ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন Season 3 !! Part- 15

মেরিন ঝড়ের বেগে পিছে ঘুরলো। নীড়ের অগোছালো অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে গেলো । ছুটে নীড়ের কাছে গেলো।
মেরিন : নীড় … ককি হয়েছে আপনার ? এমন লাগছে কেন আপনাকে ? কি হলো কথা বলছেন না কেন ?
নীড় কোনো কথা না বলে শক্ত করে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো । মেরিন বেশ বুঝতে পারছে নীড় কাদছে। যেটা কোনোদিনও মেরিন সহ্য করতে পারেনা ।
মেরিন : বলছেন না কেন কি হয়েছে? এই নীড় …
নীড় চোখের পানির মুছে নিজেকে সামলে মেরিনকে ছারলো। দেখলো মেরিনেক চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে।
.
মেরিন নীড়ের ২গালে হাত রেখে
বলল : কককি হয়েছে ? কেউ কিছু বলেছে ? কথা বলছেন না কেন ? কে কি করেছে just ১টাবার বলুন … আমি তাকে… আপনি নাম বলুন…
নীড় : কেউ ধোকা দিয়েছে।
মেরিন : নাম বলুন…
নীড় : মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী …
মেরিন : …
নীড় : হামম। তুমিই ধোকা দিয়েছো । অনেক বড় ধোকা….
মেরিন : আমি তো ধোকাবাজই। তাই ধোকা দিয়েছি। তবে সেটা তো ১৭দিন আগের কথা । তার শাস্তিও তো পাচ্ছি … না না আপনার উগ্র ব্যাবহারে নয়। আপনার থেকে দূরে থেকে । হ্যা যদি আরো বড় কোনো শাস্তি দিতে চান like… মেরে ফেলা পুরিয়ে ফেলা blah blah… i don’t mind … বলুন কি শাস্তি দিবেন ?
নীড় : কোন অপরাধের শাস্তি দিবো তোমাকে ? আমাকে ভালোবাসার না কি সাজানো ঘৃণার কারন দেয়ার…
মেরিনের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে নীড় সবটা জেনে গেছে …
মেরিন : যেটার ইচ্ছা ।
বলেই মেরিন কাবার্ড থেকে নীড় জামা-কাপড় বের করে নীড়কে দিলো ।
মেরিন : যান fresh হয়ে নিন । এরপর সবাই মিলে একসাথে lunch করবো। এরপর আমাকে আবার timely airport যেতে হবেযে । না হলে flight miss করবো যে …

নীড় না জিজ্ঞেস করে পারলোই না ।
নীড় : কোথায় যাচ্ছো !!!
মেরিন : নতুন কারো সাথে ঘুরতে। আপনার ভাষায় হানিমুনে… যান গিয়ে fresh হয়ে নিন।
নীড় মেরিনের বাহু টেনে সামনে আনলো । মেরিনের চোখে চোখ রাখলো ।
নীড় : যখন ভালোবাসার কারন খুজে পাচ্ছিলাম তখন কেন নতুন করে ঘৃণার কারন দিলে …
মেরিন : কারন মেরিন বন্যা কখনো promise ভাঙেনা।
নীড় : মানে ?
মেরিন : মানে কিছুনা। রাত ৯টায় আমার flight আছে। ব্যাংকক যাবো। bangkok branch এ ঝামেলা হয়েছে । ৭-৮দিনে চলে আসবো।
নীড় : বেশ আমিও যাবো ।
মেরিন : no babes … আমার কাজ আমি একা করতেই ভালোবাসি ।
নীড় : মেরিন …
মেরিন : বলুন…
নীড় : sorry …
মেরিন : …
নীড় : জানিনা কেন আর কোথায় যাচ্ছো … বাধা দেয়ার ক্ষমতা বা যোগ্যতা তো আর আমার নেই।
মেরিন : হামম হয়তো।
নীড় : তবে… ১টা বার ক্ষমা করো প্লিজ…
মেরিন : নীড় আপনার ওপর না তো আমার কখনো কোনো অভিযোগ ছিলো না আছে আর না থাকবে …. এখন যান তো যান fresh হয়ে নিন । মনে হচ্ছে আপনার ভালোবাসার নীরা মরে টরে গেছে । যার শোক পালন করছেন। 😁।
নীড় : তোমাকে কোনো দিনও বুঝবোনা …
নীড় fresh হয়ে এলো । সবাই মিলে lunch করলো। আড্ডা সাড্ডা মারলো। এরপর মেরিন ব্যাংকক চলে গেলো। আসলে মেরিনের উদ্দেশ্য লন্ডন যাওয়া … তাই মেরিন ব্যাংকক থেকে লন্ডন গেলো ।
.
in london …
মেরিন : ডক্টর এতোগুলো দিন হয়ে গেলো আমার বাবা কেন সুস্থ হচ্ছেনা ? why why why…
ডক্টর : control yourself mam…প্লিজ। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি । কিন্তু উনার brain এমনভাবে damage করা যে কোন technicই কাজে লাগছেনা ।
মেরিন : তাহলে কি আমার বাবা ঠিক হবেনা?
ডক্টর : হবে।
মেরিন : কিভাবে? বাবার অবস্থা দেখি আরো খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়েছে…
ডক্টর : no… খারাপ না ভালো হয়েছে । কনিকা … মানে আপনার মায়ের কথা উনার মনে পরেছে…
মেরিন : oh…
ডক্টর : হামম। ১টা বার যদি আপনার মাকে উনার মুখোমুখি ক…
মেরিন : না। অসম্ভব।
ডক্টর : কেন ? তিনি কি মারা গিয়েছেন ?
মেরিন : হামমম।
ডক্টর : oh then sorry … আমরা তাহলে অন্যভাবে চেষ্টা করবো।
মেরিন : thank u…
মেরিন বাবা আর দাদুভাইয়ের সাথে সময় কাটাতে লাগলো।
.
in Bangladesh…
নীড় : এবার ফিরে তুমি তোমার মনের মতোই নীড় দেখতে পাবে বনপখি… yes… তোমার মন মতো। তোমাকে বুঝতে হলে আমাকে তোমার মতোই হতে হবে …তবেইতো তুমি আমি এক হতে পারবো । আমরা হবো সাইকো couple … যতোই তুমি আমাকে ঘৃণার কারন দাওনা কেন তোমাকে ভালোইবাসবো। মেরিন নামের রহস্যটাকে এবার আমি ভেদ করবোই। যেভাবেই হোক। যদি ঘৃণার নীড় হতে হয় তবে সেটাই হবো … তোমার মতো করেই ভাবতে হবে। কিন্তু তুমি কখন কি ভাবো সেটা কি বোঝা সম্ভব ? জানিনা কি হবে । তবে পারতে আমাকে হবেই…
.
৭দিনপর…
সকাল ৮টা…
মেরিন দেশে ফিরেছে ।
নীলিমা : আরে বন্যা …
নীলিমা দৌড়ে গিয়ে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো ।
নীলিমা : তুই না থাকলে এই বাড়ি এখন ১টা মরা বাড়ি মনে হয়।
মেরিন : তাই বুঝি?
নীলিমা : হামম।
মেরিন : বাবা কোথায় ?
নীলিমা : নিহাল তো গাজীপুর গিয়েছে। ১টা কেস solve করতে।
মেরিন : oh… তোমার মুখ এমন লাগছে কেন ?
নীলিমা : কককোথায় নননাতো…
মেরিন : না দেখে কেমন যেন লাগছে …
নীলিমা : না কিছুনা…

মনে মনে : বন্যা আজকে চলে এলো। নীরা যে ২দিন ধরে এ বাসায়। বন্যা জানলে যে কেয়ামত করবে । কেন যে নীরাকে থাকতে দিলাম!!! মেয়েটা এমন করে বলল যে না করতে পারলাম না … তারমধ্যে তো নীরা রোজ সকালে উঠে নীড়ের জন্য চা নিয়ে যায় … আজও গিয়েছে কিনা…?
মেরিন : কি এতো ভাবছো ?
নীলিমা : কককিছুনা।
মেরিন : তুমি কি অসুস্থ ?
কথা বলতে বলতে মেরিন চোখ ওপরে গেলো। মনে হলো কারো ছায়া দেখেছে।
নীলিমা : না তো… just একটু tired …
মেরিন : ওহ। নীড় ঘুম তো?
নীলিমা : হামমম।
মেরিন : ও। আচ্ছা fresh হয়ে আসছি।
নীলিমা : হামম। চল ২জন মিলে একসাথে যাই চল । ওর অবাক হওয়া চেহারাটা দেখতে হবেনা।
মেরিন : অবাক হবে কি না জানিনা। তবে অসহ্য হয়তো হবে। চলো।
২জন মিলে ওপরে গেলো।
.
নীড়ের রুমের বাইরে…
নীলিমা মনে মনে : যাক মনে হয় নীরা আসেনি চা নিয়ে । বাচা গেলো ।
মেরিন : দরজা ধপাস করে খুলি চলো ২জন মিলে।
নীলিমা : হামম।
২জন মিলে দরজা খুলল। আর যা দেখলো তা দেখে নীলিমারই হোস উরে গেলো আর মেরিন তো মেরিনই …
কারন নীড়ের shirt বেডের নিচে পরে আছে । নীড়ের উন্মুক্ত বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে নীরা …
নীলিমা : নীড়…
নীলিমা এমন করে রেগে ডাক দিলো যে নীড়ের ঘুম ভেঙে গেলো । আর চোখ মেলে নিজের বুকে নীরা আর দরজায় দারানো মেরিনকে দেখে নীড় মহাঅবাক হয়ে গেলো । নীরাকে নিজের কাছে থেকে সরালো। উঠে দারালো। নীরাও নিজেকে গুছিয়ে নিলো । নীড় shirt টা তুলে পরে নিলো । মেরিন সারারুমটাতে চোখ বুলিয়ে নিলো । ফুলের পাপড়ি… candles …দিয়ে রুম সাজানো। তবে এতো কিছুর মধ্যেও wine এর বোতল আর ছোট্ট ১টা পানি ভরা বাটি যেটাতে সাদা রুমাল আছে সেটা মেরিনের চোখ এরালো না । আর তারওপর কালোগোলাপ… গোলাপে নীরার allergy … যা বোঝার মেরিন বুঝে নিয়েছে ।
নীলিমা : নীরা ত…
মেরিন হাত দিয়ে ইশারা করে নীলিমাকে থামিয়ে দিলো । নীড়ের চোখের দিকে তাকালো । লাল হয়ে আছে চোখ ২টা। চোখে পানির দাগ পরে আছে । মেরিন এগিয়ে গেলো । আরেকটা wine এর বোতল হাতে নিলো। বেডের চারদিকে ঢেলে বাকীটা বেডের মধ্যে ঢালল। এরপর আগুন জালিয়ে দিলো। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে লাগলো ।
নীড় : মে…
মেরিন রেগে নীড়ের দিকে তাকালো । নীড় চুপ হয়ে গেলো। মেরিন নীড়ের কপালে গালে হাত দিলো। এখনও হালকা জ্বর । এরপর সেই আড়াল করতে চাওয়া wine এর বোতল আর সেই বাটিটা বের করলো । ২টা ২হাতে নিয়ে
মেরিন বলল : you hurt me again…
বলেই ২টা জিনিষই আছার মারলো । নীরার সারা শরীর কাপতে লাগলো ভয়ে। মেরিন নীরার দিকে এগিয়ে গেলো।
মেরিন : নীরা ডার্লিং… জানোই তো এখন তোমাকে মারতে চাইনা । তবে কেন বারবার ভয়ংকর শাস্তি পেতে চাও? আমিও বোর হয়ে গিয়েছি তোমাকে শাস্তি দিতে দিতে । পরে তোমাকে দেখছি । whatever now get out please …
নীরা দারিয়ে আছে ।
মেরিন : কি হলো ? যাও …
নীরা : …
মেরিন : কি হলো ? ১মিনিট ১মিনিট… তুমি কি মনে করেছো তুমি যাবে আর পুলিশের মতো আমি পেছন থেকে encounter করবো …. ন্যাহ… পেছন থেকে আঘাত আমার কাজ না … ভীতুদের কাজ। আমি যা করার সামনাসামনি করি… এখন যা… যা। … যা …
নীরা চলে গেলো।
মেরিন : হ্যালো … জন…

একটুপর…
ডক্টর নীড়ের check up করছে । থমথমে পরিবেশ। না নীড়ের গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে আর না নীলিমার… ডক্টর check up করে prescription দিয়ে চলে গেলো ।
মেরিন : জন … মেডিসিন গুলো নিয়ে আসো ।
জন : জী ম্যাম…
মেরিন fresh হয়ে রান্নাঘরে গিয়ে নীড়ের জন্য soup বানাতে গেলো ।
নীড় : মামনি তোমার ঠিক হয়নি নীরাকে বাসায় থাকতে দেয়ার। ওর জন্য সব হলো। ও ইচ্ছা করে আমার রুমে এসে ঘুমিয়েছে ।
নীলিমা : নীড় এমনও তো হতে পারে যে রাত ভরে ও তোকে পানিপট্টি দিয়েছে … হয়তো চোখ লেগে গিয়েছে …
নীড় : তাহলে রুম সাজালো কেন ?
নীলিমা : নীড়… কালরাতে তুইই মাতাল হয়ে হাতে ওই কালো গোলাপ নিয়ে দরজা বন্ধ করে না নিজেই সাজালি…
নীড় : কি?
নীলিমা : হামম। খেতে বললাম খেলিও না…
নীড় : 😒।
তখন জন এলো।
জন : আসবো স্যার?
নীড় : এসো ।
জন : স্যার খাওয়ার আগের মেডিসিনটা খেয়ে নিন প্লিজ…
বলেই জন ১টা ঔষধ ছিরে নীড়ের হাতে দিলো । খাইয়ে জন চলে গেলো।

একটুপর…
মেরিন নীড়ের জন্য soup নিয়ে এলো ।
মেরিন : উঠে বসুন…
নীড় বসলো ।
মেরিন : মুখ খুলুন…
নীড় চুপচাপ খেতে লাগলো। মেরিনের নিরবতা নীড়কে আরো ঘামাচ্ছে ।
নীড় : sorry … আ…
মেরিন : চুপ থাকুন… আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি।
নীড় : trust me… আমি…
মেরিন : বলেছিনা চুপ থাকুন… কোন কথা বলবেন না ।
নীড় : …
মেরিন : আপনি কোন সাহসে drinks করেছেন? wine এ হাত লাগান কোন সাহসে?
মেরিনের কথা শুনে নীড় যেন আকাশ থেকে পরলো।
নীড় : কি ?
মেরিন : কানে কি কম শোনেন নাকি ?
নীড় কিছুই বুঝতে পারছেনা । মেরিন রেগে আছে। । আর কারনটাও স্পষ্ট । তবে এই কথা কেন বলছে? নীড়ের মাথা ঘুরছে ।
মেরিন : বাচ্চাদের মতো মুখে নিয়ে বসে আছেন কেন ?
নীড় : দেখো রাগ করোনা। আসলে আম…
মেরিন : আমি রাগ করার কে বলুন তো …
মেরিন নীড়কে ঔষধ টষুধ খাইয়ে কাজে গেলো ।

রাতে …
মেরিন বাগানের আমগাছটার সামনে দারিয়ে আছে । তখন নীড় এসে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো ।
নীড় : ছোটোবেলার কতো স্মৃতি জরিয়ে আছে । তাইনা ?
মেরিন : হামম।
নীড় : আবার ছোট হতে পারতাম … তুমি হতে চাওনা ?
মেরিন : না… আমার ছোটোবেলা আপনার মতো মিষ্টি মধুরনা … পুরোটাই তেতো…
নীড় : সবটাই কি তেতো ছিলো ???
মেরিন : জানিনা …
নীড় : মেরিন… ১টা কথা বলি… সত্যি বলছি নী…
মেরিন : নীরার সাথে আপনি romance করেননি… তাইতো ?
নীড় : তুমি রাগ করে এ কথা বলছো… কিন্তু সত্যিই কিন্তু। আসলে কালকে আমি তোমাকে অনেক মিস করছিলাম। তাই তোমার পছন্দের কিছু করে নিজেকে মশগুল করতে চেয়েছিলাম। একটু drinks ও করেছিলাম। জ্ব…
মেরিন : আপনার কোনোকিছু explain করার দরকার নেই নীড়… i know …
নীড় : what ?
মেরিন : এটাই যে আমার নীড় কেমন ?
নীড় : …
মেরিন : নীড় মেরিনকে ঘৃণা করলেও অন্যকাউকে ভালোবাসেনা… তাকায়ওনা কারো দিকে… আর তাকাবে নাওও…
নীড় : এতো অঘাট বিশ্বাস?
মেরিন : হামম।
নীড় : তো বেড জালালে কেন?
মেরিন : কারন নীরা ছিলো তাই…
নীড় : তাহলে রেগে আছো কেন?
মেরিন : রাগবোনা? আপনি drinks করেছেন… নিজের খেয়ালও রাখেন নি। জ্বর বাধিয়েছেন …
নীড় মুচকি হেসে মেরিনের কাধে কিস করলো।
মেরিন : এটা কি ছিলো?
নীড় : beginning of romance … 😁😁😁…
মেরিন : 😒😒😒।
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে নিলো।
মেরিন : আরে পাগল হলেন নাকি? নামান। অসুস্থ হয়ে সিনেমার হিরো সাজার দরকার নেই।
নীড় : shut up….
.

কিছুদিনপর…
ভালোই কাটছে নীড় মেরিনের দিনকাল। ভালোবাসাময় । লন্ডন থেকে কবিরের ডক্টর মেরিনকে ফোন করলো।
মেরিন : yes doctor … বাবা ভালো আছে?
ডক্টর : হ্যা অনেকটা better … একেবারে সুস্থ হতে পারে। যদি….
মেরিন : যদি…?
.
চলবে …