পেইন !! লেখাঃ এপিস ইন্ডিকা !! Part- 06
সেদিনের আশার আলো নিয়ে এসে ছিল একটি ফোন কল।।শিশিরের বাবার চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল সেদিন।।শান্তির নিশ্বাস ফেলে পুলিশ কেশ করে শিশিরের বাবা।।এবার পুলিশেরাও কাচু-মাচু হয়ে দারিয়ে সালাম করতে করতে কেশটা লিখে।।মারিয়ার স্টেটমেন্ট নিয়ে তারা আরো অবাক হয়।।তাদের সাথে আর দুজন জড়িত আছে শুনে।।কেস করার ঠিক মুহুর্তে মধ্য আসামিদের হাজির করে হাজতে ভরা হয়।।সব কিছু মুহুর্তেই যাদুর মতো কাজ করে চলছে।।
কেশ এখন আদালত পর্যন্ত আনা হয়েছে।।পরশু তার ডেট।। দিনগুলো কোনো রকম কেটে গেলেও বিপত্তি ঘটলো আগের দিন।।
তখন শিশিরের মা উঠান ঝার দিচ্ছিল।।হুট করে দুজন মহিলা ফুল বোরকা,, হাত মোজা , পা মোজা পরা বাড়ির ভিতর ঢুকলো।।শিশিরের মা তাদের দেখে খুব বিরক্তি প্রকাশ করলেন।।আর বলতে লাগলেন,,
—-কি চাই??
মহিলাদের মাঝে একজন মহিলা তার নেকাব তুলে কোনো বনিতা না করে বলতে লাগে,,
—-তোমাগো মত মানুষগর কাছে কি আর চাইতে পারি।।তয় তোমার ওই ধর্ষিতা মাইয়ার লাগি আমার পোলার বিয়ার প্রস্তাব আনছি।।কেউ তো আর বিয়া করবো না।।
শিশিরের মায়ের মাথায় যেন রাগ চেপে বসে।।তিনি জবাবের সুরে বলতে লাগে,,
—-আমার মেয়েরে আমরা কি করবো তা আপনাদের ভাবতে হবে না।।আপনারা যেতে পারেন।।
মহিলারা যেন ক্ষেপে গিয়ে বলতে লাগে,,
—-তোমাগো কারণে আমার পোলাডা জেলে।।না হয় ভুল কইড়া ফেলছে।।তয় কি আমাগো মত পরহেজগার ফ্যামালি গেরামে আর কইডা পাইবা।
।তাও তোমাগো ভাগ্য আমার পোলা বিয়া করতে চায়।।
শিশিরের মা এবার তেড়ে গিয়ে বলেন,,
—–অনেক শুনেছি আপনাদের কথা।। যান বের হন আমার বাসা থেকে।।ছেলেকে বাঁচা বার জন্য এত কাহিনী।।ভুলে যাবেন না আপনার ছেলের জন্য আমার মেয়ের এই অবস্থা।।আপনারও একটি মেয়ে আছে।।আল্লাহ না করুক তার সাথে এমন হলে কি করতেন??
—–গলা টিপ্পা মাইরা লাইতাম।।ওমন মেয়ে ঘরে তুলতাম নাকি জিবনে।।
—–আপনারা পাড়তেন।। তা আমার জানা আছে,, নিজে এক নারী হয়ে অন্য নারীর পীড়ন বুঝতে পারেন না।।সে যে কেমন মহিলা তা আমার জানা আছে।।বের হন আমার বাড়ি থেকে না হয় ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করবো আপনাদের।।
মহিলাটি পান মুখে পুরে বলতে লাগে,,,
—–কাম ডা ভাল করলা না।।এর পর যা হইবো আমাগো আর দুষতে পারবা না।।
চলে গেলেন তারা।।শিশিরের মা সেখানেই কাঁদতে লাগলেন।।
সেদিনি বিকেলের দিক আসামীদের পরিবারের আরো কিছু লোক জন আসে টাকার ওফার করে কেস তুলার জন্য।। কিন্তু রাজি হয় না তারা।।দেখতে দেখতে কেসের দিন এসে যায়।।সেদিন হাজির হয় সব প্রুব নিয়ে রুহুুল।। তিনি বড় এডভোকেট তার সাথে বাল্যকালের বন্ধু শিশিরের বাবার।।তার সাহায্য এতো দূর এগিয়েছে তারা।।
সব প্রূব জমা দেয়া হয়।।এ দল আর ও দল অনেক বিতর্কিত হয়।।তার মাঝে মারিয়ার তল পেটে খুব পীড়ন অনুভব হয়।।যা এ কদিনে অনেকবার হয়েছে।।মারিয়া সেখানেই কান্না করতে থাকে।।তাই রায় জানাবে কাল বলে শেষ করে দেয় সেদিনের মতো।।
মারিয়াকে হাসপাতাল থেকে দেখিয়ে বাসায় আনা হয়।।আর রুহুল নিজেও এসেছে তাদের বাসায়।।
খালি হাতে এসেছে বলে তিনি শিশিরকে নিয়ে বের হয় যান বাজারের দিক।।আজ বাজারের দিন বলে গ্রামে এতটা মানুষের উপস্তিত নেই বললেও চলে।।
বাজার থেকে অনেক কিছু নিয়ে বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায় তাদের।।এসে দেখে পুড় বাড়িতে আগুন লেগে গেছে।।ভিতরে কেউ থাকলে এতক্ষনে পুড়ে ছাই।।ছোট শিশির দৌড়ে ভিতরে যেতে নেয়।।তখনি রুহুল আটকাঁয় তাকে।।শিশির কান্না করতে করতে সেখানে যেতে চায় বার বার।।নিজের বাবা-মা,বোনকে এভাবে আগুনে পুড়ে যেতে দেখে শইতে পারছেনা শিশির।।চিৎকার করে কেঁদে যাচ্ছে সে।।চোখের সামনে এমন মর্মান্তিক ঘটনা সইতে পারেনি, ছোট শিশির জ্ঞান হারায় সে।।তখনি কিছু লোক দৌড়ে বাড়ির পিছন থেকে আসে।।তা দেখে রিহুল শিশিরকে নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।।তারপর তাকে তার সাথে ঢাকা নিয়ে আসে।।জ্ঞান ফিরার পর থেকে শিশিরের আর কাঁদে নি।।কেমন শক্ত হয়ে যায়।।রুহুলের ছেলে ছিল রাহুল,, শিশিরের সমবয়সী।। রুহুলের বউ শিশিরকে আপন করে নেয়।।বড় হয়ে উঠে তাদের কাছে শিশির।।
।
।
।
অতীত শেষ💥
হটাৎ কলিং বেল বাজাতে হুশে ফিরে শিশির।।
সে ড্রইং রুমে ঘুমিয়ে পড়েছিল।।গেট খুলতে পেপার পেল।।বুঝতেই পেরেছে দারোয়ান দিয়ে গেছে।।পেপার হাতে নিয়ে সোফা বসলো।। পেপার খুলতেই একটি হেডলাইন দেখে ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা চওড়া হয়ে উঠে,,যেখানে বড় বড় করে লিখা,,
—–রাহিন সরকারের বোন তার নাগরের সাথে পালিয়েছে।।যে নিজের বোনকে সামলাতে না পারে সে এই দেশকে কিভাবে সামলাবে।।।
এমন আরো অনেক কথা লিখা আছে।। আসলেই রাজনৈতিক জায়গাটা এমনি।।যেখানে নেতাদের হাচি কাশি দিলে ছাড়ে না।।আর তো বোন পালিয়েছে।।
আজ শিশির খুব খুশি সব মিলিয়ে কত হেনস্থ টা না করেছে বিন্দুর ভাইকে।।
শিশির পেপার রেখে নিজের রুমের দিক পা বাড়ায়।।
বিন্দু এখনো ঘুমুচ্ছে।।ঘুমাবেই না কেন।।সারারাত কেঁদেকেটে কাটিয়েছে।।সকালের দিক তার চোখ টা লেগেছে।।
বিন্দুর ঘুমটি যেন শিশিরের পছন্দ হচ্ছে না।।কিভাবে সে চিন্তা মুক্ত হয়ে ঘুমাচ্ছে।।শিশির কতখন মাথার চুল টেনে এদিক ওদিক তাকালো।।তখন তার চোখ গেল বিন্দুর শরীরে দিকে,,কাপর ঠিক নেই।।তার পেট থেকে কামিজটা সরে গেছে।।শিশিরের হটাৎ তার বোন মারিয়ার কথা মনে পরে।।সাথে সাথে চোখ মুখ শক্ত করে,,পাশে থাকা জলন্ত মম এনে বিন্দুর পেটের কাছে হেলে ধরে।।জলন্ত মম গলে গলে বিন্দুর পেটে ফোটা ফোটা পড়তেই বিন্দু চিৎকার করে উঠে বসে।।
বিন্দু শিশিরের দিক তাকিয়ে দেখে শিশির জলন্ত মম বাতি নিয়ে দাড়িয়ে হাসচ্ছে।।বিন্দুর পেটে জালা করছে খুব।।বিন্দু চিল্লিয়ে বলে উঠে,,
—-আপনি মানুষ?? এমন করলেন কেন?? কি করেছি আমি??
শিশির মমটা তার জায়গায় রেখে বিন্দুর গালে চেপে ধরে বলতে লাগে,,
—–কি করিসনি সেটা বল? তোরা আমার সুখ শান্তি সব কেড়ে নিয়েছিস।।আর এখন আরাম করে ঘুাচ্ছিস।।তা কেমনে হতে দেই বল।।মুখটা ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বলতে লাগে,,, কাউকে ছাড়বো না আমি।।বিন্দুর মুখের উপর আঙ্গুল তুলে বলতে লাগে,,মাইন্ড ইট।
চলে যায় শিশির।।বিন্দু আবার কাঁদতে লাগে বসে।।
।
।
।
আয়নার সামনে একটি তয়লা পেচিয়ে দাড়িয়ে নিজের শরীর খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে ব্যস্ত ঝিনুক।।আর ভাবচ্ছে,,
—-কি নেই আমার।।উল্টো সবার থেকে দেখতে অনেক আকর্ষণী আমি।।যে কোনো সুদর্শন ছেলে আমার সাথে বেডে যেতে চায় এক বার না শতবার।।কিন্তু শিশির ওর আমার প্রতি কোনো টানি নেই।।কেন আমি তো ওকে সেদিন অনেক খুশি করেছিলাম।।তাহলে কেন সে আমায় চায় না।।তয়লাটা খুলে ফেলে দেয়র ঝিনুক আর বলতে লাগে এই দেহে যে স্পর্শ তুমি করেছ আমি যে ভুলতে পারছিনা।।আর তোমাকেও ভুলতে দেব না।।আমি তোমাকে আমার করে ছারবো।।
।
।
সকাল থেকে শিশিরে কোনো নাম গন্ধ পাচ্ছে না বিন্দু।।তাই ধীরে ধীরে নীচে নেমে আসে সে।।সদর দরজা খুলা।।তার উপর নিচে কেউ নেই।।যেই না ছুটে বের হতে নেবে ওমনি হাতে হেচকা টান খায় বিন্দু।।পিছনের দিক ফিরে মানুষটিকে দেখে ভয়ে কেঁপে উঠে সে আর বলত লাগে,,
—–আপনি…!!
চলবে,,