ঘৃণার মেরিন !! Part- 07
কাদতে কাদতে মেরিন নীড়ের বুকেই অজ্ঞান হয়ে গেলো। নীড় মেরিনকে খাটে শুইয়ে দিলো। এরপর নিজের বুকের সাথে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।
.
.
.
পরদিন…..
বিকালে……
আকাশ , সূর্য, রাব্বি ৩জনের নাজেহাল অবস্থা। ৩জনকে ফুটন্ত গরম পানির ২ফুট ওপরে উল্টা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ৩জন ক্ষমা করে দাও ক্ষমা করে দাও বলছে।।
মেরিন: চুপ। তোদের সাহস কি করে হয় আমার নীড়কে হুমকি দেয়ার??? 🤬🤬🤬। বল??
সূর্য: ভুল হয়ে গেছে।
মেরিন: ভুল….. তোদের আমি এমন হাল করবো যে তোরা আর কখনো নিজের পায়ে চলতে পারবিনা….
.
.
.
কিছুদিনপর……..
নীড় এখন মেরিনের পাগলামো ভালোবাসা enjoy করে। একা বসে থাকলে অজান্তেই মেরিনের কথা ভেবে হাসে। ভালোই চলছে ওদের জীবন।
১দিন…..
নীড় মেরিনদের class নিচ্ছে। মেরিনও মনোযোগ দিয়ে class করছে। তখন ১টা sms পেয়ে মেরিন ১ সেকেন্ডও দেরিনা করে বেরিয়ে গেলো। নীড় কতো ডাকলো তবুও দারালোনা।
হাসপাতালে…….
কনিকার ২টা কিডনিই ড্যামেজ হয়ে গেছে। কেউ যদি ওকে ১টা কিডনি দেয় তবেই সে বাচতে পারবে। কিন্তু আফসোস কোথাও O+ রক্তের গ্রুপধারী ব্যাক্তির কিডনি পাওয়া যাচ্ছেনা। কবিরের মাথা নষ্ট। doctor রনি কেভিনে বসে ভাবছেন। তখনই ঝড়ের বেগে মেরিন রুমে ঢুকলো।
রনি: আরে মেরিন তুমি??
মেরিন: ডাক্তার আমার আম্মুকে বাচান…….😭😭😭….
রনি: শান্ত হও। আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু কিডনি কোথায় পাবো? কে দিবে কিডনি???
মেরিন: আমি দিবো কিডনি। হ্যা দিবো কিডনি।
রনি: তুমি দিবে কিডনি???
মেরিম:হ্যা আমার আম্মু তাই আমিই দিবো কিডনি……
রনি: অসম্ভব। তা কোনোদিনই হয়না।
মেরিন: কেন হয়না doctor ??? আমি তার মেয়ে। blood group ও এক। তাহলে কেন অসম্ভব।
রনি: কারন এই surgery করলে উনার বাচার সম্ভাবনা ১০০% থাকলেও তোমার বাচার সম্ভাবনা ০০%। কারন তোমার bp একদমই লো। সেই সাথে রক্তস্বল্পতা। আর ১টা mbbs student হয়ে তুমি জানো যে কারো surgery করতে হলে তার pressure normal করে নিতে হয়। তোমার bp তো কখনোই normal হয়না। আর তোমার immune system ও একদম দুর্বল। ১জনকে বাচাতে গিয়ে আমি অন্যজনকে মারতে পারিনা।
মেরিন:আমি মরলে মরবো। কিন্তু আমার আম্মুকে বাচাও।
রনি: না। আর তুমি বোধহয় ভুলে যাচ্ছো যে তুমি কাকে বাচাতে চাইছো।
মেরিন: না রনিদা আমি ভুলিনি। আমি জানি আমি আমারকে মা কে বাচাতে চাইছি।
আমি জানিনা কোনো মা-বাবা তাদের সন্তানের সকল ভুল মাফ করতে পারে কিনা……
আমি জানিনা কোনো সন্তান মা-বাবার সকল ভুল মাফ করতে পারে কি না???
আমি কেবল এটা জানি যে মা-বাবা মা-বাবাই হয়। ভালো-মন্দ হয়না……
রনি:তুমি একথা বলছো??
মেরিন: হামম। কারন আম্মুর কিছু হয়ে গেলে আমি কেবল আমার আম্মুকেই না আমার বাবাকেও হারাবো। কারন আমার বাবা আম্মুকে অসম্ভব ভালোবাসে। হ্যা তাদের হয়তো মা-বাবা ডাকিনা। কিন্তু তাই বলে কি তারা আমার মা-বাবা না? তাদেরকে নাই বা মা-বাবা বলে ডাকতে পারলাম… তাদেরকে চোখে দেখতে তো পারবো……
please বাচান…..
রনি: i m sorry…..
মেরিন: যদি আপনি না করেন তবে কাউকে না কাউকে দিয়ে তো আমি এই surgery অবশ্যই করাবো। আমার আম্মুর তো কিছু হতে দিবোনা। কিন্তু তখন আপনার কি হবে???? আমি আপনাকে ধংব্স করে দিবো।
রনি জানে মেরিন যেটা বলে সেটাই করে।
রনি: বেশ আমি করবো।
মেরিন: thank you… আর ১টা কাজ করবে।
রনি: কি??
মেরিন: বাবাকে বলবে যে কিডনি ১টা মৃত ব্যাক্তির।
রনি: what??
মেরিন: হামম। কারন আমার কিডনি জানলে আম্মু কখনোই রাজী হবেনা। আর তাছারাও আমি তাদের কাছে মৃত…..
রনি মেরিনের পা ধরে সালাম করতে গেলে মেরিন সরে গেলো।
মেরিন: একি করছো রনিদা…..
রনি: কোনো সন্তান যে তার মা-বাবাকে এতোটা ভালোবাসতে পারে সেটা তোমাকে না দেখলে জানতামনা। তোমার মতো সন্তান পাওয়া ভাগ্যের বিষয়। আল্লাহ যদি সহায় থাকে তবে আমি কনিকা আন্টি আর তোমাকে ২জনকেই OTথেকে বাচিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ।
surgery শুরু হলো। রনি মেরিনের বলে দেয়া কথা গুলোই বলল। কেউ জানেনা সত্যটা কি ১জন ছারা। আর সে হলো দাদুভাই।
[ হ্যা মেরিন কবির-কনিকাকে অনেক ভালোবাসে। কনিকা-কবির মেরিনকে যতোটা ঘৃণা করে মেরিন তার থেকে হাজারগুন বেশি ওদের ভালোবাসে। মেরিন কখনোই ওদের ঘৃণা করেনি। নিজের সুস্থতার আগে ওদের কথা ভেবেছে। ৪জন বডিগার্ড ঠিক করেছে। যারা কবির-কনিকার চোখের আড়ালে ওদের সাথে ছায়ার মতো লেগে থাকে। নিরাপত্তা দেয়। যেন ১টা মাছিও ওদের ক্ষতি না করতে পারে।শুধু তাই নয়। কবির-কনিকার কথা ভেবেই মেরিন নিরাকে জানে মারেনি। নিরার জঘন্য কাজের জন্য মেরিন নিরাকে জানে মারতে গিয়ে দেখে যে নিরার সাধারন ১টা accident এ কবির-কনিকার জান যায়যায়। যদি নিরাকে মেরিন মেরে ফেলে তবে যে ওদেরকেও বাচানো যাবেনা সেটা মেরিন ঠিকই বুঝেছিলো। তাই এতো power থাকতেও মেরিন নিরার কোনো ক্ষতি করেনি। কারন মেরিন কবির-কনিকাকে কোনোভাবেই হারাতে পারবেনা…… কিন্তু যখন নীড়ের কথা এলো তখন কেন যেন নিরাকে….]
.
অপারেশন চলছে……
নীড় খবর পেয়ে ছুটে এসেছে। ওর মা-বাবাও। নীড় খবরটা পেয়ে মনে করেছিলো মেরিন হয়তো কনিকাকে দেখতে এসেছে। কিন্তু হাসপাতালে এসেও মেরিনকে দেখতে না পেয়ে হতাশ হলো। অপারেশন শেষ হলো। কনিকা আসংকামুক্ত। কিন্তু ventilation এ রাখা হয়েছে। দাদুভাইয়ের ভীষন চিন্তা হচ্ছে। তবুও কাউকে কিছু বলতে পারছেনা।
এদিকে নীড়েরও যেন কেমন ১টা feel হচ্ছে। তবে আল্লাহর রহমত এবং ডাক্তারের পারদর্শিতার জন্য মেরিন সুস্থ হলো।
.
১০দিনপর…….
নীড়ের চোখে ঘুম নেই। কোথায় গেল মেরিন?? খোজ নেয়ার চেষ্টা করেছে। যদিও জন নিজেই ফোন করে বলেছে যে মেরিন কোনো ১টা কাজে ঢাকার বাইরে গেছে। কিন্তু তবুও কেন যেন ওর মন মানছেনা। খুব চিন্তা হচ্ছে। কিন্তু কেন??? আজকে ১০দিনপর মেরিন ফিরলো। নীড় বারান্দায় দারিয়েছিলো। মেরিনকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে দৌড়ে নিচে গেল।
মেরিন ভেতরে ঢুকতেই জরিয়ে ধরে
বলল: তুমি ঠিক আছো তো??
মেরিন: হামম।
বলেই নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
নীলিমা: কিরে মামনি কোথায় গিয়েছিলি?
মেরিন: ১টা কাজে।
বলেই মেরিন রুমে গেলো।
নীড়ও গেলো।
নীড়: তুমি কোথায় গিয়েছিলে???
মেরিন:……..
নীড়: বলো কোথায় গিয়েছিলে?
মেরিন:…..
নীড়: কিছু জিজ্ঞেস করেছি……. জবাব দাও।
মেরিন: মেরিন কখনো কাউকে কোনো জবাব দেয়না। দিতে বাধ্য নয়।
নীড়: হাজারবার বাধ্য। কারন আমি “কেউ” নই। আমি তোমারে স্বামী।
মেরিন: স্বামী!!!🤣🤣🤣।
বলেই মেরিন washroom এ চলে গেলো।
মেরিন: i m sorry নীড়। কিন্তু আমি আপনাকে বলতে পারবোনা। কারন দুর্বল মেরিনকে আমি আপনার সামনেও তুলে ধরতে পারবোনা।
মেরিন washroom থেকে বেরিয়ে চাদর গায়ে দিয়ে শুয়ে পরলো। নীড় অনেক অবাক হলো। মেরিনের চোখে মুখে অসুস্থতার ছাপ। কিছু তো ১টা হয়েছে।
৩দিনপর….
মেরিন নিজের gun টা পরিষ্কার করছে। এই ৩দিন মেরিন class করতেও যায়নি।
নীড় মেরিনের হাত ধরে বলল: মেরিন……
মেরিন: হামম।
নীড়: সত্যি করে বলো তো কোথায় গিয়েছিলে?
মেরিন: আগেই বলেছি যে মেরিন কাউকে জবাব দিতে বাধ্য না। মেরিন কাউকেই কখনো কারো কাছে জবাবদিহি করেনা।
নীড়: আমার কাছেও না…….
মেরিন: কারো কাছে না।
নীড়: তারমানে তুমি আমাকে ভালোবাসোনা……
মেরিন: নিজের জীবনের থেকেও বেশি।
নীড়: মিথ্যা। একদম মিথ্যা। আমি তোমার জন্য কেবল নেশা। তোমার জেদ। নিরাকে কষ্ট দেয়ার বাহানা……
মেরিন: যেটা আপনি মনে করেন……
নীড়: তবে ছেরে দাও আমাকে……
মেরিন: এই জীবনে সম্ভবনা। এমনকি যদি আবার কখনো জন্ম হয় তখনও ছারতে পারবোনা।
নীড়: তাহলে বলছোনা কেন যে কোথায় ছিলে???
মেরিন: বলতে বাধ্য নই তাই।
নীড় মনে মনে: জানতে আমাকে হবেই যে কোথায় গিয়েছিলে তুমি?? কেন যেন আমার ভয় হচ্ছে……. মন হচ্ছে খুব এহেম জিনিষ তুমি লুকাচ্ছো……
নীড়: কার সাথে ছিলে তুমি??
মেরিন: মানে??
নীড়: মানে স্পষ্ট……. কার সাথে ছিলে? কোন ছেলের সাথে ছিলে?
মেরিন: নীড় আপনি জানেন আপনি কি বলছেন? কাকে বলছেন?
নীড়: জানি…. আমি তোমাকে বলছি……
মেরিন:আপনার কি মনে হয় আমি কোনো ছেলের সাথে…..
নীড়: না মনে হওয়ার কোন কারন নেই….. তোমার মতো মেয়ে সবই পারে।
.
মনে মনে: sorry মেরিন। কিন্তু আমাকে জানতেই হবে যে তুমি কোথায় ছিলে। তাই এটা ছারা আমার আর কোন পথ নেই…….
মেরিন: কি বললেন আপনি?? আমার মতো মেয়ে সব পারে…..
নীড়: হামম।
মেরিন: ভালো…..
নীড়: কি ভালো হ্যা কি ভালো…… তোমার ওপর কি আমার কোনো অধিকারই নেই……
মেরিন: অধিকারের কথা কেন আসবে নীড়…… মেরিনতো পুরোটাই নীড়ের।
নীড়:oh really ?? মেরিন কখনোই নীড়ের না। নীড় কেবল মেরিনের খেলার পুতুল। যা দিয়ে খেলতে মন চাইছে তাই খেলছে…..
যেদিন মন ভরে যাবে সেদিন ছুরে ফেলে দিবে……
মেরিন: না নীড় এমন করে বলবেন না….. আপনি আমার সব নীড়….. আপনি আমার জীবন। আপনি চাইলে আমি জীবনও দিয়ে দিতে পারি……
নীড়: জীবন…… সে তো অনেক বড় কিছু। শুধু ১টা ছোট্ট জবাব চেয়েছি তাই দিচ্ছোনা। আর তো জীবন…. সত্যিটা কি জানো? তুমি আমাকে বলেছিলেনা যে আমি নিরাকে কখনো ভালোবাসিনি……
আজকে আমি তোমাকে বলছি যে তুমি মেরিন কখনো আমাকে ভালোবাসোনি…… তুমি কাউকেই কখনো ভালোবাসতে পারোনা।
মেরিন: ভুল নীড়……. আমি আপনাকে ভালোবাসি।
নীড়:মানিনা….. বিশ্বাস করিনা…… ভালোবাসলে তুমি জ….
মেরিন: আপনি বিশ্বাস করুন নীড়….. ১টা বার বিশ্বাস করুন। বললাম তো আপনি চাইলে আমি জীবনটাও দিয়ে দিতে পারি…..
২টা জিনিষ ছারা। এক এই জবাব আর দুই আপনাকে divorce ….
নীড়: জানা হয়ে গেছে….. জীবন দিয়ে দিবো…. হ্যাহ….
মেরিন: আপনার মনে হয়না আমি আপনার জন্য জীবনও দিতে পারি……
নীড়:আমার মনে হয়না যে তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমি আমার প্রমান পেয়ে গেছি…… জীবন…. 🤣🤣🤣
মেরিন: ওহ……. আচ্ছা আমি যদি আমার জান দিয়ে দেই আপনাকে উৎস্বর্গ করে তবে মানবেন তো যে আমি আপনাকে ভালোবাসি……
আমার ভালোবাসার প্রমান হিসেবে কি আপনি আমার জীবন চান……….
নীড়:……
মেরিন: নীরবতা সম্মতির লক্ষন।
নীড়: তুমি ভালোবাসার মানেই বোঝোনা….. তুমি আর কি জীবন দিবে…. জীবন তো দেয়া দরকার আমার। কারন তোমার মতো কারো কাছে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো…..
.
বলেই নীড় রুম থেকে বের নিলো। ঘুরতেই গুলির আওয়াজ শুনতে পেলো। নীড় পিছে ঘুরলো। ঘুরেই মেরিন বলে চিৎকার করে দৌড়ে মেরিনের কাছে গেলো।
নীড়: এটা কি করলে তুমি…..
গুলির শব্দ শুনে নিহাল-নীলিমাও ছুটে এলো।
মেরিন: আপনি আমার কাছে থেকে মমমুক্তি চেয়েছিলেন….. আমি বাতলে সেটা কখনোই সম্ভব না। তাই….
এখন আর কখনো আপনাকে জ্বালাবেনা মেরিন……
আপনার সুখের চিতা জ্বালাবে না মেরিন…… চলে যাচ্ছে আপনার #ঘৃণারমেরিন ।
আর কেউ বলবেনা যে ভালোবাসতে জানেনা মেরিন….. আমি প্রপ্রপ্রমান করে দিয়েছি যে আপনি চাইলে আমি সব করতে পারি… আমি জানি আমার স্থান নরকেই হবে। কিন্তু হাজার জান্নাত ত্যাগ করে আপনার বুকে মরে যাওয়ার সুখ আমার কাছে অনেক দামী…….
নীড় কোলে কোরে মেরিনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। OT তে ঢোকানো হলো।
নীড়: তুমি কেন বুঝলেনা মেরিন যে আমার উদ্দেশ্যটা কি ছিলো…… কেন আমি তোমাকে বুঝতে পারিনা……
তখন ডাক্তার বেরিয়ে এলো।
ডাক্তার: patient এর গুলি কিভাবে লাগলো?? বলুন….
নীড়: আমার মেরিনকে বাচান ডাক্তার…..
ডাক্তার: বাচাবো…..!! লজ্জা করছেনা এটা বলতে?? কি হন আপনি রোগীর? স্বামী….. কেমন স্বামী আপনি…. যে স্ত্রীর ১২-১৫ দিন হলো কিডনির অপারেশন হয়েছে…. নিজের কিডনি দান করেছে তাকে কিভাবে গুলি খেতে দিলেন….. বলুন….
নীড়: what??? kidney ……
ডাক্তার: এ…..
নার্স: sir…. মির্জা স্যার ডাকছেন…..
ডাক্তার চলে গেলো। নীড় অংক মিলাতে লাগলো। তারমানে ওর সন্দেহই ঠিক যে কনিকারে মেরিনই কিডনি দিয়েছে। মেরিন ঘৃণার মেরিন নয়।
নিহাল: নীড়…. কিডনি…..
নীড়: হ্যা বাবা…. কনিকা খানকে মেরিনই কিডনি দিয়েছে।
.
ওদিকে…..
খান বাড়িতে……
নিরা কুমিরের মতো কাদতে কাদতে খালামনি করতে করতে খান বাড়িতে ঢুকলো।
নিরা: খালামনি তুমি ঠিক আছো তো?? কেন তোমার সাথে এমনটা হলো….. তোমার বদলে আমার সাথে এমনটা কেন হলোনা…… 😭😭😭।
দাদুভাই: এই মেয়ে তুমি এই বাড়িতে কেন??
নিরা: আমার খালামনির এই অবস্থা আমি দেখতে আসবোনা….. আজকে এখানে আসার অপরাধে যদি মেরিন আমাকে মেরেও ফেলে তবুও আমি শান্তি পাবো….. কারন মরে যাওয়ার আগে আমার খালামনিকে দেখতে তো পেলাম…..
দাদুভাই: তুমি তোমার নাটক দিয়ে এদের বোকা বানাতে পারো। কিন্তু আমাকে না…….
কনিকা: কিছু মনে করোনা বাবা…. কিন্তু এটা বলবে কি এখানে নিরামা কি নাটকটা করেছে….?
দাদুভাই: সবটাই…..
কারন এতোই যখন ভালোবাসে তোমায় তখন ১৫দিন আগে এলোনা কেন??? যদি কিডনি দিতে হয় সে ভয়ে…..
কবির: ওর এখন ঘর আছে সংসার আছে…. হয়তো ব্যাস্ত ছিলো…..
দাদুভাই:মোটেও না…… ওর কোনো কাজই ছিলোনা।
কবির:তুমি তো নিরার পিছে লেগেই থাকো। আচ্ছা তোমার কথাই মানলাম। কিন্তু তোমার গুনধর নাতনী। সে হাসপাতালে তো দূরের কথা। বাসায়ও এলোনা।
ওর তো নিজের মা। তবে ও কেন এলোনা….. বলো?
দাদুভাই:……
কবির: এর জবাব তোমার কাছে নেই বাবা। আমার মনে হয় যে ও আমাদের মেয়েই না। হয়তো হাসপাতালে বদলে গেছিলো। কারন ওর মতো বিষধর সাপ আম…..
আর বলতে পারলোনা। দাদুভাই ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
দাদুভাই : তুইই ১টা বিষধর সাপ….. ইবলিসের উপাসক। তানা হলে কি নিজের সন্তানের সম্পর্কে কেউ এমনটা বলতে পারে???? তেজ্য করবো আমি তোকে। তবে তোর সব জবাব দিয়ে। সব বলবো আজকে তোকে।
এইযে বউমা তুমি যে আজকে বেচে আছো কেন জানো? সেই বিষধর সাপটার জন্য। কারন সেই বিষধর সাপটাই নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে তোমাকে নিজের ১টা কিডনি দিয়েছে।
কনিকা বসা থেকে উঠে দারালো।
দাদুভাই: নিজের জীবন ঝুকিতে নিয়ে কথাটা কেন বললাম জানো? না তোমরা সেটা জানবে কি করে??? তোমরা তো সেই নিকৃষ্ট প্রানী যারা সন্তান জন্ম দেবার পরই সন্তানকে একা ফেলে অন্যত্র চলে যায়। ওর bp একদম লো। তার সাথে রক্তস্বল্পতা তো আছেই। নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে সেই বিষধর সাপটা নিজের জীবন বাজী রেখে কিডনি দিয়ে কনিকাকে বাচিয়েছে। শুধু তাই নয়। কবির তোর মনে আছে যে তোকে ১বার ১টা সন্ত্রাস অপহরন করেছিলো…. আর ১টা অচেনা ব্যাক্তি তোকে উদ্ধার করেছিলো। এমনকি তোকে বাচাতে গিয়ে সে হাতে গুলিও খেয়েছিলো…… সেই অচেনা ব্যাক্তিও এই বিষধর সাপটাই ছিলো। ওর বাম হাতে আজও সেই ক্ষতটা আছে। শুধু তাইই না…. যেন তোদের গায়ে ১টাও আচর না লাগে তাইজন্য তোদের আড়ালে তোদের জন্যেই বডিগার্ড ঠিক করে রেখেছিলো।
কবির-কনিকা অবাক। চোখ দিয়ে পানি ঝরছে।
দাদুভাই: তোরা যেই বিষধর সাপকে প্রতিনিয়ত অভিশাপ দিতি সেই বিষধপ সাপ তোদের জন্য প্রতিনিয়ত দোআ করেছে। তোদের অভিশাপ আশীর্বাদ বলে মেনে নিতো…..
নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতোনা। তোদের ভালোবাসা না পেয়ে কতো রাত যে মেয়েটা নির্ঘুম কাটিয়েছে তা কেবল আমি জানি.। কেদে কেদে ওর চোখ পাথর হয়ে গেছে। চাতক পাখির মতো তোদের ভালোবাসার আশা করতো। কিন্তু তোরা….. ও বেচে আছে না মরে গেছে তারও খবর নিতিনা…..
যে সন্তান তার মা-বাবাকে দেবতার মতো করে পূজা করেছে সে মা-বাবা তাকে বিষধর সাপ বলে আখ্যায়িত করেছে।
কি নিদারুন বরদান….
বিষধর সাপটা জানতোনা যে, সে যাদের দেবতা ভেবেছে তারা তো নিম্নস্তরের প্রানী হবারও যোগ্যতা রাখেনা। এমনকি পাথরের মূর্তীর থেকে নিষ্প্রান……
যে বিষধর সাপ তার মা-বাবাকে নিঃসার্থভাবে ভালোবেসেছে তার মা-বাবাই তাকে ভালোবাসার না ঘৃণারসন্তান….. ঘৃণারমেরিন বানিয়ে দিয়েছে।
কবির-কনিকা:😢😢😢😥😥
দাদুভাই: তাে আরো কিছু শুনবি তোরা…. চল আরো কিছু শোনাই তোদের। শোন ত……
দাদুভাই আরো কিছু বলতে নিবে তখন জন দৌড়ে এলো।
জন: স্যার……
দাদুভাই: কি হয়েছে জন?? তোমাকে এমন লাগছে কেন??? কি হয়েছে।
জন: স্যার… মেরিন ম্যাম…..
দাদুভাই: ককি হয়েছে দিদিভাইয়ের???
জন: ম্যামের গগগগুলি ললেগেছে……
.
১মাসপর……
মেরিন ১মাস ধরে কোমায় আছে। নীড় এই ১মাসে মেরিনকে ছেরে ১বারের জন্যেও বাড়ীতে যায়নি। এই হাসপাতালকে বাড়ি ভেবে আর মেরিনের কেভিনকে রুম ভেবে এখানেই পরে আছে। দেখলো মেরিনের হাত নরছে। বুঝতে পারলো যে মেরিন কোমা থেকে বেরিয়ে এসেছে….. নীড় খুশিতে আত্মহারা হয়ে সবাইকে ডাক দিলো। মেরিনের সুবিধার জন্যেই ওকে ওই মুহুর্তেই আবার ঘুমের injection দেয়া হলো।
৪ঘন্টাপর মেরিন দাদুভাই বলে চিৎকার করে জেগে গিয়ে উঠে বসলো। আর দেখলো…..
দেখলো যে ওর সামনে সবাই বসে আছে। এমনকি কবির-কনিকাও…… ওর হাত নীড়ের হাতের মুঠোয়। মেরিন অবাক হলো। তবুও মেরিন অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস
করলো: আমার দদাদুভাইটা কোথায়???🥺🥺🥺।
সবাই:……
নীড়: মেরিন এখন ততততোমার কেমন লাগছে?? খারাপ টারাপ লাগছেনাতো……
মেরিন: আরে রাখুন ভালো খারাপ। আগে বলুন আমার দাদুভাই কোথায়?
নীলিমা: মমামনি… তুমি কেবল কোমা থেকে ভালো হলে। তোমার একটু relax থাকার দরকার…..
মেরিন: ও মামনি আগে বলোনা আমার দাদুভাইটা কোথায়…….
সবাই:……
মেরিন:কি হলো? ববলো…..
সবাই:…..
মেরিন: বলো দাদুভাই কোথায়?
সবাই:…..
কনিকা: মা….
মেরিন: hey don’t touch ……
নীড় বলুন না দাদুভাই কোথায়??
সবাই:…..
মেরিন: তোমরা কেউ কিছু বলছোনা কেন?? জন….. জন…… জন…. কোথায় মরেছে…..
জন দরজার বাইরেই দারিয়ে কাদছে।
মেরিন: জন…..জন…… যদি আমাকে উঠে তোমার কাছে যেতে হয় তবে i swear ….. জন….
জন চোখের পানি মুছে ভেতরে ঢুকলো।
মেরিন: কোথায় মরেছিলে……
জন:…..
মেরিন: দাদুভাই কোথায়?
জন:…..
মেরিন: কি হলো? বলো…..
জন:……
মেরিন: জন … বলছোনা কেন দাদুভাই কোথায়?
জন:…..
মেরিন: জন যদি খুন না হতে চাও আমার হাতে বলো কোথায় দাদুভাই?
জন:…..
মেরিন: আমি কিন্তু প্রলয় শুরু করবো জন। ভালোমতো বলো কোথায় দাদুভাই???
জন: সসসস্যার আর ননননেই মমম্যাম। তততিনি মমমারা গেছেন…….
(জন যখন এসে বলল যে মেরিনের গুলি লেগেছে তখন ওই মুহুর্তেই দাদুভাইয়ের heart attack হয়েছে। কারন যে মেয়ের ১৫দিন আগেই major operation হয়েছে সে মেয়ের গুলি লাগা মানে মৃত্যু…… তাই দাদুভাই এই খবরটা মেনে নিতে পারেনি। তখনই মারা যায়। 🥺🥺🥺 )
চলবে…….