বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড Season 2 !! Part- 29

তিথিঃ এখনো তিথি কি তা চিনে নাই এই হারামি😡😡আমার জায়গায় অন্য কাউকে দিবে😡😡দেওয়াচ্ছি,,,এমন মজা বোজাব এই হারামি আর তার ওই সুন্দরী জিএফকে যে হারে হারে টের পাবে তিথি কি হুম,,,(নাক হাত দিয়ে একটা ঘষা দিয়ে বলে উঠে,,)
তিথি অনেক ক্ষন বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলো,,,,চোখ দুটো জল জল করছে এই টা ভেবে যে আবির তার থেকে অন্য কাউকে ভালোবাসে আর তারে বিয়ে ও করতে চেয়েছে,,৷ খুব কষ্ট হচ্ছে,,,,চোখ দুটোর সাথে সাথে পুরো মুখটা লাল টমেটো হয়ে গেছে,,,,
আবিরদের পুরো বাড়ি নতুন বউয়ের মতো সাজিয়েছে পুরো বাড়ি এতো সুন্দর লাগছে যে বলার বাহিরে,,,,চারপাশে লাইট আর লাইট,,,ফুল দিয়ে সাজানো,,,বাড়ি ভর্তি মেহমান ও চলে এসেছে,,,বিয়ের আওয়াজ যেন রহমান বাড়িতে এক নতুন খুশির মেলা করেছে,,,
আবিরের মা সে ক্ষন থেকে তিথিকে খুঁজছে খাবার খাওয়ার জন্য,,,মেয়েটা যে আবিরের উপর বড্ড অভিমান করে কিছু মুখেও দেয় নাই,,,,আবিরের মা রুমে গিয়ে দেখে তিথি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে,,,পিছন থেকে তিথির ঘাড়ে হাত রেখে বলে
আবিরের মাঃ কিরে এই খানে এই ভাবে দাঁড়িয়ে আছিস যে,,যার কিছু তো খাইলি ও না
তিথি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে,,,,তিথি মুখ টা হালকা উঁচু করে দেখে চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে,,,,আবিরের মা তিথির চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
আবিরের মাঃ কি হয়েছে কেন কাঁদছিস,,,দেখ তিথি তোর চোখে পানি দেখলে আমার খুব কষ্ট হয় প্লিজ মা কান্না করিস না,,,,,
তিথি আবিরের মাকে জড়িয়ে ধরে আর ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে,,,আবির মা তিথিকে শান্তনা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে,,,,,তিথির কপালে চুমু দিয়ে খেতে নিয়ে যায়,,,তিথিকে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছে,,,,তিথি বারবার দরজার দিকে তাকাচ্ছে,,,আবিরের মা বুজতে পেরে একটু মুচকি হেসে বলে
আবিরের মাঃ তাড়াতাড়ি চলে আসবে টেনশন নিস না,,,,
তিথি মাথা নিচু করে চুপচাপ খেয়ে নেয়,,,,পানির গ্লাস হাতে নিয়ে খাওয়া শুরু করছে তখন আবিরের মা দূরে যায় দরজার সামনে,,,দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে এক বয়স্ক মহিলা আর তার সাথে ২ টা মহিলা আর ২ জন ছেলে আর কিউট একটা পিচ্চি,,,,,তিথি পানির গ্লাসটা টেবিলে রেখে দরজার সামনে যায়,,,,আবিরের মা তিথিকে ইশারা করে বলে
আবিরের মাঃ তিথিফ এনি হচ্ছে তোমার নানি মা,,আর এনি হচ্ছে তোমার বড় মামি আর ছোট মামি,,,,
তিথি গিয়ে নানি মাকে সালাম করে,,,নানি মা তিথির মুখখানি তুলে ধরে বলে
নানি মাঃ মাশাল্লাহ😍আবির রে তুই তো পরী নিয়ে এসেছিস
আবিরঃ কিন্তু জানু তুমি ও তো পরী আমার পরী,,ইশ যদি ওই বুইড়া তোমায় বিয়া না করতো তাহলে আমি করে নিতাম😁😛😛
নানি মাঃ যা ফাজিল সব সময় মজা
তিথি এতো ক্ষনে বুজতে পেরেছে যে তখন আবির তার আসল জিএফ কাকে বুজাইছে,,,,তিথি আবিরের দিকে তাকায় আবির মুচকি হেসে নানি মাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ জানো নানি মা এই পরীকে খুঁজতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে,,,,এই পরীকে যে শুধু আমার জন্য আল্লাহ পাঠিয়েছে,,,
বড় মামিঃ মাশাল্লাহ আবির তোর পছন্দ আছে বলতে হবে,,সত্যি তো এই পরী যে শুধু আমাদের রাজকুমার এর জন্য,,,,
সবার কথা শুনে তিথি প্রচন্ড লজ্জা পায়,,,লজ্জায় তার গাল দুটো পুরো টমেটো হয়ে গেছে,,,,
সবাই এক সাথে সোফায় বসে বসে কথা বলছে নানি তিথিকে নিজের পাশে বসিয়ে হাতে এক জোরা বালা পড়িয়ে দেয়,,,,,তিথির খুব ভালো লাগছে যে সবাই তাকে খুব সহজে আপন করে,,,সবাই খাওয়া দাওয়া করে রেস্ট নিচ্ছে,,,তিথি নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে যায়,,,আবির তিথির রুমে এসে পা গুছিয়ে বিছানায় বসে থাকে,,,,আবির মুচকি হেসে হেসে তিথির সে রাগান্ত চেহারাটি মনে করছে,,,,,মেয়েটি যে তাকে বড্ড ভালোবাসে তা আবির খুব ভালো করে জানে,,,,,আবির ও যে এই পাগলীকে খুব বেশি ভালোবাসে,,,
তিথি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে মুখ মুছতে মুছতে বারান্দায় চলে যায় আবিরকে সে দেখেও নাই,,,আবির তো পুরো অবাক যে তিথি তাকে একটু ও দেখে নাই আর না দেখে বারান্দায় চলে গেলো,,,,আবির ও বারান্দায় যায় গিয়ে দেখে তিথি বাহিরে তাকিয়ে আছে,,,,আবির পিছনে থেকে তিথিকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ কি ভাবছেন ম্যাডাম???
তিথিঃ সবাই অনেক ভালো,,,,আমাকে খুব সহজে আপন করে নিচ্ছে,,
আবিরঃ কারণ তুমি আপন করে নেওয়ার মতো একজন,,,তুমি যে আমার তোতাপাখি,,,আর আমার তোতাপাখিকে কেউ কেন আপন করবে না,,,,
তিথিঃ আপনার আসল জিএফ তাহলে নানি মা???
আবিরঃ😁😁😁😁😂😂
তিথিঃ কি হলো হাসছেন যে??
আবির; হ্যাঁ,,ছোট থেকে নানিকে আমি জানু ডাকি,,,তাকে সব সময় আমি বলতাম যে তাকে আমি বিয়ে করবো নানি আমার জান,,,আমাকে খুব ভালোবাসে,,,আর এখন তো তোমাকে ও
তিথিঃ শুনেন?
আবিরঃ জ্বি বলেন ম্যাডাম??
তিথিঃ ভালোবাসি খুব ভালোবাসি
আবির তিথিকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তিথির ঘাড়ে নিজের তার থুতনি রেখে বলে
আবিরঃ আমিও যে আমার পাগলীকে খুব ভালোবাসি,,,তার দুষ্টুমি তার পাগলী তার আজগুবি সব কথাকে ভালোবাসি,,,,আর তার রাগকে তো আরো বেশু ভালোবাসি কারণ যখন আমার তোতাপাখি রাগ করে তখন তাকে খুবই কিউট লাগে,,,তার সে লাজুক মাখা চেহারা তো আমার খুব প্রিয়,,
তিথি প্রচন্ড লজ্জা পায় আবিরের মুখে এমন কথা গুলো শুনে,,,,,
আবিরঃ কালকে আমাদের engagement,,, জানো ভাবতে ও কতো আনন্দ লাগছে এইটা ভেবে যে কালকে তুমি আমার নামে রিং পড়বে আর আমি তোমার,,,,,
তিথি মুচকি হেসে নিজের বাম হাতটি আবিরের সামনে ধরে,,,
আবিরঃ কি??

তিথিঃ আপনার নামের রিং তো আমি কবে পড়ে ফেলছি,,,,এই রিং টা আমার জীবনের সেরা গিফট,,,এই টা আমাদের ভালোবাসার প্রথম অংশ,,,,, আজও মনে পড়ে সে রাত বছরের প্রথম রাত যখন আপনি আমাকে এই রিং টা পড়িয়ে বলছেন যে আপনি আমায় ভালোবাসেন,,,,যানেন ওই মুহূর্ত আমার জীনের সেরা মুহূর্ত ছিলো,,,,ভালোবাসা কি আমি জানি না কিন্তু আপনি আমার জীবনে আসার পর জেনেছি যে ভালোবাসা মানে আপনি,,,,ভালোবাসা মানে এই সুন্দর পরিবার,,,,আমি আপনার ভালোবাসাকে খুব ভালোবাসি,,,,,
তিথি কথা গুলো বলার সময় তার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে,,,,আবির তিথির চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
আবিরঃ তোমাকে কতো বার মানা করেছি যে আমার সামনে একদম কান্না করবে না,,,,তোমার চোখের পানি আমি একটু সহ্য করতে পারি না,,,,তোমার চোখের এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লে আমার বুকটা ছিড়ে যায় তিথি,,,প্লিজ আর কখনো কান্না করবে না,,,,,ওকে
তিথি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে,,,,আবির তিথিকে জড়িয়ে ধরে কিছু ক্ষন থাকে,,,,
পরের দিন,,,,
আজকে আবির আর তিথির engagement,,,,,
পুরো বাড়িকে অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে,,,বাড়ির সব মানুষ ব্যস্ত,,,,,,আবির তো আরো বেশি,,,কারণ সব কাজিন আর ফ্রেন্ডরা তাকে ঘিরে ধরেছে,,,,তিথি সকাল থেকে আবিরের নানির সাথে,,,বেচারা আবির নিজের হবু বউকে এক নজর ও দেখতে পারলো না,,,,
আবিরঃ রাইশা প্লিজ এক বার তিথির সাথে দেখাকরতে দে,,তুই তো আমার কলিজা বোন তাই না
রাইশাঃ পাম অন্য কাউকে মারিস আমাকে না,,,নানি স্পষ্ট ভাবে বলে দিচ্ছে যে আজকে তোর সাথে তিথির দেখা যাতে না হয়,,,,এক বারে রাতে দেখবি,,,,,তোর তিথিকে😂😂😂
আবিরঃ খুব মজা লাগছে তোদের তাই না😡😡😡
আকাশঃ লাগবে না কেন ভাই😂😂😂
আবিরঃ তোরা😡😡😡😡
বৃষ্টিঃ এই ভাইয়া একদম চিন্তা করিস না,,, আজকে ভাবিকে যখন দেখবি তখন সারাদিনের না দেখা মিটে যাবে😁😁
আবিরঃ তোরা আসলে😡😡😡😡😡
আবির রেগে সেখান থেকে চলে যায়,,,সবাই এক সাথে হেসে উঠে,,,
সারাদিন আবির তিথির সাথে একটু ও দেখা করতে পারে নাই,,,
সন্ধ্যা হয়ে আসছে,,,সবাই রেডি হয়ে হলরুমে চলে আসে,,সব মেয়েরা সাদা গাউন আর সব ছেলেরা সাদা কোট,,,,পুরো বাড়ি সাদা ফুলে সাজানো হয়েছে,,,,,
আবির রেডি হয়ে যখন নিচে নেমে আসলো সবাই হা করে তাকিয়ে আছে কারণ আমিকে কি না হ্যান্ডসাম লাগছে,,,,,আবিরের মা আবিরের সামনে এসে আবিরের কপালে চুমু দিয়ে বলে

আবিরের মাঃ মাশাল্লাহ আজকে আমার বাবাকে খুবই সুন্দর লাগছে,,,,পুরো রাজকুমার
নানিঃ দেখতে হবে তো আর বিএফ
সবাই এক সাথে হেসে উঠে,,,আবির নানির কাছে গিয়ে নানিকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ ভাবছি আজকে তোমাকে রিং পড়াবো😛
নানিঃ যখন তোর পরীকে দেখবি তখন এই বুড়ি জিএফকে ভুলে যাবি বুজলি বদমাশ
আবিরঃ আরে তুমি আমার প্রথম জিএফ ছিলে আর সারাজীবন থাকবে,,,,
আবিরের মাঃ মেহমান সব চলে আসছে এখন চুপ কর আর রাইশা আর বৃষ্টি যা তিথিকে নিয়ে আয়,,,
বৃষ্টিঃ হ্যাঁ মা যাচ্ছি
রাইশা আর বৃষ্টি গিয়ে তিথিকে নিয়ে আসে,,তিথি যখন সিড়ি দিয়ে নিচে নামছে তখন সব লাইট অফ হয়ে যায় আর একটা বড় লাইট তিথির মাথার উপর জ্বলে,,,লাইটের আলোতে তিথিকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে,,,,সাদা গাউন,,সাথে মিলিয়ে সেট,,,চুল গুলো কাল করা,,,কানের এক পাশে সাদা গোলাপ,,,তিথির সে মায়াবী চেহারা যেন আরো বেশি মায়াবী লাগছে,,,,আবির তো চোখেই সরাতে পারছে না,,,আজকে তার তোতাপাখিকে যে পুরো সাদা পরী লাগছে,,,,
তিথিকে আবিরের পাশে এনে দাঁড় করায়,,,আবির তো হা করে তাকিয়ে আছে এখনও তিথির উপর,,,সারাদিনের অপেক্ষার পরে তার মায়াবতীকে দেখেছে,,চোখ যেন সরার নামেই নাই,,,নানি আবিরকে চিমটি দিয়ে বলে
নানিঃ বলে ছিলাম না তোর পরীকে দেখে সবাইকে ভুলে যাবি😂😅
রাইশাঃ যে ভাবে হা করে আছিস ভাই আমি তো ভাবছি কয়তা মশা তোর মুখে ঢুকেছে😅😂
সবাই রাইশার কথা শুনে হেসে দেয়,,,,

অনেক মজার পর এসেছে রিং পড়ানোর সময়,,,,আবির তিথির হাতটা খুব যত্নে ধরে বাম হাতের আঙুলে পড়িয়ে দেয়,,,,,তিথি আবিরের ডান হাতে রিং পড়িয়ে দেয়,,সবাই এক সাথে হাত তালি দেয়,,,হৈ চৈ সব মেতে উঠে আবির আর তিথি engagement এ,,,,সবাই খুব মজা করছে,,,,,,,
শিহাব একটা ফুলের বুকি নিয়ে আবির আর তিথির সামনে গিয়ে ফুল এগিয়ে দিয়ে বলে
শিহাবঃ অনেক শুভেচ্ছা তোমাদের নতুনতুন জীবনের জন্য,,,,