পাথরের বুকে ফুল

পাথরের বুকে ফুল ! সিজেন 2 !! Part- 02

৩.__________________________
—-” ইহান চৌধুরীর অনৈতিক কাজ সম্পর্কে আমার কাছে সকল প্রকার ডিটেল্স আছে।তবুও কেনো আপনি এই গুলো চ্যানেলে দিতে চাচ্ছেন না স্যার??আর এই খবর গুলো লিক করার মাধ্যমে আমাদের চ্যানেল অনেক নাম কামাবে স্যার।তবুও রাজি হচ্ছেন না??আপনারই লাভ।বুঝার চেষ্টা করুন।
—” তৌফিক তুমি বেশিই বলছ??ইহান চৌধুরী মাফিয়া ডন।এর সাথে চাইলেও আমরা পেরে উঠতে পারবো না।তাই সব নিউজ খবরে দিয়ে লাভ কি??শুধু শুধু নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলা ছাড়া আর কিছুই না।তোমার না হয় পরিবার নেই কিন্তু আমাদের আছে তো??এসব ছেড়ে অন্য পিছু বলো!!”
তৌফিকের মেজাজ খারাপ হয়েগেছে।তার মতে সাংবাদিক পেশা বেছে নেওয়া মানে তো নিজের সব ত্যাগ দেওয়া।কাজকে ভালোবাসা।আর সততার সাথে নিজের দায়িত্ব পালন করা।সেখানে এভাবে পরিবারের কথা ভেবে ভীতূ হয়ে পড়ে থাকার মানে কি??নিজের পরিবার নেই কথাটা শুনেই তৌফিক দীর্ঘশ্বাস নেয়।এই পেশার জন্যেই নিজের প্রান প্রিয় স্ত্রীকে হারিয়েছে।মেয়েকে গোপনে রেখেছে।সব নিজের কাজকে সততার সাথে পালন করার জন্য।তৌফিক কিছু ছোট শ্বাস নিয়ে বললো,
—” তা স্যার এবার কি করবো বলেন??ইহান খান আরো কিছু মানুষ মারুক আর স্মাগলিনের ব্যবসাটাও চলিয়ে নিয়ে যাক।আমরা হাত গুটিয়ে বসে বসে বেতনের টাকায় আইয়াশি করি।কি বলেন??”
ফোনের অপর প্রান্তের লোকটা কিছুটা থমথমে হয়ে পড়ে।সে ভেবে পায়না এই তৌফিকের প্রানের ভয় নেই কেনো??সব সময় যতসব ভয়ংকর খবর নিয়ে হাজির হয়।তিনি বিরক্তি নিয়ে বললো,

—” ইহানের ব্যাপারটা পরে দেখছি তুমি বরং অরিত্রান খানের রিপোর্ট করো।দুদিন পরে দেশে আসছে।এই খবর আমাদের নিউজ চ্যানেলে দিয়ে দিতে বলো।”
তৌফিক বিস্ময়ে হতভম্ভ হয়ে বললো,
—” অরিত্রান খান দেশে আসছে মানে কি??উনি খুবই ভয়ংকর মানুষ আমার জানা মতে।একদম নির্দয়, দয়ামায়াহীন পাথরের নেয় মানুষ।সাথে খুবই আক্রোশ ধারি ব্যক্তি।বাহিরের দেশ গুলো অলরেডি কাপিয়ে ফেলেছে।দেশে আসলে কি হবে স্যার??”
—” আরে আশ্চর্য তো??তুমি কি তাকে চিনো নাকি??আমার জানা মতে সে বিশাল বিজন্যাস ম্যান।খুব কম বয়সে প্রখর বুদ্ধি দিয়ে শেয়ার বাজার সহ ফ্যাশন বাজার দখল করে আছে।সে দেশে আশা মানে আমাদের দেশে কত লাভ জানো??তুমি কি না তাকে ডেঞ্জারাস প্রমান করার পিছনে পড়ে আছ।আজব।”
—” স্যার সে প্রকাশ্য খুনি।যাদেরই অপছন্দ হয় খুন করে দেয়।খুনের ধরনও ভয়ংকর। আত্না কেঁপে যাওয়ার মত।আমি কিছু দিন তার ব্যাপারে স্টাডি করেছি।বহুল জনপ্রিয় হলেও সে মারাত্মক ব্যক্তি।”
ফোনের অপর পান্তের লোকটা একটু চিন্তায় পরে।কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,
—” সত্য!!”
—” হুম স্যার।আর উনি কথাও যাওয়া মানেই কোনো না কোনো কাজে যায়।তার মানে দেশে আসছে তাও কোনো না কোনো বড় কাজে।আমাদের উঁচিত তার দিকে নজর রাখা।কি বলেন স্যার??”
—” দেখো আমার তো ওর কথা শুনেই অদ্ভুত লাগছে।কাল তো তুমি আবার খুলনা আসছ!!অফিসে কথা হবে।এখন রাখি। ”
কথাটা বলেই গট করে কলটা কেটেঁ দিলো।তৌফিক ভেবে পায় না এই লোক সাংবাদিক কেনো হলো??ভিতূর ডিম একটা।জাস্ট বিরক্ত।নিজের চ্যানেল কিছুদিন পরেই শুরু করবে।তখন আর কারো দাসত্ব করতে হবে না।ওয়াসেনাত মাত্রই ঘরে ডুকেছে।ডুকেই বাবার চিন্তিত মুখ দেখে তার সামনে দাঁড়িয়ে পরে।চিন্তিত ভঙিতে বলে উঠে……..
—” কি হলো সাংবাদিক বাবা আমার??এত চিন্তিত কেনো তুমি??কিছু কি হয়েছে??”
তৌফিক আনমনেই বলে উঠে,
—“তেমন কিছু না মা। অরিত্রান খান দেশে আসছে।আল্লাহ জানে দেশের কি হয়??”
ওয়াসেনাত হেজাবের পিন খুলতে খুলতে প্রশ্ন করে,
—” এই অরিত্রানটা আবার কে??রিমিরই ক্রাশ??”
—” তুমি চিনবে না।আর রিমির ক্রাশ মানে??”
—” তেমন কিছু না বাবা।তবে বাবা সে কি খুব ভয়ংকর??”
তৌফিক সোফায় হেলান দিয়ে বসতে বসতে বললো,
—” সে এক ঘূর্ণিঝড়। যেখানেই যায় সব উড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।যে একবার তার নজরে পড়ে সে তার জীবনে আধিপত্য বিরাজ করে।খুবই ঠান্ডা আর তীক্ষ্ণ তার চলনবলন।ভয়ংকর আর মারাত্মক সে।পাথরের কলিজা তার।দয়ামায়া অনুভতি হীন মানুষ সে।
ওয়াসেনাত চমকে বললো,
—” কি বলো বাবা!এমন মানুষ হয় নাকি??গ্যাংস্টার নাকি??”
তৌফিক মেয়ের দিকে তাকিয়ে হাসলো।তারপর বললো,
—” গ্যাংস্টার দল নিয়ে নিজের শিকার করে কিন্তু সে সিংহের মত একাই থাবা দিয়ে নিজের শিকার ধরে।এক কথায় ও গ্যাংস্টার না মনস্টার।”
ওয়াসেনাত ভয়ে ভয়ে বাবার পাশে বসে বললো,
—” তুমি তার সাথে একদম দেখা

করবে না।আল্লাহ আমাদের যাতে তার সাথে দেখা না হয় কখনো।আমিন। তুমিও বলো বাবা।”
তৌফিক হেঁসে বললো,
—” আমি তো তার সাথে দেখা করতে চাই।এই ভয়ংকর প্রানীকে না দেখলে হয় নাকি??তাই আমিন বলতে পারবো না।তোমার বাবার কাজই এটা মা।জীবনে সত্যকে ধারন করাই আমাদের কাজ।অন্যায় কারিকে কখনো মাপ দিবে না যতক্ষণ সে আল্লাহ পথে না আসে।দোষিকে তার শাস্তি পেতেই হয়। তবে তুমি সাবধানে থাকবে।বাবা আবার কাল চলে যাবো।হল থেকে অকারনে বের হবে না।
ওয়াসেনাত মাথা নাড়ায়।তার মন খারাপ হয়েগেছে। তৌফিক আবার বললো,
—” চলো আজ আমি রান্না করেছি।খেতে চলো।আর এত দেরি কেনো হলো??”
বাবার কথা শুনেই ওয়াসেনাতের ইহানের কথা মনে পড়ে।কপাট রাগ নিয়েই বললো,
—” আর বলিও না বাবা এক অসভ্য লোকের সাথে দেখা হয়েছে।পুরাই অসভ্য মুখে যা আসে তাই বলে।ছিইই..চল তো এখন এসব নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।”
—” কে লোকটা?? বাবাকে বল।খুঁজে বেড় করে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করবো।”
—” আরে বাবা বাদ দেও তো।আমার খুব খেদে পেয়েছে দুপুরেও কিছু খাইনি।এখনো কি না খাইয়ে রাখতে চাও??”
তৌফিক হেঁসে বললো,
—” না না চলো মা।”
ইহান নিজেকে আয়নায় দেখছে।ফর্সা গাল,খোঁচা খোঁচা চাপা দাঁড়ি।মাথার দু’পাশে হালকা চুল আর মাঝে ঝাঁকরা চুল।কালো কালো ডাগরআঁখি। কম কোনো অংশে না।তাকে দেখে মেয়েরা ফিদা হয়।রাগ করে বলে তো তার মনে হয় না।তবে ওই মেয়ে কেনো কপাট রাগ নিয়ে কটমট করে তাকিয়ে ছিলো??ইহান ভাবে।আরো ভাবে।যে তার মত ব্যক্তিকে উপেক্ষা করতে পারে সে আসলেই সাধারন কেউ নয়।তবে কে??ইহানের আগ্রহের মাত্রা বাড়ে।সাথে রাগ।ইহান নিজের গালে হাত দিয়ে ঘষে।এই গালেই চড় মেরেছে মেয়েটা।কথাটা ভাবতেই রাগে তার শরীর জ্বলে যাচ্ছে। মেয়েটাকে দেখে নিবে সে??ইহান রাগি গলায় চেঁচিয়ে ডাকলো,
—” শৈকত!!শৈকত!! শৈকত!!
শৈকত দৌড়ে আসে।হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,
—” বলেন স্যার!!”
—” ওই মেয়েটার খোঁজ লাগাও।এখন কোথায় আছে??”
শৈকত অবাক হয়ে বললো,
—” কেনো স্যার??”
—” হিসাব নিতে হবে।”
—” আপনি কি তাকে তুলে আনবেন?? মেয়েটা ছোট স্যার বাদ দেন না।”
ইহান রাগে কটমট চোখে তাকায়।শৈকত চোখ সরিয়ে ফেলে।তারপর বলে,
—” স্যরি স্যার।”
—” যাও যা করতে বলেছি করো।”
শৈকত রুম থেকে বেড়িয়ে আসে।চোখে মুখে হেঁসে উঠে বলে,
—” আপনার দিকে ঘনিয়ে আসছে ইহান চৌধুরী। অরিত্রান খান ইজ ব্যাক।”
শৈকত কিছু সময় পরে ফিরে এসে বললো,
—” স্যার মেয়েটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। বাবা তৌফিক আহমেদ।কি করে তা বলা নেই।মায়ের খবরটাও জোগাড় করতে পারলাম না স্যরি স্যার।তবে সে হলে থাকে।”
—” তা হলে হল থেকে তুলে আনো!!”
শৈকত অবাক হলো।তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,
—” ও হলে নেই স্যার।”
—” নেই মানে??”
—” বাহিরে গেছে।”
—” তাহলে গেট থেকেই তুলে আনবে।কিন্তু ওকে চাই।এখানে উপস্থিত করো দ্রুত।”
ওয়াসেনাতের বাবা তাকে ভার্সিটির গেটের সামনে নামিয়ে দিয়ে চলেগেছে। ওয়াসেনাত ভার্সিটিতে ডুকতে যাবে তার আগেই কেউ তাকে টেনে গাড়িতে তুলে নেয়।তার মুখ রুমাল দিয়ে চেপে ধরে।ওয়াসেনাত হাঁসফাঁস করে।চিৎকার করতে চায় কিন্তু তা আর করতে পারে না।কেউ তার হাত বেধে দেয়।ওয়াসেনাতের চোখের কোন বেয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রুধারা।কি হচ্ছে তার সাথে??এরা কারা??কোথায় দিয়ে যাবে তাকে??কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই সে নিস্তেজ হয়ে পরে।তার আর কিছু মনে নেই।

৪._________________________
রিমন বিছানায় উপুত হয়ে শুয়ে শুয়ে গান শুনছে।হঠাৎ করেই বিছানার পাশের ফোনটা বেজে উঠে।রিমন বিরক্ত। খুবই বিরক্ত। যবে থেকে অরিত্রান তাকে এদেশে কাজের জন্য রেখে গেছে তবে থেকেই এই ফোন তার জীবন তেজপাত করে দিয়েছে।দিনে শতবারের উপড়ে এতে কল আসে।ছুঁড়ে ফেলে দিতে ইচ্ছে করে তার।তবে দিতে পারে না।অরিত্রানের কোনো কল যদি মিস হয় এই ভয়ে।অরিত্রানের কল মিস মানে রিমনের গর্দান হাতে নিয়ে বসে থাকা।যদিও অরিত্রান তার কল্লা নিবে না।তবুও ভয়।রিমন ফোনটা তুলে মুখের সামনে ধরে।ধরতেই তার গান শুনে নাচা নাচি করা মন মুহূর্তেই চুপসে যায়।ঢোক গিলে কিছুক্ষণ গলা ঠিক করে।তারপর কল রিসিভ করে কানে ধরে।মৃদূ স্বরে বলে,
—” হ্যালো!!”
অপর প্রান্ত থেকে গম্ভীর গলায় বলে উঠলো,
—” ফোন কোথায় থাকে??এত সময় লাগলো কেনো তোর??”
—” স্যরি আসলে আমি ওয়াসরুমে ছিলাম।”
কথাটা বলেই রিমন দুই গালে হাত দিয়ে তওবা তওবা করলো।মনে মনে বললো,
—” হে আল্লাহ মিথ্যা বলার জন্য ক্ষমা করো।এই যাত্রায় বাঁচিয়ে দেও।আর মিথ্যা বলবো না।”
রিমন গায়েবি আওয়াজ শুনতে পেলো কেউ বলছে,
—” নারে এই যাত্রায়ও তুই বেচে যাবি কিন্তু মিথ্যা ছাড়বি না।”
রিমন স্বপ্ন রাজ্য থেকে ফিড়ে এলো, কারো ধমকানিতে।রিমন চমকে বিরক্তি নিয়ে বললো,
—” অরিত্রান ভাই সব সময় এত ধমকাস কা??তুই মানুষ না তাই বলে কি আমরাও মানুষ না নাকি??”
—” হোয়াট……..”
রিমন মুখ ফুসকে বেশিই বলে ফেলেছে।তাই নিজের মাথায় নিজে গাট্টা মেরে আবার বিনিত স্বরে বললো,
—” স্যরি স্যরি।না মানে ইয়ে ভুল মানে হয়েগেছে।আচ্ছা তুই নাকি বাংলাদেশে আসবি??কথাটা কি সত্য??”
—” হুম।
—” কিন্তু কেনো??আবার খুন??”
অপর প্রান্ত থেকে জবাব এলো না।কিছুসময় পরেই অপর প্রান্ত থেকে সে বললো,
—” যে কারনে কল করা, হাবিবকে পাওয়া গেছে??”
রিমন নিরাশ গলায় বললো,
—” না।”
—” পালিয়ে যাবে কই।”
কথাটা বলেই কল কেটেঁ দিলো।রিমন বুঝেনা দুই মিনিটের জন্য কল করে তাকে এভাবে জানে মারার কি দরকার।তবুও কিছু বলতে পারে না সে।ভয়ে।বন্ধুকে যে কেউ এত ভয় পায় তা সে নিজেকে না দেখলে বুঝতই না।রিমন নিজের আইডিতে ঘুড়ছে।তার এখন আর গান শুনতে ইচ্ছে করছে না।ঘুড়তে ঘুড়তেই তার চোখ আটকা করলো একটা ছবিতে।মেয়েটার চুল উড়ছে। এক হাত মুখের এক পাশে দিয়ে আছে।পরক্ষনেই রিমনের মাথায় এলো আরে এতো মিস ঝুগরুটে!!যার সাথে তার কালই বেশ ঝগড়া হয়েছে।প্রথম দেখায় ঝগড়া করেছে এই মেয়ে।রিমন আগ্রহ নিয়ে আইডিতে ডুকে।তার কিছু মেয়ে ফ্রেন্ডের সাথে রিমির এড আছে। সেখান থেকেই এই ছবি আসা।রিমন ঘুরে ঘুরে রিমির সব ছবি দেখলো।কিছুসময়ের জন্য সে অন্য দুনিয়ায় বিচরন করছে।ভালো ভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সে রিমির সব ছবি দেখেছে।হঠাৎ করেই তার এই ঝুগরুটে মেয়ের সাথে একটু পরিচিত হতে হচ্ছে করছে।যদিও এই মেয়ে তাকে পাত্তা দিবে বলে মনে হয় না।তবুও একবার চেষ্টা করতেই পারে।রিমন নিজের আইডি লক করলো।তারপর রিমিকে একটা ছোট মেসেজ করলো।রিমি যাতে তাকে না চিনতে পারে তাই।তাতে লেখা,
—” মিস ঝুগরুটে!!! ”
রিমন অনমনেই হাঁসে। মেয়েটা মিষ্টি দেখতে।শুধু ঝগড়ায় পটু খুব।মনে হয় এই বুঝি হামলে পড়বে।হঠাৎ করেই রিমন অবার ভাবে এটা কি করলো সে??চিনে না জানে না একটা মেয়েকে দেখেই মেসেজ দিয়ে দিলো??রিমন ভারী চিন্তায় পড়লো।এটা কি হলো??এখনই ডিলেট করে দিবে।যেই ফোন তুলতে যাবে তখনই তার ডাক পরলো।একজন এসে বলেগেছে দাদাজান ডাকছে।নিশ্চুই অরিত্রানের ব্যাপারে কথা বলবে।তাই রিমন তড়িঘড়ি করে উঠে দাদার কাছে চলে যায়।
—” অরিত্রান কি সত্যি এই বাসায় আসবে না??”
অরহাম খান সরু গলায় প্রশ্ন করে।
রিমন মাথা নিচু করে বলে,
—” দাদাজান আপনি তো জানেনই অরিত্রান বাড়িতে থাকে না।সে যেখানই যায় হোটেলে থাকে।এত দেশে তার বাড়ি আছে কিন্তু সে থাকে না।তাই এবারও থাকবে না।এটাই মনে হয়।”

অরহাম খান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে বললো,
—” ছেলেটার জীবন কি পরিবর্তন হবে না??
ওয়াসেনাতকে ফেলে রাখা হয়েছে ইহানের সোফার উপড়।ইহান চেয়ারে বসে ওয়াসেনাতের মুখ পর্যবেক্ষণ করছে।মেয়েটা সবার থেকে আলাদা।শাস্তি দিতে এনে নিজেই এর মায়া জালে আটকা পড়েছে সে।তার গার্লফ্রেন্ড গুলোও কম সুন্দর না।কিন্তু সবই সাদা ভুতের মত।এই মেয়ের মত সাদা গোলাপির মিশ্রিত মুখশ্রী তাদের কারো নেই।হেজাবে কত সুন্দর লাগছে।মনে হচ্ছে ফুটন্ত গোলাপ মাত্র খোলশ ছেড়ে ফুটছে। একে তার একদিনের সজ্জা করে লাভ নেই।একে সারা জীবন নিজের করে রাখলেই লাভ।থাপ্পড়ের প্রতিশোধও হবে এমন হুরপরীকেও পাওয়া যাবে।কথাটা ভেবে একটা বিকট হাসি দিয়ে ইহান বললো,
—” এই মেয়েকে আমার পুরানো বাংলোতে রেখে আসো।আর আলোকিত ভাবেই রাখবে।আলোকে আলোতেই থাকতে হয় অন্ধকারে নয়।আর হ্যা হাত পা চেয়ারে বাঁধবে।এর সাথে পরে বুঝাপড়া হবে।এখন না হয় পাখিকে বন্ধি করেই রাখি।তবে তুমি আমার বন্ধিনিই হবে।”
শৈকত একবার ওয়াসেনাতের মুখের দিকে তো একবার ইহানের দিকে তাকায়।মেয়েটা দেখতে একদম বাচ্চাদের মত।বড্ড মায়া হচ্ছে।এমন চেতনা হিন হয়ে পড়ে আছে।তার বড্ড কষ্ট হচ্ছে এর জন্য। কেনো যে এই খারাপ লোকের সামনে এলো?? শৈকতের খুব খারাপ লাগছে।তবুও সে দায়বদ্ধ। তাকে যা বলবে তাই করতে হবে।এটাই তার দুর্ভাগ্য। কয়েকটা দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে পাশে থাকা মেয়েগুলোকে বললো,
—” তুলে নেও ওকে।আর আমার সাথে সাথে এসো।”
মনে মনে শৈকতের খুবই ভয় করছে মেয়ে খেকো এই ইহান না জানি কি করে মেয়েটার সাথে।
.
.
#চলবে________________