বস বয়ফ্রেন্ড Season-4

বস বয়ফ্রেন্ড Season-4 ! পর্ব-১৭

হাটতে হাটতে হঠাত আমার দু পা থমকে গেল।
দুরে এক চেনা মুখ আমার দিকে তাকিয়ে
আছে।
যে মুখ ভেবে ভেবে আমি কত নির্ঘুম রাত
পার করেছে।
হঠাত এইভাবে তাকে এত দিন পর দেখতে
পাবো আমি সপ্নেও ভাবিনি।

রাদ- আদর কে দেখে যেন আমি চাদ হাতে
পেয়ে গেলাম।
আমি ওর দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম।

আদর- আমার শুধু ওই দিন টার কথা মনে হল।
সে বলেছে তার সামনে আর না যেতে।
তাই আমি উল্টা দিকে হাটা শুরু করলাম।

রাদ- আদররররর। দাড়াও প্লিজ।
এত জোরে বৃষ্টি হচ্ছে।
এর মাঝে কি ও আমার কথা শুনতে পাচ্ছে??
আমি দৌড় দিলাম।
আদরের সামনে যেয়ে দাড়া হলাম।

আদর- আমি উনার পাশ কাটিয়ে চলে
যাচ্ছিলাম।
রাদ- ওর এক হাত ধরলাম।
কোথায় যাচ্ছ?? তুমি জানো তোমাকে কত
খুঁজেছি? ?

আদর- হাত ছাড়িয়ে কোনো কথা না বলে চলে
যাচ্ছিলাম।

রাদ- ওকে শক্ত করে ধরে নিজের সাথে
জরালাম।
কি হল কথা বল।
আমি জানি তুমি রেগে আছো।
রাগ বললে ভুল হবে অনেক অভিমান করেছ।
তুমি আমাকে মারো বোকো যা খুশি কোরো।
কিন্তু প্লিজ কথা বল আমার সাথে।

আদর- ছাড়ুন আমাকে।
রাস্তার মধ্যে কি শুরু করেছেন।

রাদ- কেউ নেই চারিদিকে।
এই বৃষ্টির মধ্যে কে থাকবে।

আদর- আমাকে ছাড়ুন বলছি।আমার বিরক্ত
লাগছে।
সরুন সামনে থেকে।

রাদ- না।
অনেক কস্ট করে তোমাকে পেয়েছি
।এখন আর হারাতে দিচ্ছিনা।

আদর- হাহ কই আপনি আর কই আমি।
আমার মত মেয়েকে আপনি খুঁজছেন? ??

রাদ-আমি জানি তুমি অভিমান করেছ।
আমি সরি।
অনেক সরি।
প্লিজ আমার কথাটা শুনো।
প্লিজ একবার শুনো।

আদর- ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে – না কোনো কথা
শুনব না আমি।
কিছু শুনতে চাই না।
চলে আসছিলাম।

রাদ- তুমি কি ৩ বছরের কন্ট্রাক্ট টা ভুলে
গেছো?

আদর- আমি থমকে দাড়ালাম।
কিন্তু আপনি ত….. আর এত দিন পর…..!?

রাদ -( মনে মনে { তোমাকে আটকানোর আর
কোনো উপায় নেই আমার কাছে। তোমার
অভিমান ভাংতে হলে তোমাকে যে অফিসে
ফিরতেই হবে। সরি রুড বিহেভ আবার করতে
হচ্ছে})
হ্যা তাতে কি? ? তুমি এখন ও আমার অফিসের
এম্পলয়ি আছো।

আদর- আপনি যাই বলেন আমি আর অফিস
জয়েন করছিনা।

রাদ- তোমাকে জয়েন করতেই হবে।
না হলে তোমার ই প্রব্লেম হবে।
সো যা বলছি শুনো।

আদর- আমি যাব না না না না ।

রাদ- ওর কাছে যেয়ে তুমি আসবে আসবে
আসবে।
তোমার ফোন টা দেও।

আদর- কিহ!? কেন? ?

রাদ- দিতে বলেছি দেও।

আদর- না দিব না।

রাদ- জোর করে ওর ব্যাগ থেকে ফোন
নিলাম।
ওর নাম্বার টা নেওয়ার জন্য।
নাম্বার নিয়ে ওর ফোন টা দিয়ে দিলাম।
চল এখন আমার সাথে।।
আদর- আমি যাবনা আপনার সাথে।
হাত ছাড়ুন।
ছাড়ুন।

রাদ- প্রায় টানতে টানতেই ওকে গাড়ি তে
তুললাম। গাড়ি তে অনেক কথা বললাম।
কিন্তু আদর কোনো কথাই বললনা।ওর
বাড়ির সামনে যেতেই

আদর- আমি গাড়ি থেকে নেমেই দৌড়।

রাদ- আরে দাড়াও!!!!
যাহ!!!!!
যাই হোক শেষ মেশ ওকে পেলাম ত।
এখন আমাদের জীবনে শুরু হবে নতুন অধ্যায়।
বাসায় বেক করলাম।

রাতে আদর কে এত ফোন দিলাম ধরলই না।
যাক এর শাস্তি ওকে পরে দিব।

সকালে-
রোদেলা- কিরে আদর কে পেয়ে এত
খুশি! !!????

রাদ- খুশি হবোনা।!???
ও আজ অফিস জয়েন করবে আবার।

রোদেলা- কি মনে হয় আসবে? ??

রাদ- আসতে হবেই।সেই ব্যবস্থা ত করেই
রেখেছি।

রোদেলা- আসলেই ভালো।
all the best.
.
রাদ- খুব খুশি মনে আজ অফিস গেলাম।
আদর যে ডেস্ক এ বসত সেটায় একবার
তাকালাম।
আসলে আদর এর পর আর কোনো পি.এ রাখা
হয় নি।

খুব খুশি খুশি লাগছে।
এত দিন ধরে যাকে খুঁজেছি তাকে অবশেষে
পেলাম।
যে নাকি আমার চোখ এর সামনেই ছিল কিন্তু
আমি তাকে কখনই চিনতে পারিনি।
দেখতে দেখতে ১১:৩০ টা বেজে গেলো।
কিন্তু আদরের খবর নেই।
আসবে না নাকি? ?
ফোন দিলাম।

আদর- হ্যালো! !!
কে?

রাদ- কোথায় তুমি এখন ও আসলে না যে? ??

আদর- রং নাম্বার বলে ফোন কেটে দিলাম

রাদ- কি!! রং নাম্বার! “”
দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।

আদর- উফফ এই লোক ত জ্বালায় খেলো।
এত ফোন দেওয়ার কি আছে।
দুর।
ফোন বন্ধ করে রাখি।
আগে যখন আমি তার পিছে ঘুরেছি তখন ত
আমাকে অপমান করেছে।
আর এখন! !!??? না আমি তাকে কোনো পাত্তা
দিব না।
দেখি কি করে সে।

রাদ- এতক্ষন ত ফোন ধরছিলনা আর এখন ফোন
বন্ধ করে রেখেছে।
দাড়াও আমিও কম না।
তুমি নিজের ইচ্ছায় আসবেনা।
ওকে।

আদর- উফফ মানুষ পাগল না আর কিছু । এত বার
কেউ কলিং বেল বাজায়! !?
এই কে রে ……….. আপ……আপ….

রাদ- হ্যা আমি।
বলে ওর হাত ধরলাম।

আদর- আরে আরে কি করছেন।
কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন।হাত ছাড়ুন।

রাদ- নিজের ইচ্ছায় ত আসলে না।
এখন তুলে নিয়ে যাব।

আদর- ও যখন মন চাবে অপমান করবেন আবার
যখন মন চাইবে অধিকার ফলাবেন।
ছাড়ুন।
( হাত ঝাড়া দিয়ে)

রাদ- তুমি ভুলে যাচ্ছ তুমি এখন ও আমার
এম্পলয়ি।
আর আমি তোমার বস।
আমি সে অধিকার ই ফলাচ্ছি।

আদর- এত দিন পর!?? হঠাত।
এতদিন কোথায় ছিলেন? ?
রাদ- তোমার কথা উত্তর দেওয়ার টাইম নাই।
চল।

আদর- আরে আরে।!”??

গাড়ি –
রাদ-পাশে তাকিয়ে দেখি ম্যাডাম রাগে
লাল হয়ে গেছে।
আর ফোস ফোস করছে।

আদর-( রাগে মনে হচ্ছে জোড়ে জোড়ে
চিতকার করি।
জোড় করে নিয়ে আসল উনি কি দেখছে আমি
কি পরে আছি।
এখন এটা পরে অফিস যাবো? ??
এরে আমি কেমনে ভালোবাসলাম।এখন বসে
বসে নিজের মাথা চাপড়াই।
)
রাদ- কি হল কপালে হাত চাপড়াচ্ছ কেন?

আদর- আপনার কি? ?
আমার কপাল! ?

রাদ- আচ্ছা অনেক হইছে এখন নামো।

আদর- নামবো মানে?
রাদ- অফিস ত চলে আসছি।

আদর- (গাড়ি থেকে নেমে ) আপনি দেখছেন
আমি কি পরে আছি??

রাদ- উপর থেকে নিচ পর্যন্ত
দেখলাম।
সমস্যা নাই।
হাত ধরে চল।

আদর- আরে আরে……. উফফ।

অফিস এর ভেতর গেলাম।
আমাকে দেখে সবাই অবাক।
সবাই আমার কাছে এগিয়ে আসতে চাইলেও
স্যার কে দেখে আসলনা।
আর এই দিকে উনি হাত ধরেই তার কেবিন এ
নিয়ে গেল।

রাদ- ত মিস চারচোখ! !!!

আদর- কি কি কি বললেন!!!! আবার চারচোখ
বললেন! !!( এগিয়ে গিয়ে)
রাদ- এত সামনে আসলে ত উত্তর দেওয়া
মুসকিল।

আদর- আরে তাইত।সরে আসছিলাম হাত টান
দিয়ে ধরল।
রাদ- আরো কাছে আনলাম।
এক হাত ওর কমোড়ে রেখে আরেক হাত দিয়ে
চশমা খুললাম।
এত বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছ কেন?

আদর- ছাড়ুন।

রাদ – আরেক টু শক্ত করে ধরে কেনো? ??

আদর- ( হুহ এখন দরদ উতলায় পরতেছে???
এতদিন কই ছিল? ? কিন্তু হঠাত এই পরিবর্ত
কেমনে হল? ?)
আপনার এই পরি…..
প্রশ্ন করার আগেই ফোন আসল …..

রাদ- হঠাত ফোন আসল।
ফোনে কথা বলছিলাম।
আর ওকে ধরে রেখেছিলাম।

আদর- উফফ ছাড়ে না কেন??? হাতে চিমটি
লাগায় দিলাম।

রাদ- আও!!

আদর- কেবিন থেকে দ্রুত বের হলাম।
দেখি সবাই দাড়িয়ে আছে।
।এনা আর ইমু দৌড়ে এসে আমাকে জরিয়ে
ধরল।

ইমু- এতদিন কোথায় ছিলা?? হঠাত না বলে
উধাও হয়ে গিয়েছিলা কেন? ??

এনা- তোমাকে কত মিস করেছি জানো? ??

সব স্টাফ – how r u ??? ador.
we miss u a lot.
.
আদর- আরে আরে আস্তে আস্তে।

রাদ- দাড়িয়ে দাড়িয়ে বাইরে দেখছিলাম।
সবাই আদর কে পেয়ে কত খুশি।
আদর সবার সাথে কি সুন্দর কথা বলছে।
আমার খুব ভালো লাগছে।
এখন শুধু ওর মন থেকে অভিমান টা কাটাতে
হবে।

কেবিন থেকে বের হলাম।
সবাই আমাকে দেখে চুপ হয়ে গেল।

সবার কি কথা হয়েছে? ??
হয়ে থাকলে get back to work.

সবাই – জি স্যার।

রাদ- আদর follow me.
.
আদর- বলুন
( মুখ ঘুড়িয়ে)

রাদ- (এত রাগ বাপরে বাপ)
এইভাবে বলছ কেন? ?

আদর- এইভাবে তুলে আনলে কিভাবে আর
বলব।
রাদ- নেও ফাইল টা কম্পলিট করে নিয়ে
আসো।

আদর- পারব না।

রাদ- উঠে দাড়িয়ে- কি বললে।

আদর- পারব না।সরি।

রাদ- ওর দিকে এগিয়ে যেতে যেতে আবার
বল।

আদর- ( আদর ফাইল নিয়ে ভাগ)
যাচ্ছি যাচ্ছি।
হুহ শয়তান একটা।
মনে হচ্ছে দিন দিন আর ও শয়তান হয়ে যাচ্ছে

রাদ- শয়তানি র আর দেখলে কি।
দেখতে থাকো আর ও কত দুস্টু মিষ্টি শয়তানি
করি তোমার সাথে।
be aware ador.
u won’t able to handle it.
.
আদর- ফোন ত আনতে পারলাম না।
মা ত বাসায় এসে আমাকে না দেখে টেনশন
করবে
এই পাজি কি সেটা বুঝবে? ? অফিস থেকে
ফোন করে দেই।
মা কে ফোন করে বললাম বাসায় যেয়ে সব
বুঝিয়ে বলব।

রাদ- সি.সি. ক্যামেরা তে আদর কেই
দেখছিলাম।
শুধু আফসোস ওকে যদি আগে চিনতে পারতাম
তাহলে ওইদিন ওই টা করতাম না।
ইনফেক্ট আমি ই আগে ওকে প্রপস করে
ফেলতাম।
আজকের দিন টা আমাকে দেখতে হতনা।
এখন ইনার রাগ ভাংতে কি কি যে করতে
হবে।
আল্লাহ জানে।
এখন যদি ওকে আমি আমার কথাটা বলি। এ
হয়ত মানবেনা কেন ওকে ওইদিন এইভাবে
বলেছিলাম।
তাই আগে আস্তে আস্তে বুঝাতে হবে ওকে
আমি ভালোবাসি।
তারপর সব বলব।

আদর- উফফ সকালে নাস্তা ও করিনি ক্ষুদা ও
লেগেছে।
এক কাজ করি কিছু আগে খেয়ে আসি।
কাজ পরে।
আপনে বাঁচলে বাপের নাম।

রাদ- ও উঠে কই যাচ্ছে।
চলে যাচ্ছে না ত ??
আমি কেবিন থেকে বের হয়ে পিছে পিছে
গেলাম।
আদর কেন্টিন এ গেল।

আদর- বসে বসে খাচ্ছিলাম।
কেন্টিন এ আমি ছাড়া কেউ নেই।

রাদ- ওর পাশে কফি নিয়ে বসলাম।

আদর- আমি ত ভুত দেখার মত চমকে উঠলাম।

রাদ- ভয় পাওয়ার কি আছে? ? আমি কি ভুত
নাকি।
দেখি কি খাচ্ছ??
ওহ সেন্ডউইচ। আমার ও খুব প্রিয় বলে নিয়ে
খাওয়া শুরু করলাম।
আদর- আরে…আরে…. ( এখন খেতেও দিবেনা।
উফফ)
বিরক্ত। বলে উঠে যাচ্ছিলাম।

রাদ- ওর হাত টা ধরলাম।
কি ব্যপার না খেয়ে চলে যাচ্ছ যে।

আদর- আপনি আর খেতে দিলেন কই।
নিজেই ত খেয়ে ফেললেন।
( হাত ছাড়িয়ে) চলে আসলাম।

রাদ- যাহ আর ও রেগে গেছে।
রাগলে আর ও ভালই লাগে।

এনা- কি হল এমন হয়ে আছ কেন? ?

আদর- না কিছুনা।
ফাইল টা কম্পলিট করে স্যার এর কাছে নিয়ে
গেলাম।
নিন।
এটা কম্পলিট।


রাদ- চলে যাচ্ছ কেন? ? আমি কি যেতে
বলেছি।নেও এটা দেখো।আর এইখানেই বসে।
আদর- এইখানে! !???

রাদ- হ্যা!এইখানেই।
কোনো প্রব্লেম? ?

আদর- ( এইখানে বসে থাকলে ত তার দিকে
চোখ যাবে বার বার…..)
হ্যা প্রব্লেম।
আমি আমার ডেস্ক এ যাচ্ছি।

রাদ- না তুমি এইখানে বসে দেখবে।
আমি বলেছিনা।

আদর- দুর।
এরে বলে লাভ নাই।
জিবনে কারো কথা শুনছে যে আজ শুনবে.

বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *