না চাইলেও তুই আমার !! Part- 11
সকাল থেকে সবাই ব্যস্ত। নিধিদের বাড়িতে আত্মীয়স্বজনে ভরে গেছে। মিরার এত কোলাহল ভালো লাগছে না তাই ডিসাইট করেছে নিরাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবে। মিরা নীলাকে বলে নিরাকে রেডি করে দিতে এই ফাঁকে মিরা ওর মামুকে বলে আসে ওরা ঘুরতে যাচ্ছে।মিরা আর নিরা একসাথে নিচে নামতে দেখে জারিফ জিজ্ঞাসা করে।
জারিফ : তোমরা কোথায় যাচ্ছো?
নিরা : ঘুলতে চাতচু।
জারিফ : আমাকে নিবে তোমাদের সাথে?
নিরা মিরার দিকে তাকিয়ে বলে।
নিরা : মামনি চাতচু দাবে আমাদেল সাথে?
মিরা : আচ্ছা চলো।
মিরা গাড়িতে উঠে জারিফকে জিজ্ঞাসা করে।
মিরা : শ্বশুর বাড়ির অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে এলে যে?
জারিফ : ভালো লাগছিল না এক এক। তাছাড়া অনুষ্ঠান তো রাতে।
মিরা : হুম।
জারিফ : আপু আমি তো রাজশাহী তে আরো অনেকবার এসেছিআমি এখানের কম বেশী সবকিছু চিনি। তোমার অসুবিধা না হলে আমি তোমাদের সবকিছু ঘুরে দেখাতে পারি।
মিরা : এতে অসুবিধার কি আছে।চলো ঘুরে আসি।
জারিফ : আপু একটা গান ছাড়ি। বোরিং লাগছে খুব।
মিরা জারিফের কথা শুনে মুচকি হেসে বলে।
মিরা : আচ্ছা।
আমি বারো মাস তোমায় ভালোবাসি
তুমি সুযোগ পাইলে বন্ধু বাসিও
আমি বারো মাস তোমার আশায় আছি
তুমি অবসর পাইলে আসিও
আষাঢ় শ্রাবণে ঘন বরষার সাথে
দিনগুলো কাটে না বিরহ ব্যথাতে ।।
আসছে মাসে না হয় পত্র দি…।
তুমি অবসর পাইলে আসিও
আমি বারো মাস তোমায় ভালোবাসি
তুমি সুযোগ পাইলে বন্ধু বাসিও
ভাদ্র আশ্বিনে কয় জনে জনে
কতকাল একা থাকো মন উচাটনে ।।
অগ্রহায়ণে তুমি আদর জানিও
তুমি অবসর পাইলে আসিও
পৌষ মাঘ কাটে না বুঝি এই শীতে
একটু কি পারো নাই কোনো খোঁজ নিতে ।।
বৈশাখী ঝড় মনে শুধু জানিও ।।
তুমি অবসর পাইলে আসিও
আমি বারো মাস তোমায় ভালোবাসি
তুমি সুযোগ পাইলে বন্ধু বাসিও
আমি বারো মাস তোমার আশায় আছি
তুমি অবসর পাইলে আসিও।।
মিহান ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে ওর মমের রুমে যায়।কাল রাত থেকে রেগে আছে মিহান।ওর মমের রুমের সোফায় বসে দুই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে ওর মমকে বলে।
মিহান : মম কালকে রাতে তোমাদের কি বলেছিলাম।
মম : হুম। মনে আছে। আজ তোর পাপা কথা বলবে ওদের সাথে।
মিহান : মিরা ঢাকায় আসলেই আমি আজটা সেরে ফেলতে চাই।
মম : কি হয়েছে তোর বলতো কাল রাত থেকেই দেখছি রেগে আছিস।
মিহান : কিছু না মম। আমি যা বললাম তার ব্যবস্থা করে ফেলো। আমি আর দেরি করতে চাই না।
মম : আমি তো চেয়েছিলাম তোর চাচাতো বোন মিথির বিয়ের পর এই কাজটা করতে কিন্তু তুই তিন দিনের মধ্যে কাজটা সেরে ফেলতে চাচ্ছিস।
মিহান ওর মমকে কিছু না বলে মনে মনে বলতে থাকে।
মিহান : না মম আমি আর কোনো রিস্ক নিতে পারবো না। মিথির বিয়েতে এখনো অনেক দিন বাকি আছে আমি এতোদিন অপেক্ষা করতে পারবো না।পাখিকে খুব তাড়াতাড়ি খাঁচায় বন্দী করতে হবে।
মিরা আর নিরাকে জারিফ তার পরিচিত সব জায়গায় ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছে। নিরার খিদে পেলে ওরা তিনজানে রেস্টুরেন্টে খেতে বসে। মিরার খাবার খেতে ইচ্ছা করছে না। কালকে রাতের পর মিহান আর ফোন দেয়নি। না চাইতেও মিহানের জন্য মনটা কেমন অস্থির হয়ে উঠেছে। বারবার ফোনের দিকে তাকাছে।অদ্ভুত এক অনুভূতি কাজ করছে মিরার মনে। মিরা মনে মনে ভাবতে থাকে।
মিরা : আমার এমন লাগছে কেনো? কাল থেকে পাগল ডাক্তার ফোন করেনি তার জন্য? আমি কি ওকে মিস করছি? অন্য সময় হলে তো এতক্ষণে ফোন করে মাথা খারাপ করে দিতো। তাই যদি হয় তাহলে এই অনুভূতি হওয়ার কারন কি? তাহলে কি আমি মিহানে ভালোবেসে ফেলেছি? না!কি করে আমি ওকে ভালোবাসতে পারি আমার জীবনে ভালবাসার কোনো জায়গা নেই। তাহলে ওর জন্য আমার এই ফিলিংসগুলা কেনো হয়?
মিরার ভাবনার ছেদ ঘটে জারিফের ডাকে।
জারিফ : চলো আপু। এবার আমাদের ফেরা দরকার।বাড়ির সবাই নাইলে চিন্তা করবে!
মিরা বিষন্ন মন নিয়ে আস্তে করে বলে।
মিরা : চলো!
চলবে… 🍁