তুই যে শুধুই আমার

তুই যে শুধুই আমার ! সিজন- ২ !! Part- 23

একটি রেস্টুরেন্টের মধ্যখানে বসে আছে সায়রা আর রিসাব। রেস্টুরেন্টটা খানিকটাই নিরব। চারদিকে হাল্কা পিনপিনতা বিরাজ মান। বেশ কিছুক্ষণ হয়ে গেছে তারা যে এসেছে। অর্ডার করা কফিও এসে পড়েছে। কিন্তু দুইজনের মুখেই কোন বলি নেই। সায়রা মাথা নিচু করে বসে আছে আর চুপচাপ সায়রার পানে তাকিয়ে আছে।
রিসাব একটু নড়ে বসে বলে।

রিসাবঃ কি কথা ছিল যে তুমি আমায় এইভাবে ডাকলে?

সায়রা এইবার মাথা তুলে রিসাবের দিকে চায়। এক অপরাধী টাইপ হাসি দিয়ে বলে।😅

সায়রাঃ আসলে,,

রিসাবঃ আসলে কি!!

সায়রাঃ তোমাকে সরি বলার ছিল। যা কিছু হয়েছে তার জন্য।

রিসাবঃ আরেহ না। তোমায় সরি বলতে হবে না। এইখানে তোমার কোন দোষ নেই।

সায়রাঃ না আছে। আমি তোমাকে বিয়ে করবো বলে কথা দিয়েও কথা রাখতে পারলাম না। তার উপর আমার জন্য তুমি এত কিছু করলে তার প্রতিদানও দিতে পারলাম না। মন খারাপ করে।

রিসাবঃ দেখ আমি যা করেছি তা আমি মন থেকে করেছি। তাই তোমায় এইসব নিয়ে ভাবতে হবে না। কিন্তু হ্যাঁ তুমি যদি বল যে তুমি আরুশের সাথে খুশি নও তাহলে তুমি চাইলে আমার কাছে চলে আসতে পারো। আমি তোমার এইভাবেই আপন করতে রাজি।

সায়রা প্রতি উত্তরে কোন জবাব দিল না। শুধু স্মিত হাসলো।

রিসাবঃ হয়তো কিছু ভুল বলে ফেললাম। সে যাই হোক তুমি এইসব নিয়ে কোন চিন্তা করো না। আমি সবসময় তোমার পাশেই আছি।

সায়রাঃ হুম, থেংক্স। আচ্ছা কফিটা খান তা নাহলে ঠান্ডা হতে যাবে।

রিসাবঃ অহহ হ্যাঁ হুম।

এই বলে কফিতে চুমুক দিল। এইভাবে কিছুক্ষণ কথা বলতে বলতে দুইজনের কফি শেষ হয়ে গেল৷ কফি শেষে দুইজনেই বসে কিছু কথা বলতে থাকে। এমন সময় রিসাবের মাথা চক্কর দিয়ে উঠে। চোখের সামনে ঘোলা দেখতে থাকে। চোখ দুটো বুঝে আসে। কিছু বুঝার আগেই রিসাব ধব করে টেবিলের উপর শুয়ে পড়ে। রিসাব শুয়ে পড়তে আড়াল থেকে আরুশ, জান্নাত, আয়ান বেড়িয়ে আসে।
আরুশ সামনে এসে পা দিয়ে রিসাবের পায়ে একটা কিক করে বলে।

আরুশঃ আমার বউকে বলে কিনা আমায় ছেড়ে তার কাছে যেতে। একে তহ আমি!! এই বলে আরুশ এগুতে নিলে আয়ান এসে ধরে বলে।

আয়ানঃ রিলেক্স ইয়ার। জাস্ট কুল ডাউন। আগে মেইন কাজটা কর পড়ে যা ইচ্ছা তা করিস। আপাতত যা করতে এসেছি তা আগে কর।

জান্নাতঃ ইসস আমার প্লেনটা কাজে দিয়েছে। আই এম প্রাউড মাইসেল্ফ।😍
[ যা ভাবছেন তাই। আমাদের গুনধর জান্নাত আবার রিসাবকে কফির সাথে ঘুমের ঔষধ দিয়েছে😑। ]

আয়ানঃ আগে মেইন কাজ হোন তারপর প্রাউডনেস মানাইও। এখন কাজে লাগো।

জান্নাত কিছু না বলে একটা ভেংচি কাটে।

সায়রাঃ এইসব এ কোন লাভই হবে না। Everything is just waste of time.😕

জান্নাতঃ চুপ থাক। বুঝে না কিছু না বেশি বেশি কথা কোস। আরেকটা কথা বললে দিব কানের নিচে😤।

আয়ানঃ কাজে লাগ তহ দোস্ট। এই ভাইরাসগুলির কথা শুনতে গেলে কাম সারসে।

এই কথা শুনার সাথে সাথে জান্নাত আর সায়রা রাগে ফুসতে থাকে।

একটা চেয়ারের সাথে রিসাবকে বেধে রাখা হয়েছে। রিসাবের এখনো জ্ঞান ফিরে নেই। ফিরবেই কিভাবে জান্নাত মাতব্বরি করে কফির সাথে তিন তিনটা ঘুমের ঔষধ মিলিয়ে দিয়েছে। বেচারার কি আদো আজকে ঘুম ভাংতো কিনা সন্দেহ।
এই পর্যন্ত রিসাবের উপর চার বালতি পানি ফেলা হয়েছে বাট তার উঠার নামই নাই।
.
[ বিঃদ্রঃ বেশি বুঝলে যা হয়😑 ]
.
সায়রা ও জান্নাত গালে হাত দিয়ে বসে আছে। আর আরুশ রাগে ধাপধুপ করেই হেটে চলেছে। আয়ান গিয়েছে রিসাবকে ঘুমের থেকে তুলার অস্ত্র থুক্কু জিনিস আনতে।
বেশ কিছুক্ষণের মধ্যেই আয়ান সব জিনিস নিয়ে হাজির।
আয়ান এসে একটা বাটিতে কুসুম গরম পানি নিয়ে তার মধ্যে ভালো মত পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মিশিয়ে নেয়। তারপর আরুশকে ইশারা করে রিসাবের মুখটা হা করতে। আরুশ ঠিক তাই করে। আয়ান সেই সবটুকু পানিটা রিসাবের মুখে দিয়ে দেয় আর ওকে ঢোক গিলায়।
বেশ কিছুক্ষণ পরেই রিসাব নড়ে চড়ে উঠে। কিন্তু ঠিক মত জ্ঞান ফিরে না। তাই আয়ান ওকে কুসুম গরম দুধ খায়িয়ে দেয়। এইবার রিসাবের জ্ঞান ফিরে। সে পিটি পিটি করে তাকাতে চেষ্টা করে। কিন্তু বার বার চোখ লেগে আসে। তাই আরুশ আরেক বালতি রিসাবের উপর ঢেলে দেয়। রিসাব হকচকিয়ে উঠে। তার এইবার সম্পূর্ণ জ্ঞান ফিরে আসে। যা দেখে বাকি সবাই স্বস্তির নিশ্বাস নেয়।

🍁

রিসাবকে ঘিরে দাড়িয়ে আছে আয়ান আর আরুশ। আরুশের দুইহাতে দুটো ইলেক্টিক তার। তার দুইটির মধ্যে বিদ্যুৎ সরবারহ করছে। এইটা বুঝার উপায় আরুশ মাঝে মাঝেই দুইটি তার একই সাথে সংস্পর্শে আনছে যার ফলে শর্ট সার্কেট তৈরি হচ্ছে।
আরুশের চোখ রক্তিম বর্ণ হয়ে আছে যেন এখনই রিসাবকে গিলে খাবে। আরুশের এমন চাহনি দেখে রিসাব ভয়ে এক ঢোক গিলে। কিন্তু পরক্ষনেই নিজের ভিতরে সাহস জগিয়ে বলে।

রিসাবঃ আমাকে এইভাবে বেঁধে রাখার মানেটা কি?? আমাকে এখানে কেন আনা হয়েছে?

আরুশঃ কাজ আছে তাই। গম্ভীর হয়ে।

রিসাবঃ ককি ককাজ। তোতলিয়ে।

আয়ানঃ তুমি বুঝি জানো না! তোমাকে দিয়ে আমাদের কি কাজ হতে পারে। বাবু বুঝো না, ফিটার খাও!!

রিসাব এইবার ভয়ে ভয়ে একটা ঢোক গিলে। আরুশ এইবার তার দুটো সামনে এনে বলে।

আরুশঃ আমিনুল সাহেবকে মেরেছিল??

রিসাবঃ আআমি কককেমনে জজানবো!

আরুশঃ তাই না।
এই বলে আরুশ হাল্কা ভাবে একটি তারকে রিসাবের সাথে স্পর্শ করে। সাথে সাথে রিসাবের শরীর ঝাঁকি দিয়ে উঠে। সে কুকড়িয়ে উঠে।
.
[ তারের মধ্যে খুবই অল্প ভোল্টেজের বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে শুধু হাল্কা শক দেওয়ার জন্য। তাই এতে তেমন প্রাণহানী হবে না। ]
.
আরুশঃ বল বলছি!! হুংকার দিয়ে।

রিসাবঃ আমি জানি না।

আরুশ আবার তারটি রিসাবের হাতের সাথে স্পর্শ করায়। এইবার সে মোটামুটি ভালোই একটা শোক খায়। সে এইবার সহ্য করতে না পেরে বলে।

রিসাবঃ বলছি বলছি!!

আয়ানঃ চান্দু এইবার আসছো লাইনে।

আরুশঃ Good! Now speak up.

রিসাবঃ ________________________________________________________

কিছুক্ষণ আগেই রিসাবকে পুলিশ এসে এরেস্ট করে নিয়ে গেছে। সকলেই স্তব্ধ। সায়রা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদেই চলেছে। জান্নাতও নিজের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। মানুষ যে এতটা খারাপ হতে পারে তা জান্নাতের জানা ছিল না। আরুশ আর আয়ান নির্বাকের মত দাড়িয়ে আছে। হঠাৎ আরুশ বলে উঠে।

আরুশঃ It is the time to over this game. The game will be over now. মুচকি হাসি হেসে।



#চলবে