তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা !! Part- 04
সকালে ঘুম ভাংলো ফোনের রিং শুনে ঘুম ঘুম চোখে ফোন হাতে নিয়ে দেখি তিশা কল দিছে কল রিসিভ করে হ্যালো বললাম
তিশা : মহারানী কি এখনো ঘুমাচ্ছেন?
আমি : হুম কয়টা বাজে,,, (ঘুম ঘুম কন্ঠে)
তিশা : মহারানী আপনি টাইম দেখেন তো কয়টা বাজে?
আমি : আরে তিশু এখন তো মাএ ৭:১০ হলো(টাইম দেখে)
তিশা : আপনি ১০ মিনিটে রেডি হয়ে নিচে আসুন,,, আমি নিচেই আছি
আমি : নিচে আছো মানে? কোথায় নিচে?
তিশা : তোমার রুমের নিচে?তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে আসো দুজনে,, একসাথে নাস্তা করে অফিস যাবো?
আমি : ওকে আমি আসতেছি?
(আমি ফ্রেস হয়ে গোলাফি রঙের একটা শাড়ি পরে বের হলাম,,,নিচে গিয়ে দেখি তিশা ফোনে কাকে যেন বলছে দেখো আমি তোমার সাথে কোন কথা বলতে চাইনা,,আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না প্লিজ আর কখনো কল দিবেনা,,,আমাকে দেখেই ভ্যাবাচেকা খেয়ে কল কেটে দিলো,,,আর বললো,,
তিশা : আরেহ তুমি চলে এসেছো(আমতা আমতা করে)
আমি : কার সাথে কথা বলা হচ্ছে শুনি হুম (চোখ টিপে)
তিশা : আরে তেমন কিছু না বলবো তোমাকে,, বাই দ্যা ওয়ে তোমাকে কিন্তু অনেক সুন্দর লাগছে
আমি : তাই নাকি,,, তোমাকেও কি কম সুন্দর লাগছে নাকি তিশু রানী,,চলো,, যাওয়া যাক
(দুজনে অফিসে গিয়ে নাস্তা করলাম একসাথে)
অনেক্ষন পর ফারহান আসলো অফিসে সবাই দাঁড়িয়ে শুভ সকাল জানালো,,, আমি তো দেখেই ফিদা খোচা খোচা দাড়ি,, ব্লাক কালার সানগ্লাস,, ব্লাক শার্ট,, উফ সব মিলিয়ে ক্রাশ খাওয়ার মত😍😍 কিন্তু আমি ক্রাশ খেলেও লাভ নেই 🙂
অনেক্ষন পর ফারহান আমাকে তার কেবিনে ডাকলো আমি গিয়ে…
আমি : may i come in sir?
ফারহান : yes miss fariya come..
আমি : স্যার আমাকে ডাকছিলেন?
ফারহান : জ্বী মিস ফারিয়া😊একটা প্রজেক্ট এর জন্য কিছু ফাইল রেডি করে দিতে হবে খুব তাড়াতাড়ি,,,,আজকের মধ্যেই( আমার সামনে কিছু ফাইল রেখে)
আমি : কিন্তু স্যার আমি একা আজকের মধ্যেই কিভাবে রেডি করবো😧
ফারহান : আমিও হেল্প করবো একসাথে বসেই ফাইল গুলো রেডি করতে হবে নাহলে ডিলটা আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যাবে আর মিরাজ শেখ এর হাতে চলে যাবে,,, আর অনেক টাকা লস হয়ে যাবে,,
আমি : তাহলে স্যার আমি নিজেই রেডি করে দিবো আপনি বিশ্বাস করতে পারেন☺☺
ফারহান : হাহাহা বিশ্বাস!! তাও আবার আপনাকে মিস ফারিয়া,, বেঈমানকে দ্বিতীয় বার সুযোগ দেওয়া যায় না আমি কিসের উপর আস্থা রেখে আপনাকে বিশ্বাস করবো,,বলা তো যায় না এখানে আমার ডিলটা নষ্ট করে মিরাজ শেখ এর সাথে আলাপ জমাবেন,, বাই দ্যা ওয়ে এখন আসতে পারেন পরে ডেকে নিবো আপনাকে
আমি ফাইল গুলো নিয়ে ফারহানের কেবিন থেকে বেরিয়ে নিজের কেবিনে গিয়ে গেলাম আর তখনি নিশু আসলো আমার কেবিনে,,
নিশু : আচ্ছা তো তোমার সাথে ফারহানের কি আগে কোন সম্পর্ক ছিলো তোমরা কি দুজনকে আগে থেকেই চিনো,,(সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
আমি : আমাকে বলা ছাড়া আমার কেবিনে কি করছেন,, আর আমাদের মাঝে কি আছে না আছে আপনার না জানলেও চলবে ওকে,,
নিশু : স্যার তো তোমাকে একটুও বিশ্বাস করে না,, তাছাড়া তোমার মত মেয়ের কাজ না এই ফাইল গুলো
রেডি করা,,,তার চেয়ে বরং পিএ এর জায়গাটা ছেড়ে দাও আমি সব করে দিচ্ছি( অহংকারী ভাবে বললো)
আমি : স্যার আমাকে কাজটা দিয়েছে আমি নিজেই করতে পারবো,, তোমার কোন দরকার নেই শাঁকচুন্নি
নিশু : কি তুমি আমাকে শাঁকচুন্নি বললা,, ক্ষেত,,
আমি : আপনি যেতে পারেন প্লিজ না হয় স্যারকে ডাকতে বাধ্য হবো
নিশু : তোমাকে আমি সফল হতে দিবো না ( তোমাকে সবার সামনে অপমান করবো এই ফাইলের জন্য ফারিয়া তুমি চিন্তাও করতে পারবে না,,,মনে মনে) বলেই আমার কেবিন থেকে বেরুতে কলার খোসায় পা দিয়ে ঠাসস করে পড়ে যায়,,
নিশু : আহহহহ….
নিশু পড়ে যাওয়ায় অফিসের সব স্টাফ হেসে দিলো…. আর বেচারি নিশু কান্না কন্ঠে রেগে বলে..
নিশু : what the hell এখানে কলার খোসা কে ফেলছে(রেগে)
তখনি তিশা বলে উঠে
তিশা : আরে নিশু তুমি কলার খোশা কোথায় পেলে,,,তুমি এতো টাইট জামা পরো আর হিল জুলো পরো তাই তো পড়ে গেলা(আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে,, বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা তিশার কারসাজি,, আমিও তিশার সাথে মিলে বলতে লাগলাম,,
আমি : আরে হ্যাঁ নিশু তুমি কি এই বয়সে চোখে কম দেখো নাকি,,এখানে কত পরিষ্কার কলার খোসা কোথায় পেলে,,কাল থেকে এইসব পরে এসো না এসো,,, তখনি ফারহান এসে বলে কি হচ্ছে এখানে সবাই দাঁড়িয়ে আছো কেন আর নিশু তুমি এখানে বসে আছো কেন যাও কাজ করো,, নিশু বলে উঠলো
নিশু : ফারহান আমাকে উঠাও না আমি পড়ে পায়ে ব্যাথা পেয়েছি তাই উঠতে পারছিনা,, ফারহান হাত দিয়ে উঠাতে যাবে তখনি তিশা এসে বলে স্যার আমি তুলে দিচ্ছি বলেই এক টানে নিশুকে উঠিয়ে দিলো
নিশু : এই মেয়ে তোমাকে উঠাতে বলেছি নাকি(রেগে)
তিশা : আরে আমরা থাকতে স্যার কেন কষ্ট করবে আর তুমি তো দেখি ঠিকই আছো (বলার সাথে সাথেই নিশু পায়ে হাত দিয়ে
নিশু : উফফ কি ব্যাথা পায়ে (বলেই পা ধরে ন্যাকা কান্না করতে লাগলো,, আর বললো
নিশু : ফারহান আমাকে কোলে করে একটু কেবিনে দিয়ে আসবে প্লিজ(ন্যাকা কান্না করে)
ফারহান : ইয়াহ সিওর বলে কোলে উঠাতে নিলেই আমি বললাম…
আমি : স্যার আমি আর তিশা মিলে নিয়ে যাচ্ছি আপাকে কষ্ট করতে হবে না,,,(বলেই তিশা আর আমি নিশুকে নিয়ে কেবিনে যেতে নিলেই নিশু আমাদেরকে ছেড়ে একাই হাটতে লাগলো,,,আমি আর তিশা হেসে দিলাম আর ফারহান বোকার মত তাকিয়ে আছে নিশুর যাওয়ার দিকে….
আমি : বুঝলে নিশু কিছু মানুষ আছে শুধু মেয়ের ছোঁয়ার চেষ্টা করে,, সু্যোগ পেলেই মেয়েদের কোলে নেওয়ার চেষ্টায় থাকে,, আরে আজব কেউ বললো আর তাকে কোলে নিতে হবে হুহ(বলেই চলে যেতে নিলে,, ফারহান আমার হাত ধরে ফেলে আর বলে
ফারহান : কি বললে তুমি,,আমি মেয়েদের ছোঁয়ার চেষ্টা করি আর কোলে নি তাই না,,, (রেগে😠😠)
আমি : আরে স্যার আপনি এতো রেগে যাচ্ছেন কেন আমি আপনাকে কিছু বলেছি নাকি 😣
ফারহান : দাড়াও দেখাচ্ছি বলেই ফারহান আমাকে কোলে নিয়ে নিলো
আর আমি হাত পা ছোড়া ছুড়ি করে বলতে লাগলাম,,,
আমি : স্যার সবাই দেখছে কি করছেন😥প্লিজ আমাকে নামান আমি পড়ে যাবো,,
ফারহান : আমি তোমার মত বিশ্বাসঘাতক নয় যে আমাকে বিশ্বাস করতে পারবে না,, পড়বে না,,,এভাবেই থাকো না হয় ফেলে দিবো😡😡 তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে এই কথা বলার,,, আমি অন্য মেয়েদের ছোঁয়ার চেষ্টা করি হুম,,(রেগে)
আমি : স্যার আর বলবো না প্লিজ আমাকে নামিয়ে দেন,,আমি পড়ে যাবো (চোখ বন্ধ করে)
ফারহান : আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারো আমি তোমার মত বিশ্বাসঘাতক না,,আমাকে নিয়ে কেবিনে ডুকলো)
আমি : হুম আমি বিশ্বাসঘাতক,, আপনি আপনার নিশুকে কোলে নিন হুহ😏
ফারহান : আমি কেন নিশুকে কোলে নিবো(রেগে)
আমি : ওমা নিশুকে আপনি দুচোখে হারান,,আমার তো মনে হয় ভালোও বাসেন,,তো তাকেই তো কোলে নিবেন তাই না😏
ফারহান : আমি আমার ভালোবাসাকে কোলে নিয়েছি,, আমার প্রথম ও শেষ ভালোবাসা তুমি,,,আমি তো তোমাকে ছেড়ে যাইনি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছো,,তোমার জন্য আমি কি করিনি,,নিজের সবটা দিয়ে ভালোনবেসে ছিলাম আর তুমি চলে গিয়েছিলে,,একটা বছর আমি কেমন আছি,, ভালো আছি কিনা সেটা জানার জন্যও আমার খোজ নাওনি,,তোমাকে ছাড়া এক একটা দিন আমার কেমন কেটে ছিলো সেটা শুধু আমি জানি,, আমি তো তোমাকে বিয়ে করতে চেয়ে ছিলাম কেন এমন করলে ফারি?(কান্না কন্ঠে বলে উঠলো আর আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো)
আমি : হুম আমি তোমার ভালোবাসা ছিলাম কিন্তু আমি এখন প্রাক্তন..
ফারহান : এই মেয়ে #তুমি_প্রাক্তন_নও_তুমি_আমার_ভালোবাসা
কারণ আমি তোমাকে এখনো ভালোবাসি,,
আর প্রাক্তন তো তাকেই বলে যাকে ভালোবেসে ভুলে থাকা যায়,, আমি তো তোমাকে ভুলিনি আমি তো তোমাকে খুব ভালোবেসে ছিলাম কেন ছেড়ে গেছিলে কেন (আমার চুলের মুঠি ধরে)
আমি : ফারহান আমি চাইনি আমার অসম্পূর্ণতা নিয়ে তোমার জীবনে আসতে আমার কিছুই করার ছিলো না,,(আর কিছু বলার আগেই ফারহান আমার ঠোট তার ঠোট জোড়ায় দখল করে নিলো আর দুই মিনিট পর ছেড়ে দিলো,,,আর আমার হাত ধরে টেনে আমাকে নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেল….
চলবে…