বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 12

আবিরঃ কাল তোমার কি হবে তুমি নিজে ও জানো না তিথি,,,আমার সাথে মিথ্যা বলার পরিনাম কত ভয়ংকর হবে কাল তুমি বুজবে,,,
তিথি মনের আনন্দে দিন কাটায়,,,এইদিকে আবিরের রাগ যেন অনেক গুন বেড়ে গেছিলো এই ভেবে যে তিথি তাকে মিথ্যা বলেছে,,,
তারপর এর দিন,,,
তিথি আজ সকাল সকাল অফিসে এসে যায়,, নিজের সব কাজ গুলো খুব মন দিয়ে করে যাতে আবির কিছু বলতে না পারে,,,
অনেক সময় হয়ে যায় আবির এখনও অফিসে আসে নাই,,,তিথির কেমন যেন লাগলো যে আজ আবির অফিসে সঠিক সময়ে আসে নাই,,,,তিথি মেনেজার এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে
তিথিঃ ম্যানেজার স্যার আজ আবির স্যার আসে নাই অফিসে কেন?
মেনেজারঃ আবির স্যার এর অফিস তার ইচ্ছে আসলে আসবে না আসলে নাই আপনার কাজ করার আছে করুন,,,,
তিথিঃ সোজা ভাবে উত্তর দিতে কি মুখ বাঁকা হয়ে যায়,,,
মেনেজারঃ আপনার কাজ আপনি করুন তো যান,,,স্যার আসলে আসবে উনার ইচ্ছে আপনি আপনার কাজ করুন,,,,
তিথি নিজের টেবিলে যায়,,আমান তার কেবিন থেকে বের হয়ে দেখে তিথি গাল ফুলিয়ে বসে আছে,,
আমানঃ কি ব্যাপার এতো মন দিয়ে কি ভাবা হচ্ছে??
তিথিঃ ওহ আমান তুমি,,,

আমানঃ কেন অন্য কাউকে বুজি আশা করছিলে?
তিথিঃ আরে দূর আমি ভেবেছিলাম আবির স্যার
আমানঃ আরে বাহা আজকাল দেখি আবির কে ও ভাবো,,,
তিথিঃ হাহা আমার বয়ে গেছে যে আমি অই বজ্জাত কে ভাববো হুস,,,
আমানঃ তাহলে কি ভাবছিলে?
তিথিঃ আজ অই বজ্জাত অফিসে আসে নাই কেন??
আমানঃ অহ তাহলে মিস করছিলে?
তিথিঃ আমান চুপ থাকো তো আমি কেন তাকে মিস করবো আজিব,,,
আমানঃ হাহা বুজছি,,আজ আবিরের একটা মিটিং ছিলো এসে যাবে একটু পরে অফিসে লেটে আসবে আমাকে বলেছে,,
তিথিঃ অহ আচ্ছা
আমানঃ আহারে আমাদের কেউ মিস করে না,,আফসোস
তিথিঃ আপনার ডাক্তার সাহেবাকে কি বলবো যে আপনি আবার অন্য কারো মিস এর জন্য আফসোস করছেন হুম
আমানঃ এই না না তুমি তো বড্ড ফাজিল মেয়ে দেখি,,,
আবির অফিসে এসে দেখে আমান আর তিথি কথা বলছে এক সাথে হেসেহেসে,,আবিরের কাছে খুব বিরক্তি লাগে আবির আমান আর তিথির সামনে এসে বলে
আবিরঃ আমান আজ বিকালে যে মিটিং আছে অইটা তুই করে নিস,,এখন বের হয়ে যা অফিস থেকে তাহলে মিটিং টা সময় মত করতে পারবি,,,
আমানঃ ওকে আমি আসি তাহলে,,,
আবিরঃ হুম,,,
আমান চলে যায় অই খান থেকে,,তিথি আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে হা করে,,
আবিরঃ আমার কেবিনে আসো
তিথিঃ আমি???

আবিরঃ না তোমার ভুঁত,,,
তিথিঃ কিন্তু আমি তো মরি নাই যে আমার ভুঁত হবে,,,
আবিরঃ বেশি বকবক না করে আমার কেবিনে আসো,,,
আবির তার কেবিনে চলে যায় তিথি ও আবিরের পিছনে পিছনে যায়,,,,আবির তিথির দিকে এগিয়ে এসে বলে
আবিরঃ কাল অফিসে আসো নাই কেন?
তিথি কিছু টা সাহস নিয়ে বলে
তিথিঃ আ,,সলে আমি অসুস্থ ছিলাম তাই,,,
আবিরঃ কি অসুস্থ?
তিথিঃ গা জ্বর ছিলো প্রচুর এতো যে বলার বাহিরে,,,
আবিরঃ ওহ রেলি??এতো জ্বর ছিলো?
তিথিঃ হ্যাঁ স্যার আর বলিয়েন না,,,
আবিরঃ তাহলে ডাক্তার এর কাছে বুজি অবশ্যই গেলে না হলে এক দিনে এতো সুস্থ হয়ে গেলা,,,
তিথিঃ হ্যাঁ হ্যাঁ গিয়েছিলাম তো,,, কত গুলো ওষুধ দিয়েছিলো,উফফফ
আবিরঃ ডাক্তার এর নাম্বার দাও আমিও যাবো অই ডাক্তার এর কাছে যে একদিনে এতো সুস্থ বানিয়ে দিতে পারে,,,
আবিরের কথা শুনে তিথি পুরো ভয় পেয়ে যায়,,আবির কথার মধ্যে পিছিয়ে তিথিকে ভয় দেখাচ্ছে ভয়ে তো তিথির কলিজা শুকিয়ে গেছে,,,
আবির তিথির অনেক টা কাছে আসে,,তিথির হাতের বাহু দুটো শক্ত করে চেপে ধরে অনেক রাগী সুরে বলে উঠে
আবিরঃ মিথ্যা কথা আমি একদম পছন্দ করি না,,,আমার সাথে মিথ্যা কথা বলার আগে মানুষ অনেক বার ভেবে নেয় কারণ আমি তার মিথ্যা ধরলে তার এমন অবস্থা করি যে সে আজীবন মনে রাখবে আবির রহমান এর সাথে মিথ্যা বলার শাস্তি কেমন,,,
তিথিঃ স্যার আমার হাতে লাগছে প্লিজ ছাড়ুন,,,(চোখে পানি এসে যায়)
আবির তিথির হাতটি আরো শক্ত করে ধরে বলে
আবিরঃ তোমার ডাক্তার বুজি রেস্টুরেন্টে এসেছিলো তাই না?

তিথি আবিরের দিকে তাকায় আবির তিথির বাহু দুটো আরো শক্ত করে চেপে ধরে,,,
তিথিঃ স্যার সরি,,আসলে আমার ছোট ভাইয়ের কাল জন্মদিন ছিলো তাই তাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গেলাম সরি স্যার আর কখনো এমন হবে না
আবির যেন আরো রেগে যায় কথাটা শুনে,,,
আবিরঃ মিথ্যা বলার লিমিট আছে ওকে,,,
আবির তিথিকে একটা ধাক্কা দিয়ে সরে যায়,,ধাক্কা খেয়েই তিথি নিচে পড়ে যায়,,উঠে বসে হাতে প্রচুর ব্যাথা করছে চোখের পানি যেন থামছে না,,,আবির অনেক রাগী সুরে বলে উঠে
আবিরঃ চোখ মুছে আমার সাথে চলো একটা মিটিং আছে,,,
তিথি চোখ মুছে নেয়,,,দাঁড়িয়ে আবিরের সামনে বলে উঠে
তিথিঃ স্যার আমি গিয়ে কি করবো???
আবিরঃ তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কি করবে,,চুপচাপ চলো
আবির তার ফোন টা নিয়ে বের হয়ে যায় তিথি ও আবিরের পিছনে পিছনে যায়,,,আবির ড্রাইভিং সিটে বসে তিথি পিছনে বসতে যাবে আবির রাগী লুক দিয়ে বলে
আবিরঃ আমি কি তোমার ড্রাইভার নাকি যে পিছনে বসতেছো??আগে এসে বসো
তিথি হনহনিয়ে এসে বসে,,আবির ড্রাইভ করছে আর তিথি অনেক গভীর চিন্তায় আছে
তিথিঃ এই বজ্জাত যদি আমাকে মেরে কোথাও ফেলে দেয় তাহলে আমার কি হবে,,ওহ তিথি কি হবে তোর???
আবিরঃ কিছু বললে?
তিথিঃ না তো আমি কেন বলবো কিছু তাও আবার আপনার সামনে হু
আবিরঃ হুম বেটার,,,
আবির গাড়ি থেকে নেমে তিথিকে বলে
আবিরঃ পিছনের সিটে একটা ছাতা রাখা আছে অইটা নাও,,,
তিথি ছাতা টা নিয়ে বের হয় আর আবিরকে দেয়
আবিরঃ আমাকে না দিয়ে খুলে দাঁড়াও
তিথি আবিরের সামনে ছাতাটা খুলার চেস্টা করে কিছুতে খুলতে পারছে না আবির হাত থেকে ছাতা ঝাপটা মেরে খুলে তিথিকে দেয়
আবিরঃ এই ছাতা আমার মাথার উপর ধরে রাখবে যত ক্ষন না আমি বলবো ততক্ষন পর্যন্ত ওকে,,,
তিথিঃ হেএএএএএ

আবিরঃ কি সমস্যা???
তিথিঃনা না কিছু না,,,(হে আল্লাহ এমন বজ্জাত এর পাল্লায় কেন আমার মত মাসুম মেয়েকে ফেললে))
আবির হাঁটা শুরু করে তিথি দাঁড়িয়ে আছে,,
আবিরঃ কি সমস্যা হাঁটো,,,
আবির তিথির দিকে অনেক টা লম্বা হওয়ায় তিথির খুব অসুবিধা হচ্ছে আবিরের মাথার উপর ছাতাটা ধরে রাখতে,,আবির একটা টেবিলের কাছে যায় তিথি ভাবে ছাতা টার আর কি দরকার ছাতাটা বন্ধ করতে যাবে আবির বলে উঠে
আবিরঃ আমি কি বলেছিলাম বন্ধ করতে????
তিথিঃ কিন্তু স্যার আপনি তো বসছেন তাহলে আর কেন?
আবিরঃ বেশি কথা বলতে বলি নাই চুপচাপ ধরে রাখো ওকে,,,
তিথিঃ হু হু
কয়েকজন লোক আসে আবির তাদের সাথে কথা বলছে আর খাবার অর্ডার করেছিলে তারা সবাই খাচ্ছে আর তিথি এই রোদে দাঁড়িয়ে আছে আবিরের মাথার উপর ছাতা ধরে,,,সূর্যের তাপে যেন তার মাথা ঘুরাচ্ছে খুব ক্ষিধে ও পেয়েছে কিন্তু আবির তাকে না দিয়েই খেয়ে যাচ্ছে,,,আবিরের টেবিলে জুস রাখা তিথি জুসটার দিকে বারবার তাকাচ্ছে আর নিজেকে শান্তনা দিচ্ছে,,,
তিথিঃ (আরে জুস এইভাবে আমার দিকে তাকাস না আমার কান্না পাচ্ছে তোর মাসুম চেহারা দেখে)
আবিরঃ তিথি,,,
তিথি আবিরের ডাক শুনে ভাবে তাকে খেতে বলবে
তিথিঃ জ্বি স্যার আমি এখন খেয়ে নিচ্ছি,,,
আবিরঃ আমি তোমাকে কখন খেতে বললাম?
তিথিঃ আপনি তো তাই ডাকলেন তাই না?
আবিরঃ জ্বি না,,,ছাতা টা আর একটু উপরে ধরে রাখো,,,মাথায় লাগছে,,
তিথিঃ (অমানুষ একটা মাসুম মেয়েকে দিয়ে এতো কষ্ট করাছিস দাঁড়া একটা সুযোগ পাই তখন বুজাবো কত ধানে কত চাল হুম)
আবির আরো কিছু ক্ষন কথা বলতে থাকে এইদিকে তিথির গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়,,,তিথি আর পারছে না তাই তিথি বলে উঠে
তিথিঃ স্যার
আবিরঃ কি হইছে?
তিথিঃ অই দিকে দেখেন একটা মানুষকে মেরে ফেলতেছে,,,
আবিরঃ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো,,,,
তিথিঃ আরে স্যার আমাদের মেনেজার এর মত লাগছে
আবির উঠে দাঁড়ায় সাথে অই লোক গুলো ও,,তারা একটু সামনে এগিয়ে যায়
এইদিকে তিথি ছাতাটা পাশে রেখেই খাওয়া শুরু করে তাড়াতাড়ি গবগব করে খাওয়া শুরু করে আবার জুস ও খাচ্ছে,,
আবির গিয়ে দেখে কিছু না কেউ নাই,,পিছনে ফিরে এসে দেখে তিথি পুরো টেবিলের অবস্থা বারোটা বাজিয়ে রেখেছে,,খেয়ে যেন পুরো ফিট চেয়ারের সাথে হেলান দিয়ে ঢেক তুলে
তিথিঃ আহা বহুত দিন পর এইভাবে পেট ভরে গেলাম শান্তি
আবির প্রচুর রেখে যায় পাশে থাকা লোক গুলো হাসতে থাকে,,
আবিরঃ তিথিইইইইই
তিথি ভয়ে তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়ায়,,,আবির প্রচুর রেগে আছে
মিস্টার রয়ঃ আবির সাহেব আজ তাহলে মিটিং এই টুকু থাকুক বাকি টুকু ফোনে না হয় বলবো,,,
আবিরঃ আই এম সো সরি মিস্টার রয়,,,
মিস্টার রয়ঃ আরে না না সমস্যা নাই,,ম্যাডাম এর অনেক ক্ষিধে পেয়েছে হয়তো তাই এইভাবে (বলেই হেসে দেয়,,,)
আবিরঃ ওকে পরে কথা হবে আল্লাহ হাফেজ,,,
লোক গুলো চলে যায় আর তিথি দাঁড়িয়ে আছে ভয়ে ভয়ে আবিরের দিকে তাকায় আর আবির তো পারতেছে না তিথিকে কাঁচা গিলে খাবে,,,রাগী লুক নিয়ে বলে
আবিরঃ এই সব এর মানে কি??
তিথিঃ বা রে আপনারা খাচ্ছেন আর আমাকে একটু দিচ্ছেন ও না আমার কত ক্ষিধে পেয়েছে জানেন,,সকালে বাসা থেকে খেয়ে এসেছি আর কিছু খাই নাই আর আপনি কি না
তিথি মুখ টাকে বাচ্চাদের মত বানিয়ে ফেলে আবিরের হাসি না আসলে ও আসে কারণ তিথি পুরো মুখে খাবার লাগিয়ে ফেলে খেতে খেতে,,,আবির টেবিল থেকে টিস্যু নিয়ে তিথির দিকে এগিয়ে দেয়
আবিরঃ ভালো করে মুখ মুছে নাও,,,
তিথি টিস্যু নিয়ে মুখ মুছতে লাগে আর আবিরের দিকে তাকাতে থাকে আবির মুচকি মুচকি হাসছে,,,,
চলবে,,,,,,,,,