তারে আমি চোখে দেখিনি

তারে আমি চোখে দেখিনি !! Part- 16

রেস্টুরেন্টে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে রুসা।পাশের টেবিলে বসে আছে মায়া ও আবির।দুজনে খুব হেসে হেসে কথা বলছে।আর একে অপরের দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে যেন প্রেমিক প্রেমিকা।রুসা কাঁধ ঘুরাতেই আবিরের সাথে মায়াকে দেখে আশ্চর্য হয়।ভাবে এই সময়ে আবিরের সাথে ভাবি এখানে কি করছে? তাহলে কি ভাইয়াও রেস্টুরেন্টে এসেছে? রুসা এদিকে ওদিকে তাকিয়ে মাহিরকে কোথাও দেখতে পেলো না।তারপর উঠে এগিয়ে এসে মায়ার পিছনে দাড়িয়ে ডাকতে যাবে এমন সময়ে মায়ার কথা শুনে রুসা থমকে যায়।

মায়াঃ আমি জানি না আমার কথা আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা।আমি এটাও জানি না কথাটা শুনার পর আপনি কি ভাববেন।তবুও আমার বলতে হবে, বিশ্বাস করুন আবির।এর আগে কক্ষনো কাউকে বলিনি।আজ আপনাকেই প্রথম বলছি, খুব ভালোবাসি আপনাকে আমি।সত্যিই খুব ভালোবাসি।এতোটা ভালোবাসি যতোটা ভালো কেউ কাউকে বাসতে পারে না।আর জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত শুধু আপনাকেই ভালোবাসবো।

এটুকু কথা শুনেই রুসা নিজের কান দুটো শক্ত করে চেপে ধরে।আর রুসার হাত থেকে পার্সটা পরে যায়। শব্দ শুনে আবির সামনে তাকিয়ে দেখে রুসা দাড়ানো।যা দেখে একরাশ ভয় নিয়ে আবির উঠে দাঁড়ায়।আর রুসা আবিরের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখ মুছতে মুছতে রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে আসে। আবিরও ছুটে আসে রুসার পিছনে কিন্তু ততোক্ষণে রুসা চলে যায় যার জন্য আবির রুসাকে কিছু বোঝাতে পারে না।
,
,
,
মির্জা প্যালেস,,,

মাহির খুব সুন্দর করে নিজের রুমটা সাজিয়েছে। মনে মনে ঠিক করে রেখেছে আজই মায়াকে সত্যিটা বলবে।আর তাই তো আবির যখন বললো মায়া ওকে অনুভব ভেবে বিভিন্ন বাহানায় ফোন করছে তখন আবিরের সাথে প্লান করে নিয়েছে যেন আবিরের সাথে মায়া দেখা করতে গেলে সেই সুযোগে রুমটা সাজিয়ে নিতে পারে।

এদিকে রুসা বাড়িতে এসে রুমের দরজা ভেতর থেকে লক করেই সব জিনিসপত্র ভাংচুর করছে। রুসার রুমে ভাংচুরের আওয়াজ পেয়ে মাহির সহ বাড়ির সকলে ছুটে আসে। দরজায় নক করে বারবার রুসাকে ডাকে।সবাই জানতে চায় কি হয়েছে কিন্তু রুসা কারও কোনো কথাই শোনে না।আরও বেশি করে ভাংচুর করতে থাকে। তারপর না পেরে মাহির রুসার রুমের দরজাটা ভেঙে ফেলে।ভেতরে গিয়ে দেখে সারা রুমের জিনিসপত্র ভেঙে চুরে এলোমেলো হয়ে আছে।
সবাইকে রুমের ভেতরে দেখে একটা কাচের বড় টুকরো উঠিয়ে রুসা নিজের হাতের সামনে ধরে।আর বলে কেউ সামনে আগালেই নিজেকে শেষ করে দেবে।
,
,
,
রেস্টুরেন্টে,,
রুসা চলে আসার পর আবির মায়াকে সব বুঝিয়ে বলে।সকালে,,মায়া আবিরকে ফোন দিয়ে যেই কথাগুলো বলেছিলো তা মাহির ওয়াশরুম থেকে শুনে নেয়। তারপর আবিরকে ফোন দিয়ে মায়ার ফোন নাম্বার মিলিয়ে কনফার্ম হয় মাহির।তারপর আবিরের সাথে প্লান করে মাহির এতোকিছু করে।শুধু মায়াকে সারপ্রাইজ দেবে বলে।

মায়াঃ তাই বলুন এজন্যই আমার মনে সন্দেহ হচ্ছিল আপনি অনুভব নন।

আবিরঃ মানে?

মায়াঃ আপনার কন্ঠের সাথে অনুভবের কন্ঠের কোনো মিল আছে নাকি?

আবিরঃ তাহলে প্রপোজ করলেন কেন?

মায়াঃ প্রিপারেশন নিচ্ছিলাম। উনি স্নিগ্ধাকে ভালোবাসে।তাই তো শুধু স্নিগ্ধা স্নিগ্ধা করে সারাক্ষণ।ওই স্নিগ্ধার জন্যই বিয়ের দিন আমাকে উনি পাচার করে দিচ্ছিলো।আমি জানতাম না উনিই অনুভব কিন্তু এখন যখন যেনে গেছি তখন শোধ তুলবো।উনি যদি আমার সামনে আরেকটা মেয়ের সাথে প্রেম করতে পারে তাহলে আমি কেন পারবো না!

আবিরঃ ঠিক বলেছেন।
,
,
,
চলবে,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *