বিনিময়ে তোমায় চাই

বিনিময়ে তোমায় চাই !! Part- 12

আনাফ যখনই বিছানায় বসতে নিবে রিফা একটা নাইফ আনাফের দিকে ধরে বললো,
রিফা- একদম বিছানায় বসবেন না আমার থেকে ১৮ হাত দূরে থাকবেন পাইসেন টা কি আমাকে খেলনার পুতুল? যে যেভাবে বলছে সেভাবেই করতে হচ্ছে। আর আমাকে বিয়ে করে এতো মহান ভাববেন না আমি ইমনের ছিলাম ইমনের আছি & থাকবো সেই জায়গায় আপনি কে কেউ থাকবে না।
আনাফ ছুরি টা দেখে হাসলো।
আনাফ- ফল কাটার ছুরি দিয়ে মানুষ কাটবা হাউ ফানি।(হাসতে হাসতে)
রিফা- কে বলেছে যে ফল কাটা ছুরি দিয়ে মানুষ কাটা যায়না? আমি চাইলে সব পসিবল।
আনাফ- ওহ রিয়েলি?
বলেই একটান মেরে নাইফ টা হাত থেকে নিয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দিলো।
আনাফ- এবার ইমপসিবল পসিবল করে দেখাও।(রিফার দিকে এগোতে এগোতে)
রিফা ভয়ে ভয়ে পিছোচ্ছে আর কাপা কাপা গলায় বলতে লাগলো,
রিফা- দে.. দে.. দেখুন একদম আমার কা.. কা.. কাছে আসবেন না আ.. আমি এই বিয়ে মানি।
আনাফ- তোমার মানো বা না মানো আই ডোন্ট কেয়ার আর আল্লাহও ডোন্ট কেয়ার বিয়ে তো হয়েছেই সো…
বলেই ডেবিল হাসি দিয়ে রিফাকে একটা চোখ টিপ মারলো। রিফা ভয়ে ভয়ে বারবার ঢোক গিলছে আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। একসময়ে খাটের এক কোণায় গিয়ে থামলো রিফা কারণ আরেকটু পিছে এগোলেই পুছে ধরাম করে পড়ে কোমড় ভাঙ্গবে। আনাফ মুচকি হেসে রিফাকে একটান দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।
পরদিন সকালে,

রিফা আস্তে আয়াতে টিপ টিপ করে চোখ খুললো। চোখ খুলে দেখে সে আনাফের খালি বুকে। রিফার তো কাল রাতের ক্তহা মনে পড়তেই রেগে লাল হয়ে গেলো আর উঠে যেতে চাইলে আনাফ টান দিয়ে আবার রিফাকে নিজের বুকে ফেলে দিলো। রিফা এতে আরো রেগে গেলো এবং বললো,
রিফা- কি হচ্ছে টা কি?(রেগে)
আনাফ- তোমার মেয়ে।(দাত কেলিয়ে)
রিফা- উফফফ মাথার তাড় কি সব ছিড়েছে আপনার ছাড়ুন বলছি আর কাল রাতে আমাকে টাচ করার সাহস কি করে হলো আপনার আপনাকে আমি দেখে নিবো ছাড়ুনন।(চিল্লিয়ে)

আনাফ- প্রথমত তুমি আমার বউ তোমাকে টাচ করার রাইট আমার আছে এন্ড এখনো টাচ করেই আছি তো প্রব্লেম কিসের?এখনই আমায় দেখে নাও না সমস্যা কোথায়?(দাত কেলিয়ে)
আনাফের এই দাত কেলানো টা রিফার একদম সহ্য হচ্ছে না। তার রিফার নিজের ডান হাতের কনুই দিয়ে আনাফের পেটে গুতা দিলো আর আনাফও সাথে সাথে ছেড়ে দিলো। রিফাও এই সুযোগে ভৌ দৌড় দিয়ে সোজা ওয়াশরুম ঢুকে পড়লো আর আনাফ খিটখিটিয়ে হাসতে লাগলো।
আনাফ- বাব্বাহ আমার বউ টা এত্তো পাজি জানতাম না তো। ইমন তোমার দেওয়া কথা আমি রাখবো খুব শীঘ্রই তোমার নামটা ওর মন থেকে মুছে ফেলবো।
রিফা শাওয়ার শেষ করে দেখলো সে কোনো জামা আনেনি।
রিফা- এমায়ায়া জামা আনতে তো ভুলেই গেছি ধুর সব দোষ ওই বজ্জাত টার এহহহ বিয়ে করেছে বলে মনে হচ্ছে হিরের কারখানা পাইসে হুহ। এখন জামা চাইবো কি করে বজ্জাত টার কাছে? উমমম….ধুর ধুর ভালো লাগে না এসব অত্যাচার।
এভাবেই নিজের মনে বকবক করছিলো ওমনি আনাফ দরজা ধাক্কাতে লাগলো।
আনাফ- কি হলো ম্যাডাম বেলা তো গড়িয়ে যাচ্ছে আপনি কি বাথরুম পরিষ্কার করছেন নাকি যে এতো লেট হচ্ছে??(কিছুটা রেগে)
রিফা- দেখুন একদম বাজে কথা বলবেন না আমি জামা আনতে ভুলে গেছি আপনার জন্য তআই বের হতে পারছি না।
আনাফ- ওহ এই ব্যাপার তা যেভাবে আছো সেভাবেই চলে আসো মানা করেছে কে আমরা আমরাই তো।(দাত কেলিয়ে)
রিফা- এই এই একদম চুপ লুচি থুক্কু লুচু কোথাকার।
আনাফ- হুম এখানকার এখন আসবা নাকি দরজা ভাঙ্গবো???
রিফা- এই না না আপনি জাস্ট একটা জামা দিন প্লিজ।
আনাফ- ওকে।
বলেই আনাফ আলমিরা থেকে তার একটা পছন্দের ড্রেস আনলো। আর রিফা ভাবতে লাগলো ” কি ব্যাপার বলার সাথে সাথে রাজি হলো কেন কোনো মতলব নেই তো?”
আনাফ- নাও।
রিফা আস্তে দরজা ফাক করে দেখলো একটা শাড়ি। আপাতত কোনো উপায় না পেয়ে ছো মেরে শাড়ি টা নিয়ে আনাফের মুখের উপর ঠাস করে দরজা টা বন্ধ করে দিলো। রিফার কান্ডে আনাফ হাসছে। এমন সময়ই দরজায় কেউ নক করলো। আনাফ একটা টিশার্ট পড়ে দরজা খুলে দেখলো আনিফা আর তার কিছু কাজিন।
আনিফা- কি এতো বউএর সাথে থাকলে হবে খেতে হবে তো নাকি?
আনাফ- আমি বউএর সাথে নেই। সেই ওয়াশরুমে যে ঢুকে বসে আছে বের হওয়ার নাম নেই।
আরিফা- ঢং এর শেষ নেই।(মুখ বাকিয়ে)
ঠিক তখনই রিফা ওয়াশরুম থেকে বের হলো। মিতা আরিফা কে চিমটি কেটে বললাম,
মিতা- চুপ কর তো তোর সমস্যা কোথায়??
আরিফা- আমার কোনো সমস্যা নেই।
আনাফের আরিফার উপর খুব রাগ উঠছে কিন্তু কিছুই বলছে না। আনিফা পরিস্থিতি সামলাতে বলে,
আনিফা- আচ্ছা তোরা আয় আমরা যাই কেমন?
আনাফ- ঠিক আছে।
তারপর আনিফা মিতা আরিফা সবাই চলে গেলো।
রিফা- ওই মেয়েটা কে যে আমাকে ঢং বলছে? সাহস তো কম না।(রেগে)
আনাফ এই এক সুযোগ পেলো রিফাকে জেলাস করানোর।
আনাফ- ওর সাথে আমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো এন্ড ছোট থেকে আমায় ভালোওবাসে। নেয়েটা কিউট না??(দাত কেলিয়ে)
রিফা- তো জান না ওই মেয়েটার কাছে এতো যেহেতু কিউট।(এহহহ কি কিউট রে.. পুরোই ইন্দুরের চেহারা। কে জানে এরে কি করে এই লিচুর পছন্দ হলো। আর পছন্দ হলে ওরে বিয়ে করতো আমাকে কেন করবো আজব।)(রেগে)
আনাফ দরজা বন্ধ করে রিফাকে নিজের কাছে টেনে রিফার চুলের ঘ্রাণ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আর রিফা বারবার নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করছে। প্রায় কিছুক্ষণ রিফার ভেজা চুলের ঘ্রাণ নিয়ে একটা কিস করে ওয়াসরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। রিফা আনাফের কান্ডে অবাক। তারপর তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আনাফকে রেখেই নিচে চলে গেলো কারণ সে এখন আনাফকে বিশ্বাস করতে পারছে না। নিচে গিয়ে দেখতে পেলো আনিফা, আরিফা আর মিতা বসে কথা বলছে। মিতা রিফাকে দেখতেই বলে উঠলো,

মিতা- আরে ভাবী আসো বসো আনার সাথে ভাইয়া কোথায়?
রিফা – ফ্রেশ হয়ে আসছে।
আনিফা- ওও আচ্ছা।
এমন সময়ই রায়হান এসে হাজির।
রায়হান- কি শালিকা রা কি করছো আমার বউএর সাথে আর উনিই(রিফাকে দেখিয়ে) ও হ্যা উনিতো আমার সালার বউ রিফা।
আনিফা- এই দিন দিন তুমি এতো ভুলাক্কার কেন হচ্ছো বলোতো?
রায়হান – কোথায় ভুলাক্কার হলাম বউ তোমাকে তো দিব্বি মনে আছে আর আমার শালিকাদেরও কি বলো শালিকা রা।
মিতা,আরিফা একসাথে- হ্যা জিজু তা তো অবশ্যই।
রায়হান- দেখলে কি বললো।(ভাব দেখিয়ে)
আনিফা- হয়েছে আর ভাব দেখানো লাগবে না।
এমন সময়ই আনাফ শিরি দিয়ে নামতে নামতে রিফাকে বললো,
আনাফ- ইটস নিট ফেয়ার বউ তুমি আমাকে রেখে নিচে এসে আড্ডা দিচ্ছো?
মিতা- আরেক বউ পাগলা হাজির।
বলতেই সবাই হাসতে লাগলো শুধু আরিফা বাদে। সে তো ভেতরে ভেতরে রেগে ফুলে ফেপে রয়েছে।
রায়হান- সাবাস শালা আমার সাবাস তুইও আমার মতো বউ পাগলা হবি ভাবতে পারিনি।
আনাফ- বউ পাগলি হলে তো বর পাগল হবেই তাইনা বউ?(রিফাকে উদ্দেশ্য করে দাত কেলিয়ে)
রিফা চোখ রাঙিয়ে আনাফের দিকে তাকালো। আনাফ সাথে সাথে দাত কেলানো অফ করে হালকা কাশি দিলো। দুইজনের কান্ডে সবাই হু হু করে হেসে দিলো। এবারও আরিফা জ্বলছে।
ওদের হাসাহাসির আওযাজে রনিয়া ওয়াহিদ এসে বললো,
রনিয়া- হিয়েছে অনেক মাতামাতি হাসাহাসি হয়েছে এখন আয় খেতে আয় সবাই। রিফা মা আমার সাথে এসো।
রিফা- জি আন্টি সরি আম্মু।
,
,
,
,
চলবে💙