ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন !! Part- 17 (Last-Part)

রাতে…….
নীড় রুমে গেলো। গিয়েই অবাক হয়ে গেলো। কারন সারা ঘর ফুল দিয়ে সাজানো। bed টাতো ফুলের দোকান। আর খাটের মাঝখানে কেউ ১জন লাল টুকটুকে বউ সেজে বসে আছে।
নীড় মনে মনে: তোমার মায়া তুমিই জানো মেরিন …… তোমার মন বোঝা বড় দায়।

নীড় ধীর পায়ে খাটের কাছে গেলো।
নীড়: তো তুমি নিরা…….
নিরা: হামম। তোমার ভালোবাসা।
নীড়: তো তোমাকে নিশ্চয়ই মেরিন সাজিয়েছে।
নিরা: হামম। মেরিন এই ৮ বছরে পাল্টে গেছে। আমাকে নিজের হাতে সাজালো। এই রুমটাও সাজালো। এগুলো ওর কোনো চাল নয়তো।
নীড়: who care…… just feel & enjoy the moment ….. let me love you….
নিরা:😱😱😱।
নীড়: কি হলো? ঘাবড়ে আছো কেন?
নিরা: কিছু একটু tension হচ্ছিলো মেরিনকে নিয়ে।
নীড়: বাদ দাও তো ওই সাইকো টাকে……. মেরিন এতো সুন্দর করে সাজালো…. এর সদগতি করা যাক।
নিরা: বলছিলাম কি আমার না ভীষন ঘুম পাচ্ছে। 😅😅😅।
নীড়: shh…. আজকে কোনো ঘুম না। আজকে ২জনের চোখ জেগে থাকবে।😉😉। তবে কোন ২জন তা জানিনা…..
নিরা: মানে….
নীড়:আরে কতোদিন পর তোমাকে পেলাম বলো তো। তবে তার আগে তুমি যে গহনার দোকান সেজে বসে আছো সেগুলো তো সরাই।
বলেই নীড় নিরার হাতের আংটি টা টান দিয়ে খুলে নিলো। এরপর আংটি টাতে kiss করলো। তখন নীড় , নিরা i mean নকল নিরার মুখে কস্টেপ লাগিয়ে নিজের gun টা বের করলো। যা দেখে নিরা ভয়ে কেপে উঠলো। এরপর নীড় ১টা কাগজে কিছু ১টা লিখে নিরার চোখের সামনে ধরলো।

তাতে লেখা
আছে: যদি নিজের জান বাচাতে চাও তবে চুপচাপ নিজের হাতে, ঘাড়ে নিজেই আচর কাটো। আর আমি যেই ক্লিপটা দিবো সেটা দিয়ে নিজের ঠোটে আর ঘাড়ে আঘাত করো। মনে হবে love bite….. এরপর চুপচাপ ঘুমিয়ে পরো। আর হ্যা তোমার mobile টা আমাকে দাও। then কিছু romantic romantic sound করে ওই recorder টা তে। ততোক্ষন আমি বারান্দা থেকে আসছি। যদি কিছু উল্টা পাল্টা হয় তো ৬ ৬টা বুলেট ঠিক মাথায় ঢুকিয়ে দিবো। ভয় নেই মেরিন যতো টাকা দিয়েছে তার ৩গুন দিবো।

নিরা নীড়ের কথা মতোই কাজ করলো। নীড় নিরাকে রুমে রেখে গেস্টরুমের বারান্দার কার্নিশে গিয়ে দারালো। ওর আন্দাজ মতো সত্যি মেরিন বারান্দায় বসে আছে। আর রাগে কুমাচ্ছে।

নীড় মনে মনে: তোমাকে আমি হারে হারে চিনি জানেমান। আংটির মধ্যে যে sound chip ছিলো সেটা আমি ঠিকই বুঝেছিলাম….. তুমি যে এখানে বসে সব শুনবে তাও বুঝে গেছি। তুমি যে রাগ ফেটে যাচ্ছো তাও জানি। কারন তুমি মুখে যাই বলোনা কেন আমি জানি, তুমি যে আমার সাথে অন্যকাউকে সহ্য করতে পারোনা। সারারাত জেগে তুমি নীড়-নিরার কাহিনি শুনবে আর রাগে কুমাবে। আর আমি সারা রাত তোমায় দেখবো।
ভোরের দিকে মেরিন গিয়ে শুয়ে পরলো।

.

সকালে……
মেরিন সোফায় বসে আছে। কফি খাচ্ছে। তখন দেখলো নীড়-নিরা একসাথে নিচে নামছে। নিরার মুখে লজ্জা লজ্জা ভাব। ঠোটে কামড়ে চিহ্ন। ঘাড় থেকে ওরনা পরে গেলো। যার কারনে নিরার ঘাড়ের দাগটাও মেরিন দেখতে পেলো। মেরিনের মাথায় রাগ উঠে গেলো। দৌড়ে নিজের রুমে গেলো। সব কিছু ভাঙচুর করলো।
মেরিন: চরিত্রহীন লম্পট….. সব মিথ্যা সব….
মেরিন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

.

বিকালে……
মেরিনের শাস্তি মহলে…..
নিরা: আসবো ম্যাম?
নিরা আসতেই মেরিন নিরার গলা চেপে ধরলো। নিরা দম নিতে পারছেনা।
মেরিন: তুই কে তুই জানিস না? তোর সাহস কিভাবে হয় ন… mr. chowdhuri এর সাথে …. তোকে আমি মেরেই ফেলবো।
নিরা: আআমার কোনো দোষ নেই। আপনি ভভুল ভভভাবছেন।
মেরিন: ভুল? তোর শরীর যে …. i will kill you….
নীড়: নিরা…… মেরিন ছারো ছারো ওকে। মরে যাবে।
মেরিন: যাক।
অনেক কষ্টে নীড় মেরিনকে সরালো। এরপর মেরিন নীড়ের গলা চেপে ধরলো।

.

মেরিন: চরিত্রহীন লম্পট…..তোর মতো মানুষ কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারেনা। তুই আমাকে কেন নিরাকেও কখনো ভালোবাসিসনি। ভালোবাসলে ঠিকই বুঝতে পারতি যে ও নিরা না অন্য কেউ। কিন্তু তুই …. বুঝতে তো পারিসই নি উল্টৈ রাতভর…. তুই কেবল মেয়েদের শরীরকে ভালোবাসিস। আমি আজকে তোকে……

নীড় দম ছারতে পারছেনা। চোখ লাল হয়ে গেছে। তবুও নিজেকে ছারানোর চেষ্টা করছেনা। উল্টা ওর ঠোটের কোনে হাসি। নীড়ের অবস্থা দেখে মেরিন ছেরে দিলো। নীড় কাশি দিতে লাগলো। যা দেখে মেরিনেরই কষ্ট হচ্ছে। এরপর নীড় উন্মাদের মতো হাসতে লাগলো। মেরিন কিছু বুঝতে পারছেনা।
নীড়: কেন কাল রাতের ঘটনা তোমাকে effect করছে?
মেরিন: কারন ওইটা অবৈধ তাই।
নীড়:🤣🤣🤣। তাও মানবে না যে আজও আমাকে ভালোবাসো।
মেরিন: বাসিনা বাসিনা বাসিনা। কাউকে ভালোবাসিনা।
নীড় :তাহলে কেন এতো react করছো? বলো? আমি যার সাথে যা মন চায় করতে পারি।
মেরিন: তাহলে কেন মিথ্যা বলেন যে আমাকে ভালোবাসেন? সব তো আপনাদেরকে দিয়েই গিয়েছিলাম তবে কেন আবার এতো নাটক।
নীড়: সব দিয়ে না সব কেরে নিয়ে গিয়েছিলে…..
১টা বার নিজের বুকের ওপর হাত রেখে বলো তো যে সবটাই নাটক মনে হয় কিনা?
মেরিন: হ্যা মনে হয়। আর আপনাকে আমি divorce দিয়েই ছারবো।
নীড়: আমি কখনোই signature করবোনা।
মেরিন: ভুলে গেছেন নাকি আমরা যে মুসলিম….. তাই মুখে মুখেও divorce দেয়া যায়। ৩ বার তালাক বলে।
নীড়:…….
মেরিন: ১ তালাক…. ২ ত……
মেরিন আর বলতে পারলোনা। নীড় ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।

.

নীড় মেরিনের হাত চেপে ধরল।
নীড়: তোমার কোনো ক্ষমতা নেই আমাকে divorce দেয়ার।
মেরিন: ধরবেন না আমায়। আপনার ওই নোংরা হাত দিয়ে।
নীড়: নোংরা হাত মানে?
মেরিন: আপনি ভালো করেই জানেন আমি কিসের কথা বলছি।
নীড় : তাহলে আমিও তোমাকে কথা বলছি কাল রাতে সবটাই নাটক ছিলো। আর এইগুলো তার প্রমান। নীড় তার ২হাত দিয়ে শুধু তোমাকেই ভালোবেসেছে। আর কাউকে না।
মেরিন:🤣🤣🤣। মিথ্যা মিথ্যা সব মিথ্যা। আপনি আমাকে না মেয়েদের শরীর কে ভালোবাসেন। আপনি আসলে ১টা চরিত্রহীন।
নীড়: মেরিন থেমে যাও…..
মেরিন: না থামবো না….. আপনি ১টা মেয়ে বাজ। দুশ্চরিত্রবান।
নীড় আবার মেরিনকে থাপ্পর মারলো। নীড় মেরিনের চুল টেনে দার করালো।

নীড়: কি দেখেছিস মেয়ে বাজের বল…. কি দেখেছিস… বল। ১বছর তো ছিলি আমার সাথে কখনো তোর দিকে কুনজর দিয়েছি? বল? নাকি অন্য মেয়ের সাথে ফুর্তি করতে দেখেছিস? বল? কতোবার বলবো যে তোকে ভালোবাসি… বল…. ঠিকাছে মানলাম আমি তোকে ভালোটালো বাসিনা। তোকে চিনিনা… তোকে বুঝিনা। কিন্তু তুই তো আমাকে ভালোবাসিস। আমাকে চিনিস, বুঝিস তাহলে তুই কেন আমার ভালোবাসা চিনিস না বুঝিস না। ভাসোবাসলে বিশ্বাস করতে হয়। কিন্তু তুই আমাকে বিশ্বাসই করিসনি। আসলে তুমিই আমাকে কখনো ভালোবাসোনি। তুমি আমাকে কেরে নিতে চেয়েছিলে নিরার কাছ থেকে। যেমন করে নিরা তোমার সবটা কেরে নিয়েছিলো। আমি তোমার প্রতিশোধ ছিলাম মাত্র। তুমি ভালোবাসতেই জানোনা।

বলতে বলতে নীড় কেদে দিলো। নীড় মেরিনকে ছেরে দিলো।
মেরিন:……
নীড়: ভালোবাসি তোমাকে। এই নাও সেই contract paper…. যেখানে ছলনা করে তোমার signature নিয়েছিলাম। এগুলো নির্বনকে তোমার কাছে থেকে কেরে নেয়ার জন্য ছিলোনা। এগুলো ছিলো। তোমাকে আমার জীবনে ফিরিয়ে আনার। আর সেই challenge …. যাও তুমি আমাদের ছেলেকে নিয়ে। তোমাকে আর আটকাবো না। তুমি বললে তোমার যাওয়ার ব্যাবস্থা আমি করে দিবো। তাও তুমি শান্তিতে থাকো। আমার আর কিছু চাইনা। কিন্তু আমার ভালোবাসাকে নাটক মনে করোনা। আমি সত্যি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি। অসম্ভব ভালোবাসি। শুধু এটা বিশ্বাস করো। আর কিছু চাইনা।
মেরিন:……
নীড়: যাওয়ার আগে শুধু একটাবর বলে যাও যে তুমি বিশ্বাস করো যে আমি তোমাকে ভালোবাসি……
মেরিন:…..
নীড়: বলো……
মেরিন: না। আমি বিশ্বাস করিনা।

.

নীড়: কি করলে বিশ্বাস করবে যে আমি তোমাকে ভালোবাসি? জীবন দিলে??
মেরিন: 🤣🤣🤣। মেরিনের মতো dialogue মারলেই মেরিন হওয়া যায়না। আর যে কেউ মেরিনের মতো জীবন দিতে পারেনা। uffs….. আমিই তো কখনো ভালোবাসিনি। নাটক তো আপনি না আমিই করেছিলাম ভালোবাসার। এখন সরেন আমি যাবো।
নীড়: তুমি বিশ্বাস করোনা যে আমি তোমাকে ভালোবাসি…..
মেরিন:না…..
নীড়: জীবন দিলে বিশ্বাস করবে তো আমি তোমাকে ভালোবাসি……
মেরিন:…..
নীড়: দেখতে পারবে আমার মৃতদেহ……?
মেরিন: সরুন।
বলেই মেরিন চলে যেতে নিলো। ৪কদম সামনে যেতেই মেরিন গুলির আওয়াজ পেলো। মেরিন দুম করে নীড়ের দিকে ঘুরলো। আর দেখলো যে নীড়ের বুক থেকে গলগল করে রক্ত ঝরছে। পলকেই মেরিনের দুনিয়া অন্ধকার হয়ে গেলো….. মেরিন চিৎকার করে
বলল: নীড়………..
মেরিন ছুটে নীড়ের কাছে গেলো
মেরিন:এএএটা কককি ককরলেন নীড়…… কি করলেন….. আমি এটা চাইনি নীড়…… আমি যে আপনাকে অনেক ভালোবাসি….. অনেক….. আপনি বলেছিলেন না কিভাবে আমি এই ৮বছর ঘুমিয়েছি, কিভাবে খেয়েছি, কিভাবে থেকেছি….. আমি বলছি। আমি এটা ভেবে ঘুমিয়েছি যে আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন। আপনি আপনার ভালোবাসাকে নিয়ে সুখে আছেন। এটা ভেবেই ৮বছর কাটিয়েছি। তবে কেন আজকে এমনটা করলেন…….

নীড় মুচকি হেসে
বলল: যযদি আগে জানতাম যে ননিজেকে গগুলি করলে তততোমার মুখ থেকে নননিজের নাম শুনতে পারবো….. আমাকে ভালোবাসো সেটা শুনতে পারবো….. আমি তোমাকে ভালোবাসি সেটা বিশ্বাস করাতে পারবো…. তবে আরো আগেই এমনটা করে নিতাম।

হসপিটালে……
নীড়ের অপারেশন চলছে। মেরিন দরজার মধ্যে মাথা ঠেকিয়ে দারিয়ে আছে। কান্না করছে। আর নীড়ের বলা শেষ কথা গুলো মনে করছে…… তখন বাড়ির সবাই চলে এলো। জন মেরিনের কাধে হাত রাখলো। মেরিন জনকে জরিয়ে ধরলো। কাদতে লাগলো।
মেরিন: আমি তো এমনটা চাইনি ভাইয়া….. তবে কেন এমনটা হলো? আমি তো উনার ভালোই চেয়েছিলাম। উনার সুখ চেয়েছিলাম। নীড়ের কাছ থেকে নীড়ের ভালোবাসা কেরে নিয়েছিলাম। তাই তো তাকে তার ভালোবাসা ফিরিয়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলাম। তবে উনি কেন নিজেকে আবার দুর্ভাগ্যের সাথে জোরা লাগাতে আসলেন।
নীলিমা: আমার ছেলের ভালোবাসা আর কেউনা। কেবল তুমি…… তোমাকেই আমার ছেলে সত্যি কারের ভালোবেসেছে। আর কাউকে না।
মেরিন: না মামনি এটা তোমার ধারনা। উনি নিরাকে….
কনিকা: না নিরাকে না তোমাকে ভালোবাসে।
মেরিন: মামনি…. ওই মহিলাকে কথা বলতে নিষেধ করো।
কনিকা: তবুও আজকে আমি বলবো।
মেরিন: আপনার কোনো কথা শুনতে আমি বাধ্য নই।
নিহাল: আমার কথা তো শুনবে??
মেরিন:……
নিহাল: তুমি কালকে ওই নিরাকে এনেছিলে কারন তুমি ওর মাধ্যমে আসল নিরার খোজ জানতে চেয়েছিলে….
মেরিন অবাক হয়ে গেলো।
নিহাল: অবাক হলে। তাইতো? আমি জানতাম না….. নীড় জানতো।
মেরিন:…..
নিহাল: চলো তোমাকে নিরার কাছে নিয়ে যাই…….

.

নিহাল মেরিনকে নিয়ে সেই শ্মশানে গেলো।
মেরিন অবাক হলো…..
নিহাল: এখানেরই মাটির সাথে মিশে আছে পুরে ছাই হয়ে যাওয়া নিরা……
মেরিন:মানে…….
নিহাল: তুমি জনকে যে কাজটা দিয়েছিলে তার বাইরেও জন ১টা কাজ করেছিলো। জন নিরার সত্যটা আমাদের সবার সামনে তুলে ধরে। এরপর পুলিশ ওকে arrest করে নিয়ে যায়। তার ৩দিনপর রাতেরবেলা নিরা আর ওর বাবাকে নীড় বের করিয়ে আনে।

( আমার যতদূর মনে পরে আমি বলেছিলাম নিরার বাবার হাত-পা কাটিয়েছিলো মেরিন। জানে মারেনি।)

তুমি সবাইকে যেখানে শাস্তি দিতে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলো। সেখানে নিয়ে নিরার বাবার সামনে প্রথমে নিরার একটা একটা করে আঙ্গুল কাটে এরপর হাত-পা। জিহ্বা , কান পর্যন্ত কেটো দেয়। যা দেখে নিরার বাবা অনেক আকুতি মিনতি করে। কিন্তু নীড় ….. বাবা মেয়ের কান্না দেখে ওর মনে আনন্দ হয়। অবশেষে বাবা-মেয়েকে এখানে এনে জীবীত পুরিয়ে দেয়। এর থেকে ভয়ংকর মৃত্যু মনে হয় কখনো কেউ কাউকে দেয়নি। তোমার সাথে হওয়া অন্যায়ের চরম প্রতিশোধ নেয় নীড়।
মেরিন:……..
নিহাল: আর কেন নিয়েছিলো জানো? কারন ও তোমাকে ভালোবাসে। সেদিন তুমি পার্কে যেগুলো দেখেছে নিঃসন্দেহে সব সত্যি। কিন্তু সব সত্যিরই ২টা দিক থাকে। নীড় নিরার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করেছিলো। যেনো ওর ভরসা অর্জন করে ওর মুখ দিয়ে সব সত্য স্বীকার করিয়ে ওকে পুলিশে ধরিয়ে দিতে পারে। আর ওদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দিতে পারে। তবে সবটাই আইনী মাধ্যমে। কারন তুমি তো জানোই ও কেমন ছিলো….. কখনো কারো ক্ষতি চাইতো না। সবটা তোমাকে আগেই বলতে চেয়েছিলো। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস দেখো…. নির্বনের কারনে তোমার মুড সুইং হচ্ছিলো। আর তাই নীড় চেয়েও তোমাকে কিছু বলতে পারেনি….. শুধু তাই নয়। তোমাদের বিবাহ বার্ষিকিতে ও তোমাকে কি উপহার দিতে চেয়েছিলো জানো? ও তোমাকে আবার বিয়ে করতে চেয়েছিলো……. কিন্তু একটু ভুল বোঝার জন্য তোমাদের সুখের ৮টা বছর শেষ হয়ে গেলো। ও তোমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করেনি মেরিন…. ও তোমাকেই ভালোবেসেছে। এই ৮বছরে ও যে কি হয়ে গিয়েছিলো তা কেবল আমরা জানি।

সব শুনে মেরিনের মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। ও কি করেছে…….

২দিনপর…..
নীড়ের জ্ঞান ফিরলো। নীড় দেখলো ওকে ঘিরে সবাই দারিয়ে আছে। কিন্তু মেরিন নেই।
নীড় মনে মনে:আমার বউটা কোথায়? আমি suicide attempt করতে করেছি বলে রাগ করে চলে যায়নি তো……

নীড়ের মনটা খারাপ হয়ে গেলো। সবাই নানা ধরনের কথা বলল। নীড় হামম বলেই সব জবাব দিলো। পরে ডাক্তারের বলাতে সবাই বেরিয়ে গেলো। সবাই বেরিয়ে যাওয়ার পর নীড় বাম দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো যে মেরিন বসে আছে। বসে বসে নীড়ের report গুলো পড়ছে। নীড় মুচকি হাসলো।

নীড় মনে মনে: পাগলি…..
নীড়: সিস্টার….. সিস্টার।
নার্স দৌড়ে এলো।
নার্স: জী বলুন।
নীড়: আমার বউটাকে দেখেছেন?
নার্স মেরিনকে দেখিয়ে
বলল: ওই তো…..
নীড় নার্সকে চোখ মেরে
বলল: না না ওই ম্যাডাম না। ওই যে আছেনা slim…. hooooot figure …. দেখতে পেন্সিলের মতো । কি যেনো নাম??🤔🤔🤔। হ্যা নিরা। নিরা। ওকে ডেকে দিননা। বউ ছারা কেন যেন এতিম এতিম লাগছে।
নার্স মুচকি হেসে
বলল: তিনি তো আসেননি। তিনি আসার আগ পর্যন্ত মেরিন ম্যামকে….
নীড়: ওরে বাবারে….. আগুনে ঝাপ দিবো…. দেখুন কিভাবে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই ভষ্ম করে দিবে। বলছিলাম কি আপনি free আছেন??
নার্স: sorry sir… i m married ….
বলেই নার্স চলে গেলো। মেরিন জানে নীড় ওকে রাগানোর জন্য বলছে। মেরিন মনে মনে ভীষন হাসছে। ৫দিনপর নীড়কে বাসায় নেয়া হলে মেরিন নীড়ের সেবায় জুরে গেলো। হসপিটালেও all time মেরিনই ছিলো নীড়ের সাথে। তবে ১টা কথাও নীড়ের সাথে বলেনি। নীড় মেরিনকে অনেক জালিয়েছে। কিন্তু মেরিন react করেনি। তবে অনেক enjoy করেছে।

.

১০দিনপর…..
রাতে…..
বাবা ছেলে ঘুমিয়ে আছে। একই ভাবে। মেরিন ২জনের কপালে চুমু দিলো।
মেরিন: ভালোবাসার জন্য ১টা নীড় কম ছিলো যে নীড়ের কার্বন কপিও আল্লাহ আমাকে দিয়ে দিলো। বাবাকে না দেখে না জেনেও ছোটবেলা থেকে বাবার মতোই হয়েছে। নজর না লাগুক বাবা ছেলের। থু থু থু……

.

মেরিন বারান্দায় দারিয়ে আছে। হঠাৎ কারো গরম নিঃশ্বাস ঘারে পরলো। কেউ তাকে জরিয়ে ধরলো। মেরিন মুচকি ১টা হাসি দিলো। এরপর মুখে রাগী ভাব ফুটিয়ে নিজেকে ছারিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলো। তবে ব্যার্থ হলো।
নীড়: নীড়ের বাধন থেকে মেরিন কখনো ছুটতে পারবেনা।
মেরিন:…..
নীড়: ভালোবাসার প্রমান দেয়া কি এখনো বাকি?হামম বুঝেছি আরো ১টা গুলি খেতে হবে ….
মেরিন ঘুরেই নীড়কে ঠাস করে ১টা থাপ্পর দিলো।
মেরিন: suicide করতে চাইলেনা i will kill you….
নীড়: থাপ্পর মারার কি দরকার ছিলো? ভালোভাবে বলা যেতো না… 😒😒😒….
মেরিন:না। সরেন ঘুমাবো। এই কয়দিন অসুস্থতার সুযোগে অনেক জ্বালিয়েছেন।
নীড়: তা এখনও কি কোলকাতা যাওয়ার plan আছে? গেলে ভালোই হবে। নতুন ১টা বিয়ে করবো। brand new বউ পাবো।
মেরিন:খুব শখ না বিয়ে করার না….. কারো দিকে চোখে তুলে তাকালেও না জানে মেরে দিবো। শালা…… ৩টা মাস ধরে বকবক করে কানের মাথা খেয়ে ফেলেছে অথচ নিরার যে টায়টায় ফিস করছে তা বলে নাই…. আবার ঢং দেখাইতে আসছেন। সরেন ঘুমাবো।
মেরিন নীড়কে আরো ১টা থাপ্পর দিয়ে idiot বলে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে রুমে চলে গেলো।

.

নীড় আকাশের দিকে মুখ করে বলতে
লাগলো: ৮বছর আগে তো গালে kiss দিতো। আর এখন থাপ্পর। আল্লাহ তোমাকে আমি ধন্যবাদ দেই যে আমার বউ typical না। but why she is too much difficult !!!😕😕😕….
তখন মেরিন দৌড়ে এসে ঝাপিয়ে পরলো নীড়ের বুকে। ২জনই পরে যেতে নিলো। নীড় কোনোরকমে balance করলো। মেরিন কাদতে লাগলো।
নীড়: কান্না করছো কেন? আমি তো বেচে আছি।
তখন মেরিন নীড়ের বুকে কিল মারলো।

নীড়: ouch…..
মেরিন: i m sorry……. i m sorry…..
নীড়: its ok… অতোটাও ব্যাথা পাইনি।
মেরিন: হারামিটা…..
আমার জন্য আমাদের জীবনটা শে…..
নীড়: shh…. কে বলেছে জীবন শেষ। হ্যা সুখের ৮টা বছর delete হয়ে গেছে। but you know what……. স্বর্নটা যতো পুড়ে ততোই খাটি হয়। আমাদের ভালোবাসাও তেমনটাই।
মেরিন: কিভাবে আমি আপনাকে অবিশ্বাস করলাম? কিভাবে কিভাবে কিভাবে…..
নীড়: এটা কেবল situation এর demand ছিলো। nothing else……
মেরিন: না নীড়। আমি অপরাধী। সত্যি আমি ভালোবাসতে পারিনা।
নীড়: থাপ্পর মারবো।
মেরিন: u should punish me….
নীড়: করবো তো punish… romance এর ৮টা বছর কেটে গেলো। ভাবতে পারো এই ৮বছরে at least আমাদের আরো ৪টা baby হতো।
মেরিন: what??
নীড়: হামম। ওদিক থেকে ১জন বাবা সেদিক থেকে ১জন বাবা। ভাবা যায়…..
মেরিন: পাগলটা। কিন্তু নীড় শাস্তি না পেলে যে আমি শান্তি পাবোনা।
নীড়: যদি শাস্তি পেতে চাও তবে আমাকে ১টা promise করতে হবে।
মেরিন: হামম। বলুন।
নীড়: promise করো যে আমি যখন তোমার কাছে কিছু ১টা চাইবো তুমি সেটা মন থেকে দেবে……
মেরিন: এটা কি সেই ৮বছর আগের আবদার….
নীড়:হামমম।
মেরিন: mr. & mrs. khan কে আবার আম্মু বাবা বানাতে হবে । এইতো…..
নীড়: হামম। কিন্তু জোর করে না মন থেকে। আমি আর তোমার মুখে হাহাকার দেখতে পারবোনা। আমি মেরিনকে সত্যি ভালো থাকতে দেখতে চাই। আমি চাইনা আমার মেরিনের…. #ভালোবাসারমেরিনের জীবনে কোনো কালো মেঘের ছায়াও আর দেখতে চাইনা। আমি সত্যিকারের হাসি দেখতে চাই। মা-বাবার সাথে rudely কথা বলে পরে মনে মনে কষ্ট পাওয়া , নিজেকে আঘাত করা মেরিনকে আর চাইনা। আমি আমার মেরিনের জীবনটা আলোয় আলোয় ভরিয়ে দিতে চাই।

খুশিতে মেরিনের চোখে পানি চলে এলো। নীড় ঠোট দিয়ে শুষে নিলো।
নীড়: আজ থেকে তোমার সকল দুঃখ আমার। তুমি যেমন আমার চোখের পানি সহ্য করতে পারোনা তেমনি আমিও পারিনা।
মেরিন: এতো ভালো কবে বাসলেন আমাকে….
নীড়: জানিনা……
বলেই নীড় ১টা লকেট বের করে মেরিনকে পরিয়ে দিলো….. যেটাতে নীড়-মেরিনের ছবি আছে।
নীড়: আজকে এই অন্ধকারকে সাক্ষী রেখে আমি নীড় মেরিন আহমেদ চৌধুরী বর্ষন ওয়াদা করছি কখনো কোনো কথা তোমার কাছে লুকাবোনা….. নিঃশ্বাস নেয়ার আগেও তোমাকে বলবো….. চোখেক পলক ফেলার আগেও তোমাকে বলবো। সকল ঘৃণা শেষ করে দিবো।
মেরিন: আমিও কথা দিলাম জীবনের সব পর্যায়ে সকল অবস্থাতেই মেরিন নীড়ের সাথে থাকবে। মৃত্যুর সময়েও মেরিনের হাতে কেবল নীড়ের হাত থাকবে।

.

মেরিনের জীবন থেকে সব ঘৃণার অবসান ঘটলো। #ঘৃণারমেরিন ভালোবাসার মেরিনে পরিনত হলো। মেরিন সুখী হলো। ওদের marriage anniversary তে নীড় আবার মেরিনকে বিয়ে করলো। মহাধুম ধাম করে। মা-বাবা…. শশুড়-শাশুড়ি, স্বামী-সন্তান সবাইকে নিয়ে মেরিনের সুখের জীবন শুরু হলো। নীড় মেরিনের জীবনকে সুখ দিয়ে কানায় কানায় পরিপূর্ন করে দিয়েছে।

[[ কালকে থেকে তোমাকে ভালোবাসতে চাই ২ আসবে। ]]

.

সমাপ্ত

বিঃ দ্রঃ ” লেখাঃ মোহনা” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন

👉 এক পলকে দেখে নিন সহজে গল্প খুঁজে পাওয়ার সুবিধার্থে দেওয়া হল