাতে একটা কার্ড দিয়ে বললেন।
আমান– ইটস মাই ভিসিটিং কার্ড। এখানে অফিসের এড্রেস সহ আমার ফোন নাম্বার আছে নিজের ফোনে সেভ করে রাখবে। নাও ফলো মি।
সব কিছু আমার মাথার উপর দিয়ে গেলো আমি কার্ডটা নিয়ে এখন ও হ্যাবলার মতো ওনার যাওয়ার দিকে চেয়ে আছি। হঠাৎ উনি থেমে গিয়ে আমার দিকে ফিরে ধমক দিয়ে বললেন।
আমান– আই সেইড ফলো মি!! কোলে করে আনতে বাধ্য করো না।
কোলে করে আনার কথা শুনে হাঁটা ধরলাম আর ওনাকে ক্রস করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলাম আর উনি ও আমার পিছন পিছন এলেন। বাইরে এসে গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে গাড়িতে উঠতে বললেন। আমিও চুপচাপ উঠে গেলাম আর ভাবতে লাগলাম কিছুক্ষণ আগের ঘটনা যা আমার কাছে অকল্পনীয়।
কিছুক্ষণ আগে ……………………….
আমান– এই মেয়েটি আই মিন মীরা আর এই ভার্সিটি তে পরবে না স্যার।
প্রিন্সিপ্যাল– তুমি যা বলছো ভেবে চিন্তে বলছো? দেখো আমান মীরা খুব ভালো স্টুডেন্ট আমাদের ভার্সিটির, ওর ডিজাইন জাস্ট অসাম। তাই..
আমান– তাই আমি আমার অপমান টা ভুলে যাবো?
মীরা– স..স্যার প্লিজ স্যার, এভাবে আমাকে বের করে দেবেন না ভার্সিটি থেকে, এইসময় আমাকে অন্য কোনো ভার্সিটি ভর্তি নেবে না স্যার প্লিজ।
প্রিন্সিপ্যাল– আমান একবার ভেবে দেখলে হ..
আমান– আমি ভেবে ফেলেছি যা ভাবার।
মীরা– স্যার আই অ্যাম স্যরি। (কেঁদে কেঁদে আমান স্যারের উদ্দেশ্যে)
আমান– তুমি কেনো স্যরি বলছো মীরা? স্যরি তো আমার আর আমার ভাইয়ের বলা উচিত। অর্নিলললল!! সে স্যরি।
অর্নিল– স্যরি।
আমান– এবার যা যার সাথে সবার সামনে খারাপ ব্যবহার করেছিস তার কাছে সবার সামনে স্যরি বল। রাইট নাও, আই ওয়ান্ট টু সি।
অর্নিল আর আমান স্যার বেরিয়ে গেলেন, আমি প্রিন্সিপ্যাল এর দিকে করুন চোখে তাকাতেই উনি বললেন।
প্রিন্সিপ্যাল– আমার কিছু করার নেই মীরা। আই অ্যাম স্যরি। তুমি যেটা করেছো সেটা অনুচিত। তুমি এভাবে আমাদের ভার্সিটির ট্রাস্টি কে সবার সামনে অপমান করতে পারো না।

মীরা– আমি জানতাম না স্যার উনি আমাদের ভার্সিটির ট্রাস্টি, প্লিজ স্যার আপনি তো জানেন আমার পড়াশোনা করাটা কতটা জরুরি। (কেঁদে কেঁদে)
প্রিন্সিপ্যাল– আমি একবার ট্রাই করবো আমান কে বোঝানোর বাট বুঝবে বলে মনে হয় না, কারণ আমান প্রথম থেকেই একগুয়ে, একবার যেটা বলে সেটাই করে। এছাড়া ও আমাদের ট্রাস্টি প্লাস নিউ ডিরেক্টর। ডিরেক্টরের কথা আমি ফেলতে পারবো না।
প্রিন্সিপ্যাল রুম থেকে কথাগুলো বলে বেরিয়ে গেলেন আর আমিও কান্না করতে করতে ভার্সিটি থেকে বেরাতেই দেখলাম, যেখানে মেয়েটা কান ধরে উঠবোস করছিল সেখানে মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে আর অর্নিল কান ধরে ওকে স্যরি বলছে। পাশেই আমান স্যার দাঁড়ানো।
মীরা– (আপনি ঐ মেয়েটার সাথে যে ভুল হয়েছে সেটা তো শুধরে দিলেন, কিন্তু আমার সাথে এমনটা করলেন কেনো আমান স্যার? আমি জানি আমি ভুল করেছি, অন্যায় করেছি, তা বলে কি আরেকটা সুযোগ দেওয়া যেতো না?) মনে মনে।
আমি বেরিয়ে গেলাম ভার্সিটি থেকে, রাস্তা দিতে হাঁটতে হাঁটতে ভাবছি বাসায় গিয়ে ফুপি আর ফুপা কে কি বলবো? এসব শুনে ফুপি হয়তো আবার আমাকে মারবে, এসব ভাবতেই চোখে পানি চলে এলো ঠিক সে সময় একটা গাড়ি এসে আমার সামনে থামলো, গ্লাস টা নামাতেই দেখলাম আমান স্যার। আমি ওনাকে দেখে চোখ মুছে অন্যদিকে তাকালাম, আর হাঁটতে শুরু করলাম, হাঁটতে হাঁটতে অনুভব করলাম গাড়িটা আমার পিছন পিছন আসছে, ঘুরে তাকাতেই দেখলাম, সত্যি গাড়িটা পিছন পিছন আসছে।
মীরা– (উনি কি চাইছেন আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না, আমাকে ভার্সিটি থেকে বের করে কি ওনার শান্তি হয়নি? এখন আবার কি করতে চাইছেন?) মনে মনে
আমান– গাড়িতে ওঠো।
ওনার গলার আওয়াজ পেয়ে বুঝলাম উনি আমার সামনে চলে এসেছেন যখন আমি চিন্তায় মগ্ন ছিলাম।
মীরা– আমি আপনার সাথে কোথাও যা…
বলতে গিয়েও থেমে গেলাম, ওনার রাগী লূক দেখে, বাপ রে কীভাবে তাকাচ্ছেন জানো আমাকে কাঁচা গিলে ফেলবেন, এসব ভাবতে ভাবতেই গাড়িতে উঠে পড়লাম, গাড়িতে বসে ভাবছি উনি কি আমায় শাস্তি দেবেন থাপ্পড় মারার জন্য? উনি গাড়ি থামাতেই দেখলাম একটা বাংলো, আমাকে বলার কিছু সুযোগ না দিয়েই উনি আমায় টানতে টানতে বাসার ভিতর নিয়ে গিয়ে একটা রূমের দেয়ালে চেপে ধরলেন।
এখন ………………………..

আমান– কি এতো ভাবছো? বাসায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে নাকি নেই?
মীরা– যাচ্ছি।
আমি গাড়ি থেকে নামতেই উনি বললেন।
আমান– যা বলেছি তা জানো মনে থাকে। ৫ টা নিউ ডিজাইন নিয়ে সকাল ১০টায় আমার কেবিনে। গট ইট?
আমি উপর নীচ মাথা ঝাকালাম আর উনি ড্রাইভ করে চলে গেলেন, আর আমি রাস্তায় একটা পা দিয়ে বারি মেরে বললাম।
মীরা– কোনহানকার লাটসাহেবের নাতি কে জানে? কি কুক্ষণে যে আমি এইডারে থাপ্পড় মারতে গেলাম কে জানে? এখন এই ধমকবাজের সাথে কাজ করতে হবে। আর এটা হয়েছে ঐ ইসমির জন্য, ওকে তো আমিইইইই….
বাসায় ঢুকে নিজের রূমের দিকে পা বাড়াতেই ফুপি ডাকলো আমায়, পিছন ফিরে দেখি নীতা আর ফুপি দাঁড়িয়ে আছে, ফুপি কে দেখে মনে হলো ভীষণ রেগে আছে, হয়তো ভার্সিটি থেকে বার করে দিয়েছে এই খবর শুনে। আমি ভয়ে ভয়ে নীচে নেমে গেলাম, ফুপির সামনে দাঁড়াতেই ফুপি একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন গালে, আমি গালে হাত দিয়ে ফুপির দিকে তাকাতেই ফুপি বললেন।
ফুপি– মুখপুড়ি কি মুখ নিয়ে এই বাসায় এসেছিস হ্যাঁ? ভার্সিটি থেকে বার করে দিয়েছে দেখে সুড়সুড় করে এ বাসায় চলে এসেছিস? কান খুলে শুনে রাখ আমি কিন্তু তোকে অন্য কোনো ভার্সিটি তে ভর্তি করাবো না পয়সা দিয়ে, যা টিউশনি করে দিস তাতে তোর সখের পড়াশোনার খরচ চলে না। এইবার থেকে বাসার সব কাজ করবি, কোনো ভার্সিটি তে ভর্তি হতে হবে না।
নীতা– আম্মি প্লিজ। বোকার মতো কথা বলো না, এমন মাঝ পথে ওকে কোন ভার্সিটি ভর্তি নেবে? পার্ট ওয়ান এক্সাম শেষ এখন পার্ট টু হবে, যদি ফাস্ট ইয়ার কম্পলীট হয়ে যেতো তাহলে একটা কথা ছিলো।
এটা শুনেই ফুপি আমার চুলের মুঠি ধরলেন আর আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বললাম।
মীরা– ফুপি ছাড়ো, আমার কথা টা একবার শুনো, আমি ভার্সিটি আর যাবো না জব করবো।
ফুপি– জব করবি মানে? (চুল ছেড়ে)
মীরা– আমাকে আমান স্যার তার কোম্পানি তে ডিজাইনার হিসেবে জব অফার করেছেন।
নীতা– মিথ্যে বলার ও একটা লিমিট থাকে মীরা!! যেখানে তোর পড়াশোনা শেষ হয়নি সেখানে তুই অতো বড়ো কোম্পানি তে চান্স পেয়ে গেলি ডিজাইনার হিসেবে।
মীরা– মিথ্যে কেনো বলবো? আমান স্যার আমাকে একটা ফাইলে সাইন করিয়ে নিয়েছেন, ওটা কন্ট্রাক্ট পেপার্স ছিলো যেটা তে লেখা ছিলো আমি ওনাদের কোম্পানি তে আগামি ৬ মাসের জন্য কাজ করবো। আগামিকাল আমাকে সকাল ১০ টায় নিউ ৫ টা ডিজাইন নিয়ে যেতে বলেছেন ওনার কেবিনে। এটা ওনার কার্ড।
কার্ডটা নীতা আর ফুপি কে দেখাতেই নীতা আমার হাত থেকে ছোঁ মেরে নিয়ে নিলো কার্ডটা। আমি বুঝলাম হয়তো ভুল করে ফেলেছি এটা দেখিয়ে। এবার হয়তো সব শেষ। এখন কি হবে?
মীরা– কার্ডটা দে নীতা।
নীতা– তোর আর এই কার্ডটা নিয়ে কাজ নেই।
মীরা– মানে?
নীতা– কালকে সকালে তুই না আমি যাবো #AK_Group এ, সো বাই।
এটা বলেই নীতা দৌঁড় মেরে ঘরে চলে গেলো আর ফুপি ও চলে গেলো, আমি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখানেই ধপ করে বসে পড়লাম আর কান্না করতে লাগলাম, হঠাৎ কাঁধে কাওর হাতের স্পর্শ পেতেই পিছন ফিরে দেখলাম আমার বোন ইসমি। আমি ইসমি কে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলাম। আমার চোখের পানি জানো বাঁধ ভেঙে ছিলো। ঘরে এসে ইসমি কে সবটা বলার পর ও খুব রেগে গেলো।
ইসমি– নীতা কার্ডটা নিয়ে নিলো আর তুই ওকে যেতে দিলি? আমি হলে তো সজোরে একটা থাপ্পড় মেরে ওর কাছ থেকে কার্ডটা নিয়ে নিতাম। ভার্সিটির ট্রাস্টি কে থাপ্পড় মারতে পারলি আর এই চুড়েল টাকে পারলি না?
মীরা– সুমি (আমি এই নামেই ডাকি) তুই জানতিস উনি আমাদের ভার্সিটির ট্রাস্টি, তাও বলিসনি কেনো? এখন তো শুনলাম উনি নাকি ডিরেক্টর পদে ও আছেন।
ইসমি– তাহলে তোর স্বপ্ন দেখা বেকার। ঐ ভার্সিটি তে তুই আর চান্স পাচ্ছিস না। আর নবীন বরণ উৎসবে উনি এসে ছিলেন, তারপরেই ওনাকে ট্রাস্টি করেছেন। আমি কি জানতাম তুই এভাবে নিউ ট্রাস্টি কে সবার সামনে থাপ্পড় মেরে বসবি?
মীরা– আমার সব শেষ হয়ে গেলো সুমি। (কাঁদতে কাঁদতে)
ইসমি– দেখ আমান স্যার কিন্তু বোকা নয়, উনি তোকে ডিজাইনার হিসেবে বেছে নিয়েছেন নীতা কে নয়। দেখা যাক কি হয়।
১ মাস পর ……………………………….
প্রেসেন্ট 🌸❤

ফোনের আওয়াজে আমার ঘোর কেটে গেলো আমি তাকিয়ে দেখলাম ইসমি ফোন করেছে, রিসিভ করে বললাম।
মীরা– এতক্ষণে মনে পরলো আমার কথা?
ইসমি– ফোন তোর করার কথা ছিলো মীরা।
মীরা– ওহ! স্যরি ভুলে গেছিলাম।
ইসমি– কি হয়েছে এবার বল আমাকে।
মীরা– ক..কি হবে?
ইসমি– তুই আমাকে ফোন করতে কখনো ভুলিস না মীরা, আর আমি তোর বোন সো আমার থেকে লুকাস না।
আমি সুমির কাছে থেকে কখনো কিছুই লুকাইনি, তাই সবটা বলে দিলাম, সুমি বললো।
ইসমি– তুই জানিস তুর্য আমাকে ফোন করেছিল?
মীরা– কিইইইই?? (চমকে গিয়ে)
ইসমি– হ্যাঁ!! তুই কেনো আমান জিজু কে সবটা বলছিস না আমায় বলবি?
মীরা– পাগল হয়ে গেছিস তুই? তুই জানিস না এতে কি হতে পারে?
ইসমি– এভাবে সবটা কতদিন আড়াল করবি? ফুপি কে শুধু শুধু টাকা দিয়ে যাচ্ছিস তুই, এদিকে নীতা তোর ক্ষতি করতে আবারও এসে পরেছে, তোর মনে নেই ও কি করেছিল অফিসে জয়েন করার সময়? প্লিজ মীরা বলে দে সবটা আমান জিজু কে।
মীরা– কিছুতেই না!! আমি জেনে বুঝে আমান কে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারিনা।
__বিপদ??
পিছন ফিরে দেখলাম আম্মু ভয়ার্ত চোখে তাকিয় আছে আমার দিকে।
মীরা– সুমি আমি পরে ফোন করবো।
ফোন টা রেখে দিয়ে আম্মুর কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই আম্মু বললো।
আম্মু– ঐ নীতা আবারও আমার সংসারে ক্ষতি করতে এসেছে তাই না? আমার আমানের ক্ষতি করতে এসেছে নিশ্চই এবার?
মীরা– আমি কোনো ক্ষতি করতে দেবো না আম্মু। আমি আছি তো।
আম্মু কে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালাম, কিন্তু ঘরে ঢুকতে যাবো ঠিক সেই সময় যা দেখলাম তা দেখে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। নিজের অজান্তেই চোখে পানি চলে এলো আমার।