না বললেও ভালোকিন্তুবাসি !! Part- 32
মোহনা : বলেছিলাম না স্যুট করেনা … হা…চি..
সাগর পুরাই অবাক ।
সাগর : i am really very…
মোহনা : its… oo… হাচি… ok…
সাগর : চলো বাসায় চলো …
মোহনা : চচচলুন । হা…চি …
সাগর – মোহনা বাসায় গেলো ।
সাগর : তুমি বসো আমি তোমার জন্য কফি করে আনছি।
মোহনা : না না কফি লাগবেনা। হা…চি…
সাগর : যে হাচি দিচ্ছো কফি লাগবেনা কেন? কফি খেলেই ঠিক হয়ে যাবে।
মোহনা : উহু।
সাগর : কি উহু…
মোহনা : কফি খেলে ঠিক হবেনা… 😅
সাগর : কফি খেলে ঠিক হবে না? তো কি খেলে ঠিক হবে চা … আদা চা?
মোহনা : হামম।
সাগর : হামম ? তুমি আর চা? তাও আদা চা?
মোহনা : হামম। আমি না খুব সুন্দর হা…চি করে আদা চা বানাতে পারি। আর খেতেও পারি। হা…চি খাবেন? এমনিতেও শীতের দিনে আদা হা…চি চা খাওয়া দরকার। বসুন আমি নিয়ে আসছি …
মোহনা রান্নাঘরে গেলো।
.
সাগর : এটা কোন মোহনা? যে আমাকে পুরোপুরি চেনে অথচ আমি তাকে চিনিনা…
মোহনা : ta da… ginger tea… এই নিন ধরুন… আপনার টা একটু কুসুম কুসুম গরমই আছে। not to worry …
চা খাওয়ার পর মোহনা কাপ রেখে রুমে এলো।
মোহনা : oh my god … দেরটা বেজে গেছে। কিভাবে কিভাবে দেরটা বেজে গেলো । ভীষন ঘুম পাচ্ছে । আপনার বুঝি পাচ্ছেনা?
সাগর : হামম।
মোহনা : good night ….
.
একটুপর…
সাগর এখনো জেগে আছে । কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা নতুন মোহনাকে।
সাগর মনে মনে : তাহলে কি আমার অভিমানেই আমি মোহোকে হারিয়ে ফেললাম … কিন্তু আমি তো এমন মোহনাকে চাইনি … আমি তো চেয়েছিলাম যে …
তখন সাগর বুঝতে পারলো যে মোহনা কাপছে। সাগর মোহনার কপালে হাত দিয়ে দেখলো যে মোহনার ধুম জ্বর।
সাগর : oh no… ওর তো অনেক জ্বর । কি করি … মাথা ধুইয়ে দিবো? না পানিপট্ট দেই এখন।
সাগর মোহনার মাথায় পানিপট্টি দিতে লাগলো।
সাগর : তাহলে কি ice cream খাওয়ার জন্য ওর জ্বর এলো? কিন্তু এমন তো কখনো কখনো হয়নি … ও তো ১২মাসই ice cream খেতো । তাহলে ? যতোই নিজেকে পাল্টাক কিন্তু এমন পরিবর্তন হঠাৎ …
হঠাৎ সাগর? ৪ বছর পর … ৪৮ মাস পর… ১৪৬০ দিন পর …
long duration …
কিছুক্ষন পরই মোহনার জ্বর ছেরে গেলো।
.
সকালে…
মোহনার ঘুম ভাঙলো । নিজেকে সাগরের বুকে পেলো । মাথা তুলে দেখলো সাগর ওর দিকে তাকিয়ে আছে ।
মোহনা : good morning …
মোহনা উঠতে নিলে সাগর শক্ত করে ধরে রাখলো ।
মোহনা : ???
সাগর : ভীষন ঘুম পাচ্ছে। let me sleep now…
সাগর চোখ বন্ধ করে ফেলল । মোহনাও আর কোনো প্রশ্ন না করো নরাচরা না করে সাগরের বুকে আরামসে মাথা রেখে ঘাপটি মেরে রইলো। ওভাবে থাকতে থাকতে মোহনাও ঘুমিয়ে পরলো ।
.
২দিনপর …
সাগর : আরে দুলাভাই তুমি এখানে?
নিশান : আরে শ্যালক বাবু তুমি?
সাগর : হ্যা এই তো রিহানের সাথে ওর চেম্বারে দেখা করতে এসেছিলাম।
নিশান : চেম্বার কোথায়?
সাগর : ল্যাবেইডে। তুমি এখানে?
নিশান : ১টা ডিল final করতে এসেছিলাম ।
সাগর : ওহ।
নিশান : চলো কফি খাওয়া যাক ।
সাগর : why not.. চলো ।
২জন কফি খেতে গেলো ।
নিশান : সাগর।
সাগর : হ্যা দুলাভাইয়া …
নিশান : মনে আছে আমি আর শ্রাবনী বিয়ের আগে কতো বছর প্রেম করেছিলাম?
সাগর : থাকবেনা কেন? ৫ বছর।
নিশান : আর শুরু থেকেই আমাদের ২পরিবারই সব জানতো । তাইনা।
সাগর : হামম ।
নিশান : তখন তুমি কোন ক্লাসে পড়তে মনে আছে? class 5 এ । immature ছিলে । তোমাকে তখন থেকেই আমি আমার ছোট ভাইয়ের মতোই ভালোবাসি। তখন থেকেই তুমি তোমার সব কথা আমার সাথে share করতে। কিন্তু যখনই mature হলে তখন আর কিছু share করতে না । মিষ্টিকে নিয়ে কষ্টগুলোও তুমি নিজের মধ্যেই রাখতে । কিন্তু তবুও বুঝতাম তোমার মনের কথা। আর আজও বুঝি। আমি তখনও তোমার বড় ভাই ছিলাম আর আজও তাই আছি । বড় হয়ে গেছো। তবুও আমার জন্য সেই ছোট সাগরই আছো । যেমনটা মামনি বাবা আর শ্রাবনীর কাছে আছো । কিছু কথা share করতেই পারো। মনটা হালকা হবে।
সাগর : ….
নিশান : মনে হচ্ছে তুমি share করতে চাইছোনা।
সাগর : as your wish … কিন্তু আমি তোমার সাথে কিছু share করতে চাই । about নতুন মোহনা।
সাগর : মানে?
.
নিশান : হামম । জানিনা ৪ বছর আগে কি হয়েছিলো তোমাদের মাঝে। সেটা একান্তই তোমাদের নিজেদের ব্যাপার । কিন্তু তুমি যে মোহনার ওপর অভিমান করেই গেছো সেটা তুমি না বললেও আমরা সবাই জানিও বুঝিও ।
সাগর : …
নিশান : as a lover… তোমার কষ্ট পাওয়া জায়েজ আছে । কিন্তু মিষ্টির দিকটা ভেবে দেখো। ও যাই করতো ওগুলো সব ওর জন্যে স্বাভাবিকই । ও তো অমনই … তাইনা? তোমার জায়গায় তুমি ঠিক আর ওর জায়গায় ও। কিন্তু আজও এটা বলবো যে মিষ্টির ওপর অভিমান করা তোমার ভুলই হয়েছে ।
সাগর : ৪ বছরে ওকে পাল্টাতে দেখেছি । তুমি যাওয়ার পরদিন থেকেই ওর হাসি , দুষ্টুমি আর বাচ্চামো হারিয়ে যায় । হারিয়ে যায়। একটু একটু করে নিজেকে পাল্টাতে পাল্টাতে আজ একেবারেই পাল্টে গেছে মোহনা । তুমি অতোগুলো বছর অনেক কষ্ট পেয়েছো জানি। কিন্তু অভিমান… অভিমান তাও মোহনার ওপর … অর্থির বয়স এখন ১০বছর। ওর ওপর যদি আমরা কেউ অভিমান করি সেটা কি অর্থি বুঝবে? বুঝবেনা। কিন্তু যদি অভিমান করে বকা দেই তবে ও নিজেই অভিমান করবে। তোমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে তুমি মিষ্টিকে সামলিয়েছো । কেউই ওকে তোমার মতো বোঝেনি । আর না সামলাতে পারে…
সাগর : কিন্তু দুলাভাইয়া এই মোহনাকে যে আমিও বুঝতে পারছিনা … সামলাবো কিভাবে?
নিশান : “মোহনা” … এই শব্দটা বরই ভয়ংকর ছিলো। শুনেছি মিষ্টি হওয়ার পরই তুমি বলেছিলে যে মোহনা …. অনেক বড় নাম । আমি মোহো বলে ডাকবো । তাই এই মোহনা নামটাতেই সব কষ্ট লুকিয়ে আছে। তোমারও আর মিষ্টিরও।
সাগর : ….
নিশান : অভিমানের নিচে ভালোবাসাকে চাপা পরতে দিওনা। ৪বছরে তোমাদের মধ্যে অনেক দূরত্ব চলে এসেছে । এটাকে আর বারতে দিওনা । তবে সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে যাবে । দূরত্বটা কমানোর চেষ্টা করো। নতুন করে জীবন সাজাও। পরে কান্না করেও কুল পাবেনা । your are enough mature … আমার মনে হয়না আর কিছু বলার দরকার আছে। কারন তোমার life তোমাকেই সব ঠিক করতে হবে নিজের মতো করে …
সাগর : …
নিশান : আসছি ।
সাগর : দুলাভাইয়া দুলাভইয়া … কোথায় থেকে start করবো… 😅…
নিশান : like really …? সাগর এটা জিজ্ঞেস করছে? তাও তার মোহনার জন্য ? ভাবা যায়?
সাগর : …
নিশান : এসেছো ১০-১৫ দিন হয়ে গেলো ওকে নিয়ে কোথাও গিয়েছো? যাওনি…
সাগর : সেদিন লং ড্রাইভে গিয়েছিলাম …
নিশান : আহা যেন চাদের দেশে নিয়ে গেছো ।
সাগর : তো কোথায় নিবো?
নিশান : বেরাতে । দূরে কোথাও। ১কাজ করতে পারো হানিমুনে নিয়ে যাও ।
সাগর : হানিমুন ?
নিশান : এমনভাবে বলছো যে এই শব্দটা আজই প্রথম শুনলে।
সাগর : বিয়ের ৫বছরপর হানিমুন। awkward লাগেনা।
নিশান : 😒। এমন ভাবে বলছো যেন ১০-১২টা বাচ্চার বাবা হয়ে গেছো। দেশে থেকেই বেশি romantic ছিলে । লন্ডনে থেকে unromantic হয়ে গেছো ।
সাগর : তখন situation আলাদা ছিলো। আর এখন আলাদা ।
নিশান : বুঝেছি বুঝেছি আমাকেই ব্যাবস্থা করতে হবে। আচ্ছা এটা তো বলো মোহনার কোন দেশ পছন্দ ?
সাগর : বাংলাদেশ। ও নিজের দেশকে অনেক বেশি ভালোবাসে ।
নিশান : এ্যা … abroad পছন্দই না। যেতেই চায়না?
সাগর : আছে কয়েকটা জায়গায় যাওয়ার।
নিশান : কোথায় কোথায়?
সাগর : switzerland এর Valle Versazca । ওখানে যাওয়া মোহনার সব থেকে বড় dream .. এরপর diamond beach , seljalandsfoss waterfall , stokkness সহ মোট কথা শাহরুখ খানের গেরুয়া গানের shooting যেখানে যেখানে হয়েছে সে সব জায়গায় ।
নিশান : এমন dream কেবল মিষ্টিরই হতে পারে । 😅। যাই হোক switzerland এর Valle Versazca তেই নিয়ে যাও ।
সাগর : হামম ।কিন্তু …
নিশায় : আবার কিসের কিন্তু?
সাগর : মোহনা তো changed … তো যদি এটাও change হয়ে গিয়ে থাকে?
নিশান : মনে হয়না হবে। আর হলেও বা কি? জায়গাটা এতোই সুন্দর যে সবারই ভালোলাগবে।
সাগর : হামম।
.
বাসায়…
শিখা : কি বানাচ্ছিস রে?
মোহনা : মোমো । বাবার নাকি অনেক খেতে ইচ্ছা করছিলো।
শিখা : হ্যা হ্যা বাবার ইচ্ছাই তো ইচ্ছা আর কারোর ইচ্ছার তো কোনো দামই নেই ।
রেদোয়ান : নাও শুরু হয়ে গেলো star jalsha… 😂….
মোহনা : হাহাহা।
শিখা : আমি স্টার জলসা না? চলে যাবো বাপে বাড়ি … nobody loves me …
সাগর : ইশ বললেই হলো। তোমাকে বাপের বাড়ি যেতে দিবোই না ।
শিখা : আমি তো যাবোই।
সাগর : হয়েছেটা কি?
রেদোয়ান : আন্ডাভাজা।
সাগর : মানে?
রেদোয়ান : মানে কিছুইনা। হুদ্দাই মার্কেট পাওয়ার ধান্দা ….
সাগর : হাহা …. আমমম। nice smell … কি বানাচ্ছো মোহনা?
মোহনা : মোমো।
সাগর : ওহ । good… fresh হয়ে আসছি ।
সাগর রুমে গেলো । মোহনাও গেলো । গিয়ে সাগরের টি-শার্ট ট্রাউজার বের করে চলে এলো।
.
একটুপর …
সাগর : হলো মোমোস?
মোহনা : হয়ে তো গিয়েছে।কিন্তু একটু wait করতে হবে?
সাগর : কেন?
শিখা : শ্রাবনী ফোন করেছিলো। ওরা নাকি একটুপরই আসছে । অর্থি নাকি বায়না ধরেছে ।
সাগর :ওহ ।
রেদোয়ান : না না আমি এখনি খাবো … 😭…
শিখা : বুড়া পাগল ক্ষেপেছে ।
সাগর-মোহনা : হাহাহাহা….
একটুপর ওরা এলো হুল্লোর পরে গেলো । সবাই হৈ হৈ করে মোহনার হাতের মোমো খেলো । তবে আজকে মোহনা কোন হৈ চৈ করেনি । নির্বাক শ্রোতা হয়ে কেবল শুনেছে ।
.
পরদিন রাতে …
খাওয়ার টেবিলে …
নিশান : তো my dear শালা …. বিয়ের তো ৫ সারে ৫ বছর হলো মিষ্টির mbbs এর final exam ও শেষ হলো । তো বউকে কোথায় যাচ্ছো?
সাগর : কোথায় যাবো?
নিশান :ল্যাহ … বাবা তোমার ছেলে তো দেখি আবুল। বলছি my dear শালা বউকে নিয়ে হানিমুনে কোথায় যাচ্ছো?
শ্রাবনী : জীবনে প্রথম ঠিক কথা বলেছো নিশান ।হ্যা ভাই বল কোথায় যাবি কবে যাবি ?
সাগর : একটু ভাবতে দাও ।
রেদোয়ান : ok… আজকে রাতেই ভাবো। কালকে সকলেই বলবে।
সাগর : সকালেই ?
শিখা :তা নয়তো কি? এসেছি ১৫-১৬দিন হয়ে গেছে । ৩মাসের ছুটি। আবার তো চলে যাবে ।
“চলে যাবে”-কথাটা শুনেই মোহনার হাত থেক চামচ পরে গেলো ।
নিশান তুলে দিলো ।
.
একটুপর …
মোহনা চুল বাধছে আর
ভাবছে : আর মাত্র ২মাস পরই উনি চলে যাবেন। ১৫-১৬ দিন কি করে হতে পারে? উনি তো মাত্রই এলেন…
সাগর : মোহনা … মোহনা …
মোহনা : হামম।
সাগর : কোথায় যাওয়া যায় বলো তো?
মোহনা : আমি কি জানি? আপনিই decide করুন না …
সাগর : চলো ২জন মিলে ঠিক করি।
মোহনা : না না আপনিই করুন…
সাগর : পরে আবার বলতে পারবেনা যে আমি জিজ্ঞেস করিনি ।
মোহনা : না না তা বলবো কেন?
সাগর : পাসপোর্ট বানানো আছে ?
মোহনা : হামমম ।
সাগর : good … আচ্ছা তাহলে কালকে shopping এ যাবো।
মোহনা : shopping এ?
সাগর : হ্যা shopping এ …।
মোহনা : হামম।
মোহনা শুয়ে পরলো। সাগরও ।
সাগর : মোহনা …
মোহনা : হামম।
সাগর : এই দিকে ঘোরো তো …
মোহনা ঘুরলো । মোহনা ঘুরতেই সাগর ১টানে মোহনাকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো ।
সাগর : good night…
বলেই সাগর ঘুমিয়ে পরলো…।
.
চলবে …