ডেড বডি

ডেড বডি ! Part- 07

আসলে চিরকুটে লেখা ছিলো NND। এটা দেখে আমি সিউর যে রিমুকেও সেই খুনি টাই খুন করে। তাহলে যে রিমুর ফরেনসিক রিপোর্টে কোন কিছু পাওয়া যায়নি! তাহলে কি ডাক্তার অজয় এখানে কোন চিটারি করছে। আর ডাক্তার অজয় এর মতিগতি ভালো লাগছে না। রিমুর খুনের সাথে ডাক্তার অজয় জড়িত নেই তো! নাহ, কেউ যতই খারাপ হোক না কেন নিজের মেয়েকে কিভাবে মেরে ফেলতে পারে! যাই হোক আমাকে রিমুর লাশটি অন্য একটি ফরেনসিক ডাক্তারকে দেখাতে হবে। কিন্তু রিমুর লাশটিকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে তো দিবে না ডাক্তার অজয়। তাই ভাবলাম চুরি করে নিয়ে যেতে হবে। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এসে সব প্ল্যান করে ফেলি। আজকে রাতে রিমুর লাশটি চুরি করতে হবে। বাড়ি থেকে গাড়িটি নিয়ে বাহির হলাম প্রায় রাত ৩ টার দিকে। ডাক্তার অজয় এর লাশ ঘরে তালা দেওয়া ছিলো। গুলি দিয়ে তালাটা ভাঙ্গলাম। ভিতরে ঢুকে অনেক গুলা লাশের মাঝে রিমুর লাশটা খুজে পাচ্ছিলাম না। আর এত গভীর রাতে এতগুলা লাশের সামনে সত্যি অনেক ভয় লাগতেছে । মনে হচ্ছে যেন কেউ একজন পিছন থেকে এই বুঝি টেনে ধরে! আশেপাশে প্রায় ১৫ টি টেবিলে ১২ টি লাশ। এগুলা দেখতে দেখতে হঠাৎ জোরে একটা কিসের যেন শব্দ হয়। আমি ভয়ে জোরে একটা চিৎকার করে দেই। ভালোভাবে তাকিয়ে দেখি একটি বিড়াল বোয়াম ফেলে দিয়েছে। এত ভয়ের মাঝে তবুও লাশ খুজতে থাকি। হঠাৎ মনের ভিতর সাহস জাগালাম। আমি একজন CID অফিসার। আমাকে ভয় পেলে চলবে না । মনের ভিতর সাহস যুগিয়ে অনেকক্ষন খোজার পর দেখলাম ঘরে একদম কোনার দিকে মাটিতে উলঙ্গ ভাবে পড়ে আছে রিমুর লাশটি। আমি তাড়াতাড়ি কাপড় দিয়ে ঢেকে গাড়িতে করে নিয়ে যাই ডাক্তার জাহিদ এর কাছে। ডাক্তার জাহিদ ও একজন ফরেনসিক বিভাগের ডাক্তার। তার সাথে এই বিষয় নিয়ে আগে কথা হয়েছে। আমি তাড়াতাড়ি করে ডাক্তার জাহিদ এর কাছে নিয়ে গিয়ে রিমুর লাশটিকে টেবিলে রাখি। এরপর ডাক্তার জাহিদ রিমুর লাশটি চারপাশটা ভালোভাবে দেখে আবার কাটে। আমি পাশেই চেয়ারে বসে আছি।অনেক খারাপ লাগছিলো। রিমুকে এই অবস্থায় দেখবো ভাবিনি। কিন্তু ডাক্তার অজয় বাবা হয়ে নিজের হাতে কিভাবে কাটলো মেয়েকে! আমি দেখতেই পারছি না। যাই হোক কিছুক্ষন পর ডাক্তার জাহিদ বলে উঠে,
-আচ্ছা নিলয় লাশটিকে তুমি কোথা থেকে তুলে এনেছো। ফ্রিজে ছিলো নাকি টেবিলে?
-না ডাক্তার। লাশটি মাটিতে উলঙ্গভাবে পড়ে ছিলো।
-হুম। আচ্ছা চলো অজয় এর রুমে আর একবার যেতে হবে।
-আচ্ছা ঠিক আছে । তবে বলেন কি হয়েছে? আর কি দেখলেন?
-আমার আরো কিছু লাশ দেখতে হবে। আর এই রিমুর লাশটি শুধু এক্সিডেন্ট কেস নয়। তার শরীরে এমন একটু রাসায়নিক দ্রব্য পাওয়া গেছে যেটা মানুষের শরীরে পুশ করার ৫-১০ মিনিটের মধ্যে মরে যায়।
-আচ্ছা। আমি তাকে এক্সিডেন্ট অবস্থায় পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। প্রায় ৩ ঘন্টা পরে তার বাবা ডাক্তার অজয় আসে। তার বাবা আসার ১০-২০ মিনিটের মধ্যেই রিমু মারা যায়।তাহলে কি ডাক্তার অজয় এই রাসায়নিক দ্রব্য তার নিজের মেয়ের শরীরে দিয়েছে?
-হতে পারে। তবে রিমুর ভিতর আর একটা জিনিস পাওয়া গেছে। আর এইটা প্রমান করতে আমাকে আরো কিছু লাশ দেখতে হবে।
-আচ্ছা ঠিক আছে চলেন। কি পেয়েছেন সেটা তো বলেন!
-আগে বলা যাবে না। আরো লাশ দেখতে হবে।
-ওকে। চলেন।
ডাক্তার জাহিদকে নিয়ে গভীর রাতে আবারো ডাক্তার অজয় এর লাশ ঘরে আসি। ডাক্তার জাহিদ ভিতরে ঢুকে একটি মহিলা লাশের কাছে গিয়ে মহিলাটির তল পেট কেটে মহিলাটির জরায়ুটা বাহির করে। তারপর পকেট থেকে কি যে একটা বাহির করে দেখতে থাকে। আবার কিছুক্ষন পর আরো একটি মেয়ের লাশ খুজে বের করে তার ও একইভাবে তল পেটে কে জরায়ু বের করে কি যেন দেখছে। আমি চুপচাপ শুধু দেখছি এভাবে সেখানে যে কয়টা মেয়ের লাশ আছে সব গুলারেই এমন ভাবে কেটে কেটে কি যেন দেখছে। সব গুলো দেখা শেষ করে আমার কাছে এসে বলে,
-আমি যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেটাই হয়েছে।
-কি ভয়?
-আসলে ডাক্তার অজয় একজন নেক্রোফেলিয়া।
-কিহ?
-হ্যা। প্রথমত রিমুর জরায়ুতে একটি ভ্রুন পাই। যেটা জীবত ছিলো। তাই আমি সব গুলা লাশ দেখার জন্য এসেছিলাম।সব গুলা লাশের জরায়ুতে ভ্রুন দেখা যাচ্ছে।
-তাই বলে নিজের মেয়ের সাথেও।
-আসলে মৃতদেহের ওপরে এমন কাণ্ডকে মনস্তত্ত্বের পরিভাষায় নেক্রোফেলিয়া বলা হয়। এসব মানুষ গুলা মৃত দেহ দেখলেই তাদের সেক্স করার ইচ্ছা জাগে। তাই সুযোগ পেলেই ছারে না। সে তার মেয়ে হোক আর যেই হোক।এটা এক প্রকার মানসিক রোগ বলা যায়।
-ওহ মাই গড! তাহলে কি ডাক্তার অজয় এই সব খুন করেছে এতদিন?
-হতে পারে। কারন এই ধরনের মানুষ আগে মানুষকে মেরে ফেলে তারপর যা করার করে। কিন্তু মেরে ফেলার আগে কখনই কিচ্ছু করবে নাহ।
-তাহলে পুরুষ গুলাকে কেন মারবে?
-সেটাও ভাবার। এমনো হতে পারে। মেয়েগুলাকে মারতে গিয়ে ওই পুরুষগুলা দেখেছে। তাই তাদেরও মেরে ফেলেছে।
-হতে পারে।
ডাক্তার অজয় এর লাশ ঘর থেকে তাড়াতাড়ি বাহির হয়ে ডাঃ জাহিদকে বাসায় রেখে রিমুর লাশটি আগের স্থানে রেখে ডাক্তার অজয় এর রুমে একটি কলমের ক্যামারা রেখে আসি। কারন প্রমান ছাড়া হাতে নাতে ধরা যাবে। কলমটা দেখে দরজা কোন রকমে আটকে তারাতারি করে বাড়িতে গিয়ে শুয়ে পরে। ততক্ষনে ফজরের আযান ও দিয়ে দেয়। তবুও একটু ঘুমাতে না পারলে সমস্যা হতে পারে। তাই ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়ে যায়। তাই তাড়াহুরো করে অফিসে গিয়ে আগে কলমের সিসি ক্যামেরাটা অন করি। দেখি ডাক্তার অজয় তার রুমে। যখনি সে কুকাজে লিপ্ত হয়ে যায় ঠিক তখনি আমি গাড়িটা নিয়ে চলে যাই অজয় এর লাশ ঘরে। তার ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় কিছুক্ষণ জোরে ধাক্কা মারতেই ভেঙ্গে যায় দরজা। এরপর ডাক্তারকে হাতে নাতে ধরি। ডাক্তার আমাকে দেখে বলে,
-নিলয় তুমি। অনুমতি ছাড়া ঢুকতে বলেছে কে?
-ডাক্তার CID এর কোন অনুমতি লাগে না।
ডাক্তারের হাতটা বেঁধে সেখানেই কলমটা দেখে বললাম,
-ডাক্তার এখানে তোমার সব প্রমান রয়েছে। এখন থানায় চলেন।
-দেখো নিলয়। আমি একজন ডাক্তার। আমাকে সম্মান দিয়ে কথা বলবে।
-আপনি একজন নেক্রফেলিয়া।
এইটা বলতেই কি যেন একটা দিয়ে আমার মাথায় সজোরে আঘাত করে। সেখানেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। প্রায় কয়েক ঘন্টা পরে জ্ঞান ফিরে দেখি আমাকে বেঁধে রেখে। এবং আমার শরীরে কোন কাপড় নেই সম্পূর্ন উলঙ্গ। নিজেকেই নিজের কাছে সরম লাগছিলো। কিছুক্ষন পর ডাক্তার অজয় কোথায় থেকে যেন একটা অস্ত্রপাচার এর ব্লেড নিয়ে এসে আমার কাছে একটা অট্টো হাসি দিয়ে বলে,
-নিলয় তুমি যখন জেনেই গেছো আমি নেক্রফেলিয়া। তাহলে তোমাকে বাঁচিয়ে রেখে লাভ কি আর! প্রথমে তোমার পুরুষাঙ্গ কাটবো। হাহাহা
-আচ্ছা ঠিক আছে ডাক্তার। আমি কোন বাঁধা দিবো না। আপনি শুধু আমাকে মরার আগে একটি কথা শুনাবেন প্লিজ?
-ওকে। মরার আগের অন্তত তোমার একটা ইচ্ছা পুরন করি। আচ্ছা বলো।
-এই শহরের এত দিনের খুন গুলা কি আপনি করেছে?
– হাহা……
.
চলবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *