পারফেক্ট ভিলেন

পারফেক্ট ভিলেন ! Season- 02 !! Part- 03

মেরিন হাটতে হাটতে আরেকটু গভীর পানিতে গেলো। তখনই হঠাৎ ওর মনে হলো ওর পায়ে কিছু পেচালো। মেরিন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওর পায়ে টান লাগলো। ওকে টেনে পানির গভীরে নিয়ে গেলো। মেরিন তো সাতার কাটতে পারেনা…
হাবুডুবু খেতে লাগলো। মেরিন তলিয়ে যেতে লাগলো । প্রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে নিলো। তখন কেউ এসে ওকে বাচালো। ওকে পানি থেকে তুলে নিয়ে এলো। তার নাম নিরব…
.
নিরব: hello miss… এই যে hello…
মেরিন আধো আধো চোখে নিরবকে দেখলো। তখন নির্ঝর এলো। নির্ঝরের হাত থেকে ঝুড়ি পরে গেলো।
নির্ঝর: জান….
নির্ঝর দৌড়ে এলো।
নির্ঝর: জান … ও জান… কে আপনি? কি করেছেন আমার জানের সাথে? ওর কিছু হলে i swear …
নিরব: cool cool… কারো জীবন বাচানোর পরিবর্তে যে এমনভাবে thanks বলা হয় সেটা আজকে জানলাম…
নির্ঝর: মানে?
নিরব: মানেটা আপনার জানের কাছে থেকে জেনে নিবেন… আমি যাই… আপনার জ্বীন i mean জান…😜 যে খামছি মেরেছে injection নিতে হবে মনে হয়?
নির্ঝর: মানে?
নিরব: না না অন্যকিছু মনে করবেন না… পানি থেকে ওঠার জন্য আমাকে খামছে ধরেছিলো আরকি…😁… আসি young man….
বলেই নিরব চলে গেলো। মেরিন কোনরকমের নিরবের চেহারাটা দেখলো।
.
খান বাড়িতে…
কনিকা: কেন যে দেশে এলাম? দেশে এলাম কি এলাম না আমার মেয়েটা ২বার বিপদে পরলো। দেখেছো ওই মওলানা সাহেব এই কারনেই ওকে বাংলাদেশে না রাখতে বলেছিলো। তোমরা তো কোনো কথাই শুনলেনা।
কবির: আহ কনা… কি বলো এগুলো?
কনিকা: ঠিকই বলছি।
মেঘ: আম্মু… এগুলো সব কুসংস্কার।
কনিকা:যদি কুসংস্কার হলে এমন হচ্ছে কেন আমার বাচ্চাটার সাথে?
অধরা ( মেঘের বউ): আম্মু… এটা just accident …
কনিকা:মোটেও না। আমার বাচ্চাটা…
.
পরদিন…
নির্ঝর মেরিনকে ভার্সিটিতে নিয়ে গেলো। এখন থেকে ওই নিয়ে যাবে আর নিয়ে আসবে। মেরিন ক্লাসে গেলো।
দোলা: কি রে তোকে এমন লাগছে কেন?
মেরিন: কিছুনা।
দোলা:আল্লাহই জানে নতুন স্যারটা কেমন হবে? USA ফেরত। মনে হয় সেই হ্যান্ডু হবে। 😍।
মেরিন: হায়রে…
তখন dean sir ভেতরে ঢুকলো। সাথে আরেক জনকে নিয়ে। যাকে দেখে মেরিন ঝটকা খেলো। কারন এটা নিরব।
dean: hello my dear students …
সবাই: hello sir…
dean : meet your new teacher … A.K.Nirob .
সবাই : hello sir…
dean চলে গেলো।
দোলা: he is too much handsome…
নিরব: hello my all students … আমার নাম A.K.Nirob… ভার্সিটির টিচাররা বন্ধুর মতো হয়। কিন্তু আমি তোমাদের বন্ধুর মতো হতে চাইনা।
সবাই:!!!!
নিরব: আমি তোমাদের বন্ধুর মতো হতে চাইনা কারন আমি তোমাদের বন্ধু হতে চাই। so… তোমরা কি আমাকে বন্ধু বানাবে?
সবাই: জী স্যার…
নিরব : কে কে আমার বন্ধু হতে চাও? হাত তোলো….
সবাই হাত তুলল। মেরিন ছারা। নিরব সেটা দেখলো।
নিরব : এই যে মিস জান আপনি কি আমার বন্ধু হতে চান না?
সবাই মেরিনের দিকে এমন ভাবে তাকালো যেন ও ১টা এলিয়েন।
নিরব: guy guys… ওকে অমন করে দেখো না। সে আমার জান না। অন্যকারো। আমি তার নামটাও জানিনা।
সবাই:!!!
নিরব: মিস জান…
মেরিন দারালো।
নিরব: আপনার নাম কি?
মেরিন : মেরিন বন্যা খান।
নিরব: মেরিন বন্যা খান। সে কি আপনার husband ?
মেরিন: no… fiance…
নিরব:ওহ congratulations …
মেরিন: thank you sir…
নিরব: never mind ১টা কথা বলি।
মেরিন: জী স্যার।
নিরব : আপনি ভীষন সুন্দর।
মেরিন ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো।
মেরিন : thank you sir….
.
ক্যান্টিনে…
মেরিন: কি রে… তোর মুখের ১৩টা বেজে আছে কেন?
দোলা: তো কয়টা বাজবে? নিরব স্যার… সেও তোকে দেখে ফিদা।
নির্ঝর ভাইয়া… তোর হবু জামাই…
নীড় ভাইয়া… ragging হলেও তোর সাথে dance করতে চায়। যার কিনা কোনো মেয়েতে interest নেই…
মেরিন: 🙄। কে নীড়?
দোলা: তুই নীড় ভাইয়াকে চিনিসনা?
মেরিন: না।
দোলা: ওই যে ragging leader….
মেরিন:😒।
দোলা: এমন করে তাকাসনা।
মেরিন: আজাইরা পেচাল বন্ধ কর তো।
দোলা: 🤣🤣।
মেরিন: কি রে? মাত্র মেঘ ছিলো। এখন আবার রোদ কেন?
দোলা: ১টা জিনিস মাথায় এলো তাই হাসছি।
মেরিন: কি?
দোলা: নিরব,নির্ঝর,নীড়… তোর জীবনটা “Nir” ময় হয়ে গেছে।
মেরিন: কুছভি…
দোলা:🤣🤣।
মেরিন: ছাগল।
.
ছুটিরপর…
মেরিন হেটে যাচ্ছে তখন কিছুর সাথে বারি খেলো। মাথা তুলে দেখে নীড়।
নীড় : চোখ কি ব্যাগে নিয়ে ঘোরো?
মেরিন: হ্যা আমি চোখ ব্যাগে নিয়ে ঘুরি। কিন্তু আপনি? আপনি তো চোখ বাড়িতেই রেখে আসেন।
নীড় : কি বললা তুমি?
মেরিন : যেটা শুনলেন।
নীড় : ওই ওই ওই … তুমি নিজেকে কি মনে করো?
মেরিন: আমি নিজেকে মেরিন মনে করি।😎।
নীড় : ভিপির fiance হয়ে নিজেকে যদি অনেক কিছু মনে করে থাকো তাহলে ভুল ভাবছো।
মেরিন: আমি ভিপির বউ বলেতো আপনার মতো বাদর আমাকে ভয় পান।
নীড়: wait wait wait… ভয় মানে? ভয় তাও তোমার মতো পিচ্চিকে?
মেরিন: of course …
নীড়: listen miss স্বপ্ন কন্যা… না আমি আপনাকে ভয় পাই আর না আপনার fiance ভিপি নির্ঝরকে ভয় পাই। just তাকে সম্মান করি। অমন নির্ঝর মাহমুদ কে আমি দিনের মধ্যে হাজারবার কিনতে পারি।
মেরিন: 😒। আপনি কি আমাকে টাকার গরম দেখাচ্ছেন?
নীড়: no…. আমার পাওয়ার সম্পর্কে সতর্ক করছি। এরপর থেকে যেন কখনো আমার সামনে না আসো।
মেরিন: excuse me… ভার্সিটিটা কি আপনার কেনা?
নীড়: এমন ১০ কিন্তে পারি…
মেরিন: আমিও এমন ২০টা কিনতে পারি। huh…
নীড়: huh…
২জন চলে গেলো। যখনই ২জনের দেখা হয় তখনই ঝগরা হয়।
.
কিছুদিনপর…
মেরিন drive করে shopping mall এ যাচ্ছে। তখন দেখলো নীড় কতোগুলো শিশুকে রাস্তা পার হতে সাহায্য করছে ।
মেরিন: impressive … oh my goodness… গাড়ি আসছে।
মেরিন গাড়ি থেকে বেরিয়ে নীড়কে সরতে বলতে লাগলো। আসলে নীড় বাচ্চাদেরকে পার করে ওদের সাথে কথা বলতে বলতে উল্টা পায়ে হেটে আসছে। খেয়ালই করেনি যে ১টা গাড়ি আসছে। মেরিনের ডাক শুনে ঘুরে দেখে গাড়ি । সরতে সরতে গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগেও গেলো।
মেরিন: নীড়….
মেরিন নীড়কে hospital এ নিয়ে গেলো।
.
হসপিটালে…
ট্রলিতে করে নীড়কে ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে। মেরিন নীড়ের হাত ধরে রেখেছে। OT তে নেয়ার সময় ডক্টররা ভীষন করে নীড়ের হাত থেকে মেরিনের হাত সরালো। নীড়কে OT তে নেয়া হলো। কেন যেন নীড়ের এমন রক্তাত্ব অবস্থা দেখে মেরিনের চোখ দিয়ে পানি পরছে। নীড়ের মোবাইল টোবাইল গাড়িতে থাকায় মেরিন ওর family কে inform করতে পারলোনা। একটুপর ডক্টর বের হলো।
মেরিন: ডক্টর উনি কেমন আছে?
ডক্টর: এক্ষনি o+ রক্ত লাগবে।
মেরিন : ডক্টর আমার blood group o+…
ডক্টর: আসুন চেক করে নেই।
মেরিন: ok…
মেরিন রক্ত দিয়ে নীড়কে বাচালো। এরপর নির্ঝরকে ফোন করলো। নির্ঝর ছুটে এলো।
নির্ঝর: নীড় এখন কেমন আছে?
মেরিন : out of danger …
নির্ঝর: thanks god… তোমার কি ভীষন weak লাগছে?
মেরিন: না… উনার family কে ফোন করেছো?
নির্ঝর: হ্যা। ওই তো চলেও এসেছে।
মেরিন দেখলো নিহাল-নীলিমা দৌড়ে আসছে।
নিহাল: কোথায় আমার ছেলেটা কোথায়?
নীলিমা: কেমন আছে?
নির্ঝর: uncle … শান্ত হন। he is out of danger now…
.
২দিনপর…
মেরিন-নির্ঝর নীড়কে দেখতে এলো। ফুলের তোরা নিয়ে। ওরা নিহাল-নীলিমাকে সালাম দিলো। নীলিমা মেরিনকে বুকে জরিয়ে নিলো।
নীলিমা: তুমি না থাকলে আমার ছেলের যে কি হতো মা… তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ মা। আমার ছেলেকে বাচানোর জন্য।
মেরিন: এটা তো কর্তব্য ছিলো আন্টি। infact সবারই এটা কর্তব্য।
নিহাল: তবুও মা। আজকাল কেউ এমনটা করে না মা।
নীড়: তার করার পেছনেও কারন আছে বাবা। আমি ১বার তার জীবন বাচিয়েছি। তাই সে আমার জীবন বাচালো। simple …
নিহাল: নীড়… এটা কেমন ধরনের কথা। say sorry to her…
নীড়: …
নীলিমা: ও তোকে কেবল হসপিটালেই আনেনি তোকে রক্তও দিয়েছে। thank youও বলো।
মেরিন : not needed আন্টি। উনি may be মাথায় extra ব্যাথা পেয়েছেন। আগে ২-৩টা তার ছেরা ছিলো এখন সবগুলোই ছিরেছে।
নিহাল-নীলিমা-নির্ঝর হাহা করে হেসে ফেলল। কিছুক্ষন কথা টথা বলে মেরিন-নির্ঝর চলে গেলো।
.
নীড় মনে মনে: তোমাকে আমি আমার দুর্বলতা হতে দিতে পারিনা মেরিন। কারন তুমি আমার না। already নিজের অজান্তেই প্রথম দেখাতে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। ভুল করে ফেলেছি। কিন্তু তোমাকে ভালোবাসতে যে পারিনা… এটা যে অন্যায়… তুমি যে…
.
কিছুদিনপর….
মেরিন : না জানি নীড় এখন কেমন আছে ? rude কথার জন্য তো আর দেখাও করতে গেলামনা। ধুর ভালোলাগেনা।
নির্ঝর: জান… তোমার কফি…
মেরিন: thank you…
নির্ঝর : মন খারাপ?
মেরিন: না..
নির্ঝর: বুঝেছি আজকে দোলা আসেনি বলে মন খারাপ ।
জবাবে মেরিন মুচকি ১টা হাসি দিলো।
মেরিন: আচ্ছা আসছি। ক্লাস শুরু হবে।
নির্ঝর : ok জান।
.
মেরিন বারান্দার সাইড দিয়ে হেটে ভার্সিটির main gate এর দিকে তাকাতে তাকাতে হেটে যাচ্ছে। যদি নীড় আসে। তখন দেখলো নীড়ের গাড়ি। মেরিনের মনটা আনন্দে ভরে উঠলো। নীড় গাড়ি পার্ক করে style মেরে গাড়ি থেকে নামলো। মেরিন আরেকদফা crush খেলো। নীড়কে দেখে হাটতে হাটতে মেরিন নিরবের সাথে ধাক্কা খেলো।
মেরিন: মা গো…. পরলাম না কেন?
মেরিন চোখ মেলে দেখে যে নিরব নেশা লাগা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
মেরিন : sorry sir…
নিরব: not needed… এই কদিনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তোমাকে পরে যাওয়া থেকে ধরার।
মেরিন: again sorry sir….
নিরব: its ok…
মেরিন : স্যার আমি কি যেতে পারি?
নিরব: of course … জান… ভিপির জান….
মেরিন চলে গেলো।
নিরব: ভিপির জান? নির্ঝরের। নিরের…. নাহ… অন্য Nir এর…. nirobএর… নিরবের ভালোবাসা….
.
ছুটিরপর…
মেরিন খোশ মেজাজে class করে বের হচ্ছে।
নীড়: এই যে জনদরদী ভিপির বউ…
মেরিন: কি?
নীড়: এখানে আসো।
মেরিন: পারবোনা।
নীড় : ঘাড় ত্যারা কোথাকার….
নীড় সামনে এগিয়ে এলো।
নীড় ১টা ফুলের তোরা দিয়ে
বলল: thank you… 😒..
মেরিন: এমনভাবে thank you বলছেন যেন উদ্ধার করছেন।
নীড়: নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন তোমাকে thank you বলছে সেটা তোমার কাছে চাদ পাওয়ার মতো।
মেরিন: হ্যা ঠিক। চন্দ্র গ্রহনের চাদ।
নীড়: কি?
মেরিন: হামম।
নীড়: তো তুমি কি সেই চন্দ্রকে গ্রাস করার রাক্ষসী?
মেরিন: আমি রাক্ষসী?
নীড়: আবার জিগায়?
মেরিন: আপনি কি জানেন যে আপনি ১জন অকৃতজ্ঞ…
নীড়: হামম। জানি তো।
.
বলেই নীড় চলে গেলো।
নীড়কে বকতে বকতে মেরিনও গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো। কিছুদূর যেতেই মেরিনের গাড়ি থেমে গেল।
মেরিন: আরে কি হলো?
.
চলবে…