প্রাক্তন

প্রাক্তন 2 !! Part- 16

__ব্যাপার টা কিছুই হচ্ছে না।আসলে পুরো রেস্তোরা টাই আজকের জন্য বুক করেছি।(স্পর্শ)

কথা টা শুনে প্রায় চমকে গেলাম!সে কি করে জানলো আমি মনে মনে তো বলছিলাম।আমি চোখ কিছু টা বড় বড় করেই তার দিকে তাকিয়ে আছি!

__এত তীক্ষ্ণ ভাবে দেখার কিছু নেই।যে ভাবে এপাশ ওপাশ তাকাচ্ছিলেন এতে যে কেউ বুঝতে পারবে।তো কি খাবেন বলেন?(স্পর্শ)

বার্গার (বলেই তার দিকে তাকালাম)

লোক টা আসলেই অনেক চতুর! এরে তাড়াবো কেম্নে?এই ধরনের মানুষের প্রেমে পরে যাওয়ার একটা তীব্র ভয় আছে।আর ইনি খানিক টা না বলা কথা বুঝার ক্ষমতা রাখে।

__তো কথা শুরু করি?(স্পর্শ বেশ হেসে হেসে)
বর্ণনা করুন?(তার দিকে তাকিয়ে তখন থেকেই আছি)

সে একটু হাসি দিয়ে শুরু করলো, যা আমাকে ব্যাপক ভাবে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে,
__বাবার এক মাত্র মেয়ে এই নিয়ে খুব আদরের। যাকে বলে ননির পতুল। আচ্ছা শুনো আমি তুমি করে বললো বয়স এ ছোট তুমি!তুমি আমাকে তাড়ানোর প্লেন আছো।এই জিনিষ টাই আমার খুব ভালো লেগেছে!বলতে পারো এই জিনিষ টার প্রেমে পরে গেছি। তুমি তোমাকে বিয়ে না করার জন্য ৩ কারন দিতে পারো।১) আপনি আমার চেয়েও ভালো মেয়ে পাবেন।সুন্দরী বুঝাবা আর কি! ২)আমি আপনাকে ভালো রাখতে পারবো না।আর ২ নাম্বার এর কারন হবে ৩ নম্বর কারন টা। ৩) আমি এখনো আমার প্রাক্তন কে ভালো বাসি!এখন আমি তোমাকে বলি আমার এর মধ্যে একটা তেও সমস্যা নাই। ১ নম্বর কারন নিয়ে আমার বিবৃতি,তুমি এক টা মানুষের সাথে দেখা করতে এসেছো? কিন্তু তোমার চোখে কাজল টাও নেই।মানে আমাকে ইমপ্রেস করার কোনো ইচ্ছে তোমার নেই।তাহলে তুমি যা আছো এখন মেকাপ ছাড়া আমার সামনে! কারন তোমার মুখের পিম্পলস এর দাগ দেখা যাচ্ছে।এর দুই টা ভালো দিক আমি ধরতে পারি।এক তুমি কৃত্তিম কিছু পছন্দ করো না।আর যা সৌন্দর‍্য আমি দেখছি তা পুরো টাই প্রকৃতিক।আর এই অবস্থায় তোমার প্রেমে যে কেউ পরে যাবে! অ্যান্ড স্পেশালি ইউর আইজস আর ডেম !!!সেকেন্ডলি ফিনাইন্সিয়ালি অনেক টাকা বেচে যাবে আমার। মেকাপ কিডস কিনতে হবে না হিহিহিহ। স্যরি ইট ওয়াস আ লেইম জোক!😷এখন আসি দ্বিতীয় কারনে যার আসল কারন নাম্বার তিন।মানে তোমার প্রাক্তন।আসলে সত্যি ই এতে আমার কোনো সমস্যা নেই।আই এম টোটালি ওকে ইউথ ইট।একটা মানুষ কে ভালোবাসাতে অন্য একটা মানুষের সমস্যা হয় কি করে তা আমি বুঝি না।আর একটা মানুষকে ভালোবাসলে অন্য মানুষ কে বাসা যাবেনা এমন তো না।এখন তুমি যদি বলো আমি তাকে এখন ভালো বাসি না।এইটা তো আমি মানবোই না।উলটো মিথ্যে বলায় অপরাধে একটা থাপ্পড় ও মারতে পারি!কারন তোমার চোখের নিচের গারো কালো দাগ বলে দিচ্ছে ঠিক এখনো তার জন্য রাত গুলোকে কষ্ট দিয়ে ঘুম বিহিন কাটানো হয়।আপনার শরীরের তুলোনায় মুখ খানিক টা মোটা।যার মানে অনেক হতে পারে আমি ধরবো তুমি ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমান!একটা মেয়ে যার প্রাক্তন কে এখনো এতটা ভালো বাসতে পারে।সে যদি একবার আমার ভালোবেসে ফেলতে পারে ভাবতে পারছেন আমি কত লাকি হবো?এখন বলবে যে “আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারবো না।আপনি সুখি হবেন না।”
এই টাইপ্স কিছু তাই তো?সুখি আমি হবো। তা আমি জানি। হ্যা তুমি ১০০% দিতে পারবে না সমস্যা নাই তুমি ১০%দাও আমি আমার ১০০% দিবো যা মিলিয়ে ১১০% হয়ে যাবে। তুমি আমাকে ভালো না বাসার চেষ্টা করবা আর আমি আমাকে ভালোবাসানোর চেষ্টায় থাকবো।আসলে আমি না ভাবি নি কখনো যে আমার কোনো মেয়ে কে এই ভাবে ভালো লেগে যাবে।এখন বলতে পারো এক দিনে কি করে ভালো লেগে গেলো? কি লুচু মানুষ রে বাবা! শোনো একজন ২৮ বছর বয়সী ছেলে আসলে বাস্তবিক ছেলে আর কি সে কখনো চাদে মত সুন্দর দেখতে বউ চায় না।চায় ভালো, ভদ্র আর বুদ্ধিমতী। যার মধ্যে সবই আমি তোমার মধ্যে পেয়েছি। তাই তোমার থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কোনো কারন ই নেই আমার।আর জেনুইন ভাবেই আমাকে ভালো লাগছে তোমাকে।বিয়ে তো আমাদের হচ্ছেই!

আমি সালা আবুল হয়ে তাকায় আছি।এই ব্যাটা কয় কি?এরে আমি সকাল বেলা হ্যাংলা ক্যাবলা ভাবছিলাম।আল্লাহ্‌ এই তো পুরাই বুনো অল।তো কি হয়েছে আমিও বাঘা তেতুল।আমি একটা ছোট্ট নিঃশ্বাস নিয়ে বললাম!

আমার আপনাকে বিয়ে করতে সমস্যা আছে!(আমি)
__কি সমস্যা?(স্পর্শ)
আপনি এল্কোহলিক!(আমি)
__ছেড়ে দিলাম।
কিহ?
__এলকোহল!
আপনি স্মুক করেন।সিগারেট এর গন্ধ আমার সহ্য হয় না।
__আউচ এটস গন্না বি টাফ!
এই তো কারন পেয়ে গেলাম।
__ব্যাপার না এইটাও ছেড়ে দিবো।একটু সময় লাগবে!এই আর কি।
স্মুক করা ছেড়ে দিবেন?.
__হুম
কথায় বলে যে ছেলে সিগারেট ছাড়তে পারে সে যে কাউকে ছাড়তে পারে।
__আগে আপনাকে ঠিক মত ধরি ম্যাডাম তারপর না হয় ছাড়াছাড়ি নিয়ে ভাবা যাবে।
আমি বাসায় যাবো আসছি!(আমি উঠে দাড়ালাম)
__আরহে বার্গার?
আপনি খান।(কেনো জানি লোক টার উপর রাগ উঠতেছে।)

আমি হাটা দিয়েছি!মনে মনে ভাবছি একে তাড়াবো কেম্নে?
হেই মিস?
__(পিছনে ঘুরে তাকালাম)
আমাকে তাড়ানোর প্লান কি এখনো মাথায়?লাভ নেই তুমি মাথায় ঢুকে গেছো ম্যাডাম!

আমি আর কিছুই বললাম না চলে এলাম!

গাড়িতে এসে বসতেই কোথা থেকে জানি সমুদ্র চলে এলো!আমার কথা বাড়াতে ভালো লাগছে না উল্টো চিন্তায় আছি কি করে স্পর্শ চৌধুরী কে আব্বুর মাথা থেকে নামানো যায়।আমাকে চিন্তিত দেখে সমুদ্র বলে উঠলো?

__কি হয়েছে?
কিছু না।(আমি)
__চিন্তিত মনে হচ্ছে!
কিছু হয় নি বললাম তো।
__কিছু তো একটা হয়েছে!
না কিছু হয় নি।
__সিয়র কিছু হয় নি তো?
এই তুমি চুপ করবা? মাথা খাচ্ছো কেনো? অলরেডি মাথার ভেজা ফ্রাই একজন করছে।তুমি আবার শুরু কইরো না।এই তুমি জানো এই স্পর্শ চৌধুরী সালা পুরাই ঝানু মাল একটা।ওই ব্যাটা পুরাই সাইকো।নিজেও পাগল আমারে ও পাগল বানায় ছাড়বে।আল্লাহ্‌ রহম কর!
__কি হয়েছে? এত্ত রেগে আছো কেনো?
কি হয় নি বলো?কি বলে জানো?বলে……..(এতক্ষনে আমার মাথায় এলো সমুদ্র আমার পাশে।আল্লাহ্‌ সব বলে দিতে যাচ্ছিলাম।নীরা মাথা কি গেছে তোর?)
__কি বলে?(বেশ অবাক আর ভয় মিশ্রিত চেহারা)
কি বলে বলুক।এই আপনি এখানে কেনো?এখানে কি আপনার?(বেশ ধমক মেরে)
__কি আশ্চর্য! কি হয়ে না বললে বুঝবো কি করে?
বুঝতে তো কেউ বলে নি!আপনাকে বুঝতে হবে না।এখন বলেন আপনি এখানে কি করছেন?

আমাকে একটু লিভ দেবে? আসলে গাড়ি টা জারিফ নিয়ে গেছে।সুবহা আর ও গেছে। ভাবলাম ক্যাব নিয়ে নিবো কিন্তু তার আগেই তোমায় দেখতে পেলাম।তো একটু লিভ দাও না গো!

সে মিথ্যে বলছে আমি ঠিকি বুঝতে পারছি কিন্তু আমার কেনো জানি সেটা নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে করছে না।মাথায় ওই স্পর্শ ঢুকে গেছে হয়তো।আমার এখন ওর সব ইনফরমেশন লাগবে!এক কাজ করি নিসান কে বলি ও ই সব করে দিবে।

কি গো? চলো?
__হুহ?
বললাম চলো?
__হুম।
তো শুনেছো?
__কিহ?
ব্যাচেলর্স পার্টি আমাদের বাসায় হবে!
__কি পার্টি?
ব্যাচেলর্স পার্টি। কেনো সুবহা তোমাকে বলে নি?
__নাহ।কবে পার্টি? কিন্তু বিয়ের তো এখনো ৬ দিন বাকি।এখন কিসের ব্যাচেলর্স পার্টি?
পরশু পার্টি। আসলে এখন আমরা মানে বাড়ির ছোট রা একটা ছোট পার্টি থ্রো করছি।পরে বিয়ের আগের রাতে ছেলেরা আলাদা আর মেয়ে রা।
__তাহলে এইটার কি দরকার ছিলো?
সুবহা আর জারিফ একটু কোয়ালিটি টাইম পাবে।
__হ্যা তা তো বিয়ের পরেও পাবে।
তুমি না আনরোমান্টিক ই থেকে গেলে!(বিরক্ত মুখে নিয়ে)
__বাবা পারমিশন দিয়েছে?
কার তোমার না আমার?
__দুজনার ই।
হুম।
__অহহ তোমার বাসা এসে গেছে!
অহহ। হুম আচ্ছা থেক্স।

আমার তার কথাও এখন কোনো মাথা ব্যাথা ভা আগ্রহ নেই।
আমি ভাবছি স্পর্শ চৌধুরী কে নিয়ে। ভাবতে ভাবতেই কপালে কারো ছোয়া পেলাম।আতকে উঠলাম। চোখ তুলে তাকিয়ে দেখি……….

(চলবে…)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *