প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 43

শুনো!নিহাল তোমাকে নিয়ে গেমস খেলতেসে,বাজি ধরেছে সে তোমাকে বিয়ে করবে,আমি চাই না তুমি ওর বাজির স্বীকার হও
.
ওহহ নিশ্চয় আপনিও বাজি ধরেছেন?
.
শান্ত রেগে আহানার দুকাঁধ ধরে টেনে কাছে নিয়ে এসে বললো বিয়েতে কবুল বলবা,দিস ইজ মাই অর্ডার!!
না কে কিভাবে হ্যাঁতে পরিণত করতে হয় তা আমার জানা আছে!
.
আমি কবুল বলবো না,কি করবেন মারবেন?
.
শান্ত কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আহানার হাত ধরে টেনে সবার সামনে নিয়ে গেলো
চেঁচিয়ে বললো এই মেয়েটা চায় তার সাথে আমি অবৈধভাবে থাকি,সে বিয়ে করতে চায় না

সোফার রুমে উপস্থিত সব মুরব্বিরা মুখ হাত দিয়ে বললেন আস্তাগফেরুল্লাহ!!!
.
আহানা চোখ বড় করে শান্তর দিকে চেয়ে বললো এসব কি বলতেসেন কি আপনি?
.
কাজী সাহেবের সাথে বসে ছিলেন একজন ভদ্র বয়স্ক হুজুর,তিনি হালকা কেশে ঠিকঠাক হয়ে বললেন-
শুনো মা এসব হারাম কাজ,বিয়ে করে হালাল করলে তোমার পরকালে সুখ হইবো,কবরের আজাব থেইকা মুক্তি পাইবা
.
আপনি এসব কি!শুনুন এটা ঠিক করতেসেন না,তাড়াতাড়ি বলেন যে আপনি আমার নামে মিথ্যা বলেছেন সবাইকে
.
আমি?কেন বলোতো?আমি ছেলে হয়ে তোমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছি আর তুমি মেয়ে হয়ে সম্পর্কটাকে অবৈধভাবে রাখতে চাও??
.
আহানা এগিয়ে এসে শান্তর পাঞ্জাবি খিঁচে টান দিয়ে বললো চুপ!একদম চুপ
এসব মিথ্যা অফ করবি না আমি চলে যাব এখান থেকে??তুই থাক তোর বিয়া নিয়ে
.
শান্ত কলার ঠিক করে সোফার রুমে থাকা সকলের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো
তারপর মুখটা কালো করে বললো আমি কি করবো?আপনারা বরং আমার মাথায় বাড়ি দেন,ও চায় চলে যাবে এখান থেকে তাও বিয়ে করবে না
.
আহানা?এসব কি??
তুমি মুসলিম মেয়ে হয়ে এসব কি আনাব সানাব বলতেসো,তাড়াতাড়ি শান্তর পাশে বসো যাও!কথাটা বলে দাদি পর্দার আড়াল থেকে চলে গেলেন
আহানা হনহনিয়ে বেরিয়ে দোতলার দিকে চলে গেলো
.
আপনারা ১০মিনিট বসুন,আমি ওকে নিয়ে আসতেসি
শান্ত ও পিছু পিছু গেলো
আহানা বেড রুমের এক কোণায় বসে চুপ করে আছে
রুম অন্ধকারাচ্ছন্ন
শান্ত লাইট জ্বালালো না,আহানার হাতের চুড়ির ঝুনঝুন আওয়াজ আসতেসে,সেটার আওয়াজ উপলব্ধি করেই শান্ত হেঁটে সেই কোণায় এসে বসলো আহানার পাশে
তারপর কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো সরি
.
আমাকে বুঝার চেষ্টা করো আহানা,নিহাল আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছে সে তোমাকে বিয়ে করবে,বাজি ধরে বিয়ে করা মানে বিয়ের পরে ও তোমাকে ছেড়ে দিবে
আর তা আমি হতে দিতে পারি না,সেই জন্যে আমি চাই তুমি ঐ নিহালের ওয়াইফ না হয়ে আমার ওয়াইফ হও,আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত আমি তোমার পাশ থেকে কোনোদিন যাব না
আমি নিহাল না এটা জানো তুমি,আমি যে বাজিও ধরিনি এটাও জানো তুমি
আমি জাস্ট এটা চাই তুমি একটা ভালো মানুষের ওয়াইফ হও
.
ওহ আপনি ভালো মানুষ বুঝি?
.
হ্যাঁ,কোনো সন্দেহ আছে নাকি?
তোমার ভাগ্য এমনিতেও খারাপ আর খারাপ আমি হতে দিতে পারি না
তুমি তোমার মতো এই বাসায় থেকো আর আমি আমার বাসায়,মাঝে মাঝে ডিস্টার্ব করতে আসবো যেমন নাস্তা করতে,চা খেতে আর কিছু না
আর তুমি চাইলে আমার ফ্ল্যাটে যেতে পারো,২৪ঘন্টা তোমার জন্য আমার ফ্ল্যাট উন্মুক্ত
রইলো কথা স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক,আমি তোমাকে টাচ করবো না,তুমি তো জানো তোমার প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই সেই প্রথম থেকেই

তাহলে বিয়ে করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন কেন এত?নিহাল আমাকে বিয়ে করতে চাইলেই আমি বিয়ে করবো ওকে?এত সহজ?
.
শুনো ও কাল অফিসে যা করেছে ও চাইলে তোমাকে উঠায় নিয়েও বিয়ে করার ক্ষমতা রাখে,আমি এটা জেনেশুনে হতে দিতে পারি না,তোমার সাথে নো কম্প্রোমাইজ!
.
আমাকে নিয়ে আপনার এত ভাবতে হবে না,যান সবাইকে বলেন আমি বিয়ে করবো না কারণ আমি আপনাকে পছন্দ করি না
.
শুনো!আমিও তোমাকে পছন্দ করি না
.
তাহলে বিয়েটা বন্ধ করেন
.
ফাইন!আমি যাচ্ছি,বিয়ে ক্যানচেল করছি,এর পরে কি হবে জানো?
নিহাল তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে,একদিন একরাত পর তোমাকে রোডে নামিয়ে চলে যাবে,এমন রোডে নামাবে যেই রোডে শান্ত কোনোদিন বাইক নিয়ে যায় না,বুঝো তো কোন রোড?নিষিদ্ধ পল্লি চিনো?
আচ্ছা নাহয় ঢাকার কোনে রোডে ছাড়লো কিন্তু এরপর?তুমি কোনো বাসা ভাড়া পাবে??সবাই তোমাকে যাতা বলবে,তখন?ভাত নুন খাওয়ার টাকাও পাবা না
.
চুপ একদম চুপ
.
কেন চুপ?যেটা সত্যি সেটাই,তারপর যখন প্রেগন্যান্ট হয়ে যাবা তখন?আরেক ঝামেলা!পুলিশে কেস ও করতে পারবা না,একা একটা মেয়ের কথায় কে কান দিবে??বলো?
.
আমি বিয়ে করবো না প্লিস
আহানা কেঁদে দিলো
.
শান্ত ফোনের ফ্ল্যাশ অন করতে গিয়ে করলো না,অন্ধকারেই আন্দাজ করে ওর মুখ মুছে দিলো,এত নিখুঁত করে মুছে দিলো যেন সত্যি সত্যি ও আহানাকে এত ঘুটঘুটে অন্ধকারেও দিব্যি দেখতে পাচ্ছে
আহানার পিঠের পিছন দিয়ে হাত নিয়ে ওকে হালকাভাবে জড়িয়ে রাখলো
.
আমি তোমাকে কখনও খারাপভাবে টাচ করেছি??
করিনি!!!আমি তোমায় সম্মান করি,তোমার ফিলিংসের দাম আছে আমার কাছে
যাই হোক শুনো মেয়ে!
তুমি এখন এই বিয়ে না করলে আমি বলবো তোমার পেটে বাবু ও আছে,তাও আমার!৩মাসের
.
আহানা শান্তর হাত খাঁমছে বললো চুপ করতে
.
আপনি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতেসেন!
.
এতক্ষণ ধরে এই বুঝাইসি আমি তোমাকে?
.
এক মিনিট!
.
আহানা উঠে গিয়ে লাইট জ্বালালো রুমের
তারপর একটা খাতা আর একটা কলম নিয়ে ফ্লোরে বসে গেলো,৫মিনিট ধরে কিসব লিখলো তারপর শান্তকে দেখিয়ে বললো সই করে দিতে
.
শান্ত ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে দেখলো লিখা আছে-
আমি শাহরিয়ার শান্ত আজ আগস্ট ৬তারিখ,২০২০সাল এ আহানা ইয়াসমিনকে বিয়ে করতেসি,এরপর থেকে আমি ওর লাইফে দখল দিব না,স্বামীর অধিকার ফলাবো না,ওকে স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে দিব,এই বিয়ে শুধু নামেই বিয়ে হবে
———–
সাইন
.
শান্ত মুচকি হেসে সাইন করে দিলো

আহানা কাগজটা কোমড়ে গুজে নিয়ে নিচতলার দিকে হেঁটে চললো
অন্ধকারে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে বেসালাম হয়ে সিঁড়ি থেকে পড়েই যাচ্ছিলো সে
শান্ত সাথেসাথে ধরে ফেললো ওকে
.
ছাড়ুন,ঢং করতে হবে না
.
না ছাড়ব না,ছাড়লে আমার বউ পড়ে গিয়ে কোমড় ভাঙ্গবে,বরং শক্ত করে ধরবো
.
আহানা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে চলে গেলো
শান্ত পিছন পিছন আসতেসে
সবাই ওদের মুখের দিকে চেয়ে বসে আছে
শেষে আহানা মাথা নাড়িয়ে সাঁই দিলো
তারপর শান্ত গিয়ে দাদার পাশে বসলো আর আহানা একটু দূরে একটা চেয়ারে বসলো
.
কাজী সাহেব কাগজকলম নিয়ে সব লিখে ব্রু কুঁচকে বললেন কিন্তু মা তোমার মা বাবার নাম?তাদের নাম তো জানা হলো না
.
আহানা চুপ করে থেকে বলতে যাবে তার আগেই শান্ত উত্তরটা দিতে চাইলো
সে বললো কাজী সাহেব ওর মা বাবা নেই,কে ছিল সে জানে না,সুতরাং তাদের নাম বলা সম্ভব না তবে ওকে আশ্রমের ম্যানেজার সালেহা বেগম এবং তার স্বামী সালাউদ্দিনের মেয়ে হিসেবে স্কুল কলেজের সার্টিফিকেটে পরিচয় দেওয়া হয়েছে
.
ওকে কি দত্তক নেওয়া হয়েছিল?
.
নাহ,উনারা আহানাকে দত্তক নেননি, আমার মায়ের রিকুয়েস্টে আহানার স্কুল কলেজের সকল কার্যকলাপে তাদের নাম তারা লিখে দিয়েছে,আহানার ঠাঁই আশ্রমেই হয়েছিলো
উনারা নামেই পিতামাতা ছিলেন,আর এখন সালেহা বেগম জীবিত নেই আর উনার স্বামীও জীবিত নেই
.
আচ্ছা বুঝলাম,ঠিক আছে,আমি উনাদের নাম লিখতেসি(মৃত),আর উনাদের অবর্তমানে আমি ওর বাবা হয়ে দায়িত্ব পালন করবো আজকে
.
আহানার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে ওর হাতের উপর পড়লো,তার এই অশ্রু কেউ না দেখলেও শান্ত ঠিকই দেখেছে এবং সে জানে আহানা কেন কাঁদছে,তার মা বাবা থাকলে হয়ত আজ তাকে এত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো না
.
কাজী সাহেব খোতবা পড়লেন
তারপর শান্তর ডানহাত ধরে বললেন-জনাব সালাউদ্দিনের কন্যা আহানা ইয়াসমিনকে ১০হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে আমি কন্যাকে আপনার নিকাহে সোফিত করলাম
.
আমি কবুল করলাম,কবুল কবুল কবুল
.
আলহামদুলিল্লাহ
এবার মা আহানা তুমি বলো
.
আহানা চোখ বন্ধ করে একটা নিশ্বাস ফেলে সেও কবুল বললো ৩বার
.
সকলে আলহামদুলিল্লাহ পড়লেন,,
শান্ত দেনমোহর শোধ করলো,আরও বেশি দেনমোহর রাখতো কিন্তু তার কাছে এখন এত টাকা নেই,বাবাকে বললে হাজারটা প্রশ্ন করতেন উনি
সবাই মিষ্টিমুখ করে চলে যাচ্ছেন,শান্ত সোফার এক কোণে বসে বারবার ভিতরের রুমের দিকে তাকাচ্ছে,নীল রঙের পর্দার ওপারে আহানা বসে আছে
তাকে দেখা যাচ্ছে না,শান্তর মনে হচ্ছে সে তার কাছের একটা জিনিসকে আজীবনের জন্য নিজের করে নিয়েছে
এই ভেবেই ভালোলাগা কাজ করতেসে হুট করেই

আহানা থ হয়ে বসে আছে,এতদিন ভাবতাম কেউ বিয়ে করবে না আমাকে আর আজ!সেই ছেলেটা আমাকে বিয়ে করলো যাকে আমি দেখতে পারি না,যাকে চড় মেরেছিলাম
সেই চড় নিয়েই গল্পটা শুরু হয়েছিল আর আজ বিয়েতে পরিণত হয়েছে,এভাবে আজ এই দিনে আমার বিয়ে হবে জীবনেও ভাবিনি আমি,কোথা থেকে কি হয়ে গেলো,না আমি উনাকে ভালোবাসি না উনি আমাকে ভালোবাসেন
বিয়েটা হয়েছে নামেই
এই সেই বিয়ে যেটাতে ভালোবাসার কোনো চিহ্ন রইবে নাহ
আহানা মাথায় হাত দিয়ে উঠে দাঁড়ালো,ভালো লাগতেসে না কিছুই
চুপচাপ বেরিয়ে সবার সামনে নিয়ে দোতলার দিকে চলে গেলো সে
শান্ত নওশাদের সাথে কথা বলতে বলতে বাসা থেকে বেরিয়ে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ থেমে পিছন ফিরে তাকালো
আহানা বারান্দা থেকে লুকিয়ে পড়েছে ততক্ষণে
শান্তর প্রতি একটা অধিকার কাজ করতেসে আজ,কিন্তু না!
শান্ত আহানাকে না দেখলেও ল্যাম্পপোস্টের আলোয় বারান্দার কোণায় ওর শাড়ীর খানিকটা দেখতে পাচ্ছে সে
শান্ত হেসে দিয়ে চলে গেলো বাসার দিকে
দুজনেরই আজ বিয়ে হয়েছে,বৈধ বিয়ে,তাও দুজন দুই বাড়িতে,পৃথিবীতে ওরাই হয়ত এমন কাপল যারা বিয়ের পর দুজন দুবাড়িতে থাকবে,একরুমে কেউ সোফায় কেউ বিছানায় হলেও এক কথা ছিল কিন্তু এটা যে আলাদা বাড়িতেই!
আহানা মুখ ধুয়ে শাড়ীটা পাল্টাচ্ছে আর তখনই মনে পড়লো চুলায় চা বসিয়েছে সে
দৌড়ে গিয়ে চুলা বন্ধ করে চা নামাচ্ছে সে
তখনই ফোনটা বেজে উঠলো
শান্তর ফোন,১০মিনিট হলো গিয়েছে আবার ফোন করছে কেন?
.
আহানা চা ঢেলে ফোন হাতে নিয়ে রিসিভ করে কানে লাগাতেই ওপাশ থেকে শান্ত বললো রান্নাঘরে এমন বেশে আসার কারণ কি?কেউ যদি দেখে ফেলে?যাও ভিতরে গিয়ে ঠিক হয়ে আসো
আহানার চোখ কপালে
তাড়াতাড়ি জানালা থেকে সরে রান্নাঘরের চিপায় গিয়ে দাঁড়ালো,ধুকধুক করতেসে বুকের ভেতর
বড়বড় শ্বাস নিতে নিতে বললো আপনি এসব দেখেন?
.
নতুন বিয়ে করা বউকে একা ফেলে এসেছি একটু তো খবর নেওয়া আমার দায়িত্ব, পরে দেখলাম তোমার রান্নাঘরে বাতি জ্বলে,দূরবীন হাতে নিতেই দেখলাম এই কান্ড!
.
আপনি একটা বেয়াদব!
.
চা বানাচ্ছো?
.
না,মানে হ্যাঁ
এক কাপ বানাইসি শুধু, আমি খাবো সেটা
.
আমি তোমার থেকে ভাগ নিব না ওকে?আমার হাতেও কফির মগ
আঁচল ঠিক করে জানালায় আসো
আহানা আঁচল ঠিক করে জানালার সামনে দাঁড়িয়ে চোখ ছোট করে দেখার চেষ্টা করতেসে,শান্তকে লাল পিপড়ার সমান দেখা যাচ্ছে
.
চলো একসাথে খাই চা আর কফি
আহানা তাকের উপর উঠে জানালার সাথে লেগে বসলো গুটিশুটি দিয়ে
.
আহানা তাকালেও শান্তকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে না তবে যতদূর বুঝা যায় শান্ত গ্রিলে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
.
আর শান্ত আহানাকে ঠিক করে দেখতে পাচ্ছে কারন ওর হাতে দূরবীন
আহানা কানে ফোন ধরে চা খাচ্ছে

চা খেয়ে জিরিয়ে ডিনার করে নিবা,আমি এখানে খেয়ে নিবো
.
আপনি কাউকে বলবেন না যে আমাদের বিয়ে হয়েছে
.
নিহালকে বলবো,ওর জন্যই এতসব করা
.
হুম,রুপা নওশাদ কেউ যেন না জানে
.
জানবে না,বাই দ্যা ওয়ে শাড়ীটাতে তোমাকে বেশ মানিয়েছে
.
নীল ব্লাউজ কি জন্য দিলেন সেটাই বুঝলাম না
.
আমার নীল পাঞ্জাবি তাই
মিলতে হবে তো
.
দুটোই লাল কিংবা নীল কেনা যেতো না?
.
আমার সাথে নওশাদ ছিল,ও ঠিক সন্দেহ করতো তাই এমন করসি
.
ওহ,ঠিক আছে বাই
.
বাই
.
আহানা ফোন রেখে শাড়ী চেঞ্জ করে আসলো
.
দাদি অলিকে দিয়ে খাবার পাঠিয়েছে,শান্তর জন্যেও পাঠিয়েছে
উনি তো আর জানেন না শান্ত চলে গেছে
.
আহানা কিছুক্ষন ভাবনা চিন্তা করে ফোন নিয়ে শান্তকে কল দিলো
বারান্দায় দাঁড়িয়ে শান্ত সিগারেট খাচ্ছে,ফোন টেবিলের উপর সাইলেন্ট করে রাখা
আহানা ওকে কখনও কল করে না বলে ওর জানা ছিল না আজই আহানা ফোন দিতে পারে
আহানা রান্নাঘরের জানালায় এসে হাত নাড়াচ্ছে শান্ত দেখতেসেও না
সে নিচে রোডের দিকে তাকিয়ে মন দিল লাগিয়ে সিগারেট খেয়ে যাচ্ছে
শেষে সিগারেট শেষ দিয়ে রুমে আসার সময় আহানার বাসার রান্নাঘরের দিকে একবার তাকালো,তাকিয়ে থেমে গেলো
আহানা হাত নাড়িয়েই যাচ্ছে,আগামাথা কিছুই বুঝতেসে সে,পরে ফোন খুঁজে দেখলো ২মিসডকল
কলব্যাক করতেই আহানা এক বালতি গালি ছুঁড়ে মারলো
.
বেয়াদব অসভ্য!!এত কল করি চোখে পড়ে না?বারান্দায় দাঁড়িয়ে কি করেন?এলিনা নাকি বেবিকে দেখেন,আর জীবনে কল দিব না আপনাকে,👿
আমার ঠ্যাকা পড়ে নাই আপনাকে কল করার,দাদি আপনার জন্যও খাবার পাঠিয়েছে তাই কল করেছি এসে খেয়ে যান,নাহলে দাদিকে কি জবাব দিব আমি!
.
বাপরে কানের পর্দা ফুটা হয়ে গেছে আমার,আসতেসি,দাঁড়াও,এমন ভাবপ বলতেসে যেন ২০০বার কল দিসে

আহানা গিয়ে দরজা খুলে দাঁড়িয়ে রইলো
শান্তর আসার খবর নাই,শেষে নিজেই খেতে বসে পড়লো,আসার পর থেকে চা ছাড়া কিছু খায়নি,খিধায় মনে হয় অজ্ঞান হয়ে যাবে
এক লোকমা মুখে দিতেই শান্ত এসে হাজির
.
ওমা নতুন বউ হয়ে স্বামীর আগেই খেয়ে নিলে?
.
এক মিনিট!আমার খিধা লাগছিল,আপনি দেরি করে আসছেন তো আমি কি করবো?
.
ফাইন কিছু করতে হবে না,চেয়ার নাই?
.
না নাই,থাকলে তো দিতামই,বেতন পেলে সব কিনবো
.
খাওয়া শেষ!আমি যাই,ঘুমিয়ে পড়ো তুমি

আহানা দরজা লাগাতে যেতেই শান্ত হাত ধরে আটকালো
.
কি?আবার?
.
তোমার একা বাসায় ভয় করে না?
.
না করে না,যান এখন!
.
করলে বলিও কেমন?
.
যান বলতেসি
.
আরেহ আমি তো থাকবো না,আমি অলিকে বলবো তোমার সাথে এসে ঘুমাতে
শুনো মেয়ে তোমার প্রতি আমার একটু ইন্টারেস্ট ও নেই ওকে??
চলবে♥