প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 28

আপনি আমাকে মারবেন??
.
হ্যাঁ সে জন্যই তো আসলাম
.
আহানা ভয়ে কেঁদেই দিলো,শান্তর চোখে মুখের আগুন দেখে সে ভয় পেতে বাধ্য হয়েছে,শান্তকে দেখে সিরিয়াস মনে হচ্ছে
শান্ত স্টিকটা উপর করে এত জোরে এক বাড়ি দিলো!
আহানা মাথায় হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে
শান্ত গাছের পাশে থাকা একটা সিমেন্টের পিলারে বাড়ি দিয়েছিল,আহানা ভেবেছে তাকে মেরেছে
আহানা কেঁদেই চলেছে
শান্ত আহানার কান্না দেখে হাত থেকে হকিস্টিকটা ফেলে দিলো
.
আহানা?আমি তোমাকে মারতে যাব কেন
.
শান্ত আহানার পাশে গিয়ে বসলো

তোমাকে মেরে আমার তো লাভ হবে না কোনো,জাস্ট তোমাকে এটা বুঝাতে এসেছি আমি তোমাকে যেটা দিব সেটা আমাকে ফেরত দিবা না কখনও,নিজের কাছে রাখবা,আমি জানি এটা তোমার আত্নসম্মান বাট তার পরেও আমি যা দিই তা আলাদা,আমার গুলা রাখতে তুমি এত আত্নসম্মান দেখাইও না,বুঝছো?
শান্ত পকেট থেকে রুমাল নিয়ে আহানার দিকে বাড়িয়ে ধরলো
আহানা ওড়না দিয়ে চোখ মুছতেসে
.
আমি তো ভাবিনি তুমি সামান্য এতেই এত ভয় পেয়ে যাবে,কান্না ও করে দিবে
ভেরি ফানি,মুখে বড়বড় কথা বলে এখন সামান্য স্টিক দেখে এত ভয় পেলে?
আজ যদি আমার জায়গায় অন্য কেউ হতো?এভাবেই কান্না করতে?নিজেকে নিজে সেভ করার টেকনিক শিখো বুঝছো!
তুমি এই টেকনিকটা ঠিক পারো না,টিউশনিতে যাওয়ার সময়ও কতগুলো ছেলের সাথে তুমি লড়তে পারোনি,পালিয়ে এসেছো
.
তার মানে আপনি ওদের বলেছেন আমার জন্য প্রতিদিন রিকসা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য?
.
শান্ত মাথা চুলকিয়ে হেসে বললো তো কি করবো,তোমার ও তো একটা সেফটি দরকার
.
এতদিন চলছি আমি,কারোর সেফটি লাগবে না আমার
.
জেদ বেশি তোমার,এই জেদের বসে নিজেকে সেফ করতেই পারবা না কোনোদিন,জেদ কমাও আহানা
.
আপনাকে জ্ঞান দিতে হবে না,যান এখান থেকে
.
এটা তোমার জায়গা?দলিল করা নাকি তোমার নামে?
.
আহানা উঠে চলে যেতে নিতেই শান্ত ওর হাত ধরে আবার বসিয়ে দিলো
আমি কথা বলতেসি না?চুপ করে বসে আমার কথা শুনো
নাও তোমার ২হাজার টাকা,রাখো লাগবে না আমার
মায়ের হাতের রান্না খেয়েছি ১০বছর আগে,মা মারা যাওয়ার দিন সকালে উঠে আমাদের সবার মানার সত্ত্বেও লুকিয়ে যখন আমি আর বাবা ঘুমে মগ্ন ছিলাম তখন তিনি আমার পছন্দের চিকন কারী,রুটি,ভাজি,ডিম সব তৈরি করেছিলেন,আমি খাওয়ার সময় খুব বকেছিলাম তাকে
আফসোস!সেদিন বিকালেই মাকে হারিয়ে ফেলসিলাম
খাবারগুলো আমি চেটে চেটে খেয়েছিলাম সেদিন,একটুও ফেলতে দেইনি,আজও সকালের নাস্তা হাতে নিলে মায়ের মুখটা ভেসে উঠে,বুয়া বা অন্য কেউ কি আর মায়ের হাতের রান্নার মত করে রাঁধতে পারে?
কিন্তু আমি তোমার হাতের রান্নায় পুরোটা না হলেও কিছুটা মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ পেয়েছি,জাস্ট কাল মনটা মায়ের হাতের রান্না খাওয়ার জন্য আকুপাকু করসিলো,বুয়াও সিক ছিল তাই তোমাকে বলেছি,সরি এটার জন্য
তোমার টিউশনি তো ৩টা থেকে সবে ১:৩০বাজে,এতক্ষণ কি করবে? লাঞ্চ করবা না?
.
আহানা শান্তর কথায় ইমোশনাল হয়ে গেছে,নিজেকে কনট্রোল করে বললো নাহ আমি কখনও লাঞ্চ করি না
.
কেন?লাঞ্চের সাথে কোনো পূর্বশত্রুতামি আছে নাকি?
.
লাঞ্চ করলে ডিনারে ভাত জুটবে না
.
শান্ত কিছুক্ষন চুপ করে থাকলো,নিচ থেকে একটা কঙ্কর নিয়ে পানিতে ছুঁড়ে মারলো
.
যে টিউশনি করাতে গিয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায় সেটা বাদ দিয়ে দাও,আমি তোমাকে একটা জব দিব,এমনি এমনি তো টাকা নিবে না
.
ইহহহ,কি জব শুনি

আমাদের ডেইলি একজন স্যারের ক্লাস করতে হয়,মোঃ সাইফুদ্দিন স্যার,তার ক্লাস এত বোরিং বোরিং যে কিভাবে বুঝাবো তোমাকে
তো আমি কখনও তার ক্লাস এটেন্ড করি না,একদিন এটেন্ড করে স্বাদ মিটে গেছে,তার পর থেকে উনি আসার আগেই আমি ক্যামপাসে চলে যাই,তিনি যা যা বলেন সব নোট করে রাখতে হয়,এক্সামে উনার কথাগুলোয় আসে,তমাল নোট করে আমি তার থেকে কপি নিই,কপি বলতে স্যার যা যা বলে তা পরেরদিন ছুটির সময় এক এক করে সবার থেকে নোট চেক করে,তাই আমি চেয়েও ছাপিয়ে নিতে পারি না,নিজের হাতেই লিখতে হয়,উনার এটা খেয়াল থাকে না আমি ক্লাসে আছি নাকি নাই উনার কথা হলো নোটটা লিখা অত্যাবশ্যকীয়!
প্রতিদিন এই নোট তুলার কাজটা করতে হয় আমাকে,যা বিরক্তিকর! অসহ্যকর!!
তুমি প্রতিদিন আমার ঐ নোটটা তুলে দিবে খাতায় তমালের নোট থেকে দেখে দেখে,মিষ্টিকে পড়াতে আসার সময় নোটটা নিয়ে এসে আমাকে দিবে,আমি তোমাকে ৩হাজার টাকা দিব,আকাশের মা তোমাকে যত দেয় আমি তোমাকে ততই দিব,বলো রাজি?
.
মানে আমার আর কাজ নাই?আপনি আপনার কাজ করার জন্য আর লোক পান না??সবসময় আমাকে ধরেন কাজের জন্য
.
শুনো মেয়ে আমার সাথে তর্কে যাবা না,তোমাকে ছেলেগুলো থেকে বাঁচাতে পারলে আবার ছেলেগুলো দিয়ে আ্যাটাক ও আমিই করাতে পারি,সো আমার কথা শুনে চলবা,অবশ্য তোমাকে টাইট দিতে আমি নিজেই এনাফ
.
আপনি একটা!!
.
আমি আজ তোমার সাথে সাথে থাকবো,আকাশের আম্মুকে তুমি নিজে বলবে আর পড়াতে পারবে না,ওকে?
.
না আমি পারবো না উনাকে বলতে
.
ওকে আমি বলবো তাহলে
.
খবরদার না,যান এখান থেকে
.
যাব না,তুমি যাবে,চলো
.
আরেহ আমার হাত ছাড়ুন,কোথাই নিয়ে যাচ্ছেন
.
লাঞ্চ করবো রেস্টুরেন্টে,আমার তো খুধা লাগছে,তুমিও খাবে
.
আমি খাব না,হাত ছাড়ুন
.
বসে বসে দেখো,আমি খাবো
.
শান্ত আহানাকে টেনে একটা রেস্টুরেন্টে নিয়ে আসলো,আহানা রোডে ২/৩বার বসেও গেছে তাও শান্ত হাত ছাড়েনি,মানুষ কেমন করে তাকায় ছিল বলে আহানা আর হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করেনি
রেস্টুরেন্টে এসে শান্ত নিজে নিজে অর্ডার করে ফোন নিয়ে বসে গেমস খেলা শুরু করে দিলো
আহানা চুপ করে ওর দিকে চেয়ে আছে,এত এত মানুষ এখানে
সবাই খাচ্ছে,দুনিয়ায় মনে হয় আমি একমাত্র যে দুপুরে খাই না,সবাই কি সুন্দর করে খেয়ে যাচ্ছে
খাবার এসে গেছে,শান্ত খাওয়াও শুরু করে দিসে,আহানা মুখ বাঁকিয়ে আরেকদিকে ফিরে বসে আছে
.
কি হলো?খাও না কেন
.
আমি বলসি না আমি দুপুরে কিছু খাই না
.
তো এখন খাবা,খাও নয়তো তোমার খবর আছে,তুমি চড় মেরেছিলে আমাকে এবার আমি তোমাকে মারবো
.
শান্ত আহানার প্লেটে সব নিয়ে ওর দিকে বাড়িয়ে ধরলো
.
আহানা বিরক্তি নিয়ে প্লেটটা ধরে বসে আছে,এরকম দয়া ওর একদম ভালো লাগে না,এই ছেলেটা এমন কেন করছে কে জানে,এলিনার সাথেও আবার আমার সাথেও!
আহানা চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে

উফ আজ এই ছেলেটা পিছুই ছাড়ছে না কেন বুঝতেসি না
পিউদের বাসায় ঢুকে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো আহানা,যাক বাঁচলাম মনে হয়
পড়ানো শেষে আহানা বাসা থেকে বের হতেই দেখলো শান্ত বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
.
আপনি এখনও যান নি?
.
না যাইনি,আমি তো তোমাকে বলসি তোমার সাথে সারাদিন থাকবো
.
আপনার ফোন দিন
.
কেন?
.
এলিনা আপুকে কল করে বলবো তার বিএফ কি কি করে ইদানিং
.
হ্যাঁ করো,আর তোমাকে বলসি না ও আমার জিএফ না
.
আহানা সত্যি সত্যি এলিনাকে কল করলো শান্তর ফোন নিয়ে
.
হ্যালো বেবি,তোমার শরীর ঠিক আছে তো?জীবনে প্রথম নিজ থেকে আমাকে কল করলে,হোয়াট এ প্রেজেন্ট সারপ্রাইজ!!
.
আপু,আমি আহানা
.
আহানা!!তুমি?ইউ স্টুপিড গার্ল,তুমি শান্তর ফোন পেলে কই,শান্ত কোথায়?
.
আপু ওসব বাদ দাও তুমি জানো তোমার শান্ত বফ তোমাকে ধোকা দিচ্ছে??

হোয়াট!কি বললে?শান্ত কোথায় সেটা বলো
.
আচ্ছা আসেন,সামনা সামনি কথা হবে,জে.কে রোডে আছি আমি আর আপনার বফ
.
ফাইন আমি ২০মিনিটে আসতেসি
.
কি হলে তো তোমার শান্তি?ভেজালকে ডেকে আনতেসো শান্তি তো তোমার হওয়ারই কথা,তুমি তো ভেজাল ছাড়া কিছুই জানো না
.
শুনুন,আপনি আপনার জিএফ থাকা কালীন বেশির ভাগ সময় আমার সাথে সাথে থাকেন,এটা এলিনা আপুর জানা উচিত
.
ভেরি ফানি,তুমি এলিনার সাথে নিজেকে মিলাচ্ছো??কোথায় এলিনা আর কোথায় তুমি,এলিনা তো তাও আমার ফ্রেন্ড তুমি তো সেটাও না
.
ওহ তাহলে আমার পিছনে পিছনে ঘুরার মানে কি?
.
excuse me,পিছনে ঘুরা মানে?আরিফ আঙ্কেল বলেছিল মা তোমার খেয়াল রাখতে বলে গেছে সবাইকে,তার ছেলে হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব
আমার মায়ের সব ইচ্ছা আমি পূরন করতেসি
.
এলিনা আপু আসলেই দেখা যাবে কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক
.
হেই???তোমরা ঝগড়া করতেসো কেন কি হয়েছে?
শান্ত?আমাকে বলো কি হয়েছে
.
শুনো এলিনা হইসে কি আসলে!
.
চুপ,আমি বলতেসি,এলিনা আপু তোমার এই বিএফ সারাদিন আমাকে ডিস্টার্ব করে,আমাকে irritate করে শান্তি পায় উনি,সবসময় আমার পিছে লেগে থাকে,আর তুমিও কেমন জিএফ উনার দিকে নজর রাখতে পারো না?
.
ওয়েট ওয়েট কি বললে তুমি?শান্ত তোমার পিছে ঘুরছে?কেউ গলা কেটে বললেও আমি বিশ্বাস করবো না,শান্ত শুধু আমাকে লাভ করে
.
এক মিনিট এলিনা,কে বলসে আমি তোমাকে লাভ করি,আমি তোমাকে লাভ করি না,উয়ি আর জাস্ট ফ্রেন্ডস
.
আপনাদের মামলা আপনারা চুকান,আমি যাই আমার টিউশনি আছে,আর প্লিস আপু আপনার বফকে সামলান ওকে?
আহানা চলে গেলো কথাটা বলে
.
কি শান্ত??এসব কি?এই থার্ড ক্লাস মেয়েটার পিছনে লেগে আছো কেন,এখন হলো তো কত কথা শুনাইলো,শান্তি হইসে তোমার?আর আমি জানি তুমি আমাকে লাভ করো
.
এনাফ ইজ এনাফ এলিনা,আমি তোমাকে লাভ করি না করি না করি না,বুঝছো???
.
আহানাকে করো?
.
শান্ত কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বাইকে বসতে বসতে বললো তোমার মাথা কি গেছে এলিনা??
শাহরিয়ার শান্ত এরকম ধানি লঙ্কা মেয়েকে লাভ করবে??যে নিজে তোমাকে ডেকে এনে আমাকে কথা শুনায় তাকে আমি লাভ করবো?আজীবন কুমার থেকে যাব তাও ওরে লাভ/বিয়ে করবো না,মাথায় ঢুকিয়ে নাও,বাই
.
শান্ত দাঁড়াও
.
কি?
.
তাহলে আহানার সাথে সবসময় তোমাকেই কেন দেখতে পাই আমি?
.
তোমার চোখের ভুল,আমার পাশে নওশাদ,সূ্র্য,রিয়াজ আর তমালও তো থাকে

গুড
.
শান্ত বাইকে করে চলে গেলো,এলিনাকে তো বুঝানো হয়েছে বাট তারপরেও সে যাচ্ছে আহানার কাছে
.
আহানা আকাশকে পড়াচ্ছে
কলিং বেল বেজে উঠলো
.
আসসালামু আলাইকুম আন্টি
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম,কে আপনি?ঠিক চিনলাম না
.
আমি শাহরিয়ার শান্ত,আহানার হাসবেন্ড
.
ওহহহহ তুমি আহানার স্বামী?আহানা বিয়েও করেছে?আমাকে বললো না,বসো বসো,আমি চা নাস্তা আনতেসি
.
আরে না আন্টি,ওয়েট,আমি একটা কথা বলতে এসেছিলাম,আমার অনেক কাজ আছে চলে যেতে হবে
.
কি হইসে?
.
আমি চাই আহানা যেন আর কোনো টিউশনি না করে তাই ওকে বলসি টিউশনি ছেড়ে দিতে,বাট ও আপনাকে লজ্জায় কিছু বলতে পারছে না,আমি তাই বলতে আসলাম
.
ওহ সমস্যা না,,বিয়ের পর বেশির ভাগ হাসবেন্ডই চায় না তার ওয়াইফ বাইরে জব করুক,আর আহানা তো নিজের খরচ চালাতে টিউশনি করতো এতদিন,ঠিক করেছো ওকে কাজ করতে মানা করে,বেচারি অনেক কষ্ট করে টিউশনি করে
ভালো থেকো তোমরা দোয়া করি,আমি আহানাকে এই মাসের যতদিন পড়িয়েছে তার বেতন দিয়ে বলে দিব ব্যাপারটা,ডোন্ট ওয়ারি
.
ওকে আন্টি,থ্যাংকস,আজ আসি তাহলে

শান্ত দাঁত কেলিয়ে সানগ্লাস পরে চলে গেলো বাইকে উঠে

আহানা?তুমি বিয়ে করলে আর আমাকে জানালে না এটা কিন্তু ঠিক না আহানা
.
মানে!!!!
.
হইসে আর লুকাতে হবে না এসব,নাও এই মাসের বেতন পুরোটাই দিসি,জামাইকে নিয়ে সুখী হও
.
আহানা চোখ কপালে তুলে চেয়ে আছে আকাশের মায়ের দিকে
.
আরে বোকা মেয়ে টিউশনি করাতে পারবে না এটা বলতে এত লজ্জা পেয়েছিলে কেন??কিছুক্ষন আগে তোমার হাসবেন্ড শান্ত এসেছিল ব্যাপারটা বলতে,তুমি এত লজ্জা পাও এটা বলতে আহারে,সে এসব বলে চলে গেসে
.
কিহ,কুত্তাটা আবার এসেছে,সব গন্ডগোল করে চলেও গেছে,আমি তো জানতাম ও না কিছুক্ষন আগে সোফার রুমে শয়তানটা ছিল
আহানা বাসা থেকে বেরিয়ে দেখলো সেই ছেলেগুলো রিকসা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
আহানা রিকসায় উঠে ভাবতেসে এলিনা আপুকে ডাকলাম তারপরেও আমার পিছু ছাড়লো না,আজব তো,এই ছেলেটা এরকম করে কেন আমি বুঝি না
সয়ং এলিনাকে নিয়ে আসলাম ব্যাপারটা ঠিক করার জন্য আর সে কিনা ঘুরেফিরে আবার শুরু করলো,একেবারে আমার স্বামীর হয়েই কথা বলে চলে গেলো,ছাড়বো না বেয়াদবটাকে
আহানা বাসায় ফিরে টাকাগুলোর দিকে চেয়ে বসে আছে
কাল এগুলা শান্তকে ফেরত দিব,আমার থেকে উনি এখনও পাক্কা ৬হাজার টাকা পান,যতবার দি ততবার ফেরত দেয় আমাকে,উফ কি ঝামেলা
আলু ভেজে ভাত নিয়ে বসে আহানা ভাবতেসে শান্তকে কিভাবে কথা শুনাবে,কারণ শান্ত আসলেই কি চায় তা জানাটা জরুরি,এভাবে তো আর চলে না,জিএফ থাকতে সবসময় আমার পিছে ঘুরঘুর করে,আমাকে ঠিকমত চলতে ফিরতেও দেয় না,আজ তো লিমিট ক্রসই করে ফেলসে বেয়াদবটা,টিউশনি অফ করে দিলো আমার!সাথে আমাকে বিবাহিত প্রমান করে দিলো!
পরেরদিন সকাল সকাল আহানা টাকা আর এক বস্তা রাগ নিয়ে বের হয়েছে বাসা থেকে,আজ ঐ শান্তকে ঠাস করে চড় মারি তার পরে বাসায় ফিরবো আমি
লিফটে ঢুকার সময় দেখলো শান্ত সেখানে
আহানা ঢুকে এগিয়ে গিয়ে শুরু করলো ঝগড়া
.
এই কি সমস্যা আপনার?আমাকে এত জ্বালান কেন,আপনার সাহস হয় কি করে আমার স্বামী সেজে আকাশদের বাসায় যাওয়ার??বেয়াদব ছেলে কোথাকার!

শান্ত চুপ করে ফোনে গেমস খেলছে
.
আপনাকে বলতেসি আমি,কথা কানে যায় না আপনার?
আহানা টাকা নিয়ে শান্তর হাতে ধরিয়ে লিফট থেকে বেরিয়ে চলে গেলো
.
শান্ত টাকাগুলোর দিকে চেয়ে সেও পিছন পিছন গেলো
.
আহানা থেমে ওর দিকে চেয়ে বললো আপনার কি সমস্যা এত??
উফ!!আপনাকে আমি কিভাবে বুঝাবো,আমার আগের লাইফই ভালো ছিল,আপনি কেন আমাকে সাহায্য করার জন্য উঠে পড়ে লেগে আছেন
.
আহানা সাবধানে!!
.
শান্ত কাছে আসতে যেতেই আহানা আরও সরে গেলো
.
আহানা কেয়ারফুল!!!
.
শান্ত হাত দিয়ে আহানাকে টেনে কাছে নিয়ে আসলো,কারণ পিছনেই সিঁড়ি,আর সে ৫তলার উপরে
আহানা কথা বলতে বলতে সিঁড়ি পর্যন্ত চলে এসেছিল
.
আহানা ধাক্কা দিয়ে ওকে সরিয়ে ফেললো
.
আপনি আমার থেকে দূরে থাকুন বুঝছেন!!
.
শান্তর এবার মেজাজ বিগড়ে গেছে,এই মেয়েটা এত কিসের অহংকার করছে?
এই কি আছে তোমার??কাকে অহংকার দেখাচ্ছো তুমি??ভাত নুন খেতে ভালো লাগে তোমার??আমি চিকেনের দাম দিচ্ছি বলে সেটা ভালো লাগছে না
.
আহানার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে লাগলো,হাত দিয়ে চোখ মুছে হেসে দিয়ে বললো ভাত নুন তো কি হয়েছে??সেটা আমার নিজের উপার্জনের টাকার খাবার,আমার আত্নসম্মান আছে বলে আমি অন্যের টাকা নিতে চাই না,এটাকে আপনি অহংকার ভাবলে ভাবতেও পারেন,আর কোনোদিন আমাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করবেন না,আমি একদিন আমার উপার্জনের টাকা দিয়ে চিকেন ও খাবো,বাই
আহানা মিষ্টিদের বাসায় চলে গেলো

শান্ত নিজের রুমে এসে দরজা লাগিয়ে ফেললো,বাবাকে কল করলো সোজা
.
কিরে শান্ত??তুই ঠিক আছিস তো?এত সকাল সকাল ফোন করলি?কি হয়েছে?
.
বাবা!!তুমি আর আমার জন্য কোনো টাকা পাঠাবে না,আমি নিজে উপার্জন করে নিজের খরচ চালাবো
.
মানে?তুই তো জব পেতে আর কয়েকটা মাস বাকি,তোর মাস্টার্স শেষ হলেই আমি তোকে আমার অফিসে বসিয়ে দিব,তাহলে এখন কিসের উপার্জন করবি তুই?সকাল সকাল মদ খেয়েছিস নাকি?
.
না বাবা,আমি মাস্টার্স শেষ হওয়া পর্যন্ত একটা পার্টটাইম জব করবো,তুমি আর আমাকে কোনো টাকা দিবে না,Now বাই
চলবে♥