তুমি আমারই থাকবে

তুমি আমারই থাকবে !! Part- 14

তনয় অনেকবার জিজ্ঞেস করেও তানহার থেকে কিছু শুনতে না পেরে আর মাথা ঘামালো না। তারা বিচে ঘুরতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো!
তানহা একপাশে তাকিয়ে দেখলো একটা কাপল খাবার শেয়ার করে খাচ্ছে। ছেলেটা মেয়েটাকে খাইয়ে দিচ্ছে। আজ যদি মিশা না থাকতো হয়তো তনয়ও ওকে এভাবে খাইয়ে দিতো ভাবছিলো সে। তনয় তানহাকে বলে,
-তানহা, তুমি ডাবের পানি খাবে?
-নাহ লাগবে না।
-তাহলে অন্য কিছু খাবে?
-বললাম তো নাহ।
তনয় আর কিছু বলেনা। তানহার কোনদিকে খেয়াল নেই। সে মাথা নিচু করে হাটছিলো, হঠাৎ করেই থুতনিতে কারও হাতের ছোয়া পেয়ে সে চমকে উঠে সামনে তাকায় আর কিছু বুঝে উঠার আগেই তনয় ওর মুখে কিছু ঢুকে দেয়। তানহা একটু পর বুঝতে পারে এটা চিংড়ি ফ্রাই। তানহা কিছু বলার আগেই তনয় বলে,
-খাইতে মন চাচ্ছিলো তো বলোনা কেন?
-আপনি দেখেছিলেন আমি ওদের দেখছিলাম? (অবাক হয়ে)
-তুমি যেভাবে হা করে দেখছিলে, শুধু আমি না এখানকার সবারই দেখার কথা! মেয়েটার পেট খারাপ হতো আরেকটু দেখলে! (বাকা হেসে)
তানহা বেশ লজ্জা পায় শুনে যে তনয় ভেবেছে ও খাবারের জন্য ওইভাবে চেয়ে ছিলো মেয়েটার দিকে! কিন্তু ও তো খাবারের জন্য তাকায়নি, সে চেয়েছিলো তনয় ওকে তুলে খাওয়াবে আর সে ওটাই করল! চিংড়িতে তানহার এলার্জি কিন্তু তনয় প্রথমবার ওকে কিছু তুলে খাইয়েছে এটা কিছুতেই ফেলবে না সে তাই খেয়ে নিলো ওটা।
এদিকে মিশা ওই মহিলার থেকে অনেক কস্টে নিজেকে ছাড়িয়েছে তারপর ভাবলো তনয়কে দূর থেকে দেখে সে ফেসে গিয়েছে তাই এখন কাছে ডেকে সারপ্রাইজ দিবে। তাই আবার তনয়কে খোজা শুরু করলো সে। এত ভীড়ের মধ্যে না জানি কোথায় আছে উকি দিয়ে দেখার চেস্টা করছে মিশা!
তনয়ের ফোনে কল আসায় সে তানহার হাত ছেড়ে কথা বলছিলো আর তানহা একপাশে একটা বাচ্চা মালা বিক্রি করছে সেখানে গিয়ে মালা দেখছে।
এদিকে মিশা তাকিয়ে দেখে তনয় একা দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছে। ও ভাবলো এটাই সুযোগ তনয়কে সারপ্রাইজ দেওয়ার! তাই সে ভাবলো তনয়কে এখানে ডাকবে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য আর পাশে তাকিয়ে দেখে একটা বাচ্চা ছেলে ফুল বিক্রি করছে। মিশা ওখান থেকে একটা গোলাপ ফুল নিয়ে নিলো আর বাচ্চাটিকে বলল,
-ওখানে একটা ভাইয়া ফোনে কথা বলছে না? ওকে গিয়ে বলো তাকে একটা আপু ডেকেছে জরুরি কথা আছে আর এখানে আসতে বলবা, ঠিকাছে?
বাচ্চাটাও মাথা নাড়িয়ে ওইদিক চলে গেলো।
এদিকে তানহা মালা দেখার সময় একটা ছেলে এসে বলে,
-হাই। আপনি কি একা?
-আমি কি আপনাকে চিনি?
ছেলেটা কিছু উত্তর দিবে তার আগেই সে তানহার পিছনে তাকিয়ে ঢোক গিলে চলে গেলো। তানহা কিছু বুঝতে পারলো না কি হলো ছেলেটার? হঠাৎ করে যে হুট করে আসলো আবার হুট করে চলে গেলো! তারপর পিছনে তাকিয়ে দেখে তনয় একহাত দিয়ে কানে ফোন ধরে রেখে, এক হাত পকেটে রেখে ওর দিক তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে আছে! তানহা এবার বুঝলো তনয়কে দেখেই ছেলেটা চলে গেছে ওখান থেকে!
তানহা তনয়কে কিছু বলবে তার আগে তনয় ওর এক হাত চেপে ধরে হাটা শুরু করলো, তখনো সে ফোনে অফিসের কথা বলে যাচ্ছে কিন্তু তানহার হাত ছাড়ছে না এখন আর! তানহা মনে মনে হাসলো তনয়ের কাজ দেখে!
🔷
তনয় ফোনে কথা বলতে বলতে যখন দেখেছিলো তানহার সাথে একটা ছেলে কথা বলার চেস্টা করছে তখন সে ওইদিকে চলে গিয়েছিলো। আর তখন মিশার পাঠানো বাচ্চা ছেলেটি ওখানে যেয়ে ফোনে কথা বলছে এমন কাউকে খুজে পেলোনা তাই সে চলে আসছিলো এমন সময় দেখলো ওখানে এক লোক ফোনে কথা বলছে তাই সে গিয়ে লোকটিকে ডেকে বলল একটা আপু আপনাকে ওখানে ডেকেছে কথা বলার জন্য, বলে মিশার দিকে ইশারা করলো!
মিশা তো ফুল হাতে নিয়ে রেডি হয়ে আছে উল্টোদিক হয়ে যে কখন তনয় আসবে আর ও হঠাৎ করে সারপ্রাইজ দিবে ওকে! পায়ের আওয়াজ পেতেই মিশা ভাবলো তনয় এসেছে তাই সে বলল,
-তুমি তো আমাকে না বলেই চলে এসেছিলে! কিন্তু দেখো আমি তোমার পিছু পিছু এখানে চলে এসেছি! সারপ্রাইজ বেইবি!
বলে সামনের দিক ঘুরে তনয়কে গোলাপ দিতে যেয়ে দেখে এটা অন্য এক লোক। মিশার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় এটা দেখে!
লোকটা বলে,
-তুমি সত্যিই আমার পিছু এখানে চলে এসেছো? তুমি কি আমাকে পছন্দ করো? (খুশি হয়ে)
মিশা চিল্লিয়ে উঠে বলল,
-হু আর ইউ? আপনি এখানে কেন? আর আমার তনয় বেইবি কোথায়?
-কে তনয়? তুমি না আমাকে পছন্দ কর? আমাকে তো ওই বাচ্চাটা বলেছে তুমি আমাকে ডেকেছো! চলোনা আমরা বিয়ে করি, আমার তোমাকে ভালো লেগেছে।
-জাস্ট শাট আপ। চলে যান এখান থেকে!
বলে মিশা প্রচন্ড রেগে লোকটার উপর চিল্লানো শুরু করলো আর ওখান থেকে চলে গেলো এই ভেবে যে আজকের দিনটাই খারাপ ওর জন্য! যা করতে যাচ্ছে তাই ফ্লপ হচ্ছে!
তাই ও ঠিক করলো অনেক হয়েছে, কালকে সরাসরি নিজে গিয়ে কথা বলবে তনয়ের সাথে!
চলবে…🍁