না বললেও ভালোকিন্তুবাসি !! Part- 23
মামা : বলছি…
সাগর আয়ানের গলা থেকে ছুরি নামালো। মামা সব বলল ।
সাগর :তুমি কি মানুষ মামা? আমার নিজের মামা হয়ে এমন কাজ করতে পারলে?
মামা : মানুষ বলেই এ কাজ করতে পেরেছি… তোমার মামা বলেই এ কাজ করতে পেরেছি …
মামা বলেই একমাত্র ভাগনের জীবনে perfect কাউকে দেখতে দেখতে চেয়েছি। কোনো পাগল ছাগলকে না ।
সাগর : mind your language মামা… ভুলে যেওনা ও আমার বিয়ে করা বউ…
.
মামা : বউ? সাগর তুমি দায়িত্ববোধে ডুবে যাচ্ছো । না মোহনা তোমাকে ভালোবাসে আর না তুমি মোহনাকে । তোমার মনে মোহনার জন্য কেবল দয়া মায়া আছে। বিন্দুমাত্র ভালোবাসা নেই…
সাগর : আপনার কপাল ভালো যে আপনি আমার মামা । না হলে আপনার সাথে কি করতাম নিজেও জানিনা । আমার ভালোবাসার প্রমান আপনাকে দেয়ার প্রয়োজনবোধ করছিনা । তবে হ্যা এরপর থেকে যদি আপনি আর ঝামেলা লাগানোর চেষ্টা করেন তো ভুলে যাবো যে আপনি আমার মামা। নানু যদি তোমার আর নানের আমার কথা মনে পরে তাহলে ফোন দিও। নিচে দারিয়ে থাকবে আমি এসে তোমাদের দেখে যাবো। এই বাড়িতে আর কখনো ঢুকবোনা…
বলেই সাগর চলে গেলো । বাসায় গিয়ে রেদোয়ান আর শিখাকে সব বলল।
.
ওদিকে …
মোহনা : দুলাভাইয়া… হোস্টেলে রুম বুক করেছো?
সৌরভ : না মানে… আপুই… হয়েছে কি… এটা তো মাসের অর্ধেক । তাই…
মোহনা : তাই?
সৌরভ :তাই এখন রুম পাওয়া যাবেনা…
মোহনা : 😒।
সৌরভ : সত্যি বলছি। 😅।
সায়ান : cute বেয়ান … থাকোনা কয়দিন আমাদের বাসায়…😍
অহনা : আপুর কাছে থাকনা কিছুদিন.. নে এখন হা কর…
মোহনা : 😒…
তখনই কলিং বেল বাজলো। সায়ান গিয়ে দরজা খুলল । দেখলো সাগর।
সাগর : মোহো কোথায়?
সায়ান : রুমে…
সাগর রুমে ঢুকলো ।
অহনা : আরে সাগর ? আসো আসো… ভেতরে আসো…
মোহনা মনে মনে : এ্যাহ… এমন করে বলছে যেন তেনাকে না বললে তিনি ভেতরে ঢুকবেন না।
অহনা : বসো আমি আসছি।
সাগর : আপু বসো। ওকে খাইয়ে নাও।
অহনা : হামম।
অহনা খাইয়ে দিলো।
সাগর : শেষ?
অহনা : হামম।
সাগর : ok then… আসছি…
বলেই সাগর মোহনাকে কোলে তুলে হাটা ধরলো।
মোহনা : আপু…📢📢📢.. বাচাও গুন্ডা আমাকে তুলে নিয়ে গেলো। কিডন্যাপ করলো। বাচাও… পুলিশ ডাকো। আরে দুলাভাইয়াই তো সেনাবাহিনী… দুলাভাইয়া…বাচাও…
বেচারী মোহনার কথা কেউ শুনলোনা…
সাগর মোহনাকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি চালাতে লাগলো । ভুলেও মোহনার দিকে তাকাচ্ছেনা । মোহনা বেশ বুঝতে পেরেছে যে সাগর রেগে আছে ।
মোহনা মনে মনে : আজব তো… রাগ করার কথা আমার আর রাগ করে আছে জল্লাদ? আজব তো…পাগল না মাথা খারাপ… huh…
সাগর মোহনাকে নিয়ে বাসায় পৌছালো। তবে as usual শিখা আর রেদোয়ান মোহনাকে warmly welcome করলোনা । মোহনা বুঝতে পারলো যে ওরাও রেগে আছে । সাগর মোহনাকে বেডে বসিয়ে washroom এ গেলো।
মোহনা : আজব তো এখানে দেখি সবাই আমার ওপরই রাগ দেখাচ্ছে। অথচ রাগ করার কথা তো আমার….
.
রাত ১টা…
মোহনার ঘুম ভাঙলো। পানির পিপাসা লাগলো । ওঠার সময় বুঝলো ওর মাথার মধ্যে সাগরের হাত। চুলে টান লাগছে বলে সাগরের হাতটা সরাতে গেলো। আর ধাপ করে সাগরের হাত পরে গেলো। মোহনা খানিকটা ভয় গেলো।
মোহনা : জল্লাদ… জল্লাদ…
সাগর : …
মোহনা : সাগর… সাগর… এই সাগর…
সাগর : …
মোহনা : উনার sugar down হয়নি তো? sugar down হলেই তো উনি …
মোহনা এই শরীর নিয়েই দৌড়ে রান্নাঘরে গেলো চিনির পানি আনতে। কিন্তু চিনি কোথায় রাখা সেটা তো মোহনা খুজে পেলোনা। অনেক কষ্টে খুজে পেলো … হালকা পাতলা শব্দে শিখার ঘুম ভেঙে গেলো । ছুটে এলো।
শিখা : একি মামনপাখি তুই এতোরাতে এখানে? কিছু লাগলে সাগরকে বলতি…
মোহনা : সাগর অজ্ঞান হয়ে গেছে… 😔…
শিখা : কি?
মোহনা : হামম…
মোহনা চামচ দিয়ে সাগরের মুখে চিনির পানি দিলো। রেদোয়ান আর শিখা সাগরের হাতে পায়ে massage করতে লাগলো । আসলেই সাগরের sugar down হয়েছিলো। massage আর চিনির পানিতে সাগরের জ্ঞান ফিরলো।
শিখা : বাবা তুই ঠিক আছিস …
সাগর চোখ মেলে সবাইকে ১বার দেখলো। দেখে ছোট ১টা মুচকি হাসি দিলো । এরপর উঠে বসলো ।
রেদোয়ান : উঠলে কেন?
সাগর : feeling better …
শিখা : thans god… একি আবার উঠছিস কেন?
সাগর : washroom এ যাবো। মাথায় পানি দিবো।
শিখা : তোর উঠতে হবে কেন? তুই শুয়ে থাক আমি দিয়ে দিচ্ছি।
সাগর : মামনি… আমি ১২মাসের রোগীনা।
সাগর washroomএ গেলো ।
.
মোহনা : সাগরের sugar down? উনি না খেলে এমন হয়। কিছু খায়নি?
শিখা মুচকি হেসে মোহনার কপালে চুমু দিয়ে
বলল : তুই আমার ছেলের কলিজারে… তোর একটু জ্বর এলেই আমার ছেলে পাগল হয়ে যায়। নাওয়া খাওয়া সব বন্ধ হয়ে যায়। আর তারমধ্যে এখন তোর এই অবস্থা … তারওপর কালকে সারারাত আর আজকে সারাদিন তুই অহনার ওখানে ছিলি… আমার ছেলের গলা দিয়ে কি খাবার নামবে? নামমাত্র খেয়েছে…
মোহনা : ….
শিখা : আমি খাবার দিয়ে যাচ্ছি … তুই একটু খেতে বলিস… কেমন?
মোহনা : হামম।
.
একটুপর…
সাগর washroom থেকে বের হলো। দেখলো মোহনা গাল ফুলিয়ে বেডে বসে আছে । আর পাশে খাবার রাখা। সাগর হাত ধুয়ে এসে খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে মোহনার মুখে খাবার ধরলো।
মোহনা: আপনি কি brainless bimboo?
সাগর : হামম।।
মোহনা : দেখেন ড্রামা আর ঘুরিয়ে কথা আমি বলতে পারিনা। তাই ডিরেক্ট বলছি। খাবারটা চুপচাপ খেয়ে নিন।
সাগর : কেন ?
মোহনা : আমি বলেছি তাই।
সাগর : তোমার কথা আমি শুনবো কেন?
মোহনা : কারন আমি মোহনা। তাই।
সাগর : পাগলি।
সাগর প্লেটটা রাখলো ।
মোহনা :একি খাবেন না?
সাগর : খাবো।
মোহনা : তাহলে রাখলেন কেন?
সাগর: চুপ….
সাগর মোহনার হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিলো।
সাগর : আচ্ছা মোহোপাখি ১টা কথা বলোতো । তুমি আমাকে কবে থেকে চেনো?
মোহনা : ছোটবেলা থেকে ।
সাগর : হামম। দেখো তুমি মুখে যাই বলো আমি এটা জানি যে তোমার থেকে বেশি আমাকে কেউ জানেও না বোঝেও না।
মোহনা : 😒।
সাগর : তাহলে কিভাবে তুমি মামার কথাগুলো বিশ্বাস করলে? কিভাবে বিশ্বাস করলে যে আমি রুষার বাচ্চার বাবা হতে চলেছি?
মোহনা : আপনাকে কে বলল যে আমি মামার কথা বিশ্বাস করেছি?
সাগর: মানে? বোঝাই যায়।
মোহনা : মামার কথা আমি বিশ্বাস মোটেও করিনি।
সাগর : তাহলে সেদিন অমন behave করলা কেন? আর suicide attempt করলা কেন?
মোহনা : বলতে পারি যদি বকা না দেন… 😅…
সাগর মুচকি হেসে
বলল : ok…
মোহনা : আসলে মামার কথায় একটু confused সত্যি হয়েছিলাম । পরে বুঝলাম যে প্রেম করা পর্যন্ত by at any chance ঠিক হতেও পারে। but baby… impossible …
সাগর : তাহলে অমন করলা কেন?
মোহনা : আসলে আপনার নাম নিয়ে কেক বানিয়েছিলাম। কিন্তু আপনি আসছিলেন না । কেকটা আমার ভীষন খেতে ইচ্ছা করছিল। আবার ঘুমও আসছিলো । আপনার জন্য কাটতেও পারছিলাম না আর খেতেও পারছিলাম না । আপনাকে ফোন করলাম । আপনি rude behave করলেন। আমার মেজাজ গরম হয়ে গেলো। আর আপনি তো জানেনই মেজাজ গরম হলে কি করি নিজেও জানিনা। তাই…. 😅… আর suicide ? সেটার তো ৩টা কারন। মেজাজ গরম , থাপ্পর আর 😤।
সাগর হাহা করে হেসে উঠলো।
সাগর : তুমি জানো তুমি দুনিয়ার সব থেকে cute বউ?
মোহনা : হামম। ☺।
সাগর: but my dear cute নাগিন বউ আজকে আপনাকে ১টা কথা দিতে হবে। আর না দিলে medical test এ help করবোনা।
মোহনা : কি কথা? 😒
সাগর : আর কখনো suicide attempt করবেন না…
মোহনা : ….
সাগর : কথা দাও…
মোহনা : কথা দিলাম আর কখনো suicide attempt করবোনা।
সাগর : thank u মোহোপাখি । এখন জিজ্ঞেস করবেনা সেদিন কোথায় ছিলাম? রুষার সাথে কি করছিলাম?
মোহনা : উহু।।। i am not typical wife…
সাগর : তুমি জেলাস নও?
মোহনা : why should i? যে জল্লাদ আমি পাগল জেনে আমাকে ছারেনি। suicide attempt করা ব্যামো আছে জেনে ছারেনি , বাসা থেকে পালিয়ে গেছি তারপরও ছারেনি। তো ওই রুষা কাঠাল বাঙ্গীর খোসার জন্য ছারবে? আমার তো মনে জান্নাত-জাহান্নামেও আপনি হাজির হবেন। 😒।
সাগর: 😂😂😂। আচ্ছা বাসা থেকে পালিয়েছো বলে ছারবো কেন তোমাকে? তুমি কি কোনো ছেলের সাথে পালিয়েছো?
মোহনা : ছেলের সাথে পালালে ছেরে দিবেন? তাহলে next time ছেলে hire করে পালাবো।
সাগর : তোমাকে always মাইরের ওপর রাখা দরকার। stupid ….
মোহনা : huh…
সাগর : বসো ১টা surprise নিয়ে আসি।
সাগর গিয়ে সেই কেকটা নিয়ে এলো।
মোহনা : এটা তো ওই কেক…
সাগর : হামম। এখন এটা ২জন মিলে কাটবো then আমি খাবো….
মোহনা : ৩-৪ দিনের পুরোনো কেক?😱।
সাগর : তাইজন্য তো just আমি খাবো।
মোহনা : মানে?
সাগর : মানে বুঝতে হবে না। চলো কাটি…
.
২মাসপর…
আজকে কোচিং এর শেষদিন ছিল। বাসায় এসে দেখে শুভ্র , অভ্র , ভাবি , আপু আর দুলাভাইয়া বসে আছে। বাবা, ভাইয়া বাদে সবাইকে হ্যালো বলে মোহনা রুমে চলে গেলো । ওর পিছে পিছে দিপ্তী আর অহনাও গেলো ।
মেরিন : তোমরা?
অহনা : we have a good news for you…
মোহনা : কি? 😒।
দিপ্তী : তুমি খালামনি হতে চলেছো।
অহনা : তুই ফুপি হতে চলেছিস…
মোহনা : ফুপ্পি খা… oh my ALLAH oh my ALLAH oh my ALLAH….. আমি ফুপ্পি আর খালামনি একসাথে? awwwe ki cute…. ইইইই।
মোহনা খুশিতে লাফাতে লাগলো ।
অহনা :তবে আগে ফুপ্পিই হবি। ☺।
মোহনা : আমি না এততততততোগুলা খুশি।
দিপ্তী : তোমার খুশিতেই আমরা খুশি।
অহনা : এখন যদি তোর কাছে কোনো request করি রাখবি?
মোহনা : anything …
অহনা : বাবা আর ভাইয়াকে ক্ষমা করে দেনা… কথা বল ওদের সাথে ।
মোহনা আর কোন কথা না বলে washroom এ চলে গেলো।
.
রাতে…
সাগর : কি ব্যাপার মিসেস নাগিন? looking অনেক বেশি happy …
মোহনা : আবার জিগায়… আমি খালামনি আর ফুপ্পি হবো। awwwe ki cute…
সাগর : অনেক বেশি খুশি । এখন খুশিতে পড়ার কথা ভুলে যাবেন না যেন।
মোহনা : পড়ার সাথে খুশির কি সম্পর্ক?
সাগর : না থাকাই ভালো। তবে তোমার মুখে কিন্তু হালকা একটু sadnessও আছে ।
মোহনা : হামম। i will miss মেঘনা & ইসরাত ।
সাগর : ওদের number আছে তো তাইনা? meet করবে । আর যদি by at any chance যদি ৩জনই chance পেয়ে যাও re union তো হবেই।
মোহনা : হামমম।
.
২দিনপর…
মোহনা : i also want a baby… আমিও আম্মু হবো… বাবার বউর মতো আম্মু তো কখনোই হবোনা। awwwe ki cute আম্মু হবো । পরীক্ষা শেষ হলেই আমি জল্লাদকে বলবো।
সাগর : কি বলবে মোহোপাখি….?
মোহনা : আপনি?
সাগর : হামমম হামমম। কি বলবে জল্লাদকে?
মোহনা : যখন বলবো তখনই তো শুনতে পাবেন । তাইনা।
সাগর : হায়রে মোহোপাগলিরে । এখন বলো কিছুদিন পরই তো exam…
যেকোনো examএর আগেই তো mind fresh করার দরকার হয় সবার। তুমি আমিও করি ।
তো mind টা fresh করার জন্য এবার কোথায় যাবেন ?
মোহনা : নদীর পারে। ☺।
সাগর : ok… friday তেই যাবো ।
মোহনা : হামমম হামমম ।
friday তে সাগর মোহনাকে নিয়ে নদীর পারে ঘুরতে গেলো । তার কিছুদিন পর পরীক্ষা হলো। মোহনা ভালোই পরীক্ষা দিলো ।
.
পরীক্ষার পরদিন…
মোহনা : পরীক্ষা শেষ পরীক্ষা শেষ। এখন আমি আম্মু হবো ধিনাক ধিনাক … awwe ki cute ….
.
.
চলবে…