তারে আমি চোখে দেখিনি !! Part- 17
রুসাঃ কেউ সামনে আগাবে না বলে দিলাম। নইলে আমি নিজেকে শেষ করে দেবো। এজীবন রেখে আর কি করবো? মরে যাবো আমি।
রুসার কথা শুনে সবাই হতোভাগ হয়ে চেয়ে আছে রুসার দিকে।আর ভাবছে কেন এমন করছে মেয়েটা।এইতো বিকালে হাসতে হাসতে বন্ধুদের সাথে বের হলো।আর এখন বাড়িতে এসেই পাগলামি শুরু করে দিয়েছে।
রাইশা ভয় ভয় মুখ করে মিরার দিকে তাকায়।তারপর মিরাকে বলে রাইশা।
রাইশাঃ ভাবি আমার কিন্তু খুব ভয় লাগছে। আমার মেয়েটা কিছু করে বসবে নাতো?
মিরাঃ আরে না কিচ্ছু করবে না। আমাদের রুসা এমনটা করতেই পারে না।তাই না রুসা?
রুসাঃ মামি আমি মজা করছি না।আমি সত্যি বলছি, শেষ করে দেবো নিজেকে।
মাহিরঃ দেখ রুসা তুই কিন্তু এবার বারাবাড়ি করে ফেলছিস!
রুসাঃ আমি বাড়াবাড়ি করছি ভাইয়া?
মাহিরঃ বাড়াবাড়ি নয়তো কি এটা?
রুসাঃ সেটা তোর বউকে গিয়ে জিজ্ঞাসা কর।একটা দুশ্চরিত্রা, নস্টা মেয়ে কোথাকার।
রুসার মুখে এমন কথা শুনে মাহির এগিয়ে গিয়ে রুসার হাত থেকে কাচের টুকরোটা এক টানে ফেলে দেয়।তারপর রাগি দৃস্টিতে রুসার দিকে তাকিয়ে জানতে চায়,
মাহিরঃ কি করেছে মায়া?
রুসাঃ কেড়ে নিয়েছে আমার আবিরকে। আর কখনো আবির আমাকে ভালোবাসবে না। কখনো ফিরেও আসবে না।
বলে কান্না জুড়ে দেয় রুসা।
মাহিরঃ মানে?
রুসাঃ মানে বুঝছিস না? আবির আর আমাকে ভালোবাসে না।ও তোর বউকে ভালোবাসে।
মাহিরঃ কি যা তা বলছিস?
রুসাঃ ঠিকই বলছি।আমার আবির আর আমার নেই ও তোর বউয়ের প্রেমে এখন হাবুডুবু খাচ্ছে।
মাহিরঃ রুসা তোর বুঝতে কোথাও একটা ভুল হচ্ছে বোন।
রুসাঃ কোনো ভুল হচ্ছে না আমার। আমি নিজের কানে শুনে এসেছি রেস্টুরেন্টে তোর বউ ওকে যা যা বলেছে।
,
,
,
,
এদিকে মাহিরকে জব্দ করার প্লান ভাবতে ভাবতে মায়া মাত্র মির্জা প্যালেসে এসেছে।সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে রুসার রুমের কাছে আসতেই বাড়ির সকলকে দেখে রুমের ভেতরে এসে দাড়ায়।দেখে রুমের ভেতরের সব জিনিসপত্র ভেঙেচুরে এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
মায়াঃ একি রুসা তোমার রুমে কি ভূমিকম্প বয়ে গেছে নাকি?
কথাটা শুনে রুসা তাকিয়ে দেখে মায়া সামনে দাড়ানো।আর মায়াকে দেখে রুসার রাগ আরও প্রচন্ড আকারে বেড়ে যায়। মায়া আরও কিছু বলতেই রুসা রেগে বিছানার বালিশ এদিকে ওদিকে ছুড়ে ছুড়ে মারতে থাকে। তারপর বিছানার চাদরটা টেনে মেঝেতে ছুড়ে ফেলে দেয়। মাহির রুসার হাতদুটো শক্ত করে ধরে বিছানাতে জোড় করে বসায়।
মাহিরঃ এসব কি করছিস রুসা?
রুসাঃ তোর বউকে এখান থেকে চলে যেতে বল ভাইয়া। আমি ওকে সহ্য করতে পারছি না।
অবাক দৃষ্টিতে জানার কৌতুহল নিয়ে রুসার দিকে তাকিয়ে থাকে মায়া।বলে,
মায়াঃ আমি কি করেছি?
রুসাঃ আবার জিজ্ঞাসা করো তুমি কি করেছো?
রুসার পাগলামি আরও বাড়তে থাকে।যার জন্য পরিস্থিতি সামলাতে মাহির মায়াকে টেনে রুসার রুম থেকে বাইরে নিয়ে আসে।
মায়াঃ এই আমাকে আপনি এভাবে টেনে আনলেন কেন? আমার জানতে হবে তো আমি কি করেছি?
মাহিরঃ তুমি কি করেছো সেটা আমি পরে বোঝাবো আগে আবিরকে আসতে দাও।
কথাটা বলে মাহির আবিরকে ফোন দিয়ে আসতে বলে।কিছুক্ষণ পর আবির আসে।রুসাকে অনেক চেস্টা করে ঠান্ডা মাথায় আবির বোঝালে তারপর গিয়ে রুসা শান্ত হয়।আর এদিকে মায়া ভাবতে থাকে সে কি করেছে।
মায়াঃ বলুন না আমি কি করেছি?
মাহিরঃ অন্যায় করেছো তুমি।
মায়াঃ অন্যায়?
মাহিরঃ হ্যাঁ অন্যায়।আমার বোনকে কাঁদিয়েছো তুমি।
বুঝতে পারছো না?
মায়া মাথা ঝাকিয়ে না বলে।
তারপর মাহির মায়াকে বুঝিয়ে বলে, রুসা আর আবিরের সম্পর্কটার কথা।ওরা দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসে।আর তাই রেস্টুরেন্টে মায়ার বলা কথাগুলো শুনে রুসা এতো ক্ষেপে গিয়েছে।
মায়াঃ তাহলে তো রুসা আমাকে ভুল বুঝেছে।
মাহিরঃ হুমমম।তবে চিন্তা করো না আবির এসেছে যখন ও ঠিক বুঝাতে পারবে রুসাকে।
মায়াঃ সব আপনার জন্য হয়েছে।
মাহিরঃ আমার জন্য?
মায়াঃ তা নয়তো কি? আবিরকে অনুভব সাজিয়ে আপনিই তো পাঠিয়েছিলেন।শুধু শুধু রুসাটাও আমার উপর ক্ষেপে গেলো আপনার জন্য।আপনার সাথে তো কোনো কথাই নেই।
বলেই একটা ভেংচি কেটে মায়া রুমের দিকে যায়। আর মাহির মায়ার পিছনে পিছনে আসে।
,
,
,
,
চলবে,,,,,