ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন Season 2 !! Part- 06

মেরিন : বলটা কে হিট করেছে…. 😠? আমি কি়ছু জিজ্ঞেস করছি….
১জন বলে
উঠলো: কেন জানলে কি খেলবেন নাকি তার সাথে? 😏।
মেরিন ওই ছেলেটার মুখ বরাবরও বল মারলো। আর এমনভাবে মারলো যে ছেলেটার মুখে হিট করে বলটা আবার ওর হাতেই চলে এলো।
মেরিন : যেটা জিজ্ঞেস করেছি সেটা বলো।
নীড় : মেরিন হয়ে গেছে চলো। দেখি বলটা দাও….তারপর চলো…. মেরিন : আরে কেন যাবো কেন? আমি তো এদেরকে…. এদের জন্য আপনি কতোটা ব্যাথা পেয়েছেন…
নীড় : কিচ্ছুনা… চলো এখান থেকে।
নীড় জোর করে নিয়ে মেরিনকে গাড়িতে বসালো।
.
নীড় : তুমি বসো আমি ওদের বলটা দিয়ে আসছি…. একদম উঠবেনা।
মেরিনকে বসিয়ে নীড় ওদের বলটা দিতে গেলো।
নীড় : take your বল…. দেখে খেলা করো….
নীড় চলে যেতে নিলো। তখন পেছন থেকে
১জন বলে
উঠলো: ভাইয়া উনি আপনার কি হয়?
নীড় : ….. কেন?
অন্যজন: না মানে…. আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনার এই ছেলে পোশাকের আড়ালে ১টা মেয়ে লুকিয়ে আছে।
বলেই ওরা হাসতে লাগলো।
নীড় : এমন মনে হওয়ার কারন?
১জন: আপনার ভীতু গিরি দেখে আমরা শিহরিত। ১টা মেয়ে রাগ করতে পারে। আর আপনি পারেন না….
অন্যজন: পারে পারে উনিও পারে…. সরিয়ে নিয়ে যেতে।
নীড় ১টা বাকা হাসি দিয়ে ওদের কাছে গেলো।
বলল: এরজন্যেই বলে কারো ভালো করতে নেই।
একে তো বল মেরে নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের মাথা ফাটিয়েছো। ভীষন রাগ উঠেছিলো। কিন্তু সাথে ছিলো মেরিন বন্যা…
যদি তখন ওকে না নিয়ে যেতাম তবে গুলি খেয়ে মরতে হতো। কিন্তু তোরা ভালো বুঝলি না….
বলেই নীড় ধরে একেকটাকে পিটানো ধরলো। হঠাৎ নীড় গুলির শব্দ পেলো। পেয়ে পিছে ঘুরে দেখো ১দন রক্তাত্ব অবস্থায় পরে আছে। আর সামনে তাকিয়ে দেখে মেরিন। আসলে ওই ছেলেটা পেছন থেকে নীড় আঘাত করতে আসছিলো। তখন মেরিন এসে হাত বরাবর গুলি মারলো।
.
রাতে…
নীড় রকিং চেয়ারে বসে আছে। তখন ও কপালে ঠান্ডা কিছু অনুভব করলো। তাকিয়ে দেখে মেরিন ওর কপালে ice bag ধরে রেখেছে। নীড় কোনো react না করে চোখ বন্ধ করে রইলো। জানে react করে লাভ নেই।
মেরিন : উঠুন খেয়ে নিন….
নীড়:….
মেরিন: উঠুন না। ভীষন ক্ষুধা পেয়েছে আমার। উঠুন না।
নীড় : তুমি কি একটুও আমাকে শান্তি দিতে পারোনা।
মেরিন: কি এমন করলাম এখন?
নীড়: তুমি কিছুই করোনা। তোমাকে দেখলেই আমার সব শান্তি চলে যায়। বিরক্তি কর।
মেরিন: জানি। আসুন খেয়ে।
নীড়: খাবোনা।
মেরিন : আমার ভীষন ক্ষুধা পেয়েছে।
নীড় : যাও গিয়ে গেলো।
মেরিন কিছু না বলে খাবার এনে নীড়ের মুখে ঢুকিয়ে দিলো।
মেরিন: চুপচাপ খেয়ে নিন।
প্রতিদিনের মতো আজও নীড় জিজ্ঞেস করলোনা মেরিনকে যে ও খেয়েছে কি না….
.
পরদিন…

office এ….
মেরিন দারিয়ে কোনো ১টা file ঘাটছে তখন কেউ ওর পিছে এসে দারালো। আর তার উপস্থিতি বুঝতে পেরে ভয়ে মেরিন ঘামতে লাগলো। মেরিন চুপচাপ নিজের গানটা হাতে নিতে লাগলো। কিন্তু ততোক্ষনে লোকটা মেরিনের কোমরে হাত দিয়ে ফেলল। মেরিন ঘুরে দুম করে গানটা দিয়ে লোকটার মাথায় আঘাত করতে নিলে লোকটা মেরিনের হাত মোচর দিয়ে ধরে ফেলল। তার নাম নিলয়। নিলয় শাহরিয়ার।
নিলয়: তোর এই ভিলেন রূপ সবার জন্য হতে পারে। কিন্তু আমার জন্যনা। কারন তুই আমার কাছে ধরা। তোর কোনো জারিজুরি আমার ওপর চলবে না। বুঝেছিস? তোর ভিলেন রুপ বাকীদের জন্য আর তোর হট রূপ আমার জন্য।
মেরিন হাত ছোটানোর জন্য চেষ্টা করছে।
মেরিন : যদি তুই আমার হাত না ছারিস তবে তোকে….
নিলয়: কি করবি? মেরে ফেলবি? আমাকে মেরে ফেলবি? আমাকে মারলে তাকে পাবি কোথায়?
মেরিন : নীড়… নীড়…
নিলয়: তোর বরকে ডাকছিস? ওকে কি আমি ভয় পাই নাকি? আর তোর ডাকেই কি সে আসবে? তোর কি মনে হয় তার সাথে তোর কি সম্পর্ক আমি জানিনা? সে তো তোকে ঘৃণা করে… ঘৃণা …. নীড় আমার বোন নীরাকে ভালোবাসে… সে তোকে ছুয়েও দেখেনি।…
তখন নীড় রুমে এলো। আর ওদেরকে এভাবে দেখে খানিকটা অবাক হলো।
নীড়কে দেখেও নিলয় মেরিনকে ছারলো না। । নীড়ের কেন যেন খারাপও লাগলো।
.
নিলয়: আরে নীড় এসো।।
নীড় : ভালো আছেন ভাইয়া…
নিলয় : হামম। ভালো আছি। এমন ১টা চলন্ত আইটেম song চোখের সামনে থাকলে কি খারাপ থাকা যায়…. কি বলিস রে মেরিন….
নীড় : ভাইয়া একটু কাজ আছে। আসছি।
মেরিন যে কতোটা কষ্ট পেলো নীড়ের এমন ব্যাবহারে তা বলার মতো না…. তবুও নিলয়ের হাতে কামড় দিলো। নিলয় আহ বলে মেরিনের হাত ছেরে দিলো । মেরিন দৌড় দিয়ে নীড়ের কাছে গেলো।
নিলয় : কি রে আমার আদর-ভালোবাসায় কি মন ভরে গেছে? দেখে রাখো নীড় ওকে…. আমাকে ছেরে কি করে তোমার কাছে গেলো।
নীড় : ….
মেরিন : ….
তখন জন ঢুকলো।
জন: ম্যাম… একি তুই…
নিলয় : ওরে বাবা…. জন বাবু যে…. কি খবর…
জন : তোকে তো…
মেরিন : জন… চলো চৌধুরী companyতে…. ১টা কাজ আছে।
নিলয় : বাবা… এখন আবার জনের সাথেও কাজ আছে….
মেরিন কোনো জবাব না দিয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
মেরিন সোজা বাসায় চলে এলো। দৌড়ে washroom এ গেলো। shower on করে ভিজতে লাগলো। আর সারা শরীরে বিশেষ করে কোমড়ে আর হাতে ইচ্ছা মতো সাবান ঘষতে লাগলো।
আর কল্পনা করতে লাগলো সেই সময়টার কথা। মেরিন দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে বসে ভিজতে লাগলো আর মাথা দেয়ালে বারি দিতে লাগলো।

৫ঘন্টাপর….
নীড় নাসায় এলো। এসে fresh হতে গিয়ে দেখে মেরিনকে। সাদা হয়ে গেছে ভিজতে ভিজতে।
নীড় খেয়াল করে দেখলো মেরিন দেয়ালে মাথা বারি দিচ্ছে আর কি যেন বিরবির করে বলছে। নীড় দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড় : মেরিন…. মেরিন….
মেরিন : আমম…
নীড় : দেখি ওঠো… ঠান্ডা লেগে যাবে…
মেরিন নীড়ের দিকে ঘুরলো।
নীড় : ঠান্ডা হয়ে গেছো….
মেরিন হাহা করে হাসতে লাগলো।
মেরিন : নীড়…
নীড় : কি?
মেরিন : ভালোবাসি….. অনেক বেশি ভালোবাসি…..
বলেই মেরিন নীড়ের ঠোট জোরা দখল করে নিলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই মেরিন অজ্ঞান হয়ে গেলো। নীড় মেরিনকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো।
.
কিছুক্ষনপর….
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। বুঝতে পারলো কেউ ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মেরিন চোখটা মেললনা। কেবল চোখ দিয়ে ২ফোটা পানি গরিয়ে পরলো।
নীলিমা : শোনামা…. উঠে কিছু খেয়েনে।
মেরিন : একটু এভাবে থাকি please ….
নীলিমা : হামম।
মেরিন : মামনি ১টা গল্প শোনাবে? রাজকুমার-রাজকন্যার…। পরী,,, রাজা-রানী, ঘুম পারানী গান শোনাবে ….
নীলিমা মেরিনের কপালে চুমু দিলো।
বলল : শোনাবো… তবে কিছু খেয়ে নে…
তখন নীড় রুমে ঢুকলো।
নীড়কে ঢুকতে দেখে মেরিন তারাতারি চোখের পানি মুছে উঠে বসলো।
নীলিমা: কি রে তুই?
নীড় : হ্যা ওই তো… ঘুম পাচ্ছিলো,,, তাহলে তুমি এখানে থাকো আমি গেস্টরুমে যাচ্ছি।
নীলিমা: নানা… তুই বোস। মামনি আমি তোমার খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।
মেরিন : হামম।
নীলিমা চলে গেলো।

মেরিন বেড থেকে নেমে বেডটা গুছিয়ে দিলো।
মেরিন : নিন শুয়ে পরুন…
নীড় মনে মনে: কিভাবে জিজ্ঞেস করি?
নীড় : শোনো….
মেরিন : হামম।
নীড় : তো…
তখনই servant এসে খাবার দিয়ে গেলো। নীড়ের আর জিজ্ঞেস করা হলো না।
নীড় : যাও খেয়ে নাও।
মেরিন : হামম। আপনি খেয়েছেন?
নীড় : হামম।
তখন মেরিনের চোখ পরলো নীড়ের হাতের দিকে। নীড়ের হাতটা লাল হয়ে আছে। মেরিন ছুটে নীড়ের কাছে গেলো।
মেরিন : আপনার হাত লাল হয়ে আছে কেন? কি হয়েছে?
নীড় : না কিছুনা।
মেরিন : বললেই হবে? বসুন দেখি।
মেরিন তারাতারি নীড়ের হাতে ঔষধ দিয়ে দিলো। নীড় মাঝে মাঝে সত্যি অনেক অবাক হয়।
মেরিন : অনেক বেশি ব্যাথা করছে? শুয়ে পরুন শুয়ে পরুন।
নীড় : আরে আ…
মেরিন : কোনো কথা না।
মেরিনের ঝারি খেয়ে নীড় বাধ্য হলো শুতে। মেরিন লাইট নিভিয়ে দিলো।
নীড় : লাইট নেভালে কেন?
মেরিন : লাইট জ্বললে তো আপনার ঘুম আসেনা।
নীড় : তুমি অন্ধকারে খাবে কি করে?
মেরিন : আমি পারবো। অাপনি ঘুমান।
.
নীড় কপাল হাত দিয়ে
ভাবছে: মেয়েটা সত্যি আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে। এমন পাগলামো ভালোবাসাই তো আমি চেয়েছিলাম। নীরার মধ্যে কখনো আমি এমনটা দেখিনি…. আচ্ছা মেরিন এমন কেন? এতো রাগী এতো জেদী….. তবুও আমার সাথে কখনো rude behave করেনা…. কিন্তু ওর এতো ভালোবাসাও যে আমি মেনে নিতে পারছিনা। আমি যে নীরাকে ভালোবাসি।
এসব ভাবতে ভাবতে নীড়ের বোধ হলো মেরিনের কথা। উঠে বসে। দেখে মেরিন সোফায় শুয়ে আছে। নীড় অবাক হলো। কারন আজকে মেরিন সোফায় ঘুমালো।
নীড় মনে মনে : ও কি আমার ওপর অভিমান করেছে? করলে করুক। আমার কি?
.
একটুপর…
নীড়ের খেয়াল হলো সেদিনের কথা।
নীড় : oh no… ওর জ্বর আসেনি তো….
নীড় তারাতারি সোফার ওখানে গেলো। মেরিনের কপালে হাতে দিয়ে দেখলো ধুম জ্বর।
নীড় : oh my goodness….
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে বেডে নিয়ে শুইয়ে দিলো। এরপর মাথায় পানি পট্টি দিতে লাগলো। আর মেরিনকে দেখতে লাগলো।
এই প্রথম নীড় মেরিনকে এভাবে পর্যবেক্ষন করছে। জ্বরের জন্য মেরিনের মুখটা লাল হয়ে আছে। পাপড়ি গুলো ভেজা। নিশ্চয়ই কাদছিলো। ঠোট ২টা কাপছে। কপালটা ভাজ পরে আছে। নীড় বুঝতে পারলো যে মেরিনের প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে। তাই মেরিনের মাথা টিপে দিলো। মেরিনের শরীরের তাপ এতোটাই বেশি যে নীড় পাশে বসেই টিকতে পারছেনা। তাও নীড় মাথায় পট্টি দিয়ে মেরিনকে বুকে জরিয়ে শুয়ে পরলো। ভোরের দিকে মেরিনের জ্বর ছারলো।

সকাল ৯টা….
মেরিনের ঘুম ভাঙলো। দেখলো ও এলোমেলো হয়ে নীড়ের বুকে শুয়ে আছে।
মেরিন : আমি তো সোফায় ছিলাম…. এখানে?
মেরিনের মুখে হাসি ফুটলো। মেরিন নীড়ের কপালে চুমু দিলো।
মেরিন: যতোটা কষ্ট কালকে পেয়েছিলাম তার হাজারগুন আনন্দ আজকে পেলাম। আপনি আমার কথা ভেবেছেন সেটাই যে আমার পরম পাওয়া। কিন্তু আমার জন্য আপনার কতো কষ্ট হয়েছে…..
মেরিন উঠে fresh হয়ে office এ গেলো।
.
বেলা ১১টা…
নীড়ের ঘুম ভাঙলো। উঠে মেরিনকে না পেয়ে অবাক হয়ে গেলো।
নীড় : গেলো কোথায় মেয়েটা। room, washroom খুজে দৌড়ে নিচে নামলো।
নীড় : মামনি … মামনি… মেরিন কোথায়?
নীলিমা: ও তো office চলে গিয়েছে।
নীড়: what ? এই শরীর নিয়ে office ?
রাগের চোটে নীড়ের গা জ্বলে যাচ্ছে। দ্রুত রেডি হয়ে office এ গেলো। আর গিয়ে দেখে মেরিন ১টা লোককে বেল্ট দিয়ে মারতে মারতে সিরি দিয়ে নামাচ্ছে। আর সবাই চুপচাপ দেখছে। লোকটার শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে।
নীড়: তুমি ওকে মারছো কেন? ছারো ওকে…
মেরিনকে থামাতে গিয়ে নীড় হাতে ১টা বাড়ি খেলো।
মেরিন: দেখি দেখি… অনেক জোরে লেগেছে? দেখি।
নীড় হাত ছারিয়ে নিলো।
মেরিন লোকটাকে বলল : তোরজন্য কেবল তোর জন্য আমার হাত দিয়ে নীড় বারি খেয়েছে। আজকে তোকে আমি মেরেই ফেলবো।
মেরিন ১টা গ্লাস নিয়ে ধপ করে ওটা ভেঙে লোকটার পেটে ঢোকাতে নিবে তখন নীড় আবার এসে থামাতে নিলো। নীড় কিছুতেই মেরিনকে থামাতে না পেরে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।

নীড় : আমার ব্যাথার কারন ও না তুমি….
বলেই নীড় নিজের রুমে চলে গেল। কেবিনে গিয়ে বসলো। একটুপর জানতে পারলো যে, যে লোকটাকে মেরিন মারছিলো সে rival company এর গুপ্তচর। সে নীড়ের dream project এর information চুরি করতে এসেছিলো। আর এ কারনেই মেরিন ওকে মারছিলো।
নীড় : উফফ বেশি react করে ফেলেছি…. আসলে sorry বলতে হবে।
কিন্তু অনেকক্ষন হয়ে গেলো তবুও মেরিন এলোনা। নীড় ম্যানেজারকে ডেকে পাঠালো।
ম্যানেজার : স্যার ডাকছিলেন?
নীড় : হামম। আপনাদের ম্যাম কোথায়?
ম্যানেজার : স্যার, ম্যাম তো সেই তখনই বেরিয়ে গিয়েছে।
নীড় : what?
ম্যানেজার: জী স্যার।
নীড়: ok আপনি আসুন।
ম্যানেজার চলে গেলো।
নীড় : কোথায় গে… oh no….
নীড় কিছু ১টা ভেবেই ছুটে বেরিয়ে গেলো।
.
চলবে….