বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Part- 26

আবির অনেক দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে,, বার বার শিহাবের কথা গুলো মাথায় আসছে,,,,,,,আবিরের এখন মনে হচ্ছে তিথি হয়তো এই জন্য তার কাছে আসে না এই জন্য তার ছোঁয়া তিথির কাছে বিরক্তি লাগে,,,,,,আবির এই সব ভাবতে থাকে র হঠাৎ একটা ট্রাক আবিরের গাড়ির সামনে এসে যায়,,,,,আবির গাড়ির সাইট করতে করতে এক্সিডেন্ট হয়ে যায়,,,,,,

আবিরের গাড়ি একটা ট্রাকের সাথে লেগে এক্সিডেন্ট হয়ে যায়,,,,গাড়ি টা অনেক ভেঙ্গে যায়,,,আবিরের অবস্থা খুব খারাপ,,,মাথাটা অনেক কেটে গেছে,,,, সব মানুষ ভিড় করেছে,,,,হঠাৎ একটা গাড়ি এসে থামে,,,

আহানঃ আরে ভাই ওইখানে কি হয়েছে(একটা লোককে দাঁড় করিয়ে)

লোকটিঃ এক্সিডেন্ট হয়ছে,,,ছেলেটার অনেক অল্প বয়স,,

আহানঃ ও আচ্ছা,,

সাইমাঃ আহান চলো এক বার দেখে আসি,,যদি সাহায্য লাগে,(আহান সাইমার স্বামী)

আহান র সাইমা গাড়িটির সামনে যায়,,,, অনেক লোক ভিড় করায় সাইমা দেখতে পারছে না কে,,,,,

সাইমাঃ একটু সাইড দেন প্লিজ,,,

সাইমা গিয়ে দেখে আবির,,,,, সাইমা আবিরকে দেখে পুরো শকড হয়ে যায়,,,,

সাইমাঃ আবিরইইইই

সাইমার চিৎকার শুনে আহান সাইমার কাছে এসে বলে

আহানঃ তুমি চিনো

সাইমাঃ আহান এই টা আবির আমার ফ্রেন্ড,,,প্লিজ কিছু করো(কাঁদো কাঁদো গলায়)

আহানঃ কেউ প্লিজ উনাকে আমার গাড়িতে তুলে দেন,,,,

কিছু লোক আবির কে ধরে আহানের গাড়িতে তুলে দেয়,,,,সাইমা আবিরের মাথাটা নিজের কোলে রেখে কান্না করতে থাকে,,,,,,, আহান ড্রাইভ করছে র সাইমাকে শান্ত হতে বলছে,,,

আহানঃ সাইমা প্লিজ এই ভাবে কেঁদো না,,,ও ঠিক হয়ে যাবে,,,আমরা তাড়াতাড়ি হসপিটালে চলে আসবো,,,,

সাইমাঃ 😭😭😭😭😭😭আহান ড্রাইভ ফাস্ট প্লিজ

আহান সাইমার মন ঠিক করার জন্য জিজ্ঞেস করে

আহানঃ আচ্ছা সাইমা আবির তোমার কেমন ফ্রেন্ড,,

সাইমাঃ আমরা এক সাথে পড়ালেখা করেছি,,,,,,সব সময় ও আমার সাহায্য করতো সব কিছুতে,,,,,,কিন্তু বাকি পড়ালেখার জন্য ও বিদেশে চলে যায়,,র দেখা হয় নাই আমাদের,,,,,৷ যানো আহান আবির অনেক ভালো ছেলে,,,কখনো কারো ক্ষতি করতো না,,,,সব সময় সবার বিপদে এগিয়ে আসতো,,,,আজকে ওর কি অবস্থা,,,😢😢😭😭এতো বছর পর ওর সাথে দেখা কিন্তু এই ভাবে 😭😭😭

আহানঃ সাইমা প্লিজ,,, কান্না করো না তোমার ফ্রেন্ডের কিছু হবে না,,,,,

সাইমা আবিরের মাথায় নিজের ওড়না বেঁধে দেয়,,, র আবিরের মাথায় হাত রেখে কান্না করতে থাকে,,,,অনেক ক্ষন পর তারা হসপিটালে চলে আসে,,,,,আবিরকে ICU তে নিয়ে যাওয়া হয়,,,,,,,, সাইমা আবিরের বাসায় ফোন করে,,,র আবিরের কথা জানায়,,,,,

আবিরের এক্সিডেন্ট এর কথা শুনে তিথি পুরো থমকে যায়,,, ,,,,,র কিছু না ভেবে দূরাতে থাকে,,,,তিথির সব কিছু যেন এক মুহূর্তে শেষ হয়ে গেছে আবিরের এক্সিডেন্ট এর কথা শুনে,,,,,চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে কিন্তু তার পর ও তিথি দূরাতে থাকে,,,,,রাস্তায় এসে তিথি অনেক গাড়ি থামায় কিন্তু কোনো গাড়ি যাচ্ছে না,,,,অনেক কষ্টে একটা গাড়ি পায়,,,তিথির অনেক অস্তির লাগছে এক একটা সেকেন্ড যেন বছরে মতো লাগছে,,,,তিথি অজোর কান্না করছে,,,,

তিথিঃ চাচা একটু তাড়াতাড়ি চালান 😭😭😭

গাড়ি অনেক জোরে চালাছে,,কিন্তু তিথির কাছে মনে হচ্ছে অনেক আস্তে চালাচ্ছে,,,,,,অনেক ক্ষন পর গাড়ি হসপিটালে চলে আসে,,,,তিথি দূরে হসপিটালের ভিতরে যায় র একটা নার্সকে জিজ্ঞেস করে

তিথিঃ একটু আগে যে এক্সিডেন্ট হয়েছে,,,ক,,,,কথায়

নার্সঃ উনি তো ICU তে

তিথিঃ কোন দিকে

নার্সঃ ওই দিকে(হাতে এশারা করে)

তিথি দূরে ICU এর সামনে যায়,,,,,,সাইমা তিথিকে দেখে পুরো শকড,,,,,সাইমা বসা থেকে উঠে তিথির সামনে যায় তিথি ICU এর কেবিনের সামনে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে,,,, সাইমা পিছন থেকে তিথির ঘাড়ে হাত রেখে বলে

সাইমাঃ তিথি

তিথি কারো আওয়াজ পেয়ে ঘুরে দেখে সাইমা,,,সাইমাকে দেখে তিথিও রিতিমতে থমকে যায়,,,, সাইমা তিথিকে জিজ্ঞেস করে

সাইমাঃ তুমি এখানে????র আবিরকে তুমি চিনো???

তিথি অজোরে কান্না করে দেয়,,র সাইমাকে জড়িয়ে ধরে বলে

তিথিঃ সাইমা আপু😭😭😭

সাইমাঃ তিথি প্লিজ কান্না করো না,,,,আবির কে হয় তোমার???(তিথির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে)

তিথিঃ উনি আমার স্বামী😭😭😭😭

সাইমাঃ কি😱😱আবির তোমার স্বামী

তিথিঃ হু😭😭

সাইমাঃ তিথি একটু শান্ত হও দেখ আবির ঠিক হয়ে যাবে,,,,,প্লিজ কান্না করো না,,,,,

সাইমা আহানকে ইশারা করে পানি আনতে বলে,,,,,

আহান তিথির জন্য এক গ্লাস পানি নিয়ে আসে,,র তিথির হাতে দেয়,,,তিথি প্রথমে খেতে চায় না সাইমা অনেক জোর করায় তিথি খায়,,,,,,সবাই ICU রুমের সামনে বসে আছে,,,তিথি এক বার রুমের সামনে যাচ্ছে র এক বার বসছে,,,,,সাইমা ঠিক বুজতে পারছে যে তিথির মনের অবস্থা কেমন,,,,,,সাইমা তিথির হাত ধরে বলে

সাইমাঃ তিথি চিন্তা করো না,,,,,আবিরের কিছু হবে না,,,,তোমার আবির তোমার কাছে ফিরে আসবে,,,,

তিথি নিজেকে সামলাতে পারছে না কি ভাবে পারবে ভালোবাসার মানুষটি যে মৃত্যুর মুখে,,,,,,প্রায় তিন ঘন্টা পর ICU এর লাল বাতিটি বন্ধ হয়,,,,,ডাক্তারকে বের হতে দেখে সবাই ডাক্তারের সামনে যায়,,,,,

তিথিঃ ডাক্তার উনি কেমন আছে(কাঁপা কাঁপা গলায়)

ডাক্তারঃ আউট অফ ডেঞ্জার,,,,

তিথি এক বড় নিশ্বাস ফেলে র ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে

তিথিঃ আমি দেখা করতে পারি প্লিজ

ডাক্তারঃ দেখুন এখন না,,,,উনার সেন্স ফিরলে তখন।।।এখন উনাকে কেবিনে শিফট করা হবে,,,,

সাইমাঃ ওকে ডাক্তার,,,ধন্যবাদ

সাইমা তিথির হাত ধরে বলে

সাইমাঃ তিথি আবির ঠিক আছে,,,,,এই বার শান্ত হও,,,,

আবিরকে কেবিনে শিফট করা হয়ে গেছে,,,,,,তিথি অনেক কান্না করায় র অনেক জোর করায় ডাক্তার ওকে কেবিনে যেতে দেয়,,,,,তিথি আবিরের পাশে একটা টুল টেনে বসে,,,,তিথির চোখ বেয়ে পানি পরছে,,,,,,,,আবিরের হাতটি নিজের হাতে নিয়ে মুখের কাছে এনে কেঁদে দেয়,,,,

তিথিঃ আপনার কিছু হলে আমার কি হতো 😭😭😭আমি পারবো না আপনাকে ছেড়ে থাকতে,,,,,বড্ড বেশি ভালোবাসি আপনাকে,,,,,,

সাইমা পিছন থেকে সব শুনছে,,,,,র মুচকি একটা হাসি দিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে যায়,,

আহানঃ কি হলো চলে আসলে যে??

সাইমাঃ তিথিকে আবিরের পাশে থাকতে দিলাম,,,ওর সেন্স আসলে না হয় আমরা দেখা করবো এখন তিথি ও পাশে থাকুক,,,,

আহানঃ আচ্ছা তুমি ওকে কি ভাবে চিনো,,আবির তো তোমার ফ্রেন্ড কিন্তু তিথি,,,,,

সাইমাঃ তিথিকে আমি তিন বছর আগে এক দিন দেখেছি,,, অনেক ভালো মেয়ে,,,,ওই দিন আমি কখনো ভুলবো না,,,,,

সাইমা আহানকে সব বলে,,,,আহান অনেকটা রেগে বলে

আহানঃ ছিঃ একটা মানুষ এতো নিচে নামতে পারে???মেয়েটা কি না সহ্য করেছে,,,

সাইমাঃ হুম,,,ওই দিন থেকে শিহাবের সাথে আমি আমার ফ্রেন্ডশিপ শেষ করে দিয়েছি,,,,,,আমি ভাবতে ও পারি নাই যে আমার ফ্রেন্ড একটা মেয়ের এতো বড় ক্ষতি করতে চাইচ্ছে,,,

আহান র কিছু বলে না,,সাইমার হাত ধরে বলে

আহানঃ বাসায় যাবে না,,,সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে

সাইমাঃ আবিরের সেন্স ফিরে আসলে না হয় যাবো,,,র তিথিও তো একা,,,

আহানঃ সাইমা অনেক জার্নি করে এসেছি,,বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলে ভালো হয় র তিথি তো আছে,,আমরা তাড়াতাড়ি চলে আসবো র সবাই ও তো অপেক্ষা করছে,,

সাইমা র কিছু না বলে চলে যেতে লাগে আবার তিথির কাছে এসে বলে

সাইমাঃ তিথি আমরা এখন বাসায় যাচ্ছি একটু পর চলে আসবো,,,

তিথিঃ ওকে সাইমা আপু,,,,,

সাইমা র আহান চলে যায়,,,,তিথি আবিরের হাত ধরে বসে থাকে,,আবিরের দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে,,,,,

রাত হয়ে আসছে এখনো আবিরের সেন্স ফিরে নাই,,,,,,নার্স অনেক বার এসে তিথিকে বলে উঠে যেতে কিন্তু তিথি আবিরের হাত টা ছেড়ে উঠে না,,,,,,,অনেক ক্ষন পর আবিরের সেন্স ফিরে আসে,,,,,আবির চোখ খুলে দেখে তিথি তার হাত ধরে বসে আছে,,,,,, আবিরের সেন্স ফিরে আসতে দেখে তিথি দূরে ডাক্তারকে ডাকে,,,ডাক্তার এসে আবিরকে দেখে,,,,,

ডাক্তারঃ উনি ঠিক আছে মিসেস রহমান,,,,

আবির তিথির দিকে তাকিয়ে দেখে তিথির চোখ মুখ ফুলা,,,,,,তিথিকে দেখে বুজা যাচ্ছে মেয়েটা কতো কান্না করেছে,,,,হঠাৎ শিহাবের বলা কথা গুলো আবিরের মাথায় আসে র রাগে তিথির দিক থেকে মুখ সরিয়ে ফেলে,,,,আবিরের খুব রাগ লাগছে ওই কথা গুলো মনে পরে,,তার ইচ্ছে করছে তিথিকে জিজ্ঞেস করতে সব কি সত্যি,,,সত্যি কি তিথি শিহাবকে ভালোবাসে,,,,,আবিরের মাথায় অনেক কিছু ঘুরছে,,,,,

ডাক্তার তিথিকে কেবিন থেকে যেতে বললে তিথি চলে যায়,,,,,,

ডাক্তার আবিরকে বলে

ডাক্তারঃ আপনি অনেক ভাগ্যবান এমন বউ পেয়েছেন,,,,অনেক ভালোবাসে আপনাকে,,,

ডাক্তারের কথা শুনে আবির চমকে যায়

আবিরঃ মানে?

ডাক্তারঃ আপনার সেন্স না ফিরা পযন্ত উনি আপনার পাশে বসে ছিলো,,নার্স অনেক বলেছে কিন্তু আপনার হাতটা ছেড়ে উনি যায় নি,,,,উনাকে দেখে বুজা যায় যে উনি আপনাকে কতোটা ভালোবাসে,,,,,

আবিরের খুব খুশি লাগে ডাক্তারের কথা শুনে কিন্তু শিহাবের কথা মাথায় আসায় রাগ ও লাগছে,,, আবির চুপ করে আছে,,,,ডাক্তার চলে যাওয়ার পর তিথি কেবিনে এসে আবিরের পাশে বসে

তিথিঃ কেমন লাগছে আপনার এখন

আবিরঃ নিশ্চুপ,,,,,

তিথিঃ এই ভাবে কেউ গাড়ি চালায় যদি কিছু হয়ে যেতো 😠😠😡😡

আবিরঃ তোমার জন্য তো ভালো হতো,,,

তিথিঃ কি???জোরে বলেন

আবির রাগি চোখে তিথির দিকে তাকায়,,,আবির কিছু বলতে যাবে তার আগে সাইমা কেবিনের ভিতরে চলে আসে,,,,,আবির সাইমাকে দেখে অনেক টা চমকে যায়,,, তিথি উঠে যায় র সাইমা গিয়ে আবিরের পাশে বসে

আবিরঃ সাইমা তুই?

সাইমা অনেক রেগে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলে

সাইমাঃ এতো টা পর হয়ে গেছি আমি😡😡😡যে একটা কল ও দিতে পারলি না,,র তুই বিয়ে ও করেছিস😡😡হারামি এক বার ঠিক হয়ে নে তখন দেখবি তোকে উল্টা লটকিয়ে বাদরদের মতো পিঠাবো,,😡😡

আহানঃ 😂😂সাইমা এই সব বলার সময় এখন উফফ তুমি ও না,,,ওকে রেস্ট করতে দাও,,,

আবির আহানকে দেখে একটু মুচকি হেসে বলে

আবিরঃ শেষ মেশ বিয়েটা করে ফেললি,,

সাইমাঃ হুম তুই তো জানিস,,,,এই জন্য তো আমি লন্ডনে চলে গেছি,,,,,

আহান আবিরের কাছে এসে হ্যালো জানায়,,,, র সাইমাকে বলে

আহানঃ তোমরা কথা বলো আমি তিথিকে কেন্টিনে নিয়ে যাচ্ছি,,,তিথি চলো কিছু খাবে সকাল থেকে তো কিছু মুখে ও নাও নাই,,নার্স থেকে শুনলাম,,,,এখন চলো কিছু খেয়ে নিবে,,,,

তিথিঃ না ভাইয়া আমি খাবো না,,,,

সাইমাঃ তিথি যাও,,,র আমি ও একটু আবিরের সাথে কথা বলি,,,,,,

তিথি না চাইতে ও আহানের সাথে যায়,,,,সাইমা খেয়াল করছে আবির তিথির দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে ছিল,,,,,

সাইমাঃ কি রে তুই এতো রেগে তাকিয়ে আছিস কেন,,ওহ আচ্ছা তোর বউ কিছু খায়নি তাই😂

আবিরঃ তুই ওকে চিনলি কি ভাবে যে ও আমার বউ,,,

সাইমাঃ আরে ওকে তো আমি অনেক আগে থেকে জানি,,,,অনেক ভালো মেয়ে কিন্তু আজকে জানতে পারলাম ও তোর বউ,,,

আবিরঃ ও আচ্ছা,,,,

সাইমাঃ এক বার ঠিক হয়ে নে তখন বুজবি মজা,,,,,,তোকে আমি সত্যি অনেক মারবো 😡😡হারামি একটু বললিও না যে বিয়ে করছিস,,,

আবির একটু হেসে দেয় সাইমার কথায়,,,,,আবির র সাইমা অনেক কথা বলে,,,,ওই দিকে আহান তিথিকে জোর করে খাইয়ে দেয়,,,,তিথি না চাইতে ও খায়,,,,

চলবে………