বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 16

তিথি লাল বেনারসি শাড়ি পড়ে চুল গুলো খোপা করা,,মুখে একদম সাজ নাই শুধু হালকা লিপস্টিক,,,
তিথি আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু আবির অন্য দিকে তাকিয়ে আছে,,,
তিথিঃ কেন করছেন এমন???
আবিরঃ চুপচাপ গাড়িতে উঠো,,,,
তিথি গাড়িতে উঠে ড্রাইভিং সিটে বসে আবির অন্য দিকে তাকিয়ে আছে,,,
তিথিঃ প্লিজ আপনি একটি বার আমাকে বলুন এমন সিদ্ধান্ত কেন নিচ্ছেন কেন এমন করছেন,,,
আবিরঃ তোমাকে চুপ থাকতে বলেছি,,ঘ্যানঘ্যান একদম করবে না,,একটু পর তোমার বাবার অপেরশন শুরু হয়ে যাবে তো চুপ থাকো,,,
তিথি কিছু বলে না চুপ করে আছে,,,আবির তিথিকে নিয়ে কোর্টে আসে আগে থেকে সব কিছু ঠিক আছে,,,,,
আবির আর তিথিফ একটা কেবিনে বসে আছে,,উকিস সাহেব এসে আবিরকে সালাম জানায়
আবিরঃ তাড়াতাড়ি করুন যা করার,,,
উকিল কাবিননামা দেয় সেখানে আবির সাইন করে কিন্তু তিথি চুপ করে আছে
আবিরঃ সাইন করো
তিথি আবিরের দিকে তাকায় আবিরের চেহারায় যেন কেমন রাগের চাপ,,,,আবির যেন সে আগের আবির নাই তিথির কাছে আজ অনেক অচেনা লাগছে এই আবিরকে,,,
আবিরঃ তিথি সাইন করো,,,
তিথিঃ হুম,,,,

তিথি সাইন করে দেয়,,,চোখের এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে পেপারে,,,,তিথি এইভাবে বিয়ে করতে কখনো চায় নাই,,চেয়ে বাবা মা সবার দোয়ায় সবার ইচ্ছেতে কিন্তু আজ তার বিয়ে হইছে তাও এইভাবে,,,
উকিল সাহেবঃ আপনাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে,,,
এইদিকে তিথির বাবার অপেরশন হয় ভালো ভাবে,,তিথির মা তো অনেক খুশি যে হঠাৎ করে ডাক্তার এসে বলে অপেরশন করবে আর ভালো ভাবে অপেরশন হয়,,,কিন্তু তিথিকে সকাল থেকে দেখছে না
মাঃ এই মেয়েটা কই গেলো কে জানে??হয়তো বাপের অপেরশন এর জন্য টাকাড় ব্যবস্থা করতে গেছে কিন্তু সে তো জানে না যে তার বাবার অপেরশন হয়ে গেছে,,,এতো কল দিলাম ফোনটা পর্যন্ত ধরছে না কোথায় আছে কে জানে,,
এই দিকে
আবির ড্রাইভ করছে হঠাৎ ফোনে কল আসে রিসিভ করে কথা বলে ফোন রেখে বলে
আবিরঃ তোমার বাবার অপেরশন হয়ে গেছে আর উনি ঠিক আছে,,
কথাটা শুনে তিথি অনেক খুশি হয়ে যায়,,,আবিরের হাতে হাত রেখেই বলে
তিথিঃ প্লিজ আমাকে বাবার কাছে নিয়ে যান প্লিজ স্যার
আবির তিথির হাতটা ঝাপটা মেরে ছুড়ে ফেলে দেয়,,,
আবিরঃ আজ আমার হাতে হাত রেখছো এই ভুল যেন নেক্সট টাইম আর না হয়,,,,
আবিরের এমন কথা শুনে তিথি অনেক টা কষ্ট পায়,,,তিথি কিছু বলে না চুপচাপ বসে আছে আবিরের দিকে বারবার তাকাচ্ছে আজ অনেক টা অজানা লাগছে এই আবিরকে,,
কিছু ক্ষন এর মধ্যে আবির তিথিকে নিয়ে মেডিকেল আসে,,,তিথি দৌড়ে তার মায়ের কাছে যায় মাকে জড়িয়ে ধরে
তিথিঃ মামনি বাবা ঠিক আছে দেখলে আল্লাহ শুনেছে আমার বাবা ঠিক আছে মামনি,,,
মা তিথিকে একটু সরিয়ে অবাক দৃষ্টিতে তাকাতে থাকে,,,তিথি বউ সাজে দাঁড়িয়ে আছে
মাঃ তুই এই রকম সাজ দিয়ে কেন আছিস??
তিথিঃ মামনি আমি সব বলবো আগে বলো বাবার সাথে দেখা করেছো,,,
মাঃ চুপ একদম আগে বল তুই এইভাবে কেন?আর তোকে দেখে বুজা যাচ্ছে কিছু হয়েছে বল কি হয়েছে আর কই ছিলি এতো ক্ষন বল আমাকে
আবির ডাক্তার এর সাথে কথা বলে এসে দেখে তিথির মা তাকে জিজ্ঞেস করছে কই ছিলো,,,
আবিরঃ আপনার মেয়ে বিয়ে করতে গেছিলো আন্টি,,,
পিছন থেকে আবিরের এমন কথা শুনে তিথির মা অবাক হয়ে যায়,,তিথি আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে আবির তিথির মায়ের সামনে এসে বলে
আবিরঃ অনেক বারন করেছিলাম যে আজ বিয়ে না করতে তোমার বাবার অপেরশন হোক তারপর করিও কিন্তু একটা কথা শুনে নাই বলে আজ বিয়ে না করলে নাকি সে আত্নহত্যা করবে,,আন্টি কি করবো অই সময় বলো আর না পেরে বিয়ে করতে হইছে আমাকে,,,
আবির এইভাবে মিথ্যা বলবে তিথি ভাবতে ও পারে নাই,,,আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে তিথির মা কথাটা শুনে অনেক টা শকড হয় যে তার মেয়ে এমন কিছু করবে,,
আবিরঃ আমি জানি আন্টি আমার উপর হয়তো আপনার রাগ যে আমি কেন আপনাকে কিছু বলি নাই আসলে আন্টি তিনি আত্নহত্যা করবে শুনেই আমি ভয় পেয়ে গেছি তাই বাধ্য হয়ে সবাই কে না জানিয়ে বিয়ে করতে হইছে সরি আন্টি,,,,
তিথির মা তিথির কাছে গিয়ে তিথিকে থাপ্পড় মারতে থাকে,,,,কয়েকটা থাপ্পড় মারে তিথি নিচে পড়ে যায় মা কান্না করে দেয়
মাঃ এই দিনের জন্য তোকে বড় করেছিলাম,,, মানুষটা মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে আর তার কলিজার টুকরা মেয়েটা মেয়ে করে এসেছে তাও একটা ছেলেকে এইভাবে বাধ্য করে,,,,ছেলেটাকে এইভাবে সবার নজরে ছোট করে কেন বিয়ে করলি তুই
তিথি কান্না করতে থাকে কান্নায় যেন সে কিছু দেখছে না,৷ আবিরের দিকে তাকিয়ে দেখে আবির দাঁড়িয়ে আছে মুখে কেমন যেন হাসি যা দেখে তিথির খুব রাগ লাগছে,,,,,মা তিথির হাত শক্ত করে ধরে বলে
মাঃতুই আমার তিথি তো??? কেন করলি এমন কেন তিথি কেন?
তিথিঃ মা,,,,,মামনি প্লিজ আ,,মার কথাটা একটি বার শুনো প্লিজ
মাঃ মরে গেছে তোর মামনি তোর বাবা ভাই সব, কেউ না তুই আমাদের কেউ না যে মেয়ে নিজের বাবাকে মরতে দেখে ও বিয়ের জন্য এইভাবে পাগল হয়ে যায় তার সাথে আমাদের সম্পর্ক নাই,,,তুই এমন টা করবি কখনো ভাবতে পারি নাই কখনো না
তিথি তার মাকে অনেক বুজাতে চেস্টা করে কিন্তু তার মা একটা কথা ও শুনছে মা,,,,মা অইখান থেকে চলে যায় তিথি এখনও বসে আছে,,,
আবির তিথির কাছে এসে বলে
আবিরঃ নিজের নতুন বাড়ি যাবে উঠো,,,
তিথি রেগে উঠে আবিরকে জিজ্ঞেস করে
তিথিঃ কেন করেছেন এমন?? মিথ্যা বলেছেন কেন?কেন আমাকে আমার মায়ের নজরে নিচে নামালেন কেন করলেন???
আবিরঃ তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি বাধ্য নয়,,,,
আবির তিথিকে অইখানে রেখে চলে যায় তিহির মায়ের কাছে,,তিথির মাকে মেডিকেল এর ক্যান্টিনে নিয়ে যায় হাঁটুভাজ করে বসে তিথির মায়ের সামনে
আবিরঃ আপনার ছেলে আজ থেকে আমি,,আপনার আর পুরো ফ্যামিলি এর দায়িত্ব আমার উপর,, আমি জানি তিথি যা করেছে ঠিক করে নাই কিন্তু এতে ভালো হয়েছে,,আমি তিথিকে পছন্দ করি আমি চেয়েছি আপনার ফ্যামিলি এর একজন হতে প্লিজ আন্টি ওর উপর রাগ করে থাকবেন না,,,ছেলেমানুষি বেশি ওর মাঝে তা তো জানেন,,,
মাঃ কিন্তু ও যা করেছে এর পর ওর বাবাকে কিভাবে বলবো আমি,,,
আবিরঃ আমি আছি তো সব ঠিক হয়ে যাবে,,
তিথির মাকে আবির শান্তনা দেয়,,,তিথির মায়ের মন জয় করে নেয়,,এইদিকে তিথি অনেক টা ভেঙ্গে পড়ে আবিরের এমন রুপ দেখে তার মায়ের রাগ দেখে আবির তিথির কাছে এসে বলে
আবিরঃ সন্ধ্যা হয়ে আসবে এখন তাড়াতাড়ি চলো আমাদের যেতে হবে,,,
তিথিঃ আমি আপনার সাথে কোথাও যাবো না, আপনি একটা মিথ্যাবাদী বেইমান
আবিরঃ তুমি আমার সাথে যাবে কিনা জিজ্ঞেস করি নাই আমি,,,,ভুলে যাইও না কি কথা হয়েছে আমাদের মধ্যে,,,তুমি আমার কথা মত চলবে তো তোমার ফ্যামিলি এখানে ঠিক থাকবে তো কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ চলো,,,,,
তিথিঃ আপনি অনেক খারাপ অনেক
আবিরঃ হাঁটো,,,,

তিথি তার মাকে একটি বার দেখার অনেক চেস্টা করে কিন্তু পারে না বাবাকে দূর থেকে এক নজর দেখে আবিরের সাথে যায়,,,,,
আবির তিথিকে আবিরের বাড়িতে নিয়ে আসে,,,
ড্রইংরুমে মা বসে চা খাচ্ছে বাবা টিভি দেখছে সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত,৷ হুট করে আবির আসায় সবাই অবাক আবির একা আসে নাই নিয়ে এসেছে তিথিকে তাও বউ সাজে,,,,তিথিকে বউ সাজে দেখে মা এগিয়ে আসে,,
মাঃ তিথি তুমি???
মা তিথিকে জড়িয়ে ধরে,,অনেক টা খুশি হয়ে যায় তিথিকে দেখে,,, আবির চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে মা আবিরের দিকে তাকিয়ে আবার তিথির দিকে তাকিয়ে কিছু টা বুজতে পাতে তবু পুরো বুজার জন্য জিজ্ঞেস করে
মাঃ আবির তুই বিয়ে করেছিস?
আবিরঃ হ্যাঁ বিয়ে করেছি,,,
বাবাঃ মানে টা কি??তোর বোনের সাথে দুইদিন আগে কি হয়েছে ভুলে গেলি??সব ভুলিয়ে বিয়ে করে বউ নিয়ে এসে হাজির হয়ে আবার বুক ফুলিয়ে বলছিস বিয়ে করেছিস,,,,
আবিরঃ বিয়ে করেছি পাপ নয় যে এইভাবে চিল্লাচ্ছো,,,আর সমস্যা কোথায় বিয়ে করলে আজ না হয় কাল করতে তো হতো ব্যস আজ করে ফেলছি,,,,
আবির প্রচুর গরম হয়ে যায় অনেক টা বলে অইখান থেকে চলে যায়,,পুরো ফ্যামিলি থমকে যায় আনিরের এমন রুপ দেখে,,আবির এইভাবে কখনো কথা বলে নাই জানে সবাই আবির রাগী কিন্তু এতো টা রেগে যাবে ভাবে নাই,,
মাঃ প্লিজ তুমি আর কিছু বলিও না(আবিরের বাবাকে)ছেলেটাকে আর কিছু না বলে নতুন বউকে ওয়েলকাম তো করতে হবে,,,
তিথি তার চোখের পানি ফেলছে আবিরের মা আর পুরো ফ্যামিলি তিথিকে মেনে নেয়,,,মা তিথিকে নিয়ে আবিরের রুমে যায় কিন্তু অইখানে আবির নাই
মাঃ আমি জানি না হুট করে এমন কি হলো যে আবির তোমাকে বিয়ে করে এনেছে কিন্তু আমি অনেক হেপ্পি কারণ আমি তোমাকে প্রথম দিন থেকে আমার আবিরের বউ করতে চেয়েছি,,,প্রথম যেদিন বউ সাজে দেখলাম আবিরের পাশে অইদিন অনেক ভালো লেগেছে দুইজনকে চেয়েছি আমার ছেলের বউ তুমি,,, যখন চলে গেলে খুব কষ্ট পেলাম ভাবতে পারি নাই যে আবার তুমি এই বাড়িতে আসবে তাও সত্যি সত্যি এই বাড়ির বউ হয়ে,,,
তিথি আবিরের মায়ের কথা গুলো শুনছে কিছু বলছে না,,,তিথির চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
মাঃ একদম কাঁদবে না ওকে,,,আমার ছেলের বউ এইভাবে কাঁদলে কেমন লাগে হুম,,,আর তোমাকে হাসলে বেশি সুন্দর লাগে,,,
আবির ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এসে দেখে মা আর তিথি তার রুমে তাদের দেখে অবাক হয় না জানে তিথিকে তার রুমে নিয়ে আসবে,,,,
মাঃ আবির এইদিকে আয়,,
মায়ের ডাক শুনে আবির মায়ের কাছে এসে বসে
মাঃ ওকে সব সময় সুখে রাখিস,,,কখনো কষ্ট দিস না
তিথি তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে আর আবির তার মায়ের দিকে,,,
আবিরঃসরি মা সবাই কে না বলে এমন কাজ করলাম,,
মাঃ যা করেছিস ভালো,,,আমি রেগে নেই তোর উপর আমি সব সময় চেয়েছি তিথিকে বউ করতে তোর আর তুই আজ আমার সে ইচ্ছে পূরন করলি কিভাবে রেগে থাকি বল,,,

আবির কিছু বলে না মা আবির তিথিকে দোয়া করে চলে চলে যায়,,,আবির উঠে রুম থেকে যেতে লাগে তিথি আবিরের সামনে এসে দাঁড়ায়
তিথিঃ আপনি এইসব কেন করছেন আসলে??চাচ্ছেন টা কি আপনি? কেন সবাই কে এইভাবে কষ্ট দিচ্ছেন কেন আমাকে ছোট করছেন আমার ফ্যামিলি এর কাছে,,,
আবিরঃ ভালো লাগছে আমার তাই
তিথিঃ মানে?
আবির তিথির হাত শক্ত করে ধরে তিথিকে দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে রাগী সুরে বলে উঠে
আবিরঃ তোমাকে কষ্টে দেখে আমি শান্তি পাচ্ছি,,,,তোমাকে ছোট হতে দেখে আমার ভালো লাগছে,,তোমাকে এইভাবে দেখে আমার অনেক ভালো লাগছে বুজলে তুমি,,,,,
আবির তিথিকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়,,রাগে রুম থেকে বের হয়ে যায় আবির,,,,তিথি মেঝেতে বসে কান্না করতে থাকে,,ভাবতে থাকে এক দিন আগে তো সব টবিক ছিলো হঠাৎ কি থেকে কি হয়ে গেলো
চলবে,,,,,,,,,